গত মাসে অ্যান্টার্কটিকা ঘুরে এসেছেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বাংলাদেশি জহির ইসলাম। আর্জেন্টিনার সর্ব দক্ষিণের শহর উসুয়াইয়ার বন্দর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজে চেপে বসেছিলেন তিনি। ১৩ দিনের অভিযানে বরফে ঢাকা মহাদেশের নানা প্রান্ত ঘুরে দেখেছেন। দূরতম অঞ্চলটিতে ক্যাম্পিং, হাইকিং, কায়াকিংয়ের মতো নানা রোমাঞ্চকর কার্যক্রমেও অংশ নিয়েছেন। এই অভিযানে যেতে কত টাকা লাগল তাঁর?
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। স্কুল ও কলেজে পড়ার সময় স্কাউটের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তখন থেকেই ঘোরাঘুরির শখ। ২০০৫ সালে ঢাকা সিটি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে যুক্তরাজ্যে পড়তে আসি। এখানে আসার পর ঘোরার শখ আরও ডালপালা মেলল। একে একে ছয়টি মহাদেশের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়িয়েছি। ইউনিভার্সিটি অব সান্ডারল্যান্ড থেকে স্নাতক করার পর শুরু হয় কর্মজীবন। এরপর ঘোরাঘুরি একটু কমে এলেও ছুটিছাটায় কোথাও না কোথাও বেরিয়ে পড়ি।
অ্যান্টার্কটিকায় যাওয়ার স্বপ্ন পুষেছি অনেক দিন। এবার সেই স্বপ্ন সত্যি হয়ে ধরা দিল। মাস পাঁচেক আগে অ্যান্টার্কটিকার প্যাকেজ বুকিং দিই। অ্যান্টার্কটিকাগামী জাহাজের কোন কেবিনে আপনি যাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে প্যাকেজ ফি। সাধারণত সাড়ে ছয় হাজার ডলার থেকে শুরু হয় এসব প্যাকেজ। সুলভ প্যাকেজে এক কেবিনে চারজন থাকতে হয়। আমি দুজনের উইন্ডো ভিউ কেবিন নিয়েছিলাম। ১৩ দিনের প্যাকেজটি নিতে আট হাজার ডলার (প্রায় ১০ লাখ টাকা) লেগেছে। তবে ঘাঁটাঘাঁটি করলে আরও কম টাকাতেও এসব প্যাকেজ নেওয়া যায়।
জাহাজের প্যাকেজের সঙ্গে যুক্ত হয় বিমানভাড়া (আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেস এবং সেখান থেকে উসুয়াইয়ায় যাওয়া–আসা), হোটেলে থাকা–খাওয়া ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কেনার খরচ। যা আমার ক্ষেত্রে লেগেছে প্রায় ২ হাজার ৫০০ ডলার (প্রায় ৩ লাখ টাকা)।
বাংলাদেশ থেকে অ্যান্টার্কটিকা অভিযানে যেতে চাইলে অন্তত ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা খরচ হবে।
স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে আমার লন্ডনের জীবন। তাদের রেখেই ২৮ অক্টোবর আর্জেন্টিনায় পৌঁছাই। নভেম্বরের প্রথম দিন আর্জেন্টিনার সর্ব দক্ষিণের শহর উসুয়াইয়ার বন্দর থেকে জাহাজে চেপে বসি। সেই একই বন্দরে ১৩ নভেম্বর শেষ হয় আমাদের অভিযাত্রা। জাহাজে আমরা ১০০ জন অভিযাত্রী ছিলাম। আমার কেবিনমেট ছিলেন সিঙ্গাপুরের এক নাগরিক। অ্যান্টার্কটিকার দিনগুলোতে বরফে ঢাকা মহাদেশের নানা প্রান্ত ঘুরে দেখেছি। দূরতম অঞ্চলটিতে নানা রোমাঞ্চকর পর্বে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি সেখানকার প্রকৃতি ও প্রাণীর ছবি তুলেছি।
|
অ্যান্টার্কটিকায় যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বাংলাদেশি জহির ইসলাম। ছবি: জহির ইসলামের সৌজন্যে |
|
অ্যান্টার্কটিকার ডিসেপশন দ্বীপ। ছবি: জহির ইসলামের সৌজন্যে |
No comments