১৯ দিনে ৭৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া! by মিজান চৌধুরী
অতিমুনাফার নামে ১৯ দিনের আমদানিকৃত পণ্য থেকে ৭৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। রোজার আগে বাজার অস্থিতিশীল হবার নেপথ্য কারণ হিসাবে এটি শনাক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের তৈরি করা প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, রোজা সামনে রেখে গত পহেলা জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ১১ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ, ৬ হাজার ৮৮৮ টন ছোলা, ১৩ হাজার ৪৮৬ টন মসুর ডাল, ৩০৯ টন খেজুর, ৭৫৬ টন শুকনা মরিচ, ২৩শ’ ৬ টন রসুন, ১৬১ টন হলুদ ও ২৯শ’ ৫৮ টন আদা আমদানি করা হয়েছে। ট্যারিফ কমিশন পণ্যের আমদানি মূল্য, কাস্টমস ডিউটি, পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে পাইকারি ও আমদানিকারকের মুনাফা এবং ১০ শতাংশ হারে খুচরা ব্যবসায়ীদের মুনাফা ধরে সম্ভাব্য মূল্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু দেখা গেছে, ওই মূল্যের ধারেকাছেও বাজারে পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। প্রতিটি পণ্যে ৪০ থেকে ১শ’ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করা হচ্ছে। অথচ সরকারের নির্ধারিত মুনাফার ব্যাপারে বলা আছে, আমদানি ও পাইকারি পর্যায়ে এক শতাংশ হারে এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ শতাংশের বেশি মুনাফা করা যাবে না।
হিসাব কষে দেখা গেছে, পেঁয়াজ, ছোলা ও ডালসহ আটটি পণ্যের চালানে মুনাফার বাইরেও প্রায় ৭৫ কোটি টাকা অতিমুনাফার মাধ্যমে ভোক্তার পকেট কাটা হয়েছে। ১৯ দিনের বাইরে আরও যেসব পণ্য আমদানি করা হয় তাদের হিসাব কষলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। এই অতিমুনাফার মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও ভোক্তার ত্রাহি দশা। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকাও ব্যর্থ।
পেঁয়াজ ॥ পেঁয়াজের বাজার থেকে প্রায় ৩২ কোটি টাকা অতিমুনাফা করা হয়েছে। প্রতিকেজি ১১ টাকা দরে গত পহেলা জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬৭৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ ও আমদানিকারক পাইকারিকারক পর্যায়ে এক শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ শতাংশ মুনাফাসহ প্রতি কেজি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ মূল্য হয় ১৫ টাকা। কিন্তু সোমবার বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা। কেজিতে অতিমুনাফা করা হচ্ছে ১০ টাকা।
ছোলা ॥ অতিমুনাফার মাধ্যমে ছোলার বাজার থেকে গত ১৯ দিনের এক চালানে বাজার থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। ট্যারিফ কমিশনের পণ্যমূল্য বিশ্লেষণে বলা হয়, পহেলা জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ৬ হাজার ৮৮৮ মেট্রিক টন ছোলা আমদানি করা হয়। প্রতিকেজির আমদানি মূল্য হচ্ছে ৫৮.৪২ টাকা। অবশ্য ছোলার ওপর কোন ডিউটি নেই। এর বাইরে পরিবহন খরচ ও আমদানিকারক পাইকারি পর্যায়ে এক শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ শতাংশ মুনাফা ধরে প্রতিকেজির মূল্য আসে প্রায় ৭৬ টাকা। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা।
মসুর ডাল ॥ বিগত ১৯ দিনে ১৩ হাজার ৪৮৬ মেট্রিক টন ডাল আমদানি করা হয়েছে। বিদেশ থেকে প্রতিকেজি কেনা হয়েছে প্রায় ৫৪ টাকা দরে। নিত্যপণ্য হিসাবে কোন ডিউটি আরোপ করা হয়নি। ফলে শূন্যশুল্কে ডাল প্রবেশ করেছে। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে আমদানি ও পাইকারের এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা যোগ করলে এককেজি মসুর ডালের খুচরা মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৭০ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। প্রতিকেজিতে গড়ে ১৫ টাকা অতিমুনাফার মাধ্যমে প্রায় ২০ কোটি ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।
খেজুর ॥ খেজুরের বাজার থেকে অতিমুনাফার মাধ্যমে এক কোটি ৮ লাখ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, প্রতিকেজি খেজুর আমদানি করা হয় সাড়ে ৫০ টাকা দরে। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে পাইকারি ও আমদানি পর্যায়ে এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা যোগ করলে কেজিপ্রতি খেজুরের মূল্য ওঠে ৬৫ টাকা। কিন্তু খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৯০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। গড়ে কেজিতে অতিমুনাফা করা হচ্ছে ৩৫ টাকা।
