সবার জন্য আনন্দময় হয়ে উঠুক পবিত্র এই দিনটি-শুভ বড়দিন

জ বড়দিন। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। পবিত্র এই দিনে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের খ্রিষ্টান সম্প্রদায় মহান যিশুর জন্মদিন পালনের উৎসবে মেতে উঠবে। আনন্দ-উৎসবের পাশাপাশি যিশুখ্রিষ্টের শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের কাছে। বড়দিন একই সঙ্গে উদারতা ও কৃতজ্ঞতার মতো মানবিক গুণাবলিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে উন্নততর মানবিক সম্পর্ক ও সমৃদ্ধতর সমাজ গড়ে তুলতে।


পৃথিবীতে যিশুখ্রিষ্টের আবির্ভাব হয়েছিল মানবজাতির ত্রাতা বা উদ্ধারকর্তা হিসেবে। হিংসা, বিদ্বেষ, পঙ্কিলতাপূর্ণ এই পৃথিবীর মানুষকে সুপথে আনার মহান দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। যিশুর জন্মদিন তাই শুধু খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্য নয়, সমগ্র মানবজাতির ইতিহাসেও এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
সংযম, সহিষ্ণুতা ও ভালোবাসার পথ ধরে মানুষকে সত্য ও সুপথে আনার কাজে অমানুষিক নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন যিশু। কিন্তু কোনো নির্যাতন বা নিপীড়ন তাঁকে সত্যের পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। আজকের দুনিয়ার দিকে তাকালে আমরা দেখব, সভ্যতা বিকাশের পাশাপাশি সারা বিশ্বে হিংসা, হানাহানি ও অশান্তি যেন বেড়েই চলেছে। সভ্যতার সংঘাত তীব্রতর হচ্ছে। এই দৈন্য ও সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে ওঠার জন্য বড়দিনের বাণী মানবজাতির জন্য বড় সহায় হতে পারে।
যিশুখ্রিষ্ট পথভ্রষ্ট ব্যক্তিদের যেমন দেখিয়েছেন আলোকিত পথ, তেমনি বঞ্চিত-লাঞ্ছিত মানুষকে দিয়েছেন বাঁচার অনুপ্রেরণা। তিনি মানবজাতিকে পাপ-পঙ্কিলতা থেকে ফেরানোর পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন মমতা, ভালোবাসা ও ক্ষমার পথ। মানবসভ্যতার ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, যিশুর প্রভাব শুধু খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের জীবন ও দর্শনেই পড়েনি, বরং পুরো মানবসভ্যতাই কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত হয়েছে তাঁর আদর্শ, নীতি, জীবনদর্শন ও বিশ্বাস দ্বারা। শান্তির যে বাণী নিয়ে তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন, তা সব যুগে সব মানুষের জন্যই জরুরি। মুসলমানদের কাছেও যিশুখ্রিষ্ট গভীর শ্রদ্ধার পাত্র, অন্যতম নবী—হজরত ঈসা (আ.) নামে পরিচিত।
বাংলাদেশ একটি মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও এ দেশে রয়েছে বিপুলসংখ্যক খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় উৎসবে প্রতিবছরের মতো এবারও অন্য সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষের সংহতি থাকবে—সেই প্রত্যাশা রইল। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী সবার প্রতি জানাচ্ছি আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সবার জন্য আনন্দময় হয়ে উঠুক পবিত্র এই দিনটি। শুভ বড়দিন।

No comments

Powered by Blogger.