আমেরিকার আবিষ্কারক কলম্বাসের ধর্ম নিয়ে বিতর্ক
ইতিহাস বলছে, ১৪৯১ সালে আটলান্টিক অভিযানে বেরিয়ে ১৪৯২ সালের ১২ অক্টোবর কলম্বাস ও তার দলবল আমেরিকা আবিষ্কার করেন।
বলা হয়ে থাকে, দেশ আবিষ্কারের পাশাপাশি স্থানীয় আদিবাসীদের জোরপূর্বক খ্রিস্টধর্মেও ধর্মান্তরিত করেছিলেন ইতালিয় এই নাবিক। এমন অভিযোগের পাশাপাশি সম্প্রতি তার সম্পর্কে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর আরেক তথ্য।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫ শতকের অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাস পশ্চিম ইউরোপের একজন সেফার্ডিক ইহুদি ছিলেন। এমন তথ্য জানিয়েছে স্পেনের বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, কয়েক শতাব্দীর পুরোনো এই রহস্যের সমাধানে ডিএনএ বিশ্লেষণ ব্যবহার করা হয়েছে। ১৪৯০-এর দশক থেকে তিনি স্প্যানিশ অর্থায়নে পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এর জেরে ইউরোপীয়দের আমেরিকা জয়ের পথ খোলে।
কলম্বাস নিয়ে যেসব তথ্য প্রচলিত আছে তার মধ্যে একটি হল তিনি ইতালির জেনোয়ায় জন্ম নিয়েছিলেন। অন্যান্য তত্ত্বের মধ্যে রয়েছে—তিনি স্পেনের একজন ইহুদি কিংবা গ্রিক থেকে শুরু করে বাস্ক, পর্তুগিজ বা ব্রিটিশ নাগরিক। রহস্যের সমাধানে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মিগুয়েল লোরেন্তের নেতৃত্বে ২২ বছর অনুসন্ধান কাজ পরিচালনা করেন গবেষকেরা। স্পেনের সেভিল ক্যাথেড্রালে সমাহিত দেহাবশেষের ক্ষুদ্র নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে কলম্বাসের দেহাবশেষ আছে বলে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে কর্তৃপক্ষ। যদিও এ বিষয়ে ভিন্ন দাবিও আছে।
গবেষকেরা কলম্বাসের দেহাবশেষের ক্ষুদ্র নমুনা পরিচিত আত্মীয় ও বংশধরদের সঙ্গে তুলনা করেন। শনিবার স্পেনের জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম টিভিইতে ‘কলম্বাস ডিএনএ: দ্য ট্রু অরিজিন’ শিরোনামের একটি তথ্যচিত্রে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়। সেখানে গবেষক দলের প্রধান মিগুয়েল জানান, তাদের কাছে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের ডিএনএ আছে, তা খুব আংশিক, কিন্তু যথেষ্ট। তাদের কাছে কলম্বাসের ছেলে ফার্নান্দো কোলনের ডিএনএ আছে।
মিগুয়েল জানান, ফার্নান্দোর ‘ওয়াই’ ক্রোমোজোম ও মায়ের কাছ থেকে আসা মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ উভয়ের সঙ্গে ইহুদি উৎসের সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। রেইস ক্যাটোলিকোসের আগে প্রায় ৩ লাখ ইহুদি স্পেনে বসবাস করত। ক্যাথলিক শাসকরা ইহুদি ও মুসলমানদের ক্যাথলিক ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে বা দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। মিগুয়েল জানান, ২৫টি সম্ভাব্য স্থান বিশ্লেষণের পর কলম্বাস পশ্চিম ইউরোপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সে কথা বলা যেতেই পারে।
ক্রিস্টোফার কলম্বাসের ভাস্কর্য। ছবি : সংগৃহীত |
No comments