চাকরির নামে ভয়াবহ প্রতারণা by রুদ্র মিজান
চাকরির নামে রাজধানীতে ভয়াবহ প্রতারণায় নেমেছে একটি চক্র। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার নামে তারা লোকজনের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে কৌশলে। ক্ষেত্রে বিশেষে তারা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্যাডে নিয়োগ ও বদলির আদেশও নকল করছে। সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেয়ার নামেও অর্থ নিচ্ছে চক্রটি। দেশের সর্বোচ্চ এ বাহিনীর নকল প্যাড বানিয়ে নিয়োগ পত্রও দিচ্ছে। এজন্য তৈরি করেছে ওয়েবসাইটও। নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিয়ে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে চক্রের প্রধান। এই চক্রে রয়েছে অন্তত ১০-১২ জন। তারা প্রত্যেকেই সুঠাম দেহের অধিকারী। চুল ছোট করে ছাঁটা। তাদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার পুত্র, ভাই জড়িত বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। এই চক্রটি দীর্ঘদিন থেকে অবাধে প্রতারণা করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সম্পর্কে অবগত নয়। এই চক্রের প্রধান খায়রুল ইসলাম রানা নিজেকে মেজর জাহিদসহ বিভিন্ন নামে পরিচয় দিয়ে থাকে। তবে প্রতারণার কৌশল হিসেবে সাধারণত আড়ালে থাকে সে। চক্রের অন্যরা চাকরিপ্রার্থী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে। প্রকাশ্যে প্রতারক চক্রের মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করে আরিফুজ্জামান খান পিকুল ও জিহাদ নামে দুই ব্যক্তি। চক্রের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছে জিয়াউর রহমান জিয়া। সে নিজেকে শফিকসহ বিভিন্ন নামে সেনাবাহিনীর পদবি ব্যবহার করে পরিচয় দিয়ে থাকে।
তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন অনেকে। তবে আতঙ্কে অনেকেই এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চান না। এই বছরের শুরুতে এই চক্রের আরিফুজ্জামান খান পিকুলের সঙ্গে পরিচয় হয় প্রতারণার শিকার নাজমুস সাকিবের মামা রহমত উল্লাহ এমদাদের। এমদাদ তখন ডাচ্বাংলা ব্যাংকের পল্লবী শাখায় কর্মরত। ওই ব্যাংকে স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট খুলতে যায় পিকুল। সে নিজেকে ঠিকাদার হিসেবে পরিচয় দেয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে পিকলু তাকে জানায় তার আপন ভাই সেনাবাহিনীর রিক্রুটিং অফিসার। ওই বাহিনীতে কারও চাকরির প্রয়োজন হলে সে সহযোগিতা করবে। এমদাদ তখন এ বিষয়ে কোন আগ্রহ দেখাননি। পরে পিকুল জানায়, সেনাবাহিনীর কিছু পদে নিয়োগ পেতে লাইনে দাঁড়াতে হয় না।
শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত হলেও চলে। এমদাদ তখন তার ভাগ্নে দরিদ্র পরিবারের সন্তান নাজমুস সাকিবকে চাকরি দেয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করেন। খুলনার সদরের ১৬/৪ পশ্চিম টুটপাড়ার রবিউল ইসলামের পুত্র নাজমুস সাকিব লেখাপড়া করেছে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। পিকুল ও তার সহযোগী জিহাদের কথানুসারে সাকিবকে ঢাকায় আনা হয়। পরে মিরপুর ১৪-এর সার্ভ ডেন্টালে সাকিবের মেডিক্যাল টেস্ট করায় পিকুল ও জাহিদ। মেডিকেল টেস্টের দু’দিন পরেই পিকুল জানায়, সাকিবের চাকরি হয়ে যাবে। তখন সে জানায়, চাকরি দেয়ার সুযোগ রয়েছে। মানুষের উপকার করার ইচ্ছা তার। অফিস সহকারী পদে চাকরির সুযোগ আছে জানিয়ে সে বলে, আর কোন প্রার্থী আছে কিনা, থাকলে নিয়ে আসেন। পরে একই এলাকার হাবিবুল্লাহর পুত্র মুহিবুল্লাহকে ঢাকায় এনে মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়।
