এবার খিলগাঁওয়ে আগুনের হানা- পুড়লো ৪০ দোকান
ঈদ
সামনে রেখে সাজানো দোকান লণ্ডভণ্ড হয়েছে আগুনে। পুড়ে যাবার পর নিজের হাতে
গড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চিনতে পারছেন না দোকানিরা। চিনবেন কি করে, আগের দিন
পরম যত্নে রেখে যাওয়া দোকানগুলো পুড়ে ছাই হয়েছে আগুনে। প্রায় ৫০ ফুট উপরে
থাকা ফ্লাইওভারের সাদা কংক্রিটের পিলার ও কাঠামো ধোঁয়ায় কালো হয়ে গেছে। গত
বুধবার রাতে খিলগাঁও রেলওয়ে গেটের পাশের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন
(ডিএনসিসি) মার্কেটে আগুন লেগে পুড়ে গেছে অন্তত ৪০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রাতের বেলা দোকানে থাকতেন এমন জনা বিশেক মানুষ আগুন লাগার পর প্রাণে বেঁচে গেলেও নিজ চোখে পুড়ে যেতে দেখেছেন একেকটি দোকান। গতকাল ঘটনাস্থলে গিয়েও পাওয়া যায় আগুনের উত্তাপ।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অন্তত তিন ঘণ্টার চেষ্টায় ভোরে আগুন নিভে গেলেও ধোঁয়া আর তাপ ছড়াচ্ছে তখনো। খিলগাঁও রেলওয়ে গেটের পাশে ডিএনসিসি মার্কেটের একেবারে ভেতরের দিকের অংশে বুধবার রাত পৌনে তিনটার দিকে আগুন লাগে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এই অংশের বেশিরভাগ দোকানে কাপড়, প্লাস্টিক, ইলেকট্রিক ও হার্ডওয়ার পণ্য থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাদের মতে, মার্কেটের শেষের দিকে থাকা কামার পট্টির কোন দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে কেউ কেউ অভিযোগ করছেন মার্কেটের উপর দিয়ে চলে যাওয়া ফ্লাইওভার থেকে ফেলে দেয়া সিগারেট থেকে আগুন লেগেছে।
আগুনের সূত্রপাত নিয়ে বিতর্কের মাঝেই হা-হুতাশ করতে থাকেন ব্যবসায়ীরা। মজিবর ক্রোকারীজের মালিক হাবিবুর রহমান মানবজমিনকে জানান, আগুনে তার দোকানের প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। প্লাস্টিক পণ্য ও নানা ধরনের গিফট আইটেম ছিল এসবের মধ্যে। ঈদ সামনে রেখে গতকাল বুধবার রাতে আরো ৬০ হাজার টাকার মালামাল আনেন হাবিবুর রহমান। তাড়াহুড়োর কারণে দোকানে সাজাতেও পারেননি। বাক্সবন্দি থাকা ক্রোকারিজ পণ্যগুলো আগুনে পুড়ে গেছে। নিজের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দিতে গিয়ে বারে বারে কান্নায় জড়িয়ে যাচ্ছিলেন হাবিবুর। বুধবার রাতে বাসায় যাবার পর ভোরের দিকে আগুনের কথা জানতে পারেন তিনি। সাথে সাথে মার্কেটে গিয়ে দেখেন ততক্ষণে সব শেষ। কয়েক বছর ধরে গড়ে তোলা নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চিনে নিতেই কষ্ট হচ্ছে তার।
মার্কেটের পুড়ে যাওয়া অংশের বেশিরভাগ দোকানে ছিল শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, মশারী, প্লাস্টিক ও ক্রোকারীজ পণ্য, বৈদ্যুতিক তারসহ নানা ইলেকট্রিক পণ্য। পাশাপাশি ছিল কয়েকটি ভাঙ্গারি ও কামারশালার দোকান। তবে আগুনে এগুলোর খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আগুনের রাতে কামারপট্টির একটি দোকানে ঘুমুচ্ছিলেন জয়ন্ত কর্মকার (২৭)। রাত পৌনে দুইটার দিকে আগুন লেগেছে বলে পাশের আরেকটি দোকানের কয়েকজনের চিৎকার শুনতে পান। পরে, মার্কেটের চাল বেয়ে উপরে উঠে নিরাপদ দুরত্বে চলে যান জয়ন্ত। মার্কেটের ভেতরে থাকা বেশ কয়েকজন নিরাপদে বের হতে পারলেও টিনের চালে একজনের পা ও হাতের অংশ কেটে যায়। