বিশেষ সাক্ষাৎকার-আইন প্রয়োগে সরকার কঠোর by শিরীন শারমিন চৌধুরী
শিরীন শারমিন চৌধুরী। মহাজোট সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং নবম জাতীয় সংসদের সদস্য। এর আগে তিনি ১৬ বছর আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর শিরীন শারমিন চৌধুরী ২০০০ সালে পিএইচডি লাভ করেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এসেক্স থেকে।
তিনি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতাও করেছেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন। সম্প্রতি দেশে নারী উত্ত্যক্তকরণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে প্রথম আলো তাঁর মুখোমুখি হয়।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক ওয়াসিফ
প্রথম আলো সম্প্রতি ইভ টিজারদের সহিংস উৎপাত এবং একাধিক মৃত্যুর ঘটনায় নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
শিরীন শারমিন চৌধুরী বিশেষ করে নাটোরে একজন শিক্ষক এবং ফরিদপুরে একজন মায়ের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকার প্রথম থেকেই অপরাধীদের ধরতে সচেষ্ট। আত্মহত্যার ঘটনাগুলোর খবর আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই জেলা প্রশাসকদের এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি এবং অপরাধীদের আইনের হাতে সোপর্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আইন প্রণয়ন ও সচেতনতা সৃষ্টি এবং মানববন্ধন, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ইত্যাদি করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রথম আলো এতে কি ঘটনার মাত্রা কমেছে?
শিরীন শারমিন চৌধুরী: আত্মহত্যার ঘটনা কমেছে। শিক্ষকের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনা, এটা তো একেবারে হত্যার মতো ঘৃণ্য অপরাধ। আমাদের প্রচলিত দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ও ৩০৭ ধারায় চলে গেছে।
প্রথম আলো বখাটেদের উৎপাত বন্ধে কঠোর আইন হচ্ছে কিন্তু প্রয়োগ শিথিল হচ্ছে। অপরাধীদের ধরা এবং দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। প্রথম আলোয় সংবাদ বেরিয়েছে, গত এক বছরে এক হাজার ২৬৯ জন উত্ত্যক্তকারীর মধ্যে গ্রেপ্তার মাত্র ৫২০, অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম?
শিরীন শারমিন চৌধুরী: গ্রেপ্তারের ওপর কিন্তু সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীও সেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। অনেক আসামির গ্রেপ্তার নিশ্চিতও করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক, ডিসি-এসপিদেরও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়েছে। অপরাধীদের ধরাও কিন্তু বড় কাজ। অপরাধীরা যাতে বুঝতে পারে, অপরাধ করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
প্রথম আলো কিন্তু অপরাধীদের অনেকেই তো পার পেয়ে যাচ্ছে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অপরাধীরা রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে সরকারি দলের আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছে। শিক্ষক মিজানুর রহমানকে যারা হত্যা করেছে কিংবা কুমিল্লায় যারা শিক্ষককে প্রহার করেছে, তারা কিন্তু সরকারি দলের সঙ্গে যুক্ত বলে পত্রিকায় সংবাদ ছিল।
শিরীন শারমিন চৌধুরী আমি আপনার সঙ্গে পুরোপুরি একমত নই। অপরাধী যে-ই হোক, তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে এবং তাকে বিচার-প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার অনড়।
প্রথম আলো কিন্তু দৃঢ় ঘোষণা আর শিথিল প্রয়োগের এই দূরত্বটা কি কমছে?
শিরীন শারমিন চৌধুরী এ ব্যাপারেও আমাদের নজরদারি করা আছে।
প্রথম আলো প্রতিরোধের জন্য বিশেষ সেল গঠন এবং দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করায় দ্রুত বিচার আইনে অপরাধীদের শাস্তির কোনো চিন্তা করছেন কি?
