বহুতল ভবনে পদে পদে জালিয়াতি by দীন ইসলাম
বহুতল
ভবনের নকশা যাচাই করতে গিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)- এর
কর্মকর্তাদের চোখ কপালে। অনুমোদিত নকশার সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবে ভবনের
কোনো মিল পাচ্ছে না রাজউকের টিমগুলো। ৯৯ ভাগ ভবনেই নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে
ডেভিয়েশন করা হয়েছে। বেশির ভাগ হাইরাইজ ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা রাখা
হয়নি। ৯৯ ভাগ ভবনই অকুপেন্সি সার্টিফিকেট (ভবন ব্যবহারের সনদ) দেখাতে
পারেনি। গুলশান, বনানী, মহাখালী ও মতিঝিলের হাইরাইজ ভবনগুলোর নকশা দেখতে
গিয়ে এমন অবস্থা দেখছেন রাজউকের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ছিল রাজউকের উঁচু ভবন পরিদর্শনের তৃতীয় দিন। রাজউকের আটটি অঞ্চলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে গঠিত ২৪টি দল এই পরিদর্শনের কাজ করছে।
দলগুলো নকশানুযায়ী ভবনের বিভিন্ন তথ্য নথিভুক্ত করছে। কোনো কোনো অঞ্চলে পরিদর্শন চলছে সন্ধ্যা পর্যন্ত। নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মিত হয়েছে কিনা এবং অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিকভাবে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে রাজউকের টিমগুলো। পরিদর্শনের সময় বেশিরভাগ ভবনে রাজউক অনুমোদিত নকশার গরমিল এবং অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থায় দুর্বলতা খুঁজে পাচ্ছেন পরিদর্শনকারীরা। গুলশান ও বনানী এলাকার ভবনগুলো নির্মাণে সবচেয়ে বেশি ডেভিয়েশন করা হয়েছে। এছাড়া এসব ভবন রক্ষণাবেক্ষণে নানা ক্রটি লক্ষ্য করা গেছে। বিষয়টি সর্ম্পকে জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, আমি এখনও হাইরাইজ ভবনগুলোর অবস্থা সর্ম্পকে জানি না। ১৫ দিন পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নেতৃত্বাধীন টিমগুলো রিপোর্ট করলে বাস্তব চিত্র জানতে পারবো।
এর আগে বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর হাইরাইজ ভবন পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ১৫ দিনের মধ্যে রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ১০ তলার ওপরের ভবনগুলোর পরিদর্শনকাজ শেষ করতে বলা হয়। জোন-৫ সূত্রে জানা গেছে, গতকালও তারা ধানমন্ডি এলাকার বহুতল ভবন পরিদর্শন করেছেন। এ পর্যন্ত ৩০ টি ভবন পরিদর্শন করেন তারা। এ সময় তারা ভবনগুলোর ক্রটি’র তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি কোন ভবনে কি ব্যত্যয় ঘটেছে তা ছক আকারে লিপিবদ্ধ করেন। জোন-৫ এর একজন কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, আপাতত আমরা ভবনের ক্রটিগুলো চিহ্নিত করছি। ক্রুটি পাওয়া ভবনগুলোর বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে এ বিষয়ে পরবর্তীতে রাজউক সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানযোগ্য ভবনগুলোতে আমরা নির্দেশনা দিয়ে আসছি।
