আদালতে তিনজন আসামির স্বীকারোক্তি- ২১ জন মিলে কুপিয়ে পিটিয়ে হত্যা
উপর্যুপরি কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বিশ্বজিৎ দাসকে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তিন কর্মী গতকাল রোববার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন। পুলিশ ও আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল, জি এম রাশেদুজ্জামান ওরফে শাওন ও মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ গতকাল আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তাঁরা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে তাঁরা ২১ জন বিশ্বজিৎ হত্যায় অংশ নিয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, রিমান্ডে থাকা রফিকুল, রাশেদুজ্জামান ও মাহফুজুর জবানবন্দি দিতে চাইলে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম অদালতে পাঠায়। মহানগর হাকিম মোহাম্মদ এরফানউল্লাহ তাঁর খাস কামরায় জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
তিন আসামি আদালতকে বলেন, ৯ ডিসেম্বর বিরোধী দলের রাজপথ অবরোধের সময় সকাল সাড়ে আটটার দিকে একটি মিছিল বের করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। মিছিলের নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। মিছিলটি আদালতের পাশ দিয়ে রায়সাহেব বাজার হয়ে সকাল নয়টার দিকে ভিক্টোরিয়া (বাহাদুর শাহ) পার্কের কাছে পৌঁছায়। এ সময় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। তখন অবরোধের সমর্থনেও একটি মিছিল বের হয়। এতে অবরোধবিরোধী মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এরপর তাঁরা ‘ধর’ ‘ধর’ চিৎকার দিলে বিশ্বজিৎ দৌড়ে পালাতে থাকেন। তখনই বিশ্বজিতের ওপর হামলা শুরু হয়।
মাহফুজুর রহমান আদালতকে বলেন, বিস্ফোরণের পর একটি ছেলে দৌড়ে ভিক্টোরিয়া পার্কের উত্তর পাশের মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ওঠেন। এ সময় মিছিল থেকে ‘ধর ধর’ চিৎকার দেন রাজন, শাকিল, ইউনুস, টিপু, কিবরিয়া, মোস্তফা, তমাল, আলাউদ্দিন, ইমরান ও তাহসিন। তাঁরা চাপাতি, রড ও ছুরি নিয়ে পেছন থেকে বিশ্বজিৎকে ধাওয়া করেন। দোতলায় ওঠার পর রাজন ক্রিচ (ছুরি) দিয়ে আঘাত করেন। এ সময় বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আমাকে মাইরেন না, আমি অপরাধী না, আমার নাম বিশ্বজিৎ দাস।’ বিশ্বজিৎ বাঁচার জন্য দোতলায় ইনসেনটিভ ডেন্টাল কেয়ারে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় রফিকুল চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন।
রফিকুল জবানবন্দিতে বলেন, তিনি চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিৎকে কোপ দেন। একপর্যায়ে বিশ্বজিৎ দোতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামার চেষ্টা করেন। তখন তিনি, কিবরিয়া ও আলাউদ্দিন লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটান। বিশ্বজিৎ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে নাহিদ, শাওন, লিমন, আল আমিন, সাইফুল, রফিকুল, এমদাদ, আজিজসহ আরও অনেকে মিলে রড ও লাঠি দিয়ে পেটান। বিশ্বজিৎ বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
রাশেদুজ্জামান আদালতকে বলেন, ক্লিনিকের দোতলায় বিশ্বজিৎকে আঘাত করার সময় তিনি নিচে ছিলেন। তখন দেখতে পান রফিকুল চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিতের শরীরে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছেন। এ সময় ইউনুস, টিপু, কিবরিয়া ও মোস্তফা রড দিয়ে বিশ্বজিৎকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এ সময় তিনি (রাশেদুজ্জামান), আজিজ, লিমন, রফিক ও আল আমিন লাঠি ও রড নিয়ে নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিশ্বজিৎ রক্তাক্ত অবস্থায় নিচে নামার সময় তিনি (রাশেদুজ্জামান) তাঁর হাত, পিঠসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন।
রাশেদুজ্জামান বলেন, তাঁর পাশে থাকা আজিজ, সাইফুল ও এমদাদ লোহার রড দিয়ে বিশ্বজিৎকে মারধর করেন। তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আসামিরা আদালতকে জানান, বিশ্বজিৎ দাস রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়ে শাঁখারীবাজারে যাওয়ার সময় রাস্তায় পড়ে যান। একজন রিকশাচালক তাঁকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পরপরই তাঁরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যান। এরপর তাঁরা জানতে পারেন, বিশ্বজিৎ মারা গেছেন।
বিশ্বজিৎ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের ছয়জন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। হত্যাকাণ্ডের পর তাঁদের বহিষ্কার করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁদের তিনজন গতকাল জবানবন্দি দেন। অন্য চারজন এখন কারাগারে, তাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী নন। ঘটনার দুই দিন পর এক ব্যক্তির জামিনের ব্যাপারে আদালতে গেলে পুলিশ ‘সন্দেহজনক ঘোরাঘুরি’র অভিযোগে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের বিশ্বজিৎ হত্যায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ছানোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যকাণ্ডে গ্রেপ্তার কিবরিয়া ও টিপুকে গতকাল আদালতে পাঠিয়ে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বিশ্বজিৎ হত্যার পরপরই পুলিশ অবশ্য এ ঘটনায় অন্যদের ফাঁসাতে চেয়েছিল। কিন্তু গণমাধ্যম হামলাকারীদের ছবি-পরিচয় প্রকাশ করার পর পুলিশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে বাধ্য হয়। তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ক্ষেত্রে পুলিশের দায়িত্ব পালনে অবহেলা এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, রিমান্ডে থাকা রফিকুল, রাশেদুজ্জামান ও মাহফুজুর জবানবন্দি দিতে চাইলে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম অদালতে পাঠায়। মহানগর হাকিম মোহাম্মদ এরফানউল্লাহ তাঁর খাস কামরায় জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
