নীল তিমিরা কেন আত্মহত্যা করে?
তিমিকে সাধারণত বলা হয়ে থাকে সমুদ্রের দানব। এই বিশাল দেহের প্রাণীটি পরিচিত মায়াময় প্রাণী হিসেবেও। এরা কেবল এদের বুদ্ধিমত্তা নয়, বরং পরিচিত এদের একে অপরের প্রতি মমতা, শোকের বহিঃপ্রকাশের জন্য। পরিবারের জন্য শেষ চেষ্টা করতে এদের যে লড়াই, তা জানলে যে কারোরই হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।
নিজের পরিবারকে বাঁচানোর জন্য লড়াই করলেও এরা নিজেকে এক সময় মৃত্যুর দিকে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যায়। পৃথিবীর সাথে সকল মায়া এরা স্বেচ্ছায় পরিসমাপ্তি মেনে নেয়। আর তাই অনেকের মনে কৌতূহল তৈরি হতে পারে, কেন তারা স্বেচ্ছায় মৃত্যুর দিকে পা বাড়ায়?
বিভিন্ন কারণে এরা নিজেদের মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নেয়, এরমধ্যে একটি কারণ হলো, বৃদ্ধ হয়ে যাওয়া কিংবা অসুস্থ হয়ে যাওয়া। নিজের সময় ঘনিয়ে আসছে, এমনটা অনুভূত হলে এরা পানির একেবারে পানির গভীরে চলে যায়। এ সময় তাদের শক্তি ফুরিয়ে আসে, যার কারণে এরা শিকার করতে পারে না। এক সময় এরা নিস্তেজ হয়ে পড়তে শুরু করে।
এরপরই নিজেকে সমুদ্রের গভীরে নিজেকে সঁপে দিতে প্রস্তুত হতে থাকে এই নীল তিমি। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরা এ সময় চেষ্টা করে তাদের পাশে থাকার। এমনকি তাদের বাঁচানোর শেষ চেষ্টাটুকু চালিয়ে যায়। বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের মতে, যখনই এই নীল তিমিগুলো শিকার করতে অক্ষম হয়ে পড়ে তখন থেকেই মূলত এদের অন্তিমকাল ধরা হয়।
এ সময়ই তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। কিন্তু পরিশেষে জীবনের কাছে হার মানতে বাধ্য হয় এই প্রাণীটি। ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে থাকে এবং একসময় গভীর সমুদ্রে তলিয়ে যেতে শুরু করে। মৃত্যুর পরই তাদের জীবনের পরিসমাপ্তি না। এরা মারা গেলে নিজেকে বিলিয়ে দেয় অন্যান্য প্রাণীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।
তিমি মারা গেলে এদের দেহ সমুদ্রের নিচে চলে যায়। তখন অন্যান্য প্রাণী একে ধীরে ধীরে খেয়ে ফেলে। ফলে সমুদ্রের নিচে থাকা এসব প্রাণীর বেঁচে থাকার মাধ্যম হিসেবে তৈরী হয় তিমির এই মৃতদেহ। আর এভাবেই মৃত্যুর পরও এরা নিজেকে বিলিয়ে দিতে থাকে।
সমুদ্রসৈকতে মৃত তিমি। ছবি : সংগৃহীত |
No comments