জাবিতে নির্বাচন
বেশ কয়েক মাস ধরেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজ করছে অস্থিরতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে উপাচার্য পরিবর্তন করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে নতুন উপাচার্য। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আনোয়ার হোসেন আগামী ২০ জুলাই বিশেষ সিনেটে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন।
’৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুসারেই এ নির্বাচন হবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে শিক্ষকদের সব অংশের মধ্যে বিরাজমান বিভেদ ভুলে সবাইকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। বর্তমান উপাচার্য আশা করেন যে নির্বাচনে যেসব সিনেট সদস্যের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ আছে তাঁরা তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করবেন। উপাচার্যের এ ধরনের দৃঢ়তাকে স্বাগত জানানোর পরিবর্তে বিএনপি-জামায়াতপন্থী ও প্রগতিশীল আওয়ামী শিক্ষকদের একাংশ নিয়ে গঠিত সম্মিলিত শিক্ষক পরিষদের শিক্ষকরা এ নির্বাচনকে ঠেকানোর জন্য তৎপরতা শুরু করেছেন। উপাচার্যের কার্যালয়ের রাস্তায় বেরিকেড দেয়া, রুমে অবরুদ্ধ করে রাখাসহ উপাচার্যের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণেরও অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনরত কোন কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য আগে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট, ডিন, সিন্ডিকেট ও সিনেট নির্বাচন করতে হবে। উপাচার্য নির্বাচন ঠেকাতে মরিয়া হয়ে ওঠা ‘সম্মিলিত শিক্ষক পরিষদে’র ব্যানারে শিক্ষকরা একের পর এক সমাবেশ ও অবরোধ কর্মসূচী দিয়ে চলেছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফল ভোগ করছে ছাত্রছাত্রীরা। অথচ এদেরই অন্যতম দাবি ছিল উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন দেয়ার। যেখানে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের সঙ্গে অন্যান্য নির্বাচনের কোন সম্পর্ক নেই, সেখানে এ ধরনের দাবি কতটুকু যৌক্তিক তা ভেবে দেখা উচিত। নতুন উপাচার্যের অতি অল্পসময়ের মধ্যে এ নির্বাচন করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানোর পরিবর্তে কেন শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাহত করে এমন কর্মসূচী প্রদান করা হচ্ছে তাও স্পষ্ট। তবে অনেকের ধারণা, নিজেদের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত নয় বলেই এ ধরনের আন্দোলন চলছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে দিনের পর দিন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা চলবে এটি কাম্য হতে পারে না। জাবির শিক্ষা কার্যক্রম যাতে সুষ্ঠুভাবে চলে এ লক্ষ্যে সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
No comments