দু’জনের মেডিক্যাল টেস্টের জন্য ১০ হাজার টাকা নেয় পিকুল ও জাহিদ। এমদাদ জানান, প্রথম দিকে কোন টাকা দাবি করেনি তারা। কিন্তু কয়েক দিন পরেই পিকুল জানায় তার ভাই মেজর তারেক বলেছে, ক্যান্টনমেন্ট মসজিদের জন্য ৭০ হাজার টাকা দিতে হবে। এজন্য তাকে রশিদ দেয়া হবে। ভাই ও ভাগ্নের চাকরির জন্য বাড়ি থেকে ঋণ করে এনে পিকুলের হাতে ৭০ হাজার টাকা দেন এমদাদ। টাকা নেয়ার পর থেকে গত আগস্ট মাসে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় পিকুল। পরে মিরপুরের ভাড়া বাসায় গিয়ে জিহাদকে পাওয়া যায়। জিহাদ ও পিকুল একই বাসায় থাকতো। তখন সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে শফিক নামধারী জিয়াউর রহমান জিয়ার সঙ্গে ফোনে পরিচয় করিয়ে দেয় পিকুল। চাকরি দেয়ার জন্য তার কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করে জিয়া। এমদাদ অপারগতা প্রকাশ করলে ফোনে কথা হয় মেজর জাহিদ নামধারী খায়রুল ইসলাম রানার সঙ্গে। রানা জানায়, বিষয়টা ‘মেজর তারেক’ দেখছেন। তাই তাকে ম্যানেজ করার জন্য ৮০ হাজার টাকা দাবি করে। আগস্টের শেষ দিকে এক সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলে করে মিরপুরের কালশীতে মেজর জাহিদ নামধারী খায়রুল ইসলাম রানার সঙ্গে দেখা হয় এমদাদের। রানার সঙ্গে সেনাবাহিনীর নিম্নপদস্থ পরিচয়দানকারী আরও এক ব্যক্তি ছিল।
এমদাদ তখন বলেন, নিয়োগপত্র পেলেই তিনি বাকি টাকা দেয়ার চিন্তা করবেন। কিন্তু নিয়োগপত্র তিনি কখন কিভাবে পাবেন জানতে চান। রানা জানায়, সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটে তা দেয়া হবে। দেয়ার পরপর আপনাকে জানাচ্ছি। পরে www.joinbangladesharmy.woeevly.com নামে একটি ওয়েবে নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছে বলে ফোনে জানায় রানা। সেখানে রিক্রুটম্যানে সাকিব ও মহিবুল্লাহসহ অনেক প্রার্থীর নাম দেয়া ছিল। নিয়োগপত্রের নিচে বিএ-৫৮০৭ মেজর খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, ডিএএজি (রিক্রুট) লেখা সিলমোহর ও স্বাক্ষর ছিল। এতে তারিখ দেয়া ছিল, ২রা সেপ্টেম্বর ২০১৪। হাতে হাতে নিয়োগপত্র দেয়ার জন্য এমদাদকে ক্যান্টনমেন্টের ইসিবি চত্বরে দাঁড়াতে বলে রানা। নিয়োগপত্র পাওয়ার পর রানার সহযোগী জিয়ার কাছে ৮০ হাজার টাকা দেন এমদাদ। এতে দেখা যায়, সাকিবকে মেস ওয়েটার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাকে ২৮শে সেপ্টেম্বর সেন্টার অ্যান্ড স্কুল সৈয়দপুরে যোগদানের জন্য বলা হয়েছে। একই পদে মুহিবুল্লাহকে একই স্থানে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়। সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে চাকরিতে যোগদানের বিষয়ে আপত্তি জানান সাকিবের মা-বাবা। এ বিষয়ে রানাকে অনুরোধ করেন এমদাদ। ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে বদলিও করিয়ে দেন রানা। সৈয়দপুর থেকে বদলি করা হয় যশোর সেনানিবাসে। এর প্রায় দুই সপ্তাহ পর থেকে ওয়েবসাইটটি বন্ধ পাওয়া যায়। এতেই ধাক্কা খান এমদাদ। ফোন বন্ধ পাওয়া যায় প্রতারকদের। কখনও কখনও ফোন খোলা থাকলেও অচেনা নম্বর রিসিভি করে না তারা।
এ বিষয়ে মিরপুর পল্লবী থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এমদাদ জানান, পুলিশ তাকে জানিয়েছে প্রতারণার বিষয়টি দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এর সত্যতা স্বীকার করে মিরপুরের পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউজ্জামান জানান, প্রতারণার অভিযোগে মামলাগুলো এখন থানায় রেকর্ড করা হচ্ছে না। এটি এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাইদুর রহমান বলেন, এ রকম কোন চক্রের বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। তবে এ বিষয়ে যথাযথ অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর নাম ভাঙিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে এই চক্র। এই চক্রের প্রধান খায়রুল ইসলাম রানার বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার