অর্থনীতি-'সুনাম' নষ্ট করার ঝুঁকি by আনোয়ারা সৈয়দ হক
মনে করে দেখুন, এর আগে বাংলাদেশের ব্যাপারে 'ঝুঁকি' নেওয়ার কোনো ইতিহাসও নেই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের। অতীতের কথা কি আমরা ভুলে গিয়েছি? বাংলাদেশের জন্মের সময় যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো ঝুঁকি নিয়েছিল? মোটেই না। বরং সে মৃতপ্রায় অখণ্ড পাকিস্তানকে সপ্তম নৌবহরের স্যালাইন দিয়ে বাঁচানোর ঝুঁকি নিয়েছিল! সেটা সেই ৪১ বছর
আগের কথা। বাংলাদেশের সমুদ্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাঠিয়েছিল সপ্তম নৌবহর, যে নৌবহরগুলোয় ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সরঞ্জাম
বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা গত ১০ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানে তার বক্তব্য প্রদানকালে বলেছেন, গার্মেন্ট সেক্টরে উন্নত কর্মপরিবেশ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত না হলে বাংলাদেশের পণ্য কিনে নিজেদের 'সুনাম' নষ্ট করার 'ঝুঁকি' নেবেন না মার্কিন ব্যবসায়ীরা। তার বক্তব্য শুনে আমরা আপামর জনসাধারণ খুব বিস্মিত হয়েছি এবং সে সঙ্গে একটু হেসেওছি। বিস্মিত হয়েছি এই কারণে যে, আমেরিকা দেশটি বা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বাংলাদেশের গার্মেন্ট সেক্টর নিয়ে এত উদ্বেগের কারণ কী? গার্মেন্ট সেক্টরে উন্নত কর্মপরিবেশ বলতে কী বোঝাতে চান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মজিনা সাহেব? কর্মপরিবেশ উন্নত না হলে এতদিন বাংলাদেশ কীভাবে বিশ্বে তাদের নিজের দেশে তৈরি গার্মেন্ট সাপ্লাই দিয়ে আসছে? আর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে জামা-কাপড় সাপ্লাই দেওয়ার সম্পর্ক কী? তাছাড়া পৃথিবীর ক'টি দেশে বর্তমানে 'রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা' আছে? আর সেসব অস্থিতিশীলতার পেছনে কাদের শ্বেতশুভ্র রোমশ হাতগুলো নীরবে কাজ করছে? আর সবচেয়ে বড় কথা 'ঝুঁকি' বলতে কী বোঝাতে চান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত? আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের 'সুনাম' নষ্ট হওয়া মানে কী? মার্কিনিরা কি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কিনবেন না? বা কিনলেও ব্যবসায়ীদের 'সুনাম' নষ্ট হওয়ার ভয়ে গা থেকে সেই পোশাক খুলে উদ্লা হয়ে থাকবেন?
তাই যদি হয়, তাহলে বলব বাংলাদেশের তৈরি পোশাক না হয় না-ই কিনল যুক্তরাষ্ট্র? কারণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শ্রমিকদের তৈরি পোশাক কিনে কোনো 'ঝুঁকি'র ভেতরে পড়ূক আমরা জনগণ তা চাই না! কারণ আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ। বস্তুত পাঠক মনে করে দেখুন, এর আগে বাংলাদেশের ব্যাপারে 'ঝুঁকি' নেওয়ার কোনো ইতিহাসও নেই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের। অতীতের কথা কি আমরা ভুলে গিয়েছি? বাংলাদেশের জন্মের সময় যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো ঝুঁকি নিয়েছিল? মোটেই না। বরং সে মৃতপ্রায় অখণ্ড পাকিস্তানকে সপ্তম নৌবহরের স্যালাইন দিয়ে বাঁচানোর ঝুঁকি নিয়েছিল! সেটা সেই ৪১ বছর আগের কথা। বাংলাদেশের সমুদ্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাঠিয়েছিল সপ্তম নৌবহর, যে নৌবহরগুলোয় ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সরঞ্জাম। বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করার নীল-নকশা। তখন বাংলাদেশের পক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দয়া করে কোনো ঝুঁকি নেয়নি বলেই বাংলাদেশ নয় মাসে স্বাধীন হতে পেরেছিল। ঝুঁকি নিলে আজ বাংলাদেশের অবস্থা পাকিস্তানের মতোই হতো। তালেবানশাসিত দেশ হতো বাংলাদেশ। শিয়া, সুনি্ন, কাদিয়ানির মারামারি লেগে যেত। তাই মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা সাহেবকে অনুরোধ করব, প্লিজ, দয়া করে বাংলাদেশের গার্মেন্ট আপনার দেশে সাপ্লাই দিয়ে কোনো ঝুঁকির ভেতরে যাবেন না এবং আপনার দেশের ব্যবসায়ীদের সুনাম নষ্ট করবেন না। এ পৃথিবীতে অবস্থিত সব দেশেরই কিছু না কিছু 'দুর্নাম' আছে, হয় প্রকাশ্যে আছে, অথবা গোপনে আছে। কিন্তু আপনার দেশের কোনো প্রকারের দুর্নামই নেই বা দুর্নাম করার সাহসও কারও নেই। যে ব্যক্তি বা দেশ আপনার দেশের দুর্নাম করবে, সেই তখন আপনার 'ঝুঁকি'র ভেতরে পড়ে যাবে। সর্বনাশের জয়ডঙ্কা বেজে উঠবে সে দেশের। অর্থাৎ একেবারে ডুমড হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে অনেক দেশ বা জাতি বা মানুষ হয়েও গেছে। তাই আপনাকে অনুরোধ, পোশাক আমদানি তো কোন ছাড়, আপনার দেশকে বাংলাদেশের আকাশ থেকে অক্সিজেন আমদানি করতেও ঝুঁকি নিতে দেবেন না।
আবার আমরা বাংলাদেশের জনগণ মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা সাহেবের কথা শুনে অনেক হেসেছি। কেন হাসলাম? তার গুরুগম্ভীর থ্রেটনিং বক্তব্যে আমাদের মতো সাধারণ জনগণের এত হাসির কী হলো? তার কারণ হলো, যেদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বুঝতে পেরেছেন যে পদ্মা সেতু নির্মাণে দেশের গরিব, বড়লোক, কৃষক, মজুর, শ্রমিক, ছাত্র, গৃহিণী, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, অভিবাসী সব একাট্টা হয়েছেন, তারা নিজেদের উপার্জনের অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে চান, তাতে 'লাগে না লাগুক বাহে এক, দুই, তিন, কিংবা কয়েক জীবন,' ওমনি মজিনা সাহেবদের মতো শ্রদ্ধেয় যুক্তরাষ্ট্রীয়দের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তারা চান না একটি গরিব দেশের 'ইগো' বা আত্ম অহং এত বড় হয়ে যাক যে সেখানে মজিনা সাহেব এবং তার দেশ 'ঝুঁকি'র ভেতরে পড়ে যান! সমস্যাটা সেখানেই। বর্তমানে যে অবস্থা সেখানে আমাদের বাড়ির ড্রাইভারগুলো পর্যন্ত একাট্টা হয়েছে তাদের মাসের একদিনের বেতন তারা হাসিনা সরকারকে দেবে পদ্মা সেতু তৈরি করার জন্য। যতদিন সেতু তৈরি না হয়, ততদিন তারা এটা দিয়ে যাবে। বাড়ির গৃহিণী তার পয়সার বটুয়া খুলে বসে আছেন পদ্মা সেতুর নির্মাণে তিনিও কিছু দান করবেন বলে। এটা শুধু সম্ভব হয়েছে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মনোবলের জন্য। এ রকম মনোবল কোনো বৃহৎ শক্তির দেশ কী চোখে দেখতে চায়, নাকি সহ্য করতে পারে? না পারে না। তাই মজিনা সাহেবের কথা শুনে আমরা শুধু হাসতে পারি আর যদি তিনি অনুমতি দেন, তাহলে চাপড়ে তাকে সান্ত্বনা দিতে পারি এই বলে যে, 'ঘাবড়াও মাৎ ভেইয়া তুমি তোমার কাজ করে যাও, আর আমরাও আমাদের কাজ করে যাই, অর্থাৎ পদ্মা সেতু নির্মাণ
করে যাই।'