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান জয়ন্ত কর্মকার। মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী আবুল হাশেম জানান, আগুন লাগার পর পর ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মশারী, কাপড়চোপড় ও অন্যান্য দাহ্য বস্তু থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে যায়। তবে ঘটনার ৩০ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস চলে আসায় ভোর ছয়টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। নাম প্রকাশ করতে চান না এমন একজন ব্যবসায়ী জানান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা মার্কেটটিতে আগুন নেভানোর কোন ব্যবস্থা ছিলো না।
মার্কেটে প্রবেশের গলিপথ এত সরু যে দু’জন মানুষ একসাথে চলতে গেলে আটকে যেতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিস কাজ করতে গিয়ে অনেক বেগ পোহাতে হয়েছে। প্রথমে গলির ভেতরে পানি ভরে ফেলা হয়। প্রায় হাঁটু পানি হবার পর সেখান থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানো হয় বলে জানান হাজী জুয়েলার্সের কর্মী মোহাম্মদ আলী। আগুনের রাতে তিনিও মার্কেটের ভেতরে ছিলেন। তবে তাড়াতাড়ি টের পাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সোনা মিয়া কয়েক মাস আগে নিজের দুই কাঠা জমি মোট ৫২ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। সেখান থেকে ছয় লাখ টাকা দিয়ে দেনা শোধ করেন। বাকি টাকা দিয়ে ভাড়ায় থাকা দোকান ও আরেকটি দোকান নিজের নামে কিনে নেন। নানা হার্ডওয়ার ইলেকট্রনিক পণ্যে সাজান দোকান দুটিকে। অথচ আগুন তার সহায়-সম্বল কেড়ে নিয়ে গেছে। মার্কেটে নিজের দোকানের সামনে বিলাপ করা ছাড়া আর কিইবা করার আছে তার। মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোকসেদুর রহমান জানান, ব্যবসায়ীদের দ্রুত পুর্নবাসনে সিটি করপোরশেনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
রাতের বেলা দোকানে থাকতেন এমন জনা বিশেক মানুষ আগুন লাগার পর প্রাণে বেঁচে গেলেও নিজ চোখে পুড়ে যেতে দেখেছেন একেকটি দোকান। গতকাল ঘটনাস্থলে গিয়েও পাওয়া যায় আগুনের উত্তাপ।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অন্তত তিন ঘণ্টার চেষ্টায় ভোরে আগুন নিভে গেলেও ধোঁয়া আর তাপ ছড়াচ্ছে তখনো। খিলগাঁও রেলওয়ে গেটের পাশে ডিএনসিসি মার্কেটের একেবারে ভেতরের দিকের অংশে বুধবার রাত পৌনে তিনটার দিকে আগুন লাগে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এই অংশের বেশিরভাগ দোকানে কাপড়, প্লাস্টিক, ইলেকট্রিক ও হার্ডওয়ার পণ্য থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাদের মতে, মার্কেটের শেষের দিকে থাকা কামার পট্টির কোন দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে কেউ কেউ অভিযোগ করছেন মার্কেটের উপর দিয়ে চলে যাওয়া ফ্লাইওভার থেকে ফেলে দেয়া সিগারেট থেকে আগুন লেগেছে।
