ভূমি সচিবের পরিপত্র: সিলেটে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দৌড়ঝাঁপ
ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসনে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটরা বহাল তবিয়তেই রয়েছে। ইউনিয়ন থেকে অধিদপ্তর পর্যন্ত সিন্ডিকেটে থাকা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা চলমান জরিপের নামে নানা ঘটনা ঘটিয়েই যাচ্ছে। সিলেটে এখন চলছে গেজেট প্রকাশের প্রক্রিয়া। টালবাহানা করে সংশ্লিষ্টরা গেজেট প্রকাশেও বিলম্ব করছে। এ নিয়ে ভূমির মালিকদের মধ্যেও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই অবস্থায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ ১১ই নভেম্বর একটি পরিপত্র জারি করেছেন। এতে তিনি জানিয়েছেন, যেসব কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে তিন বছর কিংবা অধিককাল ধরে কর্মরত রয়েছেন তাদের যেন অনতিবিলম্বে বদলি করা হয়। তার এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দুর্নীতির শেকড় গেড়ে বসা এসব কর্মকর্তা, কর্মচারীরা নিজেদেরকে বহাল রাখতে নতুন করে করছেন দৌড়ঝাঁপ। পরিপত্রে সিনিয়র ভূমি সচিবের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়; ‘মাঠ পর্যায়ে ভূমি পরিষেবায় স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠাসহ জনবান্ধব ভূমি পরিষেবায় জনদুর্ভোগ ও হয়রানি পরিহারের লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগ পর্যায়ের ভূমি রাজস্ব প্রশাসন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের আওতাধীন একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে এক কর্মস্থল হতে অন্যত্র বদলি করা সমীচীন বলে প্রতীয়মান হওয়ায় মাঠপর্যায়ে ভূমি রাজস্ব প্রশাসন এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য পর্যায়ক্রমে সকল বিষয়ে কাজ করার সুযোগ দেয়া এবং মাঠপর্যায়ে জনবান্ধব ভূমিসেবা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে জনগণের দুর্ভোগ ও হয়রানি পরিহারের লক্ষ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারীদের মধ্যে যিনি বা যারা একই কর্মস্থলে বা একই শাখায় ৩ বৎসরের অধিককাল কর্মরত আছেন, তাদের কর্মস্থল বা শাখা পরিবর্তন বা অন্যত্র বদলি করার পরিপত্র জনস্বার্থে জারি করা হয় যা অবিলম্বে কার্যকর হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।’ এই আদেশ অভিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশনা দেয়া হয়। এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট সেটেলমেন্টে যুগের পর যুগ ধরে শেকড় গেড়ে বসা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিয়ে এখন তোলপাড় হচ্ছে। সিলেট অঞ্চলে জরিপ কাজ প্রায় শেষ। বর্তমানে গেজেট প্রকাশের কাজ চলছে।
গেজেটের পূর্বে শেষ মূহূর্তেও প্রকৃত মালিকদের বঞ্চিত করে টাকার বিনিময়ে অন্যদের নামে জমির মালিকানা দিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এসব করছেন দুর্নীতির শেকড় গেড়ে বসা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের অধীনে ১৯৮৭-৮৮ সালে পরিচালিত সিলেট বিভাগে ৩৯টি উপজেলায় ভূমি জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়। সে হিসেবে সিলেট বিভাগকে একটি জোনে বিভক্ত করা হয়। সিলেট জোনে মাঠ জরিপ স্তর থেকে চূড়ান্ত প্রকাশনা স্তর পর্যন্ত সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে বর্তমানে কিছু মৌজার বাঁধাইয়ের কাজ চলছে। উপজেলা পর্যায়ে স্থাপিত সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়ের নামে দৃশ্যমান আর কোনো অফিসের অস্তিত্ব এখন নেই। সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস থেকে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করার জন্য কাগজপত্রে নিজ নিজ উপজেলার সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের নামের সিল ব্যবহার করে তার উপজেলার তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। ১৯৮৭-৮৮ সাল থেকে জরিপ কাজে নিয়োজিত বহুসংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্মরত থাকলেও এখন সিলেট জোনে কাজ না থাকায় বেশির ভাগই অন্য জোনে বদলি বা পদায়ন হয়েছেন। বর্তমানে ২য় শ্রেণির কর্মকর্তা ১৫ জন, ৩য় শ্রেণির কর্মচারী ৩৯ জন ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী ৫২ জন কর্মরত থাকলেও তাদের হাতে কোনো কাজ নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে মাসের পর মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও নিয়মিত তারা বেতনভাতাদি পাচ্ছেন। অনেকেই গ্রামের বাড়িতে কিংবা সিলেট শহরে ব্যবসা-বাণিজ্য দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন।