আর গার্মেন্ট? এত সস্তায় কোন দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে গার্মেন্ট সাপ্লাই দেবে? এ রকম শ্রমিক সস্তা আর কোন দেশে? তাই আজ না হয় কাল পোশাক আমদানি তাকে করতে হবেই এবং এই বাংলাদেশ থেকেই করতে হবে। বিশ্বব্যাংক যেমন হতভম্ব হয়েছে শেখ হাসিনার সাহস দেখে, সেরকম শ্রদ্ধেয় মজিনা গোষ্ঠীরও টনক নড়েছে। যে বাঙালি জাতি প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে বৈরী পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে আছে, ইচ্ছা হলেও তাদের কি ধ্বংস করে ফেলা এত সহজ? না।
আনোয়ারা সৈয়দ হক :কথাসাহিত্যিক
বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা গত ১০ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানে তার বক্তব্য প্রদানকালে বলেছেন, গার্মেন্ট সেক্টরে উন্নত কর্মপরিবেশ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত না হলে বাংলাদেশের পণ্য কিনে নিজেদের 'সুনাম' নষ্ট করার 'ঝুঁকি' নেবেন না মার্কিন ব্যবসায়ীরা। তার বক্তব্য শুনে আমরা আপামর জনসাধারণ খুব বিস্মিত হয়েছি এবং সে সঙ্গে একটু হেসেওছি। বিস্মিত হয়েছি এই কারণে যে, আমেরিকা দেশটি বা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বাংলাদেশের গার্মেন্ট সেক্টর নিয়ে এত উদ্বেগের কারণ কী? গার্মেন্ট সেক্টরে উন্নত কর্মপরিবেশ বলতে কী বোঝাতে চান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মজিনা সাহেব? কর্মপরিবেশ উন্নত না হলে এতদিন বাংলাদেশ কীভাবে বিশ্বে তাদের নিজের দেশে তৈরি গার্মেন্ট সাপ্লাই দিয়ে আসছে? আর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে জামা-কাপড় সাপ্লাই দেওয়ার সম্পর্ক কী? তাছাড়া পৃথিবীর ক'টি দেশে বর্তমানে 'রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা' আছে? আর সেসব অস্থিতিশীলতার পেছনে কাদের শ্বেতশুভ্র রোমশ হাতগুলো নীরবে কাজ করছে? আর সবচেয়ে বড় কথা 'ঝুঁকি' বলতে কী বোঝাতে চান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত? আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের 'সুনাম' নষ্ট হওয়া মানে কী? মার্কিনিরা কি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কিনবেন না? বা কিনলেও ব্যবসায়ীদের 'সুনাম' নষ্ট হওয়ার ভয়ে গা থেকে সেই পোশাক খুলে উদ্লা হয়ে থাকবেন?
তাই যদি হয়, তাহলে বলব বাংলাদেশের তৈরি পোশাক না হয় না-ই কিনল যুক্তরাষ্ট্র? কারণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শ্রমিকদের তৈরি পোশাক কিনে কোনো 'ঝুঁকি'র ভেতরে পড়ূক আমরা জনগণ তা চাই না! কারণ আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ। বস্তুত পাঠক মনে করে দেখুন, এর আগে বাংলাদেশের ব্যাপারে 'ঝুঁকি' নেওয়ার কোনো ইতিহাসও নেই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের। অতীতের কথা কি আমরা ভুলে গিয়েছি? বাংলাদেশের জন্মের সময় যুক্তরাষ্ট্র কি কোনো ঝুঁকি নিয়েছিল? মোটেই না। বরং সে মৃতপ্রায় অখণ্ড পাকিস্তানকে সপ্তম নৌবহরের স্যালাইন দিয়ে বাঁচানোর ঝুঁকি নিয়েছিল! সেটা সেই ৪১ বছর আগের কথা। বাংলাদেশের সমুদ্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাঠিয়েছিল সপ্তম নৌবহর, যে নৌবহরগুলোয় ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সরঞ্জাম। বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করার নীল-নকশা। তখন বাংলাদেশের পক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দয়া করে কোনো ঝুঁকি নেয়নি বলেই বাংলাদেশ নয় মাসে স্বাধীন হতে পেরেছিল। ঝুঁকি নিলে আজ বাংলাদেশের অবস্থা পাকিস্তানের মতোই হতো। তালেবানশাসিত দেশ হতো বাংলাদেশ। শিয়া, সুনি্ন, কাদিয়ানির