টে লি ফো নে না গ রি ক ম ন্ত ব্য-অবস্থান অপরিবর্তিত থাকলেও দুর্নীতি কমেনি

প্রিয় পাঠক, আপনাদের সরাসরি মন্তব্য নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজনে এবার দুর্নীতির ধারণাসূচকে বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিত: আপনার মন্তব্য কী? প্রশ্নে টেলিফোনের মাধ্যমে মন্তব্য আহ্বান করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে আপনারা উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া দিয়েছেন।


মন্তব্যগুলোর কিছু অংশ আজ ছাপা হলো; বাকি অংশ আগামীকাল প্রকাশিত হবে।

মো. শাহ আলম, সরকারি কর্মকর্তা (অব.), কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আমি মনে করি, বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেনি বরং বেড়েছে।
মো. মামুন হোসাইন, শিক্ষার্থী
সরকারি বাঙলা কলেজ, ঢাকা
আমাদের দেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি যেভাবে বেড়ে চলছে, তাতে আমাদের ১২তম স্থানটি অস্বাভাবিক নয়।
কাজী জাহানারা
কবি ও লেখক, আউচপাড়া, টঙ্গী
আমাদের এই অবস্থান এক দিনে তৈরি হয়নি। দিনে দিনে পর্যায়ক্রমে আমরা এখানে এসেছি। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন।
শামসুল আলম কাগজী
ব্যবসায়ী, গোসাইরহাট, শরীয়তপুর
২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি সুদৃঢ় অবস্থানে পৌঁছাবে। বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হিসেবে পরিগণিত হবে। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ—এসব কথা শোনার পর কিছুক্ষণের জন্য কল্পনার সাগরে নিমজ্জিত হয়ে ভাবি, যে দেশে একসময় কিছুই ছিল না, সে দেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ। যে দেশের মাটিতে সোনা ফলে, সে দেশের মানুষ হবে একসময় সোনার মানুষ। আমাদের এই কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সমাপ্তি টানার নেতৃত্বের সংকটে আর কতকাল থাকতে হবে।
আবদুল আলীম, শিক্ষার্থী
মওলানা ভাসানী বিওপ্র বিশ্ববিদ্যালয়
সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালার কথা উল্লেখ থাকলেও দলীয়করণ বা রাজনৈতিক কারণে আইন প্রয়োগ সর্বোচ্চ হচ্ছে না। তা ছাড়া কিছু স্বার্থান্বেষী মহল টেন্ডারবাজি, ভূমি দখল, টোলবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে অগ্রগতি হবে কীভাবে?
রেজাউল হক
শিক্ষার্থী, বোয়ালিয়া, রাজশাহী
বাংলাদেশের দুর্নীতিতে অবস্থান অপরিবর্তিত। এর জন্য সরকারের সঙ্গে সাধারণ মানুষও দায়ী।
নাইমুর রশীদ, শিক্ষার্থী, ডুমুরিয়া, খুলনা
বাংলাদেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে যেভাবে দিনে দিনে দুর্নীতি বাড়ছে, তাতে এই অবস্থান অপরিবর্তিত থাকা বিস্ময়কর ব্যাপার।
মুশফিকুর রহমান
চাকরিজীবী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ
এমন কী কারণ আছে যে দুর্নীতি কমে যাবে? কোনো কর্তৃপক্ষেরই তো দুর্নীতি কমানোর আন্তরিকতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। দুর্নীতি কমানোর জন্য একটি সক্রিয় চলমান জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়া থাকা দরকার। যে প্রক্রিয়ার সঙ্গে জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং মতামত দিতে পারবে। তাহলেই দুর্নীতি কমে আসবে।
মো. বাপ্পি, ব্যবসায়ী, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
দেশের মানুষের নীতির পরিবর্তন না হলে দুর্নীতি কমানো সম্ভব নয়। দুর্নীতিবাজদের পরিবর্তন হলে চলবে না। মদদদানকারীদেরও পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন।
মো. সোহাগ রানা
শিক্ষার্থী, কাকরাইল, ঢাকা
দুর্নীতি রোধ করতে দরকার হলো একজন ভালো শাসক বা সরকার। কিন্তু আমাদের দেশে তা নেই। বর্তমান সরকারের কার্যক্রমে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হতে পারবে না।
মিশু, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
দুর্নীতি শব্দটা বাংলাদেশের মানুষের রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। তার পরও সরকার চাইলে দুর্নীতি দমন করতে পারে। কিন্তু আমাদের বড় দুই রাজনৈতিক দল দুর্নীতি দমন করতে অপারগ—তাই এখন বিকল্প চিন্তা করতে হবে।
কামরুল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জ
টিআইয়ের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতি কমেনি, অথচ তারা দুর্নীতির ধারণাসূচক ১ ধাপ কমিয়েছে অদৃশ্য শক্তির ইশারায়। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির জালে তারাও আটকা পড়েছে—এটাও বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কার হয়েছে বলে আমরা এই রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে পুনঃ তদন্তপূর্বক এর দৃষ্টান্তমূলক সমাধান চাই।
শাহ মুহাম্মদ জাকেরিন
শিক্ষার্থী, টিলাগড়, সিলেট