শিরীন শারমিন চৌধুরী সেটা অবশ্যই বিবেচনা করা যেতে পারে। এটা হলে আর বিচারের দীর্ঘসূত্রতা থাকবে না। আসলে আমাদের তো সব ধরনের নেটওয়ার্ক আছে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি আছে, মন্ত্রণালয়ে কমিটি আছে। এগুলোকে আরও বেশি সক্রিয় করা দরকার। কোনো অভিযোগ পেলেই তারা যাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম আরও জোরদার করব। নতুন করে কোনো কিছু স্থাপনের প্রয়োজন এখন নেই। একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে, যেখানে কমিউনিটি পুলিশ আছে, সেখানে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বাড়াব। ইতিমধ্যে এ কাজ চলছে, কোনো কিছুই থেমে নেই। আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও একই সময়ে নারী নির্যাতন বিশেষ করে ইভ টিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চলবে। এর পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধও কিন্তু থেমে নেই। সবকিছুর সমন্বয়েই তো অপরাধীদের আটকাতে হবে।
প্রথম আলো সরকার বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণায় যৌন নিপীড়কদের সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানাচ্ছে, সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করছে। কিন্তু প্রতিরোধ করতে গিয়ে যখন কেউ মারা যাচ্ছেন, এর দায়িত্ব কে নেবে? এটা কি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা নয়?
শিরীন শারমিন চৌধুরী সবটাই আছে এর ভেতরে। কোনো উপাদানই বাদ নেই। কারা করছে এই অপরাধ, সেটাও তো দেখতে হবে। মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় যেটা দেখলাম, অত্যন্ত দুঃখজনক যে রনি নামের ছেলেটা একজন মায়ের গায়ের ওপর মোটরসাইকেল তুলে দিয়েছে। এটা তো নৃশংসতা। এ ধরনের মানসিকতা এই বয়সের ছেলের মধ্যে কাজ করছে, সেটার সামাজিক দিকও আছে। নৈতিক অবক্ষয় বলেন, শিক্ষার সমস্যা বলেন ইত্যাদি দিকও আছে। এ ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও যাতে এই মানসিকতাকে কিছুটা ঠিক করে আনা যায়, সেই চেষ্টা করছি। বিভিন্ন কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলোর মাধ্যমে সচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে। আইনি পদক্ষেপ তো এই মুহূর্তে নিতে হবে। আমার মনে হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা দেখবে। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে তৎপর আছি, হস্তক্ষেপ করছি।
আবার আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে কেউ কেউ বেরিয়েও যায়। সেই দিকটাতে আমরা কাজ করছি। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ হচ্ছে। কীভাবে আরও দ্রুত ও কার্যকর বিচার নিশ্চিত করা যায়, সেসব বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন।
প্রথম আলো বর্তমানে ইভ টিজিংয়ের শাস্তি সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড। শাস্তিটা নমনীয় আবার অপরাধটাকে ইভ টিজিংয়ের মতো কোমল শব্দে বোঝানোও যায় না। অপরাধটা তো আসলে যৌন হয়রানি এবং এর অভিঘাতে আত্মহত্যা বা খুনের মতো ঘটনাও ঘটছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী ইভ টিজিং কথাটার মধ্যেই আমরা সীমাবদ্ধ থাকব কি না, সেটা ভাবা হচ্ছে। এটা যৌন হয়রানির মধ্যেই পড়ছে। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন, ২০১০’ নামে একটি আইনের খসড়া আইন কমিশন থেকে করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবেও একটা আইন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইন করেছি। একইভাবে এ বিষয়েও আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাতে হবে। আইন কমিশনের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় ১৮৬০ সালের যে আইন আছে, সে আইনে নারীর শালীনতার অমর্যাদার কথা বলা আছে। কিন্তু কী করলে সেই অমর্যাদা হয়, সেটা বলা নেই। এটা আমরা সংশোধন করতে পারি। আরেকটা আইন হলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০। প্রণয়নের সময় এর ১০ ধারায় যৌনপীড়ন, শ্লীলতাহানি ও অশোভন অঙ্গভঙ্গির কথা বলা ছিল। কিন্তু ২০০৩ সালে এই অংশটা বাদ দেওয়া হয়। বর্তমানে সংশোধিত আইনে শুধু যৌনপীড়নের ব্যাপারটা এসেছে, যৌন হয়রানির বিষয়টা নেই। এখন যৌন হয়রানির বিষয়টা আরও স্পষ্ট করে সাজা বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। যৌন হয়রানির সাজা আগে ছিল ন্যূনতম দুই বছর, সর্বাধিক ১০ বছর। এখন তো সেই ধারাটা নেই। তাই যৌন হয়রানির ধারাটা যোগ করে যৌন হয়রানির শাস্তিটা জোরদার করার কথা ভাবা হচ্ছে।