মারামারি লেগে যেত। তাই মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা সাহেবকে অনুরোধ করব, প্লিজ, দয়া করে বাংলাদেশের গার্মেন্ট আপনার দেশে সাপ্লাই দিয়ে কোনো ঝুঁকির ভেতরে যাবেন না এবং আপনার দেশের ব্যবসায়ীদের সুনাম নষ্ট করবেন না। এ পৃথিবীতে অবস্থিত সব দেশেরই কিছু না কিছু 'দুর্নাম' আছে, হয় প্রকাশ্যে আছে, অথবা গোপনে আছে। কিন্তু আপনার দেশের কোনো প্রকারের দুর্নামই নেই বা দুর্নাম করার সাহসও কারও নেই। যে ব্যক্তি বা দেশ আপনার দেশের দুর্নাম করবে, সেই তখন আপনার 'ঝুঁকি'র ভেতরে পড়ে যাবে। সর্বনাশের জয়ডঙ্কা বেজে উঠবে সে দেশের। অর্থাৎ একেবারে ডুমড হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে অনেক দেশ বা জাতি বা মানুষ হয়েও গেছে। তাই আপনাকে অনুরোধ, পোশাক আমদানি তো কোন ছাড়, আপনার দেশকে বাংলাদেশের আকাশ থেকে অক্সিজেন আমদানি করতেও ঝুঁকি নিতে দেবেন না।
আবার আমরা বাংলাদেশের জনগণ মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা সাহেবের কথা শুনে অনেক হেসেছি। কেন হাসলাম? তার গুরুগম্ভীর থ্রেটনিং বক্তব্যে আমাদের মতো সাধারণ জনগণের এত হাসির কী হলো? তার কারণ হলো, যেদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বুঝতে পেরেছেন যে পদ্মা সেতু নির্মাণে দেশের গরিব, বড়লোক, কৃষক, মজুর, শ্রমিক, ছাত্র, গৃহিণী, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, অভিবাসী সব একাট্টা হয়েছেন, তারা নিজেদের উপার্জনের অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে চান, তাতে 'লাগে না লাগুক বাহে এক, দুই, তিন, কিংবা কয়েক জীবন,' ওমনি মজিনা সাহেবদের মতো শ্রদ্ধেয় যুক্তরাষ্ট্রীয়দের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তারা চান না একটি গরিব দেশের 'ইগো' বা আত্ম অহং এত বড় হয়ে যাক যে সেখানে মজিনা সাহেব এবং তার দেশ 'ঝুঁকি'র ভেতরে পড়ে যান! সমস্যাটা সেখানেই। বর্তমানে যে অবস্থা সেখানে আমাদের বাড়ির ড্রাইভারগুলো পর্যন্ত একাট্টা হয়েছে তাদের মাসের একদিনের বেতন তারা হাসিনা সরকারকে দেবে পদ্মা সেতু তৈরি করার জন্য। যতদিন সেতু তৈরি না হয়, ততদিন তারা এটা দিয়ে যাবে। বাড়ির গৃহিণী তার পয়সার বটুয়া খুলে বসে আছেন পদ্মা সেতুর নির্মাণে তিনিও কিছু দান করবেন বলে। এটা শুধু সম্ভব হয়েছে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মনোবলের জন্য। এ রকম মনোবল কোনো বৃহৎ শক্তির দেশ কী চোখে দেখতে চায়, নাকি সহ্য করতে পারে? না পারে না। তাই মজিনা সাহেবের কথা শুনে আমরা শুধু হাসতে পারি আর যদি তিনি অনুমতি দেন, তাহলে চাপড়ে তাকে সান্ত্বনা দিতে পারি এই বলে যে, 'ঘাবড়াও মাৎ ভেইয়া তুমি তোমার কাজ করে যাও, আর আমরাও আমাদের কাজ করে যাই, অর্থাৎ পদ্মা সেতু নির্মাণ
করে যাই।'
আর গার্মেন্ট? এত সস্তায় কোন দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে গার্মেন্ট সাপ্লাই দেবে? এ রকম শ্রমিক সস্তা আর কোন দেশে? তাই আজ না হয় কাল পোশাক আমদানি তাকে করতে হবেই এবং এই বাংলাদেশ থেকেই করতে হবে। বিশ্বব্যাংক যেমন হতভম্ব হয়েছে শেখ হাসিনার সাহস দেখে, সেরকম শ্রদ্ধেয় মজিনা গোষ্ঠীরও টনক নড়েছে। যে বাঙালি জাতি প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে বৈরী পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে আছে, ইচ্ছা হলেও তাদের কি ধ্বংস করে ফেলা এত সহজ? না।
আনোয়ারা সৈয়দ হক :কথাসাহিত্যিক
No comments