তবে বড় সমস্যাগুলোর জন্য রাজউক কি ব্যবস্থা নেবে তা পরে ঠিক করবেন নীতি নির্ধারকরা। ধানমন্ডির বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে ব্যাংক, রেঁস্তোরা ও ইনস্যুরেন্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বেশ কয়েকটি ভবনে রেস্টুরেন্ট ছাড়া কিছু নেই। এসব রেস্টুরেন্টে সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে। অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থাও ঠিকভাবে রাখা হয়নি। বিভিন্ন ভবনে পার্কিংয়ের জায়গায় জেনারেটর স্থাপন করা হয়েছে। অনেক পার্কিংয়ে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা আছে। এছাড়া বিভিন্ন অব্যবহৃত কাঁচের পণ্য, চেয়ার ও প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখা হয়েছে। জোন-৩-এ গতকাল তিনটি দলে ভাগ হয়ে নারায়ণগঞ্জের বিবি রোড, নিতাইগঞ্জ, চাষাঢ়া, ফতুল্লা কালীবাড়ি এলাকায় বিভিন্ন ভবনের তথ্য সংগ্রহ করে। রাজউক অনুমোদিত নকশা মিলিয়ে বেসমেন্ট পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করা, র্যাম্পের খারাপ অবস্থা, অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা না রাখাসহ বেশ কিছু ভবনের ব্যত্যয় পায় রাজউক। এদিকে জোন-২ গত তিন দিনে ২৯ টি হাইরাইজ ভবনের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে তিনটি নির্মানাধীন বহুতল ভবন রয়েছে।
৯৮ সালে অনুমোদিত নকশায় গরমিল দেখতে পেয়েছে এসব টিম। জোন-২/১ এর অথরাইজ অফিসার মো. আশরাফুল ইসলাম মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন, হাইরাইজ ভবনের প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করছি আমরা। এগুলো একসঙ্গে করার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমাদের টিমগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে আলোচিত এফআর টাওয়ারের পাশের ভবনগুলোর নকশা অনুমোদন নিয়ে নানা ঘাপলা রয়েছে। গতকাল বনানীতে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ডা. এইচবিএম ইকবাল- এর মালিকানাধীন ইকবাল সেন্টার পরিদর্শন করে রাজউকের টিম।
তারা দেখতে পায় ইকবাল সেন্টারটি ২৩ তলা। রাজউকের অনুমোদিত নকশায় ভবনটি ১৮ তলা পর্যন্ত নির্মাণের বৈধতা রয়েছে। কিন্তু নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে আরো অতিরিক্ত ৫তলা বানানো হয়। গতকাল রাজউকের টিম সরজমিনে দেখতে পায়, রাজউক ১৮তলার নকশা অনুমোদন দিয়েছে। তারা নকশার নির্দেশনা মানেনি। অতিরিক্ত ৫ তলার জন্য ২০১৫ সালে রাজউক বরাবর অনুমোদনের জন্য একটি আবেদন করা হয়। যেটি বাতিল করে দেয় রাজউক। পরে তারা নিয়ম বহির্ভূতভাবেই ভবনটির এসব তলা পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া ভবনটিতে রয়েছে একটি মাত্র সিঁড়ি। অগ্নি-নিরাপত্তা সিঁড়ি তৈরি করা হয়নি। নেই ভবনের সামনে পিছনে ফুটপাথের জন্য খালি রাখার নির্দিষ্ট জায়গা। রাজউকের এ টিমটি ভবন কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দ্রুত অপসারণ করতে বলেছে।
বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই রাজউক নড়েচরে বসে। আটটি জোনের অধীনে ২৪ টিম রাজধানীর ১০তলার উপরের বহুতল ভবন পরিদর্শনে নামে। এফআর টাওয়ারের পার্শ্ববর্তী ভবনগুলো পরিদর্শন করে রাজউকের অঞ্চল-৪ এর অধীনে একটি টিম। টিমটির নেতৃত্বে রয়েছেন অঞ্চল-৪ এর পরিচালক মামুন মিয়া। তার নেতৃত্বেই গতকাল এফআর টাওয়ারের পাশের আউয়াল সেন্টার থেকে পরিদর্শন শুরু করে। এ ভবনটিতে মঙ্গলবারও রাজউকের টিমটি পরিদর্শনে যায়। তখন তারা ভবনের নকশা দেখাতে ব্যর্থ হয়। গতকালও তারা নকশা দেখাতে পারেনি। এ ভবনটির উচ্চতা ২৩ তলা। যা রাজউকের অনুমোদন বহির্ভূত। পরিদর্শন শেষ হলেই রাজউক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বলে জানায়।
এরপাশের ভবন ডেলটা ডালিয়া। উচ্চতা ১৬ তলা। উপরের কয়েকটি তলা আবাসিকের অনুমতি নিয়ে সেখানেও পরিচালনা করছে বাণিজ্যিক। নেই কোনো অগ্নি নিরাপত্তা সিঁড়ি। নকশায় ভবনের নিচের তলা খোলা থাকার কথা থাকলেও তা নেই। ভবনের সামনে রয়েছে ব্যাংকের বুথ। যেটি নকশায় নেই।
পাশের ব্লু ওশেন ভবন। বহুতল এ ভবনটির উচ্চতা ২১ তলা। ভবনের সামনে ফুটপাথ থেকে খালি রাখার জায়গা থাকার কথা থাকলেও তা নেই। নকশার সম্পূর্ণ ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিঁড়ির স্থানে লিফট আর লিফটের স্থানে তৈরি করা হয়েছে সিঁড়ি। ভবনটিতে অগ্নিনির্গমন সিড়িও নেই। এছাড়া ভবনটির ২০ ও ২১ তলায় আবাসিক অনুমোদন থাকলেও ওই তলা গুলোও বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনা হচ্ছে। যদিও রাজউক বলছে বনানী-গুলশান এলাকায় ১৮/১৯ তলার উপরে বহুতল ভবনের অনুমোদন নেই।
রাজউকের টিমটি বনানী সুপার মার্কেট সংলগ্ন সুইট ড্রিমস ভবন পরিদর্শন করে। এ ভবনটিতে পরিচালনা করা হচ্ছে সুইট ড্রিমস হোটেল। রাজউক ভবনটির ১৬ তলার নকশার অনুমোদন দেয়।
কিন্তু ভবনটি তৈরি করা হয়েছে ১৮ তলা। ভবনটির চূড়ার দুই তলা তৈরি করা হয়েছে কাঠ ও টিন দিয়ে। ভবনের ছাদে উঠার সিঁড়ির জন্য প্রশস্থ জায়গা নেই। এছাড়া ভবনে রয়েছে একটি মাত্র সিঁড়ি। নকশায় অগ্নিনির্গমন পথ নেই। প্রথম তলা খোলা জায়গা থাকার কথা থাকলেও সেটা রাখা হয়নি, ভবনের সামনে রয়েছে দু’টি ব্যাংকের বুথ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ছিল রাজউকের উঁচু ভবন পরিদর্শনের তৃতীয় দিন। রাজউকের আটটি অঞ্চলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে গঠিত ২৪টি দল এই পরিদর্শনের কাজ করছে।
দলগুলো নকশানুযায়ী ভবনের বিভিন্ন তথ্য নথিভুক্ত করছে। কোনো কোনো অঞ্চলে পরিদর্শন চলছে সন্ধ্যা পর্যন্ত। নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মিত হয়েছে কিনা এবং অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিকভাবে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে রাজউকের টিমগুলো। পরিদর্শনের সময় বেশিরভাগ ভবনে রাজউক অনুমোদিত নকশার গরমিল এবং অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থায় দুর্বলতা খুঁজে পাচ্ছেন পরিদর্শনকারীরা। গুলশান ও বনানী এলাকার ভবনগুলো নির্মাণে সবচেয়ে বেশি ডেভিয়েশন করা হয়েছে। এছাড়া এসব ভবন রক্ষণাবেক্ষণে নানা ক্রটি লক্ষ্য করা গেছে। বিষয়টি সর্ম্পকে জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, আমি এখনও হাইরাইজ ভবনগুলোর অবস্থা সর্ম্পকে জানি না। ১৫ দিন পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নেতৃত্বাধীন টিমগুলো রিপোর্ট করলে বাস্তব চিত্র জানতে পারবো।
