শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত হলেন গাফ্ফার চৌধুরীর স্ত্রী সেলিনা
লন্ডন প্রবাসী প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিষ্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধরীর সহধর্মিনী সেলিমা আফরোজা চৌধুরিকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে।রোববার বাদ জোহর জাতীয় মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর বাদ আছর তাঁর দাফন সম্পন্ন করা হয়। তাঁর জানাজায় ও দাফনে দেশের রাজনৈতিক শিল্প সাহিত্যাঙ্গনের খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গসহ বিপুল সংখ্যক লোক অংশ নেন। তাদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর করিব নানক, মোনায়েম সরকার, আমিনুল হক বাদশাহ, কবি আসাদ চৌধুরি রাশেদুল হক নবাসহ অন্যান্যরা।
গত মঙ্গলবার লন্ডনের একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকা সেলিমাকে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতির অবনতি হলে তাঁকে রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে। চিকিৎসকরা মঙ্গলবার রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে লাইফ সার্পোট খুলে নিয়ে তাকে মৃত ঘোষনা করেন। গতকাল তাঁর মরদেহ আনা হয়।
শোকার্ত এই পরিবারকে আনুষ্ঠানিকভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে হাজির হন প্রধান মন্ত্রির কার্যালয়ের একটি প্রটোকল টিম। যার নেতৃত্ব দেন মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। প্রটোকল টিমে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। এ ছাড়া দেশের শিল্প সাহিত্যিক অঙ্গনের খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গগণ। তাদের মধ্যে ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী, নাট্যব্যক্তিত্ব পীযুষ বন্দোপাধ্যায়, সাবেক সচিব মোকাম্মেল হক, বিশিষ্ট লেখক ও চিন্তাবিদ মোনায়েম সরকার, সাংবাদিক আমিনুল হক বাদশাহ, অফিসার্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি রাশেদুল হক নবা, গেটকোর চেয়ারম্যান কেএম খালেদ ও শামীমসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী।
গাফ্ফার চৌধুরির পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ছিলেন-ইউসুফ চৌধুুরি, মিল্টন চৌধুরি, শাহনেওয়াজ চৌধুরী ও সাবিনা শারমীন ছন্দা।
সকাল সাড়ে এগারোটার সিডিউল ফ্লাইট আধঘণ্টা বিলম্বে অবতরণ করে। এ সময় ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বোর্ডিং ব্রিজে এগিয়ে যান মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, উপদেষ্টা মোদাচ্ছের আলি, রাশেদুল হক নবা, আমিনুল হক বাদশা, মোনায়েম সরকার, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ও সিভিল এ্যাভিয়েশনের সদস্য গ্রুপ ক্যাপ্টেন শফিকুল আলম। ঐ ফ্লাইটের যাত্রীদের মধ্যে সবার আগে বের হয়ে আসেন গাফ্ফার চৌধুরী। স্ত্রী হারানোর শোক-যন্ত্রণা ও শারিরীক অসুস্থতার দরুণ বিপর্যস্ত এই খ্যাতনামা সাংবাদিককে হুইল চেয়ারে বসা দেখেই জড়িয়ে ধরেন কবি আসাদ চৌধুরী। পেছনেই তাঁর তিন কন্যা তনু চৌধুরী, চিনু চৌধুরী, বিনু চৌধুরী ও দুই নাতীন। তাদেরকেও জড়িয়ে ধরে শোক-বিহ্বল হয়ে পড়েন আসাদ চৌধুরী। তিনি তাদেরকে সান্তনা দিতে দিতে নিয়ে আসেন ভিআইপি লাউঞ্জে। এখানে হুইল চেয়ারে বসেই ফ্লাইট থেকে কফিন বের করা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন গাফ্ফার চৌধুরী। তার সামনের সোফায় বসা সবাই। এ সময় সোফায় বসা তনু চৌধুরী মাতৃশোকে কাঁদতে থাকলে তাকে জড়িয়ে ধরে সান্তনা দেন আসাদ চৌধুরী। গাফ্ফার চৌধুরীও তখন শোকে স্তব্দ।
