চট্টগ্রামের রোডমার্চ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিএনপি

ট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চের মধ্য দিয়ে বিএনপি আবার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ধারায় ফিরতে চায়। রাজনীতির মাঠ দখলে ঘুরে দাঁড়ানোও দলটির লক্ষ্য। কিন্তু ওই কর্মসূচি সফলভাবে পালন করা নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা জানান, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন সম্পর্কে তাঁরা জানতে পেরেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, রোডমার্চের শেষ দিনে চট্টগ্রামের জনসভায় জামায়াতের বিপুলসংখ্যক


নেতা-কর্মী অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁরা জনসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারেন। তা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে সহিংসতার আশঙ্কা করছে বলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ওই নেতা বলেন, ঢাকায় বিএনপির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিলের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পুলিশ করতে দেয়নি। সে সময় পুলিশ আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা প্রকাশ করে বাধা দিয়েছিল। চট্টগ্রামের রোডমার্চে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে নেতা-কর্মীদের মনোবল ভেঙে যেতে পারে। আর কোনো কারণে কর্মীরা সহিংস হলে তা বিএনপির রাজনীতির জন্য ক্ষতির কারণ হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি সরকারবিরোধী জনমত সৃষ্টি করতে চায়। রোডমার্চসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তাই করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের রোডমার্চও তারই অংশ। এখন থেকে নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার পতনের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করা হবে। কিন্তু সরকারের অসহিষ্ণু আচরণে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা নিয়েও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার দিনের ঘটনা বিএনপির ওপর চাপাতে চায় সরকার। ওই ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
চট্টগ্রামের রোডমার্চসহ সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসন তাঁর কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিয়ে সৃষ্ট ঘটনার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করেন। বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া নেতাদের বলেছেন, ‘যা হবার হয়ে গেছে। এখন জুনিয়র নেতাদের পক্ষে কর্মসূচিতে থাকা সম্ভব হবে না। তাই সিনিয়র নেতাদের মাঠে থাকতে হবে।’
বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা নিয়ে সৃষ্ট সহিংস ঘটনার পুরো দায় হয়তো বিএনপির নয়। তবে পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। বিশেষ করে ভোরে বিভিন্ন স্থানে জড়ো হওয়ার ঘটনার তেমন কোনো সদুত্তর দলের কাছে নেই। ওই ঘটনার পর বিভিন্ন মহলের কাছে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এসে বিএনপি যে ইতিবাচক অবস্থান জনগণের কাছে তুলে ধরতে পেরেছিল, তা-ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহাবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চট্টগ্রামের রোডমার্চ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা মনে করছি, সরকার এখন মারমুখী। নানা অজুহাতে বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে। তাই রোডমার্চ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা নিয়ে দলের সবাই উদ্বিগ্ন।’

No comments

Powered by Blogger.