তিন আসামি আদালতকে বলেন, ৯ ডিসেম্বর বিরোধী দলের রাজপথ অবরোধের সময় সকাল সাড়ে আটটার দিকে একটি মিছিল বের করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। মিছিলের নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম। মিছিলটি আদালতের পাশ দিয়ে রায়সাহেব বাজার হয়ে সকাল নয়টার দিকে ভিক্টোরিয়া (বাহাদুর শাহ) পার্কের কাছে পৌঁছায়। এ সময় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। তখন অবরোধের সমর্থনেও একটি মিছিল বের হয়। এতে অবরোধবিরোধী মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এরপর তাঁরা ‘ধর’ ‘ধর’ চিৎকার দিলে বিশ্বজিৎ দৌড়ে পালাতে থাকেন। তখনই বিশ্বজিতের ওপর হামলা শুরু হয়।
মাহফুজুর রহমান আদালতকে বলেন, বিস্ফোরণের পর একটি ছেলে দৌড়ে ভিক্টোরিয়া পার্কের উত্তর পাশের মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ওঠেন। এ সময় মিছিল থেকে ‘ধর ধর’ চিৎকার দেন রাজন, শাকিল, ইউনুস, টিপু, কিবরিয়া, মোস্তফা, তমাল, আলাউদ্দিন, ইমরান ও তাহসিন। তাঁরা চাপাতি, রড ও ছুরি নিয়ে পেছন থেকে বিশ্বজিৎকে ধাওয়া করেন। দোতলায় ওঠার পর রাজন ক্রিচ (ছুরি) দিয়ে আঘাত করেন। এ সময় বিশ্বজিৎ বলেন, ‘আমাকে মাইরেন না, আমি অপরাধী না, আমার নাম বিশ্বজিৎ দাস।’ বিশ্বজিৎ বাঁচার জন্য দোতলায় ইনসেনটিভ ডেন্টাল কেয়ারে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় রফিকুল চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন।
রফিকুল জবানবন্দিতে বলেন, তিনি চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিৎকে কোপ দেন। একপর্যায়ে বিশ্বজিৎ দোতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামার চেষ্টা করেন। তখন তিনি, কিবরিয়া ও আলাউদ্দিন লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটান। বিশ্বজিৎ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে নাহিদ, শাওন, লিমন, আল আমিন, সাইফুল, রফিকুল, এমদাদ, আজিজসহ আরও অনেকে মিলে রড ও লাঠি দিয়ে পেটান। বিশ্বজিৎ বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
রাশেদুজ্জামান আদালতকে বলেন, ক্লিনিকের দোতলায় বিশ্বজিৎকে আঘাত করার সময় তিনি নিচে ছিলেন। তখন দেখতে পান রফিকুল চাপাতি দিয়ে বিশ্বজিতের শরীরে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছেন। এ সময় ইউনুস, টিপু, কিবরিয়া ও মোস্তফা রড দিয়ে বিশ্বজিৎকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এ সময় তিনি (রাশেদুজ্জামান), আজিজ, লিমন, রফিক ও আল আমিন লাঠি ও রড নিয়ে নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিশ্বজিৎ রক্তাক্ত অবস্থায় নিচে নামার সময় তিনি (রাশেদুজ্জামান) তাঁর হাত, পিঠসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন।
রাশেদুজ্জামান বলেন, তাঁর পাশে থাকা আজিজ, সাইফুল ও এমদাদ লোহার রড দিয়ে বিশ্বজিৎকে মারধর করেন। তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আসামিরা আদালতকে জানান, বিশ্বজিৎ দাস রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়ে শাঁখারীবাজারে যাওয়ার সময় রাস্তায় পড়ে যান। একজন রিকশাচালক তাঁকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পরপরই তাঁরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যান। এরপর তাঁরা জানতে পারেন, বিশ্বজিৎ মারা গেছেন।
বিশ্বজিৎ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের ছয়জন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। হত্যাকাণ্ডের পর তাঁদের বহিষ্কার করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁদের তিনজন গতকাল জবানবন্দি দেন। অন্য চারজন এখন কারাগারে, তাঁরা ছাত্রলীগের কর্মী নন। ঘটনার দুই দিন পর এক ব্যক্তির জামিনের ব্যাপারে আদালতে গেলে পুলিশ ‘সন্দেহজনক ঘোরাঘুরি’র অভিযোগে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের বিশ্বজিৎ হত্যায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ছানোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যকাণ্ডে গ্রেপ্তার কিবরিয়া ও টিপুকে গতকাল আদালতে পাঠিয়ে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বিশ্বজিৎ হত্যার পরপরই পুলিশ অবশ্য এ ঘটনায় অন্যদের ফাঁসাতে চেয়েছিল। কিন্তু গণমাধ্যম হামলাকারীদের ছবি-পরিচয় প্রকাশ করার পর পুলিশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে বাধ্য হয়। তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ক্ষেত্রে পুলিশের দায়িত্ব পালনে অবহেলা এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
No comments