ঊনসত্তরপাড়ায় হিন্দুদের ডেকে এনে হত্যা করা হয়-যুদ্ধাপরাধী বিচার-সাকার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে সপ্তম সাক্ষীর জবানবন্দী ও জেরা শেষ হয়েছে। সাক্ষী চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ তার জবানবন্দীতে বলেছেন, এক নেতার নির্দেশে ঊনসত্তরপাড়ায় হিন্দুদের ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। সেখানে আমি ৬০/৭০ জনের লাশ দেখেছি।


পাঞ্জাবীদের জীপে দু’জন সিভিল লোক দেখেছি তবে তাদের চিনতে পারিনি। ওখানে ২ জন গর্ভবতী মায়ের লাশ দেখেছি। তাদের পেটের অর্ধেক বাচ্চা বেরিয়ে গেছে। তিনি প্রসিকিউটরের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমাদের এলাকায় লোকরা বলাবলি করত, সাকা চৌধুরী এর সঙ্গে জড়িত। তবে আমি নিজে দেখিনি।’ সোমবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তিনি জবানবন্দীতে এ কথা বলেন। পরে আসামি পক্ষের আইনজীবী মাত্র দুটি প্রশ্ন করে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে সপ্তম সাক্ষীর জেরা শেষ হয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক হোসেনকে শর্তসাপেক্ষে দুই মাসের জামিন দিয়েছে। একই ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরদ্ধে সূচনা বক্তব্য শেষ করেছে প্রসিকিউশন পক্ষ। ২২ জুলাই তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনপক্ষের সাক্ষীর দিন ধার্য করা হয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক জেরা ১৯ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেছে। একই ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রিকল পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ আদেশ দিয়েছেন। সাকা চৌধুরী ॥ বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে এবার সপ্তম সাক্ষী হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ জবানবন্দী দিলেন। সোমবার তিনি জবানবন্দী প্রদান করেন। তিনি জবানবন্দীতে বলেন, তার পিতার নাম হাজী বকশি মিয়া। একাত্তর সালে তার বয়স ছিল ২০ বছর। ১৯৬৭ সালে বিএসসি পাস করেছেন। বর্তমানে চট্টগ্রামে ব্যবসা করছেন। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম রাউজান থানাধীন ১০ নম্বর পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, একাত্তর সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। তখন আমার তারুণ্য ছিল। সেই ডাকে উজ্জীবিত হয়ে পড়ি। সে সময় আমি ছাত্র ছিলাম। ঊনসত্তরপাড়ার গ্রামের বাড়িতে থাকতাম। আমার স্কুল লিডার যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে গ্রামে গিয়ে রসদ যোগাড় করতাম। তারপর খিচুড়ি রান্না করে চট্টগ্রাম শহরে যারা যুদ্ধ করত তাদের মাঝে পাঠাতাম। ঊনসত্তরপাড়া গ্রামে গৌরি শঙ্করহাটের একটি বটগাছ ছিল। ওখানে চেকপোস্ট বসাই। যে সব গাড়ি ওখান দিয়ে চলাচল করত তা চেক করতাম। এ ভাবে আমাদের কার্যক্রম চলতে থাকে। ঊনসত্তরপাড়া হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। একাত্তর সালে ওখানে মাত্র ৫/৭টি মুসলিম পরিবার ছিল। তাদের সঙ্গে আমরা সমন্বয় করে চলতাম।
আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ জবানবন্দীতে আরও বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঐ গ্রামের আমরা প্রতিটি যুবক মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে কাজ করি। এভাবে আমাদের কার্যক্রম চলতে থাকে। ১১ এপ্রিল আনুমানিক ৩টার সময় পূর্ব পাকিস্তান মুসলীম লীগের প্রধান ফজলুল কাদের চৌধুরী তার পরিবারসহ ভক্সওয়াগন গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। যেহেতু সেখানে আমাদের ব্যারিকেড ও চেকপোস্ট ছিল তাই স্বাভাবিক কারণে তাদের নামতে হয়েছিল। তার পরিবারের মধ্যে বড় ছেলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ অন্য সদস্যরা ছিলেন। নামতে বলায় তারা চিৎকার করে ওঠেন এবং চলে যান।
ঐ দিন ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ পাঞ্জাবীরা এসে দখল করে। স্বাভাবিক কারণে এলাকার অনেক মানুষ সেখান থেকে চলে যান। তার পরের দিন ১২ এপ্রিল এ এলাকার পাহাড়তলী চেয়ারম্যান গ্রামে এসে ডা. নিরঞ্জন দত্ত গুপ্তকে বলেন, আপনার এলাকার হিন্দু যারা বাইরে গেছেন, তাদের ফিরে আসতে বলেন। এটা আমরা জানতে পারি। নিরঞ্জন দত্ত গুপ্তের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক থাকার কারণে। তিনি হিন্দুদের খবর দিলেন, আবার গ্রামে ফিরে আসার জন্য।
