দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণযোগ্য নয়-রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার
রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনায় করা মামলার মধ্যে আরও ১০৫টি প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে এ-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি। গত বুধবারের বৈঠকে এক হাজার ৬২১টি মামলা পেশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে কমিটি ২১১টি মামলা পর্যালোচনার জন্য ফেরত পাঠিয়েছে, ৩০৫টি প্রত্যাহারের সুপারিশ করেনি।
এ বৈঠকে যে মামলাগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে, তার সবগুলো সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের কোনো মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়নি। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর এ পর্যন্ত মোট ছয় হাজার ৫২৮টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মামলা মাত্র দুটি।
কমিটির প্রধান ও আইন প্রতিমন্ত্রী ‘বিরোধী দলের নেতাদের নামে করা মামলাগুলো প্রত্যাহারযোগ্য নয় বলেই সুপারিশ করা হয়নি’ বলে যে মন্তব্য করেছেন, তা কমিটির কাজকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। মামলা প্রত্যাহারের মাপকাঠি কী? আইন প্রয়োগে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি কাম্য নয়। প্রতিটি সরকারের আমলেই রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা দায়েরের ঘটনা ঘটেছে, যার শিকার হয়েছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা। ন্যায়বিচার নয়, বরং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই এসব হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে, এখনো হচ্ছে। মহাজোট ক্ষমতায় এসে যখন কমিটি গঠন করে তখন আশা করা হয়েছিল, দল-মতনির্বিশেষে সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু কমিটির কাজে তার কোনো প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। মাঝেমধ্যে কমিটিপ্রধানের বিরূপ মন্তব্য ও দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি বিরোধী দলকে সমালোচনার সুযোগ করে দিয়েছে। এ কথা সত্য, জোট সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে। কমিটি সেগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ করলে আপত্তির কিছু থাকবে না। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে দুই প্রধান দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেই। এখন এক দলের নেতা-কর্মীদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করলে সেটি হবে পক্ষপাতমূলক এবং আইনের শাসনের পরিপন্থী। সে ক্ষেত্রে মামলা প্রত্যাহারে কমিটির উচিত ছিল মামলার গুণাগুণ বিচার করা।
মামলা দায়ের কিংবা প্রত্যাহার—কোনো ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক বিবেচনা প্রশ্রয় পেতে পারে না। আজ যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা এ কাজটি করলে ভবিষ্যতে যাঁরা আসবেন তাঁরাও তাঁদের অনুসরণ করবেন। আগের সরকারগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা করে অন্যায় করেছিল। সেই অন্যায়ের প্রতিকার নিশ্চয়ই রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার বা দোষী-নির্দোষনির্বিশেষে ক্ষমতাসীন দলের সবাইকে বিচার-প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়া নয়। মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি সরকার গঠিত কমিটির মাধ্যমে না হয়ে সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে হলে বিতর্ক কম হতো। কেননা সংসদীয় কমিটিতে বিরোধী দলের সদস্যও আছেন। এখন এমন এক কমিটির মাধ্যমে মামলাগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হচ্ছে যেখানে বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব নেই। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার করলে পরের সরকার এসে সেই অস্ত্র যে বিরোধীদের ওপর ব্যবহার করবে না, তার নিশ্চয়তা কী? আইনকে দল ও গোষ্ঠীস্বার্থে ব্যবহারের এই মহড়া বন্ধ হোক—সেটাই সবার প্রত্যাশা।
কমিটির প্রধান ও আইন প্রতিমন্ত্রী ‘বিরোধী দলের নেতাদের নামে করা মামলাগুলো প্রত্যাহারযোগ্য নয় বলেই সুপারিশ করা হয়নি’ বলে যে মন্তব্য করেছেন, তা কমিটির কাজকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। মামলা প্রত্যাহারের মাপকাঠি কী? আইন প্রয়োগে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি কাম্য নয়। প্রতিটি সরকারের আমলেই রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা দায়েরের ঘটনা ঘটেছে, যার শিকার হয়েছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা। ন্যায়বিচার নয়, বরং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই এসব হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে, এখনো হচ্ছে। মহাজোট ক্ষমতায় এসে যখন কমিটি গঠন করে তখন আশা করা হয়েছিল, দল-মতনির্বিশেষে সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু কমিটির কাজে তার কোনো প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। মাঝেমধ্যে কমিটিপ্রধানের বিরূপ মন্তব্য ও দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি বিরোধী দলকে সমালোচনার সুযোগ করে দিয়েছে। এ কথা সত্য, জোট সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে। কমিটি সেগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ করলে আপত্তির কিছু থাকবে না। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে দুই প্রধান দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেই। এখন এক দলের নেতা-কর্মীদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করলে সেটি হবে পক্ষপাতমূলক এবং আইনের শাসনের পরিপন্থী। সে ক্ষেত্রে মামলা প্রত্যাহারে কমিটির উচিত ছিল মামলার গুণাগুণ বিচার করা।
মামলা দায়ের কিংবা প্রত্যাহার—কোনো ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক বিবেচনা প্রশ্রয় পেতে পারে না। আজ যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা এ কাজটি করলে ভবিষ্যতে যাঁরা আসবেন তাঁরাও তাঁদের অনুসরণ করবেন। আগের সরকারগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা করে অন্যায় করেছিল। সেই অন্যায়ের প্রতিকার নিশ্চয়ই রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার বা দোষী-নির্দোষনির্বিশেষে ক্ষমতাসীন দলের সবাইকে বিচার-প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়া নয়। মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি সরকার গঠিত কমিটির মাধ্যমে না হয়ে সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে হলে বিতর্ক কম হতো। কেননা সংসদীয় কমিটিতে বিরোধী দলের সদস্যও আছেন। এখন এমন এক কমিটির মাধ্যমে মামলাগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হচ্ছে যেখানে বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব নেই। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার করলে পরের সরকার এসে সেই অস্ত্র যে বিরোধীদের ওপর ব্যবহার করবে না, তার নিশ্চয়তা কী? আইনকে দল ও গোষ্ঠীস্বার্থে ব্যবহারের এই মহড়া বন্ধ হোক—সেটাই সবার প্রত্যাশা।
No comments