প্রথম আলো নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আপনি কি মনে করেন না যে বিজ্ঞাপন ও টেলিভিশনের রিয়েলিটি শোগুলোয় শিশুদের দিয়ে বড়দের মতো করে নাচ-গান করানো সমস্যাজনক? বিশেষ করে হিন্দি চ্যানেলের মাধ্যমে যেসব অনুষ্ঠান বাংলাদেশের দর্শক দেখছে, সেগুলোয় নারী ও শিশুদের ইমেজকে যৌনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে এবং এর প্রভাব তরুণদের ওপরও পড়ছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী এই মুহূর্তে খুব গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যৌন হয়রানির শাস্তির বিষয়টা নিশ্চিত করা। টেলিফোন, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন ইত্যাদির কারণেও তো অনেক ধরনের হয়রানি হচ্ছে, এখন আমরা এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলছি।
প্রথম আলো কিন্তু এখনই তো এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে?
শিরীন শারমিন চৌধুরী এটা কি আইন দিয়ে করবেন নাকি সচেতনতামূলক কাজ চালাবেন, সে প্রশ্নটিও গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়ত, ইন্টারনেট ইত্যাদি বিষয়ে পৃথক আইন আসবে কি না, এলে হয়তো সেখানে এটা নিয়েও আলোচনা হবে।
প্রথম আলো ইন্টারনেটের সুযোগ তো সবার নেই, কিন্তু কোটি কোটি শিশু ও বড়রা এখনই স্যাটেলাইট চ্যানেলের কিছু কিছু অনুষ্ঠানের ক্ষতিকর প্রভাবে পড়ছে। অস্ট্রেলীয় সরকার তাদের দেশে এ বিষয়ে কমিশন গঠন করে পর্যালোচনা করেছে, আইন প্রণয়ন করেছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী তাহলে হয়তো এটাও একটা বিষয় হতে পারে, যেটাকে সক্রিয় বিবেচনায় আনা যেতে পারে। এ নিয়ে কী করা যেতে পারে, সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে পারি।
প্রথম আলো আমরা দেখতে পাচ্ছি, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ জনজীবনের অনেক ধরনের নির্যাতনের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক দলের কিছু কিছু কর্মী সংশ্লিষ্ট। আপনি কি একমত যে রাজনীতির দুর্বৃত্তায়নের কারণে সমাজ আরও অনিরাপদ হয়েছে এবং অপরাধীদের রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় বন্ধ না হলে অবস্থা বদলাবে না?
শিরীন শারমিন চৌধুরী মেয়েদের নিরাপদে চলাফেরার পরিবেশ নিশ্চিত করা, এটা আমাদের নিজেদের সমাজের বিষয়। সবাইকেই এ বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। এখানে এ-আমল সে-আমলের কোনো ব্যাপার নেই। আমাদের শক্ত অবস্থান নিতে হবে যে নারী নির্যাতন রোধের ব্যাপারে কোনো আপস নেই। কাউকেই আইনের ঊর্ধ্বে থাকার সুযোগ দেওয়ার নেই—এটা আরও জোরের সঙ্গে আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আইনের ক্ষেত্রে একটা উদ্যোগ হলো, কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাঙ্গনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ। আপনারা যে পরামর্শ দিয়েছেন, সেটাও ওই বড় আইনের অংশ হতে পারে। এটা বড় উদ্যোগ, সময় লাগবে; আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত করতে হবে। আরেকটা হচ্ছে, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন তো হয়েছেই। সবখানেই যাতে এটা হয় আর মানুষ প্রতিকার পায়, সেটা দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে যৌন হয়রানির বিষয়টা আরও ব্যাখ্যা করে সংশোধন আনারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলো আইনি পদক্ষেপ।
প্রথম আলো প্রতিশ্রুতি আসছে কিন্তু আমরা তো দৃষ্টান্ত পাচ্ছি না। আইন কঠোর হলেও বাস্তবায়নের ফস্কা গেরোতে উদ্যোগগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান বদল করার প্রয়োজন আছে কি?