শুকনা মরিচ ॥ শুকনা মরিচের বাজার থেকে অতিমুনাফার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা। ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, পহেলা জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ৭৬৫ মেট্রিক টন আমদানি হয়েছে। প্রতিকেজির মূল্য পড়েছে ৯৬ টাকা। এর সঙ্গে ৮.১৮ শতাংশ ডিউটি কর আরোপ হয়েছে। এছাড়া পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে পাইকারি ও আমদানি পর্যায়ে এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা যোগ করলে কেজিপ্রতি মরিচের দাম দাঁড়ায় ১২৫ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। গড়ে কেজিতে অতিমুনাফা করছে ২৫ টাকা। ওই বাজার থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
রসুন ॥ রসুনের বাজার থেকে অতিমুনাফার নামে তুলে নেয়া হয় ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পহেলা জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৩০৬ মেট্রিক টন রসুন আমদানি করা হয়েছে। প্রতিকেজির আমদানি মূল্য হচ্ছে ৫২ টাকা। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে আমদানি ও পাইকারি এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা পর্যায়ে মুনাফা যোগ হয়ে কেজিপ্রতি রসুনের মূল্য দাঁড়ায় ৬৭.৫০ টাকা। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে এককেজি রসুনের মূল্য হচ্ছে ৯০ থেকে ১শ’ টাকা। প্রতি কেজিতে গড়ে অতিমুনাফা করা হচ্ছে ২৮ টাকা।
হলুদ ॥ ট্যারিফ কমিশনের হিসেবে প্রতিকেজি হলুদের আমদানি মূল্য হচ্ছে প্রায় ৬১ টাকা। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে আমদানি ও পাইকারি এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা পর্যায়ে মুনাফা যোগ হয়ে কেজিপ্রতি হলুদের সম্ভাব্য বিক্রয় মূল্য হচ্ছে প্রায় ৭৯ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১৪০ টাকা। গড়ে প্রতিকেজিতে অতিমুনাফা করা হচ্ছে ৩৬ টাকা। ওই হিসাবে বাজার থেকে অতিমুনাফার মাধ্যমে তুলে নেয়া হয়েছে প্রায় ৬০ লাখ টাকা।
আদা ॥ এক কেজি আদা প্রায় ৩২ টাকা দরে আমদানি করা হয়। আদা আমদানি করা হয় ২ হাজার ৯৫৮ মেট্রিক টন। কিন্তু খুচরা বাজারে ওই আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। আমদানি মূল্যের সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে আমদানি ও পাইকারি এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা ধরে প্রতিকেজি আদার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ওঠে ৪১ টাকা। ওই হিসাবে আদায় অতিমুনাফা করা হচ্ছে ২৬ টাকা। ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে আদার বাজার থেকে অতিমুনাফার নামে তুলে নেয়া হয় ৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
অতিমুনাফার ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। জেলার ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে এসব দাম সংশোধন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা বন্ধ করতে খুব শীঘ্রই কিছু পণ্যের দাম বেঁধে দেয়া হবে। এ বিষয়টি বর্তমান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নির্ধারিত দাম ঠিক করতে ট্যারিফ কমিশন কাজ করছে। এছাড়া যারা অতিমুনাফার নামে বাজার অস্থিতিশীল করছে তাদের কর্মকা-ের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি চলছে।
হিসাব কষে দেখা গেছে, পেঁয়াজ, ছোলা ও ডালসহ আটটি পণ্যের চালানে মুনাফার বাইরেও প্রায় ৭৫ কোটি টাকা অতিমুনাফার মাধ্যমে ভোক্তার পকেট কাটা হয়েছে। ১৯ দিনের বাইরে আরও যেসব পণ্য আমদানি করা হয় তাদের হিসাব কষলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। এই অতিমুনাফার মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও ভোক্তার ত্রাহি দশা। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকাও ব্যর্থ।
পেঁয়াজ ॥ পেঁয়াজের বাজার থেকে প্রায় ৩২ কোটি টাকা অতিমুনাফা করা হয়েছে। প্রতিকেজি ১১ টাকা দরে গত পহেলা জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬৭৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ ও আমদানিকারক পাইকারিকারক পর্যায়ে এক শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ শতাংশ মুনাফাসহ প্রতি কেজি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ মূল্য হয় ১৫ টাকা। কিন্তু সোমবার বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা। কেজিতে অতিমুনাফা করা হচ্ছে ১০ টাকা।
ছোলা ॥ অতিমুনাফার মাধ্যমে ছোলার বাজার থেকে গত ১৯ দিনের এক চালানে বাজার থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। ট্যারিফ কমিশনের পণ্যমূল্য বিশ্লেষণে বলা হয়, পহেলা জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ৬ হাজার ৮৮৮ মেট্রিক টন ছোলা আমদানি করা হয়। প্রতিকেজির আমদানি মূল্য হচ্ছে ৫৮.৪২ টাকা। অবশ্য ছোলার ওপর কোন ডিউটি নেই। এর বাইরে পরিবহন খরচ ও আমদানিকারক পাইকারি পর্যায়ে এক শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ১০ শতাংশ মুনাফা ধরে প্রতিকেজির মূল্য আসে প্রায় ৭৬ টাকা। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা।
