রোহিঙ্গাদের কারণে খাদ্য ঘাটতির কোনও আশঙ্কা নাই -ফাও-এর প্রতিবেদন প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয় by শফিকুল ইসলাম
কক্সবাজারে
আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতির কোনও আশঙ্কা নাই।
কারণ খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে রোহিঙ্গাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয় না।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর মাধ্যমে তাদের খাদ্য সরবরাহ করা
হয়। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি
সংস্থা (ফাও)-এর একটি প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব তথ্য জানিয়েছে খাদ্য
মন্ত্রণালয়।
এর আগে একই দিনে ফাও-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গার চাপে দানাদার খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনকারী দেশ হয়েও খাদ্য নিরাপত্তাহীন দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অ্যাগেইনস্ট ফুড ক্রাইসিস-এর এক প্রতিবেদনে কক্সবাজারের ১৫ লাখ মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, সেখানকার ১৩ লাখ মানুষই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন।
এই প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদফতর জানায়, পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। তাই ঘাটতির কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে ফাও-এর প্রতিবেদন সরকার খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিবেদনের বিষয়টি আমরা এখনও জানি না। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছি, বিষয়টি কী?’
তিনি আরও জানান, খাদ্যশস্যের মজুদ সন্তোষজনক। মাসিক চাহিদা ও বিতরণ পরিকল্পনার তুলনায় পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এই মুহূর্তে দেশে খাদ্যশস্যের কোনও ঘাটতি নাই বা ঘাটতির কোনও সম্ভাবনাও নাই।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘প্রতিবেদনটিতে যদি এমন মন্তব্য করে থাকে যে- রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে, তাহলে বিষয়টি সঠিক নয়। রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের খাদ্য ঝুঁকিতে পড়ার কোনও কারণ নাই। কেননা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের খাবারের ব্যবস্থা করছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার সহায়তায় রোহিঙ্গাদের সহায়তা করা হচ্ছে। এখানে সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় যুক্ত নয়।’
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এটি পরিষ্কার যে, সরকার প্রতিবছর দেশের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে। যদি কোনও কারণে রোহিঙ্গাদের খাবারের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হতো, তাহলে সরকার নিশ্চয়ই বাড়তি সংগ্রহ করতো। যেহেতু সরকার বাড়তি সংগ্রহ করছে না, সেহেতু প্রতিবেদনের বক্তব্য সঠিক নয়।’
খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আমন সংগ্রহ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত ৭ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬৬ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। চলতি বোরো সংগ্রহ মৌসুমে ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২ লাখ ২৯ হাজার ৫৭৮ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল, ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪২ মেট্রিক টন আতপ চাল এবং ২৪ হাজার ৪৭১ মেট্রিক টন ধানসহ মোট ১৩ লাখ ৯৫ হাজার ৪২৬ মেট্রিক টন বোরো চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
খাদ্য অধিদফতর সূত্র আরও জানায়, ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত খাদ্যশস্যের সরকারি গুদামজাতকৃত মোট মজুদ ১৪ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন। এরমধ্যে চাল ১২ লাখ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন এবং গম ১ লাখ ৫৯ হাজার মেট্রিক টন। এই মজুদ সন্তোষজনক, ঘাটতির কোনও সম্ভাবনা নাই।
এদিকে কৃষি বিপণন অধিদফতরের তথ্য মতে, দেশের চালের বাজারদর ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের পাইকারি মূল্য ২৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২৭ টাকা ৫০ পয়সা, যা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা থেকে ৩৪ টাকা। প্রতি কেজি আটা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৭ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরে।
খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও) এর ২০১৮ সালের খাদ্য উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধানের উৎপাদন প্রবৃদ্ধির হারে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে এখানে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আমন, আউশ ও বোরো মিলিয়ে বর্তমানে দেশে ধানের বার্ষিক ফলন ৩ কোটি ৬২ লাখ টনের বেশি। ভুট্টা উৎপাদন ছাড়িয়েছে ২৭ লাখ টন। আবহাওয়াগত কারণে গমের পাশাপাশি এক কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদন হচ্ছে দেশে। সবজি ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনেও সাফল্য এসেছে। সব মিলিয়ে দানাদার খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
তবে গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) প্রকাশিত ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস: জয়েন্ট অ্যানালাইসিস ফর বেটার ডিসিশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চারটি দেশে প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ এর মধ্যে অন্যতম। খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা এই অঞ্চলের বাকি তিনটি দেশ হলো- মিয়ানমার, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গারা। এরপর থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে এই সংখ্যা প্রায় দশ লাখে পৌঁছেছে।
এর আগে একই দিনে ফাও-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গার চাপে দানাদার খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনকারী দেশ হয়েও খাদ্য নিরাপত্তাহীন দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অ্যাগেইনস্ট ফুড ক্রাইসিস-এর এক প্রতিবেদনে কক্সবাজারের ১৫ লাখ মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, সেখানকার ১৩ লাখ মানুষই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন।
এই প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদফতর জানায়, পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। তাই ঘাটতির কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে ফাও-এর প্রতিবেদন সরকার খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিবেদনের বিষয়টি আমরা এখনও জানি না। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। আমরা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছি, বিষয়টি কী?’