শিরীন শারমিন চৌধুরী নারী নির্যাতন প্রতিরোধের ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত সচেতন। আমাদের পদক্ষেপগুলো আমরা অব্যাহত রাখব। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কঠোরতা নিশ্চিত করার ব্যাপারে যা যা করা জরুরি, তা তা আমরা করছি।
প্রথম আলো কবে প্রতিবাদী শিক্ষক মিজানুর রহমানের মতো ব্যক্তিরা রাজনীতি ও আইনের আশ্রয়-প্রশ্রয় পাবেন, আর তাঁর হত্যাকারী আসিফ-রাজনের মতো যুবকেরা ক্ষমতার আশ্রয়-প্রশ্রয় থেকে পরিত্যক্ত হবে? সেই পরিবেশ কীভাবে তৈরি হবে?
শিরীন শারমিন চৌধুরী আমার একটাই কথা, অপরাধী যে-ই হোক, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই অবস্থানের ওপর জোর দেওয়া গেলেই পরিবর্তন আসবে। বিচার বিভাগের ক্ষেত্রেও দেখতে হবে, যাতে সাক্ষ্য গ্রহণ থেকে শুরু করে শাস্তি দেওয়ার প্রতিটি জায়গায় ন্যায়বিচার হয়। আইনমন্ত্রী ইতিমধ্যে ভিকটিম প্রটেকশন ল বিষয়ে কথাও বলেছেন। এ রকম প্রতিটি বিষয়ের সমন্বয় করতে পারলেই আমরা মনে হয় পরিস্থিতির উন্নতি দেখতে পাব।
প্রথম আলো আপনাকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
শিরীন শারমিন চৌধুরী আপনাকেও ধন্যবাদ।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক ওয়াসিফ
প্রথম আলো সম্প্রতি ইভ টিজারদের সহিংস উৎপাত এবং একাধিক মৃত্যুর ঘটনায় নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
শিরীন শারমিন চৌধুরী বিশেষ করে নাটোরে একজন শিক্ষক এবং ফরিদপুরে একজন মায়ের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকার প্রথম থেকেই অপরাধীদের ধরতে সচেষ্ট। আত্মহত্যার ঘটনাগুলোর খবর আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই জেলা প্রশাসকদের এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি এবং অপরাধীদের আইনের হাতে সোপর্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আইন প্রণয়ন ও সচেতনতা সৃষ্টি এবং মানববন্ধন, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ইত্যাদি করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রথম আলো এতে কি ঘটনার মাত্রা কমেছে?
শিরীন শারমিন চৌধুরী: আত্মহত্যার ঘটনা কমেছে। শিক্ষকের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনা, এটা তো একেবারে হত্যার মতো ঘৃণ্য অপরাধ। আমাদের প্রচলিত দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ও ৩০৭ ধারায় চলে গেছে।
প্রথম আলো বখাটেদের উৎপাত বন্ধে কঠোর আইন হচ্ছে কিন্তু প্রয়োগ শিথিল হচ্ছে। অপরাধীদের ধরা এবং দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। প্রথম আলোয় সংবাদ বেরিয়েছে, গত এক বছরে এক হাজার ২৬৯ জন উত্ত্যক্তকারীর মধ্যে গ্রেপ্তার মাত্র ৫২০, অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম?
