বুয়েট সংকট নিয়ে আলোচনা-দাবি না মানলে রোববার শিক্ষকদের গণপদত্যাগ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বুয়েটের সাবেক উপাচার্য, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নেতা এবং বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও বিভাগীয় প্রধানেরা। তাঁরা বলছেন, এ দুজনকে পদে রেখে সমস্যার সমাধান হবে না। তাই তাঁদের যত দ্রুত সম্ভব, সম্মানজনকভাবে সরিয়ে দেওয়া উচিত।
গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ডাকে বৈঠকে অংশ নিয়ে তাঁরা এ পরামর্শ দেন। বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ আলোচনার বিষয় রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং প্রধানমন্ত্রীকে শিগগির অবহিত করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বুয়েটের ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
এদিকে, গতকাল বুয়েট শিক্ষক সমিতির জরুরি সভায় শিক্ষকেরা গণপদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ জন্য পদত্যাগপত্রে সই করেছেন তাঁরা। তবে সরকারকে আগামী রোববার বিকেল চারটা পর্যন্ত সময় দিয়ে তাঁরা বলেছেন, এর মধ্যে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অপসারণ না করলে ওই দিনই তাঁরা পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। এর আগে ২৪ জন ডিন ও বিভাগীয় প্রধান নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। অবশ্য এখনো পদত্যাগপত্রগুলো গৃহীত হয়নি।
বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এ ছাড়া গতকালের সভায় লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পরিবর্তে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত প্রতিদিন অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম ও সহ-উপাচার্য হাবিবুর রহমানের অপসারণের দাবিতে গতকালও শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুই ঘণ্টার প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেন। পাশাপাশি তাঁরা দিনভর প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
অন্যদিকে প্রশাসনের পক্ষে উপাচার্যপন্থী হিসেবে পরিচিত কয়েকজন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্রলীগ-সমর্থক শিক্ষার্থীরা বুয়েট শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ব্যানারে বিকেলে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন। তাঁরা অবিলম্বে বুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে শিক্ষক সমিতির অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার দাবি জানান।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: শিক্ষামন্ত্রীর ডাকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গতকাল বুয়েটের ১৯ জন ডিন ও বিভাগীয় প্রধান ছাড়াও সাবেক তিন উপাচার্য—আবদুল মতিন পাটওয়ারী, এম এইচ খান ও ইকবাল মাহমুদ, বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি নূরুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক আবদুস সবুর, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। তবে দুই প্রতিপক্ষ বুয়েটের উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির কোনো প্রতিনিধিকে সভায় ডাকা হয়নি।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়, তাঁদের মধ্যে দুজন প্রকৌশলী বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পক্ষে বলেছেন। বাকি প্রায় সবাই উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। সভায় সাবেক দুই উপাচার্য বলেন, এমন পরিস্থিতি হলে তাঁরা ওই পদে থাকতেন না।
সভায় সাবেক উপাচার্যদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানে সহ-উপাচার্য পদটি অপ্রয়োজনীয়। এ সময় সভায় উপস্থিত শিক্ষকেরা ঐতিহ্য টেনে বলেন, শুধু পদ সৃষ্টি নয়, এই পদে এমন একজনকে নিয়োগ দেওয়া হলো, যিনি ৫৯ শিক্ষকের চেয়েও কনিষ্ঠ। তা ছাড়া বেশকিছু দলীয়করণ ও অনিয়ম হয়েছে।
দুজন শিক্ষার্থীকে বর্তমান উপাচার্যের বিশেষ সুবিধা দেওয়া প্রসঙ্গ উঠলে সভায় একজন সাবেক উপাচার্য বলেন, দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তাঁর এক সন্তান বুয়েটে পরীক্ষা দিয়েও ভর্তি হতে পারেনি। কিন্তু তাঁর সন্তান কত নম্বর পেয়েছিল, সেটিও তিনি জানতে পারেননি বা জানার চেষ্টা করেননি।
এসবের পাশাপাশি সভায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনাস্থার বিষয়টি তুলে ধরে বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে সম্মানজনকভাবে সরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে সমমর্যাদায় অন্য কোথাও তাঁদের নিয়োগ দেওয়ার পরামর্শ দেন কেউ কেউ।
আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে সভায় অংশগ্রহণকারী জামিলুর রেজা চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে রেখে সমস্যার সমাধান হবে না। এ জন্য তাঁদের সম্মানজনকভাবে সরিয়ে দেওয়াই হবে উত্তম।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও বুয়েটের অধ্যাপক ম. তামিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে সরিয়ে দিতে বলেছি।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাংসদ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব সালাহউদ্দিন আকবর প্রমুখ।
গতকালের বৈঠকের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বুয়েটের উপাচার্য বলেন, ‘বললেই কি পদত্যাগ করতে পারি? আমাকে তো একজন দায়িত্ব দিয়েছেন।’ শিক্ষকদের গণপদত্যাগের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক কাগজ পেলে তাঁদের সঙ্গে কিংবা আমার নিয়োগদাতাদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেব।’