তিনি আরও জানান, খাদ্যশস্যের মজুদ সন্তোষজনক। মাসিক চাহিদা ও বিতরণ পরিকল্পনার তুলনায় পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। এই মুহূর্তে দেশে খাদ্যশস্যের কোনও ঘাটতি নাই বা ঘাটতির কোনও সম্ভাবনাও নাই।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘প্রতিবেদনটিতে যদি এমন মন্তব্য করে থাকে যে- রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে, তাহলে বিষয়টি সঠিক নয়। রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের খাদ্য ঝুঁকিতে পড়ার কোনও কারণ নাই। কেননা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের খাবারের ব্যবস্থা করছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার সহায়তায় রোহিঙ্গাদের সহায়তা করা হচ্ছে। এখানে সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় যুক্ত নয়।’
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এটি পরিষ্কার যে, সরকার প্রতিবছর দেশের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে। যদি কোনও কারণে রোহিঙ্গাদের খাবারের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হতো, তাহলে সরকার নিশ্চয়ই বাড়তি সংগ্রহ করতো। যেহেতু সরকার বাড়তি সংগ্রহ করছে না, সেহেতু প্রতিবেদনের বক্তব্য সঠিক নয়।’
খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আমন সংগ্রহ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত ৭ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬৬ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। চলতি বোরো সংগ্রহ মৌসুমে ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২ লাখ ২৯ হাজার ৫৭৮ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল, ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪২ মেট্রিক টন আতপ চাল এবং ২৪ হাজার ৪৭১ মেট্রিক টন ধানসহ মোট ১৩ লাখ ৯৫ হাজার ৪২৬ মেট্রিক টন বোরো চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
খাদ্য অধিদফতর সূত্র আরও জানায়, ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল পর্যন্ত খাদ্যশস্যের সরকারি গুদামজাতকৃত মোট মজুদ ১৪ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন। এরমধ্যে চাল ১২ লাখ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন এবং গম ১ লাখ ৫৯ হাজার মেট্রিক টন। এই মজুদ সন্তোষজনক, ঘাটতির কোনও সম্ভাবনা নাই।
এদিকে কৃষি বিপণন অধিদফতরের তথ্য মতে, দেশের চালের বাজারদর ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের পাইকারি মূল্য ২৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২৭ টাকা ৫০ পয়সা, যা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা থেকে ৩৪ টাকা। প্রতি কেজি আটা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৭ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরে।
খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও) এর ২০১৮ সালের খাদ্য উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধানের উৎপাদন প্রবৃদ্ধির হারে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে এখানে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আমন, আউশ ও বোরো মিলিয়ে বর্তমানে দেশে ধানের বার্ষিক ফলন ৩ কোটি ৬২ লাখ টনের বেশি। ভুট্টা উৎপাদন ছাড়িয়েছে ২৭ লাখ টন। আবহাওয়াগত কারণে গমের পাশাপাশি এক কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদন হচ্ছে দেশে। সবজি ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনেও সাফল্য এসেছে। সব মিলিয়ে দানাদার খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
তবে গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) প্রকাশিত ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস: জয়েন্ট অ্যানালাইসিস ফর বেটার ডিসিশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চারটি দেশে প্রায় ১ কোটি ৪৭ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ এর মধ্যে অন্যতম। খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা এই অঞ্চলের বাকি তিনটি দেশ হলো- মিয়ানমার, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গারা। এরপর থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে এই সংখ্যা প্রায় দশ লাখে পৌঁছেছে।
No comments