শিরীন শারমিন চৌধুরী: গ্রেপ্তারের ওপর কিন্তু সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীও সেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। অনেক আসামির গ্রেপ্তার নিশ্চিতও করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক, ডিসি-এসপিদেরও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়েছে। অপরাধীদের ধরাও কিন্তু বড় কাজ। অপরাধীরা যাতে বুঝতে পারে, অপরাধ করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
প্রথম আলো কিন্তু অপরাধীদের অনেকেই তো পার পেয়ে যাচ্ছে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অপরাধীরা রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে সরকারি দলের আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছে। শিক্ষক মিজানুর রহমানকে যারা হত্যা করেছে কিংবা কুমিল্লায় যারা শিক্ষককে প্রহার করেছে, তারা কিন্তু সরকারি দলের সঙ্গে যুক্ত বলে পত্রিকায় সংবাদ ছিল।
শিরীন শারমিন চৌধুরী আমি আপনার সঙ্গে পুরোপুরি একমত নই। অপরাধী যে-ই হোক, তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে এবং তাকে বিচার-প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার অনড়।
প্রথম আলো কিন্তু দৃঢ় ঘোষণা আর শিথিল প্রয়োগের এই দূরত্বটা কি কমছে?
শিরীন শারমিন চৌধুরী এ ব্যাপারেও আমাদের নজরদারি করা আছে।
প্রথম আলো প্রতিরোধের জন্য বিশেষ সেল গঠন এবং দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করায় দ্রুত বিচার আইনে অপরাধীদের শাস্তির কোনো চিন্তা করছেন কি?
শিরীন শারমিন চৌধুরী সেটা অবশ্যই বিবেচনা করা যেতে পারে। এটা হলে আর বিচারের দীর্ঘসূত্রতা থাকবে না। আসলে আমাদের তো সব ধরনের নেটওয়ার্ক আছে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি আছে, মন্ত্রণালয়ে কমিটি আছে। এগুলোকে আরও বেশি সক্রিয় করা দরকার। কোনো অভিযোগ পেলেই তারা যাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম আরও জোরদার করব। নতুন করে কোনো কিছু স্থাপনের প্রয়োজন এখন নেই। একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে, যেখানে কমিউনিটি পুলিশ আছে, সেখানে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বাড়াব। ইতিমধ্যে এ কাজ চলছে, কোনো কিছুই থেমে নেই। আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও একই সময়ে নারী নির্যাতন বিশেষ করে ইভ টিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চলবে। এর পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধও কিন্তু থেমে নেই। সবকিছুর সমন্বয়েই তো অপরাধীদের আটকাতে হবে।
প্রথম আলো সরকার বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণায় যৌন নিপীড়কদের সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানাচ্ছে, সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করছে। কিন্তু প্রতিরোধ করতে গিয়ে যখন কেউ মারা যাচ্ছেন, এর দায়িত্ব কে নেবে? এটা কি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা নয়?
শিরীন শারমিন চৌধুরী সবটাই আছে এর ভেতরে। কোনো উপাদানই বাদ নেই। কারা করছে এই অপরাধ, সেটাও তো দেখতে হবে। মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় যেটা দেখলাম, অত্যন্ত দুঃখজনক যে রনি নামের ছেলেটা একজন মায়ের গায়ের ওপর মোটরসাইকেল তুলে দিয়েছে। এটা তো নৃশংসতা। এ ধরনের মানসিকতা এই বয়সের ছেলের মধ্যে কাজ করছে, সেটার সামাজিক দিকও আছে। নৈতিক অবক্ষয় বলেন, শিক্ষার সমস্যা বলেন ইত্যাদি দিকও আছে। এ ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও যাতে এই মানসিকতাকে কিছুটা ঠিক করে আনা যায়, সেই চেষ্টা করছি। বিভিন্ন কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলোর মাধ্যমে সচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে। আইনি পদক্ষেপ তো এই মুহূর্তে নিতে হবে। আমার মনে হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা দেখবে। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে তৎপর আছি, হস্তক্ষেপ করছি।