সহ-উপাচার্য হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কোনো অনিয়ম করিনি। কেউ অভিযোগ করল আর হয়ে গেল, সেটা হয় না।’
উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তুলে কয়েক মাস ধরেই বুয়েটের শিক্ষক সমিতি আন্দোলন করে আসছে।
এদিকে, গতকাল বুয়েট শিক্ষক সমিতির জরুরি সভায় শিক্ষকেরা গণপদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ জন্য পদত্যাগপত্রে সই করেছেন তাঁরা। তবে সরকারকে আগামী রোববার বিকেল চারটা পর্যন্ত সময় দিয়ে তাঁরা বলেছেন, এর মধ্যে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অপসারণ না করলে ওই দিনই তাঁরা পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। এর আগে ২৪ জন ডিন ও বিভাগীয় প্রধান নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। অবশ্য এখনো পদত্যাগপত্রগুলো গৃহীত হয়নি।
বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এ ছাড়া গতকালের সভায় লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পরিবর্তে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত প্রতিদিন অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম ও সহ-উপাচার্য হাবিবুর রহমানের অপসারণের দাবিতে গতকালও শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুই ঘণ্টার প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেন। পাশাপাশি তাঁরা দিনভর প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
অন্যদিকে প্রশাসনের পক্ষে উপাচার্যপন্থী হিসেবে পরিচিত কয়েকজন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্রলীগ-সমর্থক শিক্ষার্থীরা বুয়েট শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ব্যানারে বিকেলে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন। তাঁরা অবিলম্বে বুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে শিক্ষক সমিতির অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার দাবি জানান।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: শিক্ষামন্ত্রীর ডাকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গতকাল বুয়েটের ১৯ জন ডিন ও বিভাগীয় প্রধান ছাড়াও সাবেক তিন উপাচার্য—আবদুল মতিন পাটওয়ারী, এম এইচ খান ও ইকবাল মাহমুদ, বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি নূরুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক আবদুস সবুর, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। তবে দুই প্রতিপক্ষ বুয়েটের উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির কোনো প্রতিনিধিকে সভায় ডাকা হয়নি।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়, তাঁদের মধ্যে দুজন প্রকৌশলী বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পক্ষে বলেছেন। বাকি প্রায় সবাই উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। সভায় সাবেক দুই উপাচার্য বলেন, এমন পরিস্থিতি হলে তাঁরা ওই পদে থাকতেন না।
সভায় সাবেক উপাচার্যদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানে সহ-উপাচার্য পদটি অপ্রয়োজনীয়। এ সময় সভায় উপস্থিত শিক্ষকেরা ঐতিহ্য টেনে বলেন, শুধু পদ সৃষ্টি নয়, এই পদে এমন একজনকে নিয়োগ দেওয়া হলো, যিনি ৫৯ শিক্ষকের চেয়েও কনিষ্ঠ। তা ছাড়া বেশকিছু দলীয়করণ ও অনিয়ম হয়েছে।
দুজন শিক্ষার্থীকে বর্তমান উপাচার্যের বিশেষ সুবিধা দেওয়া প্রসঙ্গ উঠলে সভায় একজন সাবেক উপাচার্য বলেন, দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তাঁর এক সন্তান বুয়েটে পরীক্ষা দিয়েও ভর্তি হতে পারেনি। কিন্তু তাঁর সন্তান কত নম্বর পেয়েছিল, সেটিও তিনি জানতে পারেননি বা জানার চেষ্টা করেননি।
এসবের পাশাপাশি সভায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনাস্থার বিষয়টি তুলে ধরে বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে সম্মানজনকভাবে সরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে সমমর্যাদায় অন্য কোথাও তাঁদের নিয়োগ দেওয়ার পরামর্শ দেন কেউ কেউ।
আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে সভায় অংশগ্রহণকারী জামিলুর রেজা চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমান উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে রেখে সমস্যার সমাধান হবে না। এ জন্য তাঁদের সম্মানজনকভাবে সরিয়ে দেওয়াই হবে উত্তম।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও বুয়েটের অধ্যাপক ম. তামিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে সরিয়ে দিতে বলেছি।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাংসদ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব সালাহউদ্দিন আকবর প্রমুখ।
গতকালের বৈঠকের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বুয়েটের উপাচার্য বলেন, ‘বললেই কি পদত্যাগ করতে পারি? আমাকে তো একজন দায়িত্ব দিয়েছেন।’ শিক্ষকদের গণপদত্যাগের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক কাগজ পেলে তাঁদের সঙ্গে কিংবা আমার নিয়োগদাতাদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেব।’
সহ-উপাচার্য হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কোনো অনিয়ম করিনি। কেউ অভিযোগ করল আর হয়ে গেল, সেটা হয় না।’
উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তুলে কয়েক মাস ধরেই বুয়েটের শিক্ষক সমিতি আন্দোলন করে আসছে।
No comments