ডাকাতি বেড়েছে-জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সরকারের
গত কয়েক মাসে সারাদেশে ডাকাতির ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোথাও কোথাও ডাকাতদের হামলায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। স্বর্ণের দোকান থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের আবাস_ কোনোটাই ডাকাতদের নাগালের বাইরে নয়। অথচ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
ডাকাত দল কদাচিৎ ধরা পড়ে। এভাবে ডাকাতির ঘটনা অব্যাহত থাকলে শহরের অট্টালিকায় বসবাসকারী থেকে শুরু করে পল্লীর নিভৃত কোণে বসবাসকারী মানুষ পর্যন্ত কেউই নিজেদের জানমাল নিরাপদ ভাবতে পারবে না। নাগরিক জীবনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বর্গতিজনিত দুর্ভোগের সঙ্গে এ ধরনের নিরাপত্তার নিত্য শঙ্কাকে যুক্ত করে সার্বিক অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে, যেটা দেশের সামগ্রিক উন্নতির পথে বড় বাধা। কাজেই ডাকাতির বিস্তারকে সাধারণ আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হিসেবে বিবেচনা না করে জরুরি জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয় হিসেবে সরকারের বিবেচনা করা উচিত। এ প্রসঙ্গে সোমবার সমকালের 'রাজধানীর উপকণ্ঠ' পাতায় প্রকাশিত একসঙ্গে চারটি স্থানে ডাকাতির ঘটনা সংবলিত প্রতিবেদন উল্লেখ করা যায়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত শনিবার সোনারগাঁ, ধামরাই, বাজিতপুর ও নরসিংদীতে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে এবং ডাকাতরা প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যমানের মালপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। এই একই দিনে দেশের অন্যান্য এলাকায়ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে থাকবে। প্রশ্ন হলো, হঠাৎ করে দেশে ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি পেল কেন? এর একটা সম্ভাব্য উত্তর হতে পারে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনীগুলো বিশেষ করে পুলিশ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না বলেই এমন অবাধে ডাকাতি হতে পারছে। পুলিশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের কুফল হতে পারে এটা। তা ছাড়া এর সঙ্গে পুলিশের দুর্নীতি সংশ্লিষ্টতাও কম দায়ী নয়। সরকার এবং পুলিশ প্রশাসনের উচিত কেন দেশে ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেল এর কারণ অনুসন্ধান করা; যাতে ডাকাতি প্রতিরোধ করা যায় সে জন্য নিজেদের জনবল ও সামর্থ্যকে পুরোপুরি ও গ্রহণযোগ্যভাবে কাজে লাগানো। নিজেদের বাহিনীর মনোবল ও নৈতিক বল বৃদ্ধিও এর জন্য প্রয়োজন পড়বে। জনগণ কীভাবে ডাকাতি প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করতে পারে, সে ব্যাপারে সরকারকে দিকনির্দেশনা প্রদান করা উচিত। একই সঙ্গে পুলিশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা থেকে সরকারকে দেশ ও দশের স্বার্থেই বিরত থাকা উচিত। নাগরিকদের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সরকারের।
No comments