ভূমিকম্প পুরাণ by তন্ময় হক
রোনাল্ড এমরিখ পরিচালিত ২০১২ চলচ্চিত্রটির কথা বলা যাক। মায়া সভ্যতার মিথ ও ২০১২-এর সংখ্যাতাত্তি্বক প্রয়োগের মিশেলে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। যদিও মায়ানদের ভবিষ্যদ্বাণী ফলেনি। বড় মাত্রার ভূমিকম্পের কারণে লস অ্যাঞ্জেলেস শহর তলিয়ে যাওয়া চলচ্চিত্রটিতে দেখা গেছে।
চলচ্চিত্রে দেখা ভূমিকম্পের সেই আতঙ্ক আমাদের বাস্তব জীবনেও হাজির। ২২ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ কয়েক জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ঢাকায় যে কোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদরা। ভূমিকম্প নিয়ে নানা ধরনের মিথ প্রচলিত রয়েছে। গ্রিকদের মধ্যে প্রচলিত মিথ হচ্ছে, তাবৎ ভূমিকম্পের জন্য দায়ী ভূমিকম্পের দেবতা পোসাইডন। পোসাইডন যখন খারাপ মেজাজে থাকেন, তখন ভূমিতে ত্রিশূল দিয়ে প্রচণ্ড শক্তিতে আঘাত করেন।
বর্তমানে ভূমিকম্প ঘটার পেছনে নানা ধরনের বিজ্ঞানসম্মত কারণ ব্যাখ্যা করা হলেও প্রাচীনকালের মানুষ বিষয়টি ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ধারে-কাছেও যেতে চাইত না। তার চেয়ে গল্পের মাধ্যমে বিষয়টির ব্যাখ্যাতেই তাদের আগ্রহ ছিল বেশি। পশ্চিম আফ্রিকান সংস্কৃতির কিছু মানুষ মনে করত, জীবন টিকে আছে এক দৈত্যের মাথার মধ্যে। গাছপালা সেই দৈত্যের চুল। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী হচ্ছে পরজীবীর মতো, যারা দৈত্যের ত্বকজুড়ে ঘুরে বেড়ায়। মাঝে মধ্যে দৈত্যটি মাথা এদিক-ওদিক ঘোরায়। তখনই ভূমিকম্প হয়। অন্যদিকে জাপানের লোকজন আবার ভূমিকম্পের সঙ্গে নামাজু নামের মাগুর জাতীয় মাছের সম্পর্ক খুঁজে পায়। বিশালাকৃতির মাছটি যখন নড়েচড়ে ওঠে, তখনই ভূমিকম্প হয়। তবে এই মিথের ভিন্ন ভাষ্যও রয়েছে। নামাজু কর্দমাক্ত পরিবেশে বসবাস করে। কাশিমা নামের এক দেবতা জাপানকে ভূমিকম্প থেকে রক্ষা করে যাচ্ছেন। কাশিমা তার স্বর্গীয় শক্তির মাধ্যমে শক্ত পাথর দিয়ে নামাজুকে চেপে ধরে রাখেন। ফলে নামাজু নড়াচড়ার সুযোগ পায় না। যখন কাশিমা তার পাহারা সরিয়ে নেন তখনই নড়ে ওঠে নামাজু। ফলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। নিউজিল্যান্ডে অবশ্য পৃথিবীকে তুলনা করা হয় গর্ভবতী মা হিসেবে। রু নামে এক দেবতা মায়ের গর্ভে যখনই কান্নাকাটি করেন, তখনই ভূমিকম্প ঘটে। ভূমিকম্প নিয়ে ভারতীয় সংস্কৃতিতে প্রচলিত মিথগুলোও গল্পকেন্দ্রিক। মিথ অনুযায়ী পৃথিবী দাঁড়িয়ে আছে আটটি দৈত্যাকৃতির হাতির ওপর। এর মধ্যে একটি হাতি ক্লান্ত হয়ে পড়লে পৃথিবীর ভারসাম্য ঠিক থাকে না। পৃথিবী তখন কেঁপে ওঠে। অন্য ভাষ্যটি হলো, পৃথিবী দাঁড়িয়ে আছে চারটি বিশালাকৃতির হাতির ওপর। হাতি চারটি আবার তাদের ভারসাম্য রাখছে একটি কচ্ছপের ওপর দাঁড়িয়ে। কচ্ছপ ভারসাম্য রাখছে একটি কোবরার ওপর দাঁড়িয়ে। এদের মধ্যে যে কোনো একটি প্রাণী যখন নড়াচড়া করে, তখনই পৃথিবীতে ভূমিকম্প নয়।