তখন হিন্দুরা আবার গ্রামে ফিরে আসলেন। ফিরে আসার পর ১৩ এপ্রিল আনুমানিক ৪টার দিকে আছরের নামাজের পর মুকদুর হোসেন, পিফারু, বার্মা ইউসুফ এসে বলে আপনারা সবাই এক জায়গায় আসেন আমাদের নেতা কথা বলবে। এর মধ্যে বাবুল মালি দৌড়ে এসে আমাকে খবর দিল যে, পাঞ্জাবীরা এসেছে, সব হিন্দুদের ডেকে দক্ষিণ দিকে ক্ষীতিশ মহাজনের বাড়ি যেতে বলেছে। সব হিন্দু যাচ্ছে। আমি তখন বেরিয়ে ঊনসত্তরপাড়া স্কুলের পাশে আসি। উত্তর দিক থেকে ২/৩টি পাঞ্জাবী গাড়ি তখন দক্ষিণ দিকে যাচ্ছিল। আমি ও বাবুল মালি তখন স্কুলের পেছনের রাস্তা দিয়ে দৌড়াচ্ছিলাম। আমি বাবুল মালিকে বললাম, তোমার বাড়ির দিকে যাও। আমি আমার গ্রামের পুরনো বাড়িতে যাচ্ছি।
ঠিক ২০০ গজ দূরে যাবার পর বিকট একটি গুলির শব্দ শুনি। তাকিয়ে দেখি বাবুল মালি চিৎকার দিয়ে রাস্তার ওপর পড়ে গেল। এর পরই ঝড়ের মতো দক্ষিণ দিক থেকে ব্রাশ ফায়ারের শব্দ আসতে থাকল। এখন দৌড়ে আমি আমার বাড়ির দিকে চলে যাই। গ্রামের অনেক লোক ঐ রাস্তার ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে দৌড়াচ্ছিল। আমি বাড়িতে চলে যাই। বলি যে আমার মনে হয় ঊনসত্তরপাড়ায় অনেক মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে।
তার পরের দিন ১০টার দিকে জানতে পারি নিরঞ্জন দত্ত গুপ্ত আত্মহত্যা করেছে। কারণ হিসেবে জানতে পারি যে, তার কথা অনুযায়ী সব হিন্দু গ্রামে ফিরে এসেছিল। পরে সবাইকে হত্যা করা হয়। এই গ্লানিতে উনি আত্মহত্যা করেছে। তার পরের দিন ১৫ এপ্রিল ২ জন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ঊনসত্তরপাড়ায় আসি। সর্বপ্রথম আমি আমার বন্ধু বাবুল মালির লাশ দেখতে পাই। ১০০ গজ দূরে ওর বাবার লাশ পড়েছিল। এর পর আমরা গ্রামের কিছু যুবক ভাইদের নিয়ে ক্ষিতিশ মহাজনের বাড়িতে যাই। ওখানে গিয়ে দেখি বিভিন্ন বয়সের কম করে হলেও ৬০/৭০টি লাশ পড়ে আছে। এর পর ক্ষিতিশ মহাজনের ভেতরে দেখি আরও লাশ আছে কিনা। দু’জন গর্ভবতী মায়ের লাশ পড়ে আছে। পেটের অর্ধেক বাচ্চা বেরিয়ে গেছে।
এর পর গ্রামের সবাই মিলে ৩০/৪০ জন হলাম। যেখানে মেরেছে, সেখানে একটি গর্ত করে সবাইকে মাটি চাপা দেই। ঊনসত্তরপাড়ার ঘটনাটি পিয়ারু, বার্মা ইউসুফ মুকদুল হোসেন সবাইকে ডেকে এনে বলেছে, আমাদের নেতা ডাকছে। কোন নেতা তারা নাম বলেননি। পাঞ্জাবীরেদ সঙ্গে সিভিল দু’জন লোক দেখেছি তারা কারা দূর থেকে চিনতে পারিনি। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় এ ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে জগৎমলপাড়া, কু-েশ্বরী হত্যা উল্লেখযোগ্য। আমাদের এলাকায় বলাবলি হতো এই সব ঘটনার সাথে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী জড়িত । তবে আমি তাকে নিজে দেখিনি। সাক্ষীর জবানবন্দীর পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসানুল হক হেনা তাকে মাত্র দুটি প্রশ্ন করে জেরা শেষ করেন। এ সময় আসামির কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। তাঁকে গাজীপুর কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ১৪ মে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর আব্বাস চেয়ারম্যান ছাড়াও এ পর্যন্ত বাংলা একাডেমীর সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামান, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সলিমুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরু বাঙালী, শহীদ নূতন চন্দ্র সিংহের ভাতিজা গৌরাঙ্গ সিংহ ও পুত্র প্রফুল্ল রঞ্জন সিংহ এবং শহীদ পরিবারের সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট নির্মল চন্দ্র শর্মা সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের জেরাও সম্পন্ন করেছেন আসামিপক্ষ।