নির্বাক, নিশ্চল। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মেই চিরতরে হারানো প্রিয় সহধর্মীনির বিয়োগ ব্যথায় কাতর এই নামজাদা লেখক-সাংবাদিকের মুখে তখন যেন চরম অসহায়ত্বের প্রতিচ্ছবি। কেউ তাঁকে সান্ত¡না স্বরূপ কিছু বলারও ভাষা খুঁজে পাননি। সামনে বসে থাকা শুভানুধ্যায়ীদেরও চোখে-মুখে শোকের প্রতিচ্ছবি। ওদিকে ফ্লাইট থেকে কফিন বের করে আনার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে নিয়ে আসা হয়। আধাঘণ্টার মধ্যেই কফিন বের করে আনা হয়। এ সময় তাঁর হাতে একটি টুপি দেয়া হয়। যাতে জানাজার সময় মাথায় দেয়া যায়। তারপর গাফ্ফার চৌধুরীসহ সবাই নিজ নিজ গাড়িতে ওঠেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বায়তুল মোকাররম মসজিদে। সেখানে জানাজার পর নিয়ে আসা হয় ২১ ইস্কাটনে এক আত্মীয়ের বাসায়। সেখান থেকে নেয়া হয় মিরপুর। পৌনে চারটায় তাঁকে অন্তিম শয়ানে সমাহিত করা হয়।
উল্লেখ্য ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি,/আমি কি ভুলিতে পারি.../’ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম এই অমর গানের স্রষ্টা ও বরেণ্য সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী স্ত্রী সেলিনা আফরোজ দীর্ঘকাল রোগ-শোকে ভোগেছেন। ১৯৭৪ সালে সেলিনা আফরোজ চৌধুরী অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা করাতে সপরিবারে লন্ডন চলে যান আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। পরে সেখান থেকে আর দেশে ফেরা হয়নি। চার মেয়েও এক ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন সেখানেই। প্রিয়তমা স্ত্রী সেলিনা আফরোজকে (১৯৭৪-২০১২) ৩৮ বছর ধরে লন্ডনে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। সেখানে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে দীর্ঘকাল।
অসুস্থ স্ত্রীকে ৩৮ বছর চিকিৎসা সেবা দেয়ার নজির খুব একটা নেই। এমনটা সাধারণত চোখে পড়ে না। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী দীর্ঘ সময় ধরে দাম্পত্যজীবন অতিবাহিত ও লন্ডনে রেখে চিকিৎসা সেবা দিয়ে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ দৃষ্টান্ত শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বের মধ্যে অনুকরণীয় একটি দৃষ্টান্ত।
শোকার্ত এই পরিবারকে আনুষ্ঠানিকভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে হাজির হন প্রধান মন্ত্রির কার্যালয়ের একটি প্রটোকল টিম। যার নেতৃত্ব দেন মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। প্রটোকল টিমে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। এ ছাড়া দেশের শিল্প সাহিত্যিক অঙ্গনের খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গগণ। তাদের মধ্যে ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী, নাট্যব্যক্তিত্ব পীযুষ বন্দোপাধ্যায়, সাবেক সচিব মোকাম্মেল হক, বিশিষ্ট লেখক ও চিন্তাবিদ মোনায়েম সরকার, সাংবাদিক আমিনুল হক বাদশাহ, অফিসার্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি রাশেদুল হক নবা, গেটকোর চেয়ারম্যান কেএম খালেদ ও শামীমসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী।
গাফ্ফার চৌধুরির পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে ছিলেন-ইউসুফ চৌধুুরি, মিল্টন চৌধুরি, শাহনেওয়াজ চৌধুরী ও সাবিনা শারমীন ছন্দা।