এর আগে বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর হাইরাইজ ভবন পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ১৫ দিনের মধ্যে রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ১০ তলার ওপরের ভবনগুলোর পরিদর্শনকাজ শেষ করতে বলা হয়। জোন-৫ সূত্রে জানা গেছে, গতকালও তারা ধানমন্ডি এলাকার বহুতল ভবন পরিদর্শন করেছেন। এ পর্যন্ত ৩০ টি ভবন পরিদর্শন করেন তারা। এ সময় তারা ভবনগুলোর ক্রটি’র তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি কোন ভবনে কি ব্যত্যয় ঘটেছে তা ছক আকারে লিপিবদ্ধ করেন। জোন-৫ এর একজন কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, আপাতত আমরা ভবনের ক্রটিগুলো চিহ্নিত করছি। ক্রুটি পাওয়া ভবনগুলোর বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে এ বিষয়ে পরবর্তীতে রাজউক সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানযোগ্য ভবনগুলোতে আমরা নির্দেশনা দিয়ে আসছি।
তবে বড় সমস্যাগুলোর জন্য রাজউক কি ব্যবস্থা নেবে তা পরে ঠিক করবেন নীতি নির্ধারকরা। ধানমন্ডির বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে ব্যাংক, রেঁস্তোরা ও ইনস্যুরেন্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বেশ কয়েকটি ভবনে রেস্টুরেন্ট ছাড়া কিছু নেই। এসব রেস্টুরেন্টে সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে। অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থাও ঠিকভাবে রাখা হয়নি। বিভিন্ন ভবনে পার্কিংয়ের জায়গায় জেনারেটর স্থাপন করা হয়েছে। অনেক পার্কিংয়ে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা আছে। এছাড়া বিভিন্ন অব্যবহৃত কাঁচের পণ্য, চেয়ার ও প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখা হয়েছে। জোন-৩-এ গতকাল তিনটি দলে ভাগ হয়ে নারায়ণগঞ্জের বিবি রোড, নিতাইগঞ্জ, চাষাঢ়া, ফতুল্লা কালীবাড়ি এলাকায় বিভিন্ন ভবনের তথ্য সংগ্রহ করে। রাজউক অনুমোদিত নকশা মিলিয়ে বেসমেন্ট পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করা, র্যাম্পের খারাপ অবস্থা, অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা না রাখাসহ বেশ কিছু ভবনের ব্যত্যয় পায় রাজউক। এদিকে জোন-২ গত তিন দিনে ২৯ টি হাইরাইজ ভবনের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে তিনটি নির্মানাধীন বহুতল ভবন রয়েছে।
৯৮ সালে অনুমোদিত নকশায় গরমিল দেখতে পেয়েছে এসব টিম। জোন-২/১ এর অথরাইজ অফিসার মো. আশরাফুল ইসলাম মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন, হাইরাইজ ভবনের প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করছি আমরা। এগুলো একসঙ্গে করার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমাদের টিমগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এদিকে আলোচিত এফআর টাওয়ারের পাশের ভবনগুলোর নকশা অনুমোদন নিয়ে নানা ঘাপলা রয়েছে। গতকাল বনানীতে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ডা. এইচবিএম ইকবাল- এর মালিকানাধীন ইকবাল সেন্টার পরিদর্শন করে রাজউকের টিম।
