নারায়ণগঞ্জে সাত খুন- নূর হোসেনকে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত ভারত by রোজিনা ইসলাম
নারায়ণগঞ্জে
সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর
করতে প্রস্তুত ভারত। গত সপ্তাহে চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে ভারতের
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কবে, কখন, কোন স্থান থেকে নূর হোসেনকে ফেরত নেওয়া
হবে, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। এ চিঠি পাওয়ার পর নূর
হোসেনকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার। নূর হোসেনকে
কোথায়, কখন গ্রহণ করা হবে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ
সদর দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে
প্রয়োজনে বিজিবির সহায়তা নিতে বলেছে পুলিশ সদর দপ্তরকে। আগামী সপ্তাহে বা
এ মাসের যেকোনো দিন নূর হোসেনকে ফেরত আনা হবে বলে নিশ্চিত করেছে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে আমরা প্রথম থেকেই ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। এর ধারাবাহিকতায় ভারত সরকার তাঁকে হস্তান্তর করতে প্রস্তুত বলে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। আশা রাখি, সাত দিনের মধ্যেই বিষয়টি সুরাহা হবে।’
স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা যেকোনো সময় নূর হোসেনকে হস্তান্তর করতে পারবে। এখন পুলিশ সদর দপ্তরকে প্রয়োজনীয় সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কার্যদলের বৈঠকে কলকাতায় কারাবন্দী নূর হেসেনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর তাগিদ দেয় বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার নূর হোসেনসহ যেসব সন্দেহভাজন অপরাধী ভারতে পালিয়ে আছে, তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আশ্বাস দেয়।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার পর নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে যান। এরপর ১৪ জুন কলকাতায় নূর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আলোচিত এই সাত খুনের মামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে র্যা বেরই ১৫ জন। তবে প্রায় আট মাসেও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ।
অভিযোগপত্র কবে নাগাদ দেওয়া হবে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মহিদ উদ্দিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘নূর হোসেনকে ফিরিয়ে আনার পর আমরা অভিযোগপত্র দিতে পারব বলে আশা রাখি।’ ভারত সরকারের চিঠির বিষয়টি তিনি জানেন বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে না পারার কারণে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলার অগ্রগতি হচ্ছে না। উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত প্রশাসনিক-সংক্রান্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনও জমা দিতে পারেনি। নূর হোসেনের সাক্ষ্য ছাড়া পূর্ণ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কমিটির একজন সদস্য। এ কারণে দ্রুত নূর হোসেনকে ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার। যদিও র্যা ব তাদের নিজস্ব তদন্তে ২১ জন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভারতে নূর হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, তদন্ত প্রতিবেদনসহ ‘অনুরোধপত্র’ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হয়। এর পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ অব্যাহত ছিল।
কোন প্রক্রিয়ায় নূর হোসেনকে ফেরত পাঠানো হবে, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, এ বিষয়ে চিঠিতে কিছু লেখা নেই। এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রস্তাবিত বহিঃসমর্পণ চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিনিময়ের সুযোগ রেখে এ চুক্তি করা হয়। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যে বন্দিবিনিময় করতে পারবে। এর আগে ২০১১ সালে অনুমোদন করা হয় দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তান্তর চুক্তি (টিএসপি)। তবে এখন পর্যন্ত এসব চুক্তির আওতায় কোনো আসামি বা বন্দীকে ফেরত আনা হয়নি।
টিএসপি চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি ভারতে কেবল দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তাঁকে দেশে সাজা খাটানোর জন্য ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। বহিঃসমর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে বিনিময় করার বিধান রয়েছে।
তবে বহিঃসমর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ফেরত পাঠানোর সুযোগ আছে৷ এ ছাড়া পুশব্যাক, কমনওয়েলথের হারারে স্কিমের অধীনেও এ ধরনের ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানোর সুযোগ আছে৷
তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, দুই দেশের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিষয়টি দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুরাহা করা হচ্ছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকটি সূত্র জানায়, নূর হোসেনকে হস্তান্তরের পর আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ভারতও তাঁকে ফিরিয়ে নিতে রাজি আছে বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া ভারতে পালিয়ে থাকা অন্য সন্দেহভাজন অপরাধী এবং বিভিন্ন মামলার আসামিদেরও বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