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ২৬ জুন হরতালের আগের রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাংচুর ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায়ই সে বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের প্রত্যুষে গ্রেফতার করা হয় তাকে। ১৯ ডিসেম্বর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে। পরে ৩০ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে প্রথমবারের মতো সাকা চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ৪ এপ্রিল সাকার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। এতে তার বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৩টি মানবতাবিরোধী অপরাধের উল্লেখ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ করে গুডস হিলে নির্যাতন, দেশান্তরে বাধ্য করা, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধ। ৩ মে ও ৭ মে প্রসিকিউশনপক্ষের সূচনা বক্তব্য (ওপেনিং স্টেটম্যান) উপস্থাপন সম্পন্ন করার মাধ্যমে শুরু হয় সাকা চৌধুরীর বিচার।
নিজামী ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য শেষ করেছে প্রসিকিউশন পক্ষ। সূচনা বক্তব্য শেষে ২২ জুলাই তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনপক্ষের সাক্ষীর জবানবন্দী দেয়ার দিন ধার্য করেছে ট্রাইব্যুনাল-১। সোমবার চেয়ারম্যান নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেয়। সকালে সূচনা বক্তব্যের শুরুতেই চীফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু পাঠ করেন। পরে বেলা পৌনে ১২টায় পাঠ করেন প্রসিকিউটর আলতাফ উদ্দিন আহম্মেদ।
৫১ পৃষ্ঠার ওপেনিং স্টেটমেন্ট উত্থাপন করে প্রসিকিউটরগন জামায়াতের জন্ম কিভাবে হলো তা তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান যখন সৃষ্টি হলো, তখন জামায়াতের সদস্য সংখ্যা ছিল ৩৩ জন। নিজামী সম্পর্কে বলা হয়, তিনি নিখিল পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর কমান্ডার হন। ১৯৭১ সালে বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। যেগুলো মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের অনুপ্রেরণা, উৎসাহ ও উস্কানি দিয়েছে।
এদিকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে আসামিপক্ষকে তাদের সাক্ষী তালিকা ও তথ্য-প্রমাণ সংবলিত কাগজপত্র জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। উল্লেখ্য, ২৮ মে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৬টি অভিযোগ এনে নিজামীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (২) (এ), ৩ (২) (সি), ৩ (২) (জি), ৩ (২) (এইচ), ৪ (১), ৪ (২) ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উস্কানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মোট ১৬টি ঘটনায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেফতার করা হয়।
মোবারক ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাজী মোবারক হোসেনকে শর্তসাপেক্ষে দুই মাসের জামিন দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সোমবার ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল তাকে দুই মাসের জামিন দেয়।
আদেশে বলা হয়, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর হাজী মোবারককে আদালতে হাজির করতে হবে। তার অপরাধের বিষয়ে ওইদিন তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থাকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালের একটি হত্যা মামলায় আটক ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মোবারক হোসেনের জামিন আবেদনের শুনানি হয় ১১ জুলাই।
শুনানিতে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর সারাদেশ থেকে ৬৪০ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে। যা তদন্ত সংস্থার রেকর্ডে আছে।’ তিনি বলেন, ‘এর মধ্য থেকে বরিশাল বিভাগের রুস্তুম শিকদার, খুলনা বিভাগের আমজাদ মিয়া, রাজশাহীর লাহার আলী ও চট্টগ্রাম বিভাগের মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।’
মীর কাশেম আলী ॥ ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে আটক জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে ডিভিশন-১ বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সোমবার ট্রাইব্যুনাল-১-এ আবেদনটি করা হয়। আজ তার পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে এটি ট্রাইব্যুনালের কাছে মেনশন করার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে। ১৭ জানুয়ারি মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর পরই ওইদিন তাকে গ্রেফতার করা হয়। সেই থেকে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.