তারা দেখতে পায় ইকবাল সেন্টারটি ২৩ তলা। রাজউকের অনুমোদিত নকশায় ভবনটি ১৮ তলা পর্যন্ত নির্মাণের বৈধতা রয়েছে। কিন্তু নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে আরো অতিরিক্ত ৫তলা বানানো হয়। গতকাল রাজউকের টিম সরজমিনে দেখতে পায়, রাজউক ১৮তলার নকশা অনুমোদন দিয়েছে। তারা নকশার নির্দেশনা মানেনি। অতিরিক্ত ৫ তলার জন্য ২০১৫ সালে রাজউক বরাবর অনুমোদনের জন্য একটি আবেদন করা হয়। যেটি বাতিল করে দেয় রাজউক। পরে তারা নিয়ম বহির্ভূতভাবেই ভবনটির এসব তলা পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া ভবনটিতে রয়েছে একটি মাত্র সিঁড়ি। অগ্নি-নিরাপত্তা সিঁড়ি তৈরি করা হয়নি। নেই ভবনের সামনে পিছনে ফুটপাথের জন্য খালি রাখার নির্দিষ্ট জায়গা। রাজউকের এ টিমটি ভবন কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দ্রুত অপসারণ করতে বলেছে।
বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই রাজউক নড়েচরে বসে। আটটি জোনের অধীনে ২৪ টিম রাজধানীর ১০তলার উপরের বহুতল ভবন পরিদর্শনে নামে। এফআর টাওয়ারের পার্শ্ববর্তী ভবনগুলো পরিদর্শন করে রাজউকের অঞ্চল-৪ এর অধীনে একটি টিম। টিমটির নেতৃত্বে রয়েছেন অঞ্চল-৪ এর পরিচালক মামুন মিয়া। তার নেতৃত্বেই গতকাল এফআর টাওয়ারের পাশের আউয়াল সেন্টার থেকে পরিদর্শন শুরু করে। এ ভবনটিতে মঙ্গলবারও রাজউকের টিমটি পরিদর্শনে যায়। তখন তারা ভবনের নকশা দেখাতে ব্যর্থ হয়। গতকালও তারা নকশা দেখাতে পারেনি। এ ভবনটির উচ্চতা ২৩ তলা। যা রাজউকের অনুমোদন বহির্ভূত। পরিদর্শন শেষ হলেই রাজউক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বলে জানায়।
এরপাশের ভবন ডেলটা ডালিয়া। উচ্চতা ১৬ তলা। উপরের কয়েকটি তলা আবাসিকের অনুমতি নিয়ে সেখানেও পরিচালনা করছে বাণিজ্যিক। নেই কোনো অগ্নি নিরাপত্তা সিঁড়ি। নকশায় ভবনের নিচের তলা খোলা থাকার কথা থাকলেও তা নেই। ভবনের সামনে রয়েছে ব্যাংকের বুথ। যেটি নকশায় নেই।
পাশের ব্লু ওশেন ভবন। বহুতল এ ভবনটির উচ্চতা ২১ তলা। ভবনের সামনে ফুটপাথ থেকে খালি রাখার জায়গা থাকার কথা থাকলেও তা নেই। নকশার সম্পূর্ণ ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিঁড়ির স্থানে লিফট আর লিফটের স্থানে তৈরি করা হয়েছে সিঁড়ি। ভবনটিতে অগ্নিনির্গমন সিড়িও নেই। এছাড়া ভবনটির ২০ ও ২১ তলায় আবাসিক অনুমোদন থাকলেও ওই তলা গুলোও বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনা হচ্ছে। যদিও রাজউক বলছে বনানী-গুলশান এলাকায় ১৮/১৯ তলার উপরে বহুতল ভবনের অনুমোদন নেই।
রাজউকের টিমটি বনানী সুপার মার্কেট সংলগ্ন সুইট ড্রিমস ভবন পরিদর্শন করে। এ ভবনটিতে পরিচালনা করা হচ্ছে সুইট ড্রিমস হোটেল। রাজউক ভবনটির ১৬ তলার নকশার অনুমোদন দেয়।
কিন্তু ভবনটি তৈরি করা হয়েছে ১৮ তলা। ভবনটির চূড়ার দুই তলা তৈরি করা হয়েছে কাঠ ও টিন দিয়ে। ভবনের ছাদে উঠার সিঁড়ির জন্য প্রশস্থ জায়গা নেই। এছাড়া ভবনে রয়েছে একটি মাত্র সিঁড়ি। নকশায় অগ্নিনির্গমন পথ নেই। প্রথম তলা খোলা জায়গা থাকার কথা থাকলেও সেটা রাখা হয়নি, ভবনের সামনে রয়েছে দু’টি ব্যাংকের বুথ।
No comments