ইভ টিজাররা অবহেলিত-মেহমানদারিতে পুলিশ কেন নির্বিকার?
আমরা জাতি হিসেবে অতিথিপরায়ণ। নিজে খাই বা না খাই, অতিথি সমাদরে আমাদের কোনো দুর্নামের রেকর্ড নেই। তবে আমাদের এই সুনামে কালিমা লেপন করতে চলছে দেশের পুলিশ প্রশাসন। দেশে বখাটেদের হাতে একের পর এক মানুষ মারা যাচ্ছে, আর তারা নিশ্চিন্তে বসে আছে।
ইভ টিজারদের মনের গোপন কুঠুরিতে যে সুপ্ত বাসনা, তারা অতিথি হয়ে লাল দালানে যেতে চায়, সেটাকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না। দিলে তো এত দিনে তাদের অত্যাধুনিক গাড়িতে চড়ার সৌভাগ্য হতো। তারা আছে বিরোধী দলের কর্মীদের আপ্যায়ন নিয়ে। তবে সংশয়বাদীদের মনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পারফরম্যান্স নিয়েও সংশয় আছে। সরকার বসে থেকে গুড়-মুড়ি খাবে আর তারা ‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি’ এই কথা বিশ্বাস করে জীবন বাজি রেখে কাজ করবে, তা তো হয় না। তাই সম্ভবত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীও গুড়-মুড়ি খাচ্ছে। গুড়-মুড়ি না খেলেও তারা হয়তো অন্য কাজে ব্যস্ত আছে, তা না হলে বখাটেদের অতিথি হিসেবে নেবে না কেন? কত অনীহা দেখুন। গত এক বছরে ১২৬৯ জন উত্ত্যক্তকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে, আর পুলিশ আপ্যায়ন করেছে মাত্র ৫২০ জনকে। তাদের ট্রেনিংয়ে সম্ভবত মেহমানদারি শেখানো হয় না। প্রায়ই খবরে দেখা যায়, ‘এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি’ অথবা ‘পুলিশ হত্যায় ব্যবহূত মোটরসাইকেলটি জব্দ করতে পারলেও আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।’ পুলিশের কাজই হলো আসামিদের আপ্যায়ন করা, অথচ ইভ টিজাররা অবহেলিত। এতে তাদের মন কত খারাপ হয়, সেটা পুলিশ বোঝে না? বড়ই আফসোস। দেশের সব পুলিশ ফাঁড়িতে লেখা থাকে পুলিশ জনগণের বন্ধু, পুলিশকে সাহায্য করুন। মনে হচ্ছে, পুলিশকে সাহায্য করার সময় এসে গেছে। জনগণ ইতিমধ্যেই আপ্যায়ন শুরু করে দিয়েছে। কারেন্ট জালে যেভাবে জাটকা আটকা পড়ে, বখাটেদেরও ঠিক সেভাবেই আটক করে জনগণ আপ্যায়ন করবে। এতে পুলিশ বিভাগের রেপুটেশন খারাপ হবে, তারা মেহমানদারিতে ভালো না এই বলে দুর্নাম রটবে কিন্তু জনগণের কী-ই বা করার আছে।
No comments