আবার আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে কেউ কেউ বেরিয়েও যায়। সেই দিকটাতে আমরা কাজ করছি। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ হচ্ছে। কীভাবে আরও দ্রুত ও কার্যকর বিচার নিশ্চিত করা যায়, সেসব বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন।
প্রথম আলো বর্তমানে ইভ টিজিংয়ের শাস্তি সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড। শাস্তিটা নমনীয় আবার অপরাধটাকে ইভ টিজিংয়ের মতো কোমল শব্দে বোঝানোও যায় না। অপরাধটা তো আসলে যৌন হয়রানি এবং এর অভিঘাতে আত্মহত্যা বা খুনের মতো ঘটনাও ঘটছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী ইভ টিজিং কথাটার মধ্যেই আমরা সীমাবদ্ধ থাকব কি না, সেটা ভাবা হচ্ছে। এটা যৌন হয়রানির মধ্যেই পড়ছে। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন, ২০১০’ নামে একটি আইনের খসড়া আইন কমিশন থেকে করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবেও একটা আইন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইন করেছি। একইভাবে এ বিষয়েও আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাতে হবে। আইন কমিশনের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় ১৮৬০ সালের যে আইন আছে, সে আইনে নারীর শালীনতার অমর্যাদার কথা বলা আছে। কিন্তু কী করলে সেই অমর্যাদা হয়, সেটা বলা নেই। এটা আমরা সংশোধন করতে পারি। আরেকটা আইন হলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০। প্রণয়নের সময় এর ১০ ধারায় যৌনপীড়ন, শ্লীলতাহানি ও অশোভন অঙ্গভঙ্গির কথা বলা ছিল। কিন্তু ২০০৩ সালে এই অংশটা বাদ দেওয়া হয়। বর্তমানে সংশোধিত আইনে শুধু যৌনপীড়নের ব্যাপারটা এসেছে, যৌন হয়রানির বিষয়টা নেই। এখন যৌন হয়রানির বিষয়টা আরও স্পষ্ট করে সাজা বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। যৌন হয়রানির সাজা আগে ছিল ন্যূনতম দুই বছর, সর্বাধিক ১০ বছর। এখন তো সেই ধারাটা নেই। তাই যৌন হয়রানির ধারাটা যোগ করে যৌন হয়রানির শাস্তিটা জোরদার করার কথা ভাবা হচ্ছে।
প্রথম আলো নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আপনি কি মনে করেন না যে বিজ্ঞাপন ও টেলিভিশনের রিয়েলিটি শোগুলোয় শিশুদের দিয়ে বড়দের মতো করে নাচ-গান করানো সমস্যাজনক? বিশেষ করে হিন্দি চ্যানেলের মাধ্যমে যেসব অনুষ্ঠান বাংলাদেশের দর্শক দেখছে, সেগুলোয় নারী ও শিশুদের ইমেজকে যৌনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে এবং এর প্রভাব তরুণদের ওপরও পড়ছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী এই মুহূর্তে খুব গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যৌন হয়রানির শাস্তির বিষয়টা নিশ্চিত করা। টেলিফোন, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন ইত্যাদির কারণেও তো অনেক ধরনের হয়রানি হচ্ছে, এখন আমরা এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলছি।
প্রথম আলো কিন্তু এখনই তো এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে?
শিরীন শারমিন চৌধুরী এটা কি আইন দিয়ে করবেন নাকি সচেতনতামূলক কাজ চালাবেন, সে প্রশ্নটিও গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়ত, ইন্টারনেট ইত্যাদি বিষয়ে পৃথক আইন আসবে কি না, এলে হয়তো সেখানে এটা নিয়েও আলোচনা হবে।
প্রথম আলো ইন্টারনেটের সুযোগ তো সবার নেই, কিন্তু কোটি কোটি শিশু ও বড়রা এখনই স্যাটেলাইট চ্যানেলের কিছু কিছু অনুষ্ঠানের ক্ষতিকর প্রভাবে পড়ছে। অস্ট্রেলীয় সরকার তাদের দেশে এ বিষয়ে কমিশন গঠন করে পর্যালোচনা করেছে, আইন প্রণয়ন করেছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী তাহলে হয়তো এটাও একটা বিষয় হতে পারে, যেটাকে সক্রিয় বিবেচনায় আনা যেতে পারে। এ নিয়ে কী করা যেতে পারে, সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে পারি।
প্রথম আলো আমরা দেখতে পাচ্ছি, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ জনজীবনের অনেক ধরনের নির্যাতনের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক দলের কিছু কিছু কর্মী সংশ্লিষ্ট। আপনি কি একমত যে রাজনীতির দুর্বৃত্তায়নের কারণে সমাজ আরও অনিরাপদ হয়েছে এবং অপরাধীদের রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় বন্ধ না হলে অবস্থা বদলাবে না?