সকাল সাড়ে এগারোটার সিডিউল ফ্লাইট আধঘণ্টা বিলম্বে অবতরণ করে। এ সময় ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বোর্ডিং ব্রিজে এগিয়ে যান মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, উপদেষ্টা মোদাচ্ছের আলি, রাশেদুল হক নবা, আমিনুল হক বাদশা, মোনায়েম সরকার, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ও সিভিল এ্যাভিয়েশনের সদস্য গ্রুপ ক্যাপ্টেন শফিকুল আলম। ঐ ফ্লাইটের যাত্রীদের মধ্যে সবার আগে বের হয়ে আসেন গাফ্ফার চৌধুরী। স্ত্রী হারানোর শোক-যন্ত্রণা ও শারিরীক অসুস্থতার দরুণ বিপর্যস্ত এই খ্যাতনামা সাংবাদিককে হুইল চেয়ারে বসা দেখেই জড়িয়ে ধরেন কবি আসাদ চৌধুরী। পেছনেই তাঁর তিন কন্যা তনু চৌধুরী, চিনু চৌধুরী, বিনু চৌধুরী ও দুই নাতীন। তাদেরকেও জড়িয়ে ধরে শোক-বিহ্বল হয়ে পড়েন আসাদ চৌধুরী। তিনি তাদেরকে সান্তনা দিতে দিতে নিয়ে আসেন ভিআইপি লাউঞ্জে। এখানে হুইল চেয়ারে বসেই ফ্লাইট থেকে কফিন বের করা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন গাফ্ফার চৌধুরী। তার সামনের সোফায় বসা সবাই। এ সময় সোফায় বসা তনু চৌধুরী মাতৃশোকে কাঁদতে থাকলে তাকে জড়িয়ে ধরে সান্তনা দেন আসাদ চৌধুরী। গাফ্ফার চৌধুরীও তখন শোকে স্তব্দ।
নির্বাক, নিশ্চল। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মেই চিরতরে হারানো প্রিয় সহধর্মীনির বিয়োগ ব্যথায় কাতর এই নামজাদা লেখক-সাংবাদিকের মুখে তখন যেন চরম অসহায়ত্বের প্রতিচ্ছবি। কেউ তাঁকে সান্ত¡না স্বরূপ কিছু বলারও ভাষা খুঁজে পাননি। সামনে বসে থাকা শুভানুধ্যায়ীদেরও চোখে-মুখে শোকের প্রতিচ্ছবি। ওদিকে ফ্লাইট থেকে কফিন বের করে আনার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে নিয়ে আসা হয়। আধাঘণ্টার মধ্যেই কফিন বের করে আনা হয়। এ সময় তাঁর হাতে একটি টুপি দেয়া হয়। যাতে জানাজার সময় মাথায় দেয়া যায়। তারপর গাফ্ফার চৌধুরীসহ সবাই নিজ নিজ গাড়িতে ওঠেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বায়তুল মোকাররম মসজিদে। সেখানে জানাজার পর নিয়ে আসা হয় ২১ ইস্কাটনে এক আত্মীয়ের বাসায়। সেখান থেকে নেয়া হয় মিরপুর। পৌনে চারটায় তাঁকে অন্তিম শয়ানে সমাহিত করা হয়।
উল্লেখ্য ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি,/আমি কি ভুলিতে পারি.../’ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম এই অমর গানের স্রষ্টা ও বরেণ্য সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী স্ত্রী সেলিনা আফরোজ দীর্ঘকাল রোগ-শোকে ভোগেছেন। ১৯৭৪ সালে সেলিনা আফরোজ চৌধুরী অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা করাতে সপরিবারে লন্ডন চলে যান আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। পরে সেখান থেকে আর দেশে ফেরা হয়নি। চার মেয়েও এক ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন সেখানেই। প্রিয়তমা স্ত্রী সেলিনা আফরোজকে (১৯৭৪-২০১২) ৩৮ বছর ধরে লন্ডনে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। সেখানে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে দীর্ঘকাল।
অসুস্থ স্ত্রীকে ৩৮ বছর চিকিৎসা সেবা দেয়ার নজির খুব একটা নেই। এমনটা সাধারণত চোখে পড়ে না। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী দীর্ঘ সময় ধরে দাম্পত্যজীবন অতিবাহিত ও লন্ডনে রেখে চিকিৎসা সেবা দিয়ে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ দৃষ্টান্ত শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বের মধ্যে অনুকরণীয় একটি দৃষ্টান্ত।
No comments