দিব্যা ভারতীর খোঁজে
আবার সিনেমার পর্দায় ফিরে আসছেন তিনি। আবার তার মধুঢালা হাসি আর রূপের জাদুতে মাতোয়ারা হবে দর্শক। আবার তাকে ভারত পেতে চাইবে শয়নে স্বপনে, তার মধ্যে খুঁজে ফিরবে স্বপ্নসুন্দরীকে। তার নাম দিব্যা ভারতী। সরল সৌন্দর্য আর হাসিমুখ নিয়ে ১৮-৮০-এর সেই হার্টথ্রব। কিন্তু দিব্যা ভারতী ছবির পর্দায় ফিরবেন কী করে?
সেই কবেই তো এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তিনি! সত্যি বলতে কী, সৌন্দর্যের মৃত্যু হয় না। মৃত্যু হয় না কীর্তিরও; বড়জোর মানুষটা হারিয়ে যেতে পারে। বলাই বাহুল্য, সেই মহিমা সেই নায়িকা এখনও, মৃত্যুর এতগুলো বছর পরেও অক্ষুণ্ণ রেখেছেন। এখনও পরিচালকরা খুঁজে বেড়ান সেই হারানো মুখ। এই যেমন পরিচালক বিক্রম সাধু। তিনিই তো ইদানীং হাতে হ্যারিকেন নিয়ে খুঁজে ফিরছেন দিব্যা ভারতীকে। ব্যাপারটা কী?
তার পরবর্তী ছবি 'ড্রিম' নিয়ে এমন কানাঘুঁষো শোনা যাচ্ছে যে, এই ছবি নাকি দিব্যা ভারতীর জীবননির্ভর। যদিও বিক্রম নিজে তা স্বীকার করছেন না, কিন্তু তার বদলে যা করছেন, সেটার সঙ্গে ঘুরিয়ে নাক দেখানোর কোনো তফাত নেই। তিনি নাকি এই ছবির নায়িকার খোঁজে অদ্ভুত এক বায়না জুড়ে বসেছেন। এই সময়ের বলিউড কাঁপানো কোনও নায়িকা নন, বিক্রম দিব্যার মতোই হুবহু দেখতে কোনো অনামা নারীকে এই ছবির নায়িকা করতে চান। সেই খোঁজে বলিউড সামলে-সুমলে তিনি নায়িকার খোঁজে লন্ডন-প্যারিসও চষে বেড়াচ্ছেন! একটাই আশা, যদি কোনোখানে মেলে সেই চেনা সুন্দর মুখের হুবহু প্রতিচ্ছবি। একী হিন্দি ছবির গল্প নাকি যে চাইলেই এমন মেয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে? তার উপর আবার বিক্রমের দাবি, এই ছবিতে সেই নতুন নায়িকাকে দিব্যার মতো শুধু রূপেই নয়, অভিনয়েও তততাই সাবলীল হতে হবে। কিন্তু সে নায়িকার খোঁজ পেতে মাথায় হাত দিয়েছেন প্রোডাকশন ম্যানেজার।
৯০-এর দশকে 'শোলা অউর শবনম' বা 'দিওয়ানা' ছবিতে অতি অল্প বয়সেই সবাইকে ঘায়েল করেছিলেন এই মেয়ে। তারপর মাত্র ১৯ বছর বয়সে অকালে রহস্যজনক মৃত্যু তার। সে মৃত্যুর জট এখনও খুলতে পারেনি মুম্বই পুলিশ। কাজে কাজেই এহেন নায়িকার জীবন নিয়ে তো লোকের কৌতূহল থাকবেই। তাই কিছুদিন আগে 'ড্রিম' ছবির কাজ শুরু করতেই এ ছবির গল্প শুনে বিক্রমের কাছে ভেসে এসেছে একটাই প্রশ্ন- এটা কি দিব্যা ভারতীর বায়োপিক? প্রশ্ন করলেও মনে মনে প্রায় সবাই জানেন, হয়তো তাই!
বিক্রম অবশ্য অন্য কথা বলছেন, “এটা জীবনী না কি, সেটা হলে গিয়েই দেখতে হবে। আপাতত শুধু বলতে পারি, এ ছবির গল্প এমন এক নায়িকাকে নিয়ে যিনি অল্প বয়সে সাফল্যের সিঁড়ি খুঁজে পান, কিন্তু অজানা কারণে একদিন তার প্রয়াণ ঘটে। অনেকেই তাই দিব্যাজির তুলনা টেনে আনছেন। কিন্তু আমি এখনই কিছু বলব না।” তাহলে আবার দিব্যার মতো দেখতে নায়িকার খোঁজ কেন? এব্যাপারে কী বলছেন পরিচালক? “হ্যাঁ, এটা ঠিকই যে আমি ওর মতো দেখতে নায়িকা খুঁজছি। আসলে দিব্যাজি সেই ৯০-এর দশক থেকেই আমার হার্টথ্রব। অনেক অভিনেত্রী দেখেছি, কিন্তু ওরকম রূপ আমি খুঁজে পাইনি। এই ছবিটা আমার স্বপ্নের ছবি। তাই আমি চাই আমার এই ছবির নায়িকা একেবারে আমার স্বপ্নের নায়িকার মতো দেখতে হোন। শুধু দেশেই না, এই কারণে আমি বিদেশেও স্ক্রিন টেস্ট করব ঠিক করেছি।”
বিক্রমের এই চাহিদা বাড়াবাড়ি কিনা, সে নিয়ে মুখ খুলতে না চাইলেও দিব্যা নিয়ে বলেছেন আর এক জনপ্রিয় পরিচালক করন জোহর। তার মতে, “দেখুন পরিচালকদের নিজস্ব একটা ভাবনা থাকে। সেসব নিয়ে আমি একেবারেই কথা বলব না। কারণ আমি নিজেও খুব খুতখুঁতে। তবে
দিব্যাজির মতো দেখতে সেরকম কাউকে খুঁজে পেলে ভীষণ ভালো লাগবে আমার। আমি নিজে দিব্যাজির অসম্ভব ফ্যান ছিলাম। ওর না থাকা আমাদের বলিউডের এক সম্পদের হারিয়ে যাওয়া। সেই চেহারা যদি সত্যিই খুঁজে পায় বিক্রম তবে তো নাথিং লাইক ইট।”
পাশাপাশি, আরেকটা প্রশ্নও উঠে আসছে বিক্রম সাধুর এই ছবিকে ঘিরে। ব্যর্থ অভিনেত্রী-জীবন নিয়ে ছবি বানানোটা কি এখন বলিউডের ট্রেন্ড? কেউই সোজাসুজি মুখ না খুললেও এসবই যে ‘দ্য ডার্টি পিকচার’-এর সাফল্য ও অনুপ্রেরণা, তা উদাহরণের মতো ভেসে বেড়াচ্ছে হাওয়ায় হাওয়ায়। যাই হোক, আপাতত শুধুই অপেক্ষার পালা! ভক্তদের মন যুগিয়ে এ বছরের শেষে বিক্রম দিব্যার স্মৃতি ফেরাতে পারেন কিনা, সে তো সময়ই বলবে। সূত্র: ওয়েবসাইট।
No comments