তবে স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, নূর হোসেন বা অনুপ চেটিয়াকে একজনের বিনিময়ে অন্যজনকে হস্তান্তর করা হবে না। দুটি বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। অনুপ চেটিয়ার কারাভোগ শেষ হয়ে গেছে। আর নূর হোসেনের বিষয়টি এখনো সে দেশে বিচারাধীন।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খান চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে আমরা প্রথম থেকেই ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। এর ধারাবাহিকতায় ভারত সরকার তাঁকে হস্তান্তর করতে প্রস্তুত বলে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। আশা রাখি, সাত দিনের মধ্যেই বিষয়টি সুরাহা হবে।’
স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা যেকোনো সময় নূর হোসেনকে হস্তান্তর করতে পারবে। এখন পুলিশ সদর দপ্তরকে প্রয়োজনীয় সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কার্যদলের বৈঠকে কলকাতায় কারাবন্দী নূর হেসেনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর তাগিদ দেয় বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার নূর হোসেনসহ যেসব সন্দেহভাজন অপরাধী ভারতে পালিয়ে আছে, তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আশ্বাস দেয়।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার পর নূর হোসেন ভারতে পালিয়ে যান। এরপর ১৪ জুন কলকাতায় নূর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আলোচিত এই সাত খুনের মামলায় এখন পর্যন্ত ১৭ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে র্যা বেরই ১৫ জন। তবে প্রায় আট মাসেও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ।
অভিযোগপত্র কবে নাগাদ দেওয়া হবে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মহিদ উদ্দিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘নূর হোসেনকে ফিরিয়ে আনার পর আমরা অভিযোগপত্র দিতে পারব বলে আশা রাখি।’ ভারত সরকারের চিঠির বিষয়টি তিনি জানেন বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে না পারার কারণে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলার অগ্রগতি হচ্ছে না। উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত প্রশাসনিক-সংক্রান্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনও জমা দিতে পারেনি। নূর হোসেনের সাক্ষ্য ছাড়া পূর্ণ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কমিটির একজন সদস্য। এ কারণে দ্রুত নূর হোসেনকে ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার। যদিও র্যা ব তাদের নিজস্ব তদন্তে ২১ জন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভারতে নূর হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, তদন্ত প্রতিবেদনসহ ‘অনুরোধপত্র’ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হয়। এর পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ অব্যাহত ছিল।
কোন প্রক্রিয়ায় নূর হোসেনকে ফেরত পাঠানো হবে, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, এ বিষয়ে চিঠিতে কিছু লেখা নেই। এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রস্তাবিত বহিঃসমর্পণ চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিনিময়ের সুযোগ রেখে এ চুক্তি করা হয়। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যে বন্দিবিনিময় করতে পারবে। এর আগে ২০১১ সালে অনুমোদন করা হয় দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তান্তর চুক্তি (টিএসপি)। তবে এখন পর্যন্ত এসব চুক্তির আওতায় কোনো আসামি বা বন্দীকে ফেরত আনা হয়নি।
টিএসপি চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি ভারতে কেবল দণ্ডপ্রাপ্ত হলে তাঁকে দেশে সাজা খাটানোর জন্য ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। বহিঃসমর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে বিনিময় করার বিধান রয়েছে।
তবে বহিঃসমর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ফেরত পাঠানোর সুযোগ আছে৷ এ ছাড়া পুশব্যাক, কমনওয়েলথের হারারে স্কিমের অধীনেও এ ধরনের ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানোর সুযোগ আছে৷
তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, দুই দেশের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিষয়টি দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুরাহা করা হচ্ছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকটি সূত্র জানায়, নূর হোসেনকে হস্তান্তরের পর আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ভারতও তাঁকে ফিরিয়ে নিতে রাজি আছে বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া ভারতে পালিয়ে থাকা অন্য সন্দেহভাজন অপরাধী এবং বিভিন্ন মামলার আসামিদেরও বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
তবে স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, নূর হোসেন বা অনুপ চেটিয়াকে একজনের বিনিময়ে অন্যজনকে হস্তান্তর করা হবে না। দুটি বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। অনুপ চেটিয়ার কারাভোগ শেষ হয়ে গেছে। আর নূর হোসেনের বিষয়টি এখনো সে দেশে বিচারাধীন।
No comments