শিরীন শারমিন চৌধুরী মেয়েদের নিরাপদে চলাফেরার পরিবেশ নিশ্চিত করা, এটা আমাদের নিজেদের সমাজের বিষয়। সবাইকেই এ বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। এখানে এ-আমল সে-আমলের কোনো ব্যাপার নেই। আমাদের শক্ত অবস্থান নিতে হবে যে নারী নির্যাতন রোধের ব্যাপারে কোনো আপস নেই। কাউকেই আইনের ঊর্ধ্বে থাকার সুযোগ দেওয়ার নেই—এটা আরও জোরের সঙ্গে আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আইনের ক্ষেত্রে একটা উদ্যোগ হলো, কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাঙ্গনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ। আপনারা যে পরামর্শ দিয়েছেন, সেটাও ওই বড় আইনের অংশ হতে পারে। এটা বড় উদ্যোগ, সময় লাগবে; আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত করতে হবে। আরেকটা হচ্ছে, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন তো হয়েছেই। সবখানেই যাতে এটা হয় আর মানুষ প্রতিকার পায়, সেটা দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে যৌন হয়রানির বিষয়টা আরও ব্যাখ্যা করে সংশোধন আনারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলো আইনি পদক্ষেপ।
প্রথম আলো প্রতিশ্রুতি আসছে কিন্তু আমরা তো দৃষ্টান্ত পাচ্ছি না। আইন কঠোর হলেও বাস্তবায়নের ফস্কা গেরোতে উদ্যোগগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান বদল করার প্রয়োজন আছে কি?
শিরীন শারমিন চৌধুরী নারী নির্যাতন প্রতিরোধের ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত সচেতন। আমাদের পদক্ষেপগুলো আমরা অব্যাহত রাখব। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কঠোরতা নিশ্চিত করার ব্যাপারে যা যা করা জরুরি, তা তা আমরা করছি।
প্রথম আলো কবে প্রতিবাদী শিক্ষক মিজানুর রহমানের মতো ব্যক্তিরা রাজনীতি ও আইনের আশ্রয়-প্রশ্রয় পাবেন, আর তাঁর হত্যাকারী আসিফ-রাজনের মতো যুবকেরা ক্ষমতার আশ্রয়-প্রশ্রয় থেকে পরিত্যক্ত হবে? সেই পরিবেশ কীভাবে তৈরি হবে?
শিরীন শারমিন চৌধুরী আমার একটাই কথা, অপরাধী যে-ই হোক, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই অবস্থানের ওপর জোর দেওয়া গেলেই পরিবর্তন আসবে। বিচার বিভাগের ক্ষেত্রেও দেখতে হবে, যাতে সাক্ষ্য গ্রহণ থেকে শুরু করে শাস্তি দেওয়ার প্রতিটি জায়গায় ন্যায়বিচার হয়। আইনমন্ত্রী ইতিমধ্যে ভিকটিম প্রটেকশন ল বিষয়ে কথাও বলেছেন। এ রকম প্রতিটি বিষয়ের সমন্বয় করতে পারলেই আমরা মনে হয় পরিস্থিতির উন্নতি দেখতে পাব।
প্রথম আলো আপনাকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
শিরীন শারমিন চৌধুরী আপনাকেও ধন্যবাদ।
No comments