মসুর ডাল ॥ বিগত ১৯ দিনে ১৩ হাজার ৪৮৬ মেট্রিক টন ডাল আমদানি করা হয়েছে। বিদেশ থেকে প্রতিকেজি কেনা হয়েছে প্রায় ৫৪ টাকা দরে। নিত্যপণ্য হিসাবে কোন ডিউটি আরোপ করা হয়নি। ফলে শূন্যশুল্কে ডাল প্রবেশ করেছে। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে আমদানি ও পাইকারের এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা যোগ করলে এককেজি মসুর ডালের খুচরা মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৭০ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। প্রতিকেজিতে গড়ে ১৫ টাকা অতিমুনাফার মাধ্যমে প্রায় ২০ কোটি ২৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।
খেজুর ॥ খেজুরের বাজার থেকে অতিমুনাফার মাধ্যমে এক কোটি ৮ লাখ টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, প্রতিকেজি খেজুর আমদানি করা হয় সাড়ে ৫০ টাকা দরে। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে পাইকারি ও আমদানি পর্যায়ে এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা যোগ করলে কেজিপ্রতি খেজুরের মূল্য ওঠে ৬৫ টাকা। কিন্তু খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৯০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। গড়ে কেজিতে অতিমুনাফা করা হচ্ছে ৩৫ টাকা।
শুকনা মরিচ ॥ শুকনা মরিচের বাজার থেকে অতিমুনাফার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা। ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, পহেলা জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ৭৬৫ মেট্রিক টন আমদানি হয়েছে। প্রতিকেজির মূল্য পড়েছে ৯৬ টাকা। এর সঙ্গে ৮.১৮ শতাংশ ডিউটি কর আরোপ হয়েছে। এছাড়া পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে পাইকারি ও আমদানি পর্যায়ে এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা যোগ করলে কেজিপ্রতি মরিচের দাম দাঁড়ায় ১২৫ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। গড়ে কেজিতে অতিমুনাফা করছে ২৫ টাকা। ওই বাজার থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
রসুন ॥ রসুনের বাজার থেকে অতিমুনাফার নামে তুলে নেয়া হয় ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পহেলা জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৩০৬ মেট্রিক টন রসুন আমদানি করা হয়েছে। প্রতিকেজির আমদানি মূল্য হচ্ছে ৫২ টাকা। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে আমদানি ও পাইকারি এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা পর্যায়ে মুনাফা যোগ হয়ে কেজিপ্রতি রসুনের মূল্য দাঁড়ায় ৬৭.৫০ টাকা। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে এককেজি রসুনের মূল্য হচ্ছে ৯০ থেকে ১শ’ টাকা। প্রতি কেজিতে গড়ে অতিমুনাফা করা হচ্ছে ২৮ টাকা।
হলুদ ॥ ট্যারিফ কমিশনের হিসেবে প্রতিকেজি হলুদের আমদানি মূল্য হচ্ছে প্রায় ৬১ টাকা। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে আমদানি ও পাইকারি এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা পর্যায়ে মুনাফা যোগ হয়ে কেজিপ্রতি হলুদের সম্ভাব্য বিক্রয় মূল্য হচ্ছে প্রায় ৭৯ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১৪০ টাকা। গড়ে প্রতিকেজিতে অতিমুনাফা করা হচ্ছে ৩৬ টাকা। ওই হিসাবে বাজার থেকে অতিমুনাফার মাধ্যমে তুলে নেয়া হয়েছে প্রায় ৬০ লাখ টাকা।
আদা ॥ এক কেজি আদা প্রায় ৩২ টাকা দরে আমদানি করা হয়। আদা আমদানি করা হয় ২ হাজার ৯৫৮ মেট্রিক টন। কিন্তু খুচরা বাজারে ওই আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে। আমদানি মূল্যের সঙ্গে ৫ শতাংশ ডিউটি, পরিবহন খরচ, এক শতাংশ হারে আমদানি ও পাইকারি এবং দশ শতাংশ হারে খুচরা ব্যবসায়ীর মুনাফা ধরে প্রতিকেজি আদার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ওঠে ৪১ টাকা। ওই হিসাবে আদায় অতিমুনাফা করা হচ্ছে ২৬ টাকা। ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে আদার বাজার থেকে অতিমুনাফার নামে তুলে নেয়া হয় ৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
অতিমুনাফার ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। জেলার ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে এসব দাম সংশোধন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা বন্ধ করতে খুব শীঘ্রই কিছু পণ্যের দাম বেঁধে দেয়া হবে। এ বিষয়টি বর্তমান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নির্ধারিত দাম ঠিক করতে ট্যারিফ কমিশন কাজ করছে। এছাড়া যারা অতিমুনাফার নামে বাজার অস্থিতিশীল করছে তাদের কর্মকা-ের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি চলছে।
No comments