আবদুর রাজ্জাকের মরদেহ আজ আসছে, দাফন কাল

প্রখ্যাত রাজনীতিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আবদুর রাজ্জাকের মরদেহ লন্ডন থেকে বিমানযোগে আজ রোববার দুপুর ১২টায় হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। কফিনের সঙ্গে মরহুমের স্ত্রী ফরিদা রাজ্জাক, ছেলে নাহিন রাজ্জাকসহ তাঁর গুণগ্রাহীরা আসবেন। আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বিমানবন্দরে আবদুর রাজ্জাকের মরদেহ গ্রহণ করবেন। আওয়ামী লীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বলা হয়, আবদুর রাজ্জাকের


মরদেহ বিমানবন্দর থেকে গুলশানে মরহুমের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। বেলা আড়াইটায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বেলা সাড়ে তিনটায় জাতীয় ঈদগা ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় জানাজা। বিকেল চারটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে আবদুর রাজ্জাকের মরদেহ তাঁর জন্মস্থান শরীয়তপুরের ডামুড্যায় নেওয়া হবে। বাদ জোহর সেখানে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফেরত আনার পর বিকেল চারটায় বনানী কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হবে।
খ্যাতিমান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দুই দিনব্যাপী শোক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা। এ ছাড়া দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে।
আবদুর রাজ্জাকের মৃত্যুতে বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের শোক অব্যাহত রয়েছে। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধে আবদুর রাজ্জাকের ভূমিকা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুলের সই করা শোক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দীর্ঘ দুই দশক আবদুর রাজ্জাক ছিলেন আমাদের সহযোদ্ধা ও সুহূদ। তাঁর অকালমৃত্যু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের আন্দোলনে যে শূন্যতা সৃষ্টি করেছে, তা পূরণ হবে না। এ ছাড়া সাংসদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া, যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এদিকে বিভিন্ন সংগঠন গতকালও শোক প্রকাশ করেছে। পৃথক পৃথক শোক বিবৃতিতে মরহুমের মুক্তিযুদ্ধে অবদান, বর্ণাঢ্য জীবনসহ বিভিন্ন ভূমিকার কথা স্মরণ করা হয়। এসব সংগঠনের মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল, শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, নারী মুক্তি আন্দোলন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ, রেলওয়ে শ্রমিক লীগ, মুক্তিযুদ্ধ ও গণমুক্তি আন্দোলন, ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, মুক্তিযোদ্ধা জনতা লীগ, কৃষক লীগ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, লিবারেল ফোর্স, গণ-অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ, জাতীয় আইনজীবী সমিতি, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী সমিতি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, গণ-আজাদী লীগ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, মুসলিম লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি, ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশন, বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, জাতীয় জনতা পার্টি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাসদ, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন ও পঁচাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
সংশোধনী: গতকাল শনিবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত ‘আবদুর রাজ্জাক আর নেই’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ১৯৭২ সালে বাকশাল গঠনের কথা বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বাকশাল গঠন করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালে।

No comments

Powered by Blogger.