এসব তো গেল ভূমিকম্প নিয়ে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে প্রচলিত মিথের কথা। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা ও লোককথায় ভূমিকম্পের আগে পশুপাখির অদ্ভুত আচরণের সম্পর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে নানা ধরনের গবেষণাও করেছেন। নব্বই দশকে জাপানের বিজ্ঞানীরা ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানার জন্য এক ধরনের মাগুর মাছের ওপর গবেষণা করেছিলেন। কিন্তু আশানুরূপ সাফল্য না পাওয়ায় ওই গবেষণা প্রকল্প বাতিল করা হয়েছিল। তবে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, কুনোব্যাঙ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পায়। ব্রিটেনের ওপেন ইউনিভার্সিটির কয়েকজন বিজ্ঞানীর গবেষণায় জানা গেছে, কুনোব্যাঙরা ভূমিকম্প-পূর্ব উপসর্গ শনাক্ত করতে পারে।
বর্তমানে ভূমিকম্প ঘটার পেছনে নানা ধরনের বিজ্ঞানসম্মত কারণ ব্যাখ্যা করা হলেও প্রাচীনকালের মানুষ বিষয়টি ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ধারে-কাছেও যেতে চাইত না। তার চেয়ে গল্পের মাধ্যমে বিষয়টির ব্যাখ্যাতেই তাদের আগ্রহ ছিল বেশি। পশ্চিম আফ্রিকান সংস্কৃতির কিছু মানুষ মনে করত, জীবন টিকে আছে এক দৈত্যের মাথার মধ্যে। গাছপালা সেই দৈত্যের চুল। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী হচ্ছে পরজীবীর মতো, যারা দৈত্যের ত্বকজুড়ে ঘুরে বেড়ায়। মাঝে মধ্যে দৈত্যটি মাথা এদিক-ওদিক ঘোরায়। তখনই ভূমিকম্প হয়। অন্যদিকে জাপানের লোকজন আবার ভূমিকম্পের সঙ্গে নামাজু নামের মাগুর জাতীয় মাছের সম্পর্ক খুঁজে পায়। বিশালাকৃতির মাছটি যখন নড়েচড়ে ওঠে, তখনই ভূমিকম্প হয়। তবে এই মিথের ভিন্ন ভাষ্যও রয়েছে। নামাজু কর্দমাক্ত পরিবেশে বসবাস করে। কাশিমা নামের এক দেবতা জাপানকে ভূমিকম্প থেকে রক্ষা করে যাচ্ছেন। কাশিমা তার স্বর্গীয় শক্তির মাধ্যমে শক্ত পাথর দিয়ে নামাজুকে চেপে ধরে রাখেন। ফলে নামাজু নড়াচড়ার সুযোগ পায় না। যখন কাশিমা তার পাহারা সরিয়ে নেন তখনই নড়ে ওঠে নামাজু। ফলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। নিউজিল্যান্ডে অবশ্য পৃথিবীকে তুলনা করা হয় গর্ভবতী মা হিসেবে। রু নামে এক দেবতা মায়ের গর্ভে যখনই কান্নাকাটি করেন, তখনই ভূমিকম্প ঘটে। ভূমিকম্প নিয়ে ভারতীয় সংস্কৃতিতে প্রচলিত মিথগুলোও গল্পকেন্দ্রিক। মিথ অনুযায়ী পৃথিবী দাঁড়িয়ে আছে আটটি দৈত্যাকৃতির হাতির ওপর। এর মধ্যে একটি হাতি ক্লান্ত হয়ে পড়লে পৃথিবীর ভারসাম্য ঠিক থাকে না। পৃথিবী তখন কেঁপে ওঠে। অন্য ভাষ্যটি হলো, পৃথিবী দাঁড়িয়ে আছে চারটি বিশালাকৃতির হাতির ওপর। হাতি চারটি আবার তাদের ভারসাম্য রাখছে একটি কচ্ছপের ওপর দাঁড়িয়ে। কচ্ছপ ভারসাম্য রাখছে একটি কোবরার ওপর দাঁড়িয়ে। এদের মধ্যে যে কোনো একটি প্রাণী যখন নড়াচড়া করে, তখনই পৃথিবীতে ভূমিকম্প নয়।
এসব তো গেল ভূমিকম্প নিয়ে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে প্রচলিত মিথের কথা। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা ও লোককথায় ভূমিকম্পের আগে পশুপাখির অদ্ভুত আচরণের সম্পর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে নানা ধরনের গবেষণাও করেছেন। নব্বই দশকে জাপানের বিজ্ঞানীরা ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানার জন্য এক ধরনের মাগুর মাছের ওপর গবেষণা করেছিলেন। কিন্তু আশানুরূপ সাফল্য না পাওয়ায় ওই গবেষণা প্রকল্প বাতিল করা হয়েছিল। তবে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, কুনোব্যাঙ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পায়। ব্রিটেনের ওপেন ইউনিভার্সিটির কয়েকজন বিজ্ঞানীর গবেষণায় জানা গেছে, কুনোব্যাঙরা ভূমিকম্প-পূর্ব উপসর্গ শনাক্ত করতে পারে।
No comments