দুর্নীতি থেকে সরে আসতে হলে আমাদের নিজেদের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। রাজনৈতিক কোন্দল থেকে সরে এসে কেবল সরকারের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে না দিয়ে বরং নিজেরাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বর্তমান সরকার যেমন ইভ টিজিংয়ের ব্যাপারে সচেতনতা দেখাচ্ছে, যেমনিভাবে বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, ঠিক সেভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সরকারকে সহায়তা করতে পারি।
মঞ্জুরুল ইসলাম, শিক্ষার্থী
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, রাজশাহী
দুর্নীতিতে বাংলাদেশে সবচেয়ে এগিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা। কোনো আইনের প্রয়োগ নেই। ভবিষ্যতে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।
মো. কামাল হোসেন
প্রভাষক, ক্যামব্রিয়ান কলেজ, কুমিল্লা
দুর্নীতির সূচকে চিহ্নিত বাংলাদেশের দুর্নীতিগ্রস্ত খাতগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সে সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। দুর্নীতি দূর করতে বাস্তব ব্যবস্থা গ্রহণ করে সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির দিকে নজর দেওয়া জরুরি।
বিশ্বজিৎ সেন, কবি ও গল্পকার, চট্টগ্রাম
দুর্নীতির ক্রমাঙ্কে বাংলাদেশের অবস্থান একধাপ নেমে যাওয়ায় সত্যিই খুব আশাহত হয়েছি। ভয় হচ্ছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে গিয়ে শেষে কিনা ‘আম-ছালা’ দুটোই যায়। অসুর নিধনের জন্য দরকার দুর্গার—লক্ষ্মী বা সরস্বতীর নয়। আমরা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন এখনো দেখছি।
হরিদাস কুমার
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
উন্নয়নের প্রথম অন্তরায় হলো দুর্নীতি। দুর্নীতি একটি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থাকে অবনতির দিকে ঠেলে দেয়। দুর্নীতি আমাদের রক্তের সঙ্গে মিশে আছে। আমাদের মনে রাখা উচিত, দুর্নীতি দূর না করতে পারলে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। আমরা প্রত্যেকে সৎ ও দায়িত্বশীল হলে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব।
মেহেদী
এনজিও কর্মী, কুমিল্লা
দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে সরকার যদি আরও আন্তরিক হয়, তবে বাংলাদেশের আরও উন্নতি হতো।
বিকাশ দাস
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ, ঢাকা
টিআই বাংলাদেশের দুর্নীতি সূচকে অবস্থানের পেছনে কয়েকটি কারণের কথা উল্লেখ করেছে। জনসাধারণের আশাবাদ জনপ্রশাসনের স্বচ্ছতা, তথ্য অধিকার আইনের যথাযথ প্রয়োগ কিংবা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিতকরণের মতো উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মাধ্যমেই দুর্নীতির মাত্রা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। তা ছাড়া সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
নূর মোহাম্মদ, ব্যবসায়ী
বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি
রিং রোড, ঢাকা
আমি মনে করি, এই সূচকের তুলনায় আমাদের দুর্নীতি লাখো গুণ বেশি।
মো. দুলাল হোসেন
চাকরিজীবী, সিরাজগঞ্জ
টিআই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান একই স্থানে থাকলেও দুর্নীতি কিন্তু কমেনি, বেড়েছে অনেক।
মাহমুদুর রহমান, শিক্ষার্থী, সিলেট
যেকোনো জিনিস পচন ধরলে শুরু হয় মাথা থেকে। তেমনি রাষ্ট্রের পচন অর্থাৎ দুর্নীতির শুরু বড় বড় নেতা-নেত্রী থেকে।
আবদুল্লাহ-আল-নোমান, শিক্ষার্থী
মওলানা ভাসানী বিওপ্র বিশ্ববিদ্যালয়
অত্যন্ত দুঃখজনক যে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির প্রধান কারণ হিসেবে আমি মনে করি, প্রতিটি স্তর রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নে বন্দী। এ থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারীদের শুধু অবমাননাই করা হবে না, বিশ্বাসঘাতকতাও করা হবে।
নূরউজ্জামান
চাকরিজীবী, বনানী, ঢাকা
আমার মনে হয়, সরকার গ্রাম অনুযায়ী বরাদ্দের পরিমাণ প্রকাশ করলে জনগণ জানতে পারবে জনপ্রতিনিধিরা তাদের সঙ্গে দুর্নীতি করছে কি না। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি হ্রাস পাবে।
মো. কামাল শেখ
শিক্ষার্থী, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ
টিআইয়ের রিপোর্টে বোঝা যাচ্ছে, আমরা খুবই খারাপ অবস্থায় আছি। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে শুধু সরকারের উদ্যোগ নয়, জনগণকেও সচেতন হতে হবে।
ফারুক আহমেদ
সাংবাদিক, রাজশাহী
বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে দুর্নীতি সূচককে যারা সুচ হিসেবে ব্যবহার করেছিল, তারা বর্তমান সরকারের অনুকূল পরিবেশ নষ্টের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।

No comments

Powered by Blogger.