নিহত সোহেলের গ্রামে আহাজারি-‘হামার গ্রামটারও বুক খালি করি গেলু’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ছাত্রলীগের কর্মী আব্দুল্লা আল হাসান ওরফে সোহেলের গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গতকাল সোমবার বিকেলে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের সাবদী গ্রামে সোহেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর মা আনজালা বেগম বিলাপের সুরে মাঝেমধ্যে বলছেন, ‘একটা


দিন বাড়িত থাকিয়া গেইলে বুকটা খালি হইল না হয়।’ ছেলের নিহত হওয়ার খবর শোনার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে বাড়িতেই স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগের দিন গত শনিবার পরিবারের সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান সোহেল। এক দিন পরেই তিনি লাশ হয়ে ফিরবেন—এ কথা তাঁর পরিবারের কেউ মানতে পারছে না।
পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সোহেল সবার বড়। এক বন্ধুর বিয়ে খেতে সোহেল বাড়িতে এসেছিলেন গত বৃহস্পতিবার।
গত রোববার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক পক্ষের গুলিতে আহত সোহেল গতকাল সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
সোহেলের ছেলেবেলার কথা বলতে গিয়ে গ্রামের কিষানি আরেফা বেগম বলেন, ‘সোহেল রে হামার গ্রামটারও বুক খালি করি গেলু।’
সোহেলের বাবা আবদুস সালাম উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের নিজপাড়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক।
তিনি বলেন, ‘পড়াশোনার জন্য ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠালাম। কত কষ্ট করে তাঁর পড়াশোনার খরচ চালাতে হয়। এইতো আর কিছুদিনের মধ্যে ছেলে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করত। ছেলেকে নিয়ে ওর মায়ের কত না আশা ছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন যে একেবারে শেষ হয়ে গেল, এটা কি ভাবা যায়?’

No comments

Powered by Blogger.