যে কারণে বিমান যাত্রীদের প্যারাসুট দেওয়া হয় না
১. অধিকাংশ যাত্রীবাহী বিমান প্রায় ৩৫০০০ ফুট উচ্চতা দিয়ে উড়ে। এই উচ্চতা প্যারাসুট দিয়ে স্কাইড্রাইভ করার উচ্চতার থেকে অনেক বেশি। এত উচ্চতায় বায়ুর চাপ অনেক কম থাকে। কম বায়ু চাপের কারণে বিমান থেকে লাফ দেওয়ার পর প্যারাসুট খুলবে না। এটি না খুললে সব আয়োজন বৃথা।
২. প্রতিটি প্যারাসুট ওজনে কমপক্ষে ২২ থেকে ৩০ কেজি। এক্ষেত্রে একটি বিমানের যাত্রীর আসন সংখ্যা ১০০ হলে, প্যারাস্যুটসহ তাদের গড় ওজন হবে ৭৫ কেজির বেশি।
প্যারাসুট নিলে মাথাপিছু ওজন গড়ে ২৫ কেজি বৃদ্ধি পাবে। এই অতিরিক্ত ওজন বহন করার জন্য বিমানের আকৃতি বৃদ্ধি পাবে এবং এই বিশাল আকৃতির বিমানকে উড়ানো বেশ মুশকিল হবে। বেশি ওজন বহন করার জন্য বড় আকৃতির বিমানকে উড়াতে প্রচুর জ্বালানি খরচ হবে। এতে যাত্রীদের ভাড়া ৫০% বৃদ্ধি পাবে।
৩. একটি প্যারাসুটের দাম সর্বনিম্ন ৪০,০০০ টাকা হলে, ১০০ যাত্রীর জন্য প্যারাসুটের ব্যবস্থা করতে বিমান কোম্পানিকে প্রচুর টাকা খরচ করতে হবে। এই বিশাল অঙ্কের টাকা বিমান কোম্পানি যাত্রীর ভাড়ার সঙ্গে যুক্ত করলে ভাড়ার পরিমাণ দিগুণ হয়ে যাবে। এত ভাড়া দিয়ে বিমান ভ্রমণ করা সবার পক্ষে সম্ভব হবে না।
৪. ভালোভাবে প্যারাসুট ব্যবহার করা শিখতে যাত্রীদের প্রত্যেককে একজন ইন্সট্রাকটরের কাছে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। কমপক্ষে ৫ ঘণ্টা করে ৩ দিন প্রশিক্ষণ নিলে মোটামুটি প্যারাসুট চালনা শিখতে পারবেন তারা। কিন্তু সমস্যা হলো সবার জন্যে প্যারাসুট চালনা শেখার মতো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই, সব যাত্রীর ফিটনেস এক না এবং সবার পক্ষে টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণ নেওয়াও সম্ভব না।
৫. ৩৫০০০ ফুট উচু দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় যাত্রীরা যদি প্যারাসুট নিয়ে লাফ দেন, তাহলে প্যারাসুটের সুবিধা পেলেও কম বায়ুচাপ ও স্বল্প অক্সিজেনের কারণে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তারা মারা যেতে পারেন। কারণ এই উচ্চতায় যদি ফুসফুসে বাতাস ভরে রাখার জন্য দম বন্ধ করে থাকেন তাহলে আপনার ফুসফুস ফেটে যাবে।
আবার কম অক্সিজেন ঘনত্বের কারণে এত উচ্চতায় জ্ঞান হারিয়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন যাত্রীরা। এসব কারণে বিমানে প্যারাসুট থাকলেও তা ব্যবহার করার সুযোগ নেই। তাই বিমানে প্যারাসুট থাকে না।
No comments