আগুনের সূত্রপাত নিয়ে বিতর্কের মাঝেই হা-হুতাশ করতে থাকেন ব্যবসায়ীরা। মজিবর ক্রোকারীজের মালিক হাবিবুর রহমান মানবজমিনকে জানান, আগুনে তার দোকানের প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। প্লাস্টিক পণ্য ও নানা ধরনের গিফট আইটেম ছিল এসবের মধ্যে। ঈদ সামনে রেখে গতকাল বুধবার রাতে আরো ৬০ হাজার টাকার মালামাল আনেন হাবিবুর রহমান। তাড়াহুড়োর কারণে দোকানে সাজাতেও পারেননি। বাক্সবন্দি থাকা ক্রোকারিজ পণ্যগুলো আগুনে পুড়ে গেছে। নিজের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দিতে গিয়ে বারে বারে কান্নায় জড়িয়ে যাচ্ছিলেন হাবিবুর। বুধবার রাতে বাসায় যাবার পর ভোরের দিকে আগুনের কথা জানতে পারেন তিনি। সাথে সাথে মার্কেটে গিয়ে দেখেন ততক্ষণে সব শেষ। কয়েক বছর ধরে গড়ে তোলা নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চিনে নিতেই কষ্ট হচ্ছে তার।
মার্কেটের পুড়ে যাওয়া অংশের বেশিরভাগ দোকানে ছিল শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, মশারী, প্লাস্টিক ও ক্রোকারীজ পণ্য, বৈদ্যুতিক তারসহ নানা ইলেকট্রিক পণ্য। পাশাপাশি ছিল কয়েকটি ভাঙ্গারি ও কামারশালার দোকান। তবে আগুনে এগুলোর খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আগুনের রাতে কামারপট্টির একটি দোকানে ঘুমুচ্ছিলেন জয়ন্ত কর্মকার (২৭)। রাত পৌনে দুইটার দিকে আগুন লেগেছে বলে পাশের আরেকটি দোকানের কয়েকজনের চিৎকার শুনতে পান। পরে, মার্কেটের চাল বেয়ে উপরে উঠে নিরাপদ দুরত্বে চলে যান জয়ন্ত। মার্কেটের ভেতরে থাকা বেশ কয়েকজন নিরাপদে বের হতে পারলেও টিনের চালে একজনের পা ও হাতের অংশ কেটে যায়। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান জয়ন্ত কর্মকার। মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী আবুল হাশেম জানান, আগুন লাগার পর পর ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মশারী, কাপড়চোপড় ও অন্যান্য দাহ্য বস্তু থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে যায়। তবে ঘটনার ৩০ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস চলে আসায় ভোর ছয়টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। নাম প্রকাশ করতে চান না এমন একজন ব্যবসায়ী জানান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা মার্কেটটিতে আগুন নেভানোর কোন ব্যবস্থা ছিলো না।
মার্কেটে প্রবেশের গলিপথ এত সরু যে দু’জন মানুষ একসাথে চলতে গেলে আটকে যেতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিস কাজ করতে গিয়ে অনেক বেগ পোহাতে হয়েছে। প্রথমে গলির ভেতরে পানি ভরে ফেলা হয়। প্রায় হাঁটু পানি হবার পর সেখান থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানো হয় বলে জানান হাজী জুয়েলার্সের কর্মী মোহাম্মদ আলী। আগুনের রাতে তিনিও মার্কেটের ভেতরে ছিলেন। তবে তাড়াতাড়ি টের পাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সোনা মিয়া কয়েক মাস আগে নিজের দুই কাঠা জমি মোট ৫২ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। সেখান থেকে ছয় লাখ টাকা দিয়ে দেনা শোধ করেন। বাকি টাকা দিয়ে ভাড়ায় থাকা দোকান ও আরেকটি দোকান নিজের নামে কিনে নেন। নানা হার্ডওয়ার ইলেকট্রনিক পণ্যে সাজান দোকান দুটিকে। অথচ আগুন তার সহায়-সম্বল কেড়ে নিয়ে গেছে। মার্কেটে নিজের দোকানের সামনে বিলাপ করা ছাড়া আর কিইবা করার আছে তার। মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোকসেদুর রহমান জানান, ব্যবসায়ীদের দ্রুত পুর্নবাসনে সিটি করপোরশেনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
No comments