রংপুর, বগুড়া, খুলনা, দিনাজপুর ও বরিশাল জোনে জনবল স্বল্পতার কারণে অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নিতে না পারায় বিগত গত বছরের ১লা নভেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা উল্লেখ করে পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) মোমিনুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক সরকারি আদেশে সিলেট জোনে কর্মহীন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নামের তালিকা প্রেরণ করার জন্য সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করেন। সে হিসেবে ১০৭ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নামের তালিকা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়। তালিকা মোতাবেক অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ১০৭ জন থেকে ২৪ জনকে বিভিন্ন জোনে বদলি, পদায়ন করলেও পরবর্তীতে ২য় শ্রেণির কর্মকর্তা ৫ জন এবং ৩য় শ্রেণির ১৪ জন কর্মচারীর বদলির আদেশ পুনরায় বাতিল করা হয়েছে। সিলেট সেটেলমেন্ট অফিসের কপিস্ট-কাম-বেঞ্চ সহকারী আব্দুল মান্নান বিগত ৩৪ বছর ধরে প্রেষণে একই অফিসে কর্মরত আছেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার দিঘুটিয়া গ্রামে। একই অফিসে ২০ বছর ধরে প্রেষণে কর্মরত ভারপ্রাপ্ত পেশকার সাধন কুমার চাকমাকে চট্টগ্রাম জোনে তাৎক্ষণিক বদলি করা হলেও তাকে আগামী ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বদলির আদেশ অধিদপ্তর স্থগিত করে। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. ফরিদ উদ্দিন, সনৎ কুমার নাথ, আব্দুল কাদের শেখ, দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, জাহাঙ্গীর আলম, আবু বকর ছিদ্দিক ও মো. নুরুজ্জামানকে সিলেট থেকে বিভিন্ন জোনে বদলি করা হলেও কয়েক দিনের ব্যবধানে অধিদপ্তর কর্তৃক পুনরায় সিলেট জোনে বহাল করা হয়েছে। নামের তালিকায় দেখা যায়, আগামী ২০২৫ সালে ১০৭ জন থেকে ৯ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী অবসরে যাবেন।
রংপুর, বগুড়া, খুলনা, দিনাজপুর ও বরিশাল জোনে জনবল স্বল্পতার কারণে অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নিতে না পারায় বিগত গত বছরের ১লা নভেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা উল্লেখ করে পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) মোমিনুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক সরকারি আদেশে সিলেট জোনে কর্মহীন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নামের তালিকা প্রেরণ করার জন্য সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করেন। সে হিসেবে ১০৭ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নামের তালিকা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়। তালিকা মোতাবেক অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ১০৭ জন থেকে ২৪ জনকে বিভিন্ন জোনে বদলি, পদায়ন করলেও পরবর্তীতে ২য় শ্রেণির কর্মকর্তা ৫ জন এবং ৩য় শ্রেণির ১৪ জন কর্মচারীর বদলির আদেশ পুনরায় বাতিল করা হয়েছে। সিলেট সেটেলমেন্ট অফিসের কপিস্ট-কাম-বেঞ্চ সহকারী আব্দুল মান্নান বিগত ৩৪ বছর ধরে প্রেষণে একই অফিসে কর্মরত আছেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার দিঘুটিয়া গ্রামে। একই অফিসে ২০ বছর ধরে প্রেষণে কর্মরত ভারপ্রাপ্ত পেশকার সাধন কুমার চাকমাকে চট্টগ্রাম জোনে তাৎক্ষণিক বদলি করা হলেও তাকে আগামী ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বদলির আদেশ অধিদপ্তর স্থগিত করে। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. ফরিদ উদ্দিন, সনৎ কুমার নাথ, আব্দুল কাদের শেখ, দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, জাহাঙ্গীর আলম, আবু বকর ছিদ্দিক ও মো. নুরুজ্জামানকে সিলেট থেকে বিভিন্ন জোনে বদলি করা হলেও কয়েক দিনের ব্যবধানে অধিদপ্তর কর্তৃক পুনরায় সিলেট জোনে বহাল করা হয়েছে। নামের তালিকায় দেখা যায়, আগামী ২০২৫ সালে ১০৭ জন থেকে ৯ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী অবসরে যাবেন।
No comments