পুরাতন কমলাপুর গ্রামে। তার পিতা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। মেজর জাহিদ নামধারী রানা প্রতারণার পাশাপাশি গুলশান ২-এর ৬৫ নম্বর সড়কের পপুলার রেস্টুরেন্টে কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। ঢাকায় ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকার বিজে টাওয়ার ও মাটিকাটা মসজিদ সংলগ্ন খন্দকার বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকে সে। তার সহযোগী, শফিক নামধারী জিয়াউর রহমান মাগুরার একই এলাকার কমলাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতা এরোমোজ্জামান খান। তাদের আরেক সহযোগী একই এলাকার আরিফুজ্জামান খান পিকুল। তার পিতা মৃত আকরাম খান। এই চক্রের আরেক সদস্য জিহাদ একই এলাকার পুরাতন কমলাপুরের রবিউল খোড়ার পুত্র। এছাড়াও এই চক্রে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত বলে সূত্রে জানা গেছে।
তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন অনেকে। তবে আতঙ্কে অনেকেই এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চান না। এই বছরের শুরুতে এই চক্রের আরিফুজ্জামান খান পিকুলের সঙ্গে পরিচয় হয় প্রতারণার শিকার নাজমুস সাকিবের মামা রহমত উল্লাহ এমদাদের। এমদাদ তখন ডাচ্বাংলা ব্যাংকের পল্লবী শাখায় কর্মরত। ওই ব্যাংকে স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট খুলতে যায় পিকুল। সে নিজেকে ঠিকাদার হিসেবে পরিচয় দেয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে পিকলু তাকে জানায় তার আপন ভাই সেনাবাহিনীর রিক্রুটিং অফিসার। ওই বাহিনীতে কারও চাকরির প্রয়োজন হলে সে সহযোগিতা করবে। এমদাদ তখন এ বিষয়ে কোন আগ্রহ দেখাননি। পরে পিকুল জানায়, সেনাবাহিনীর কিছু পদে নিয়োগ পেতে লাইনে দাঁড়াতে হয় না।
শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত হলেও চলে। এমদাদ তখন তার ভাগ্নে দরিদ্র পরিবারের সন্তান নাজমুস সাকিবকে চাকরি দেয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করেন। খুলনার সদরের ১৬/৪ পশ্চিম টুটপাড়ার রবিউল ইসলামের পুত্র নাজমুস সাকিব লেখাপড়া করেছে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। পিকুল ও তার সহযোগী জিহাদের কথানুসারে সাকিবকে ঢাকায় আনা হয়। পরে মিরপুর ১৪-এর সার্ভ ডেন্টালে সাকিবের মেডিক্যাল টেস্ট করায় পিকুল ও জাহিদ। মেডিকেল টেস্টের দু’দিন পরেই পিকুল জানায়, সাকিবের চাকরি হয়ে যাবে। তখন সে জানায়, চাকরি দেয়ার সুযোগ রয়েছে। মানুষের উপকার করার ইচ্ছা তার। অফিস সহকারী পদে চাকরির সুযোগ আছে জানিয়ে সে বলে, আর কোন প্রার্থী আছে কিনা, থাকলে নিয়ে আসেন। পরে একই এলাকার হাবিবুল্লাহর পুত্র মুহিবুল্লাহকে ঢাকায় এনে মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়।
দু’জনের মেডিক্যাল টেস্টের জন্য ১০ হাজার টাকা নেয় পিকুল ও জাহিদ। এমদাদ জানান, প্রথম দিকে কোন টাকা দাবি করেনি তারা। কিন্তু কয়েক দিন পরেই পিকুল জানায় তার ভাই মেজর তারেক বলেছে, ক্যান্টনমেন্ট মসজিদের জন্য ৭০ হাজার টাকা দিতে হবে। এজন্য তাকে রশিদ দেয়া হবে। ভাই ও ভাগ্নের চাকরির জন্য বাড়ি থেকে ঋণ করে এনে পিকুলের হাতে ৭০ হাজার টাকা দেন এমদাদ। টাকা নেয়ার পর থেকে গত আগস্ট মাসে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় পিকুল। পরে মিরপুরের ভাড়া বাসায় গিয়ে জিহাদকে পাওয়া যায়। জিহাদ ও পিকুল একই বাসায় থাকতো। তখন সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে শফিক নামধারী জিয়াউর রহমান জিয়ার সঙ্গে ফোনে পরিচয় করিয়ে দেয় পিকুল। চাকরি দেয়ার জন্য তার কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করে জিয়া। এমদাদ অপারগতা প্রকাশ করলে ফোনে কথা হয় মেজর জাহিদ নামধারী খায়রুল ইসলাম রানার সঙ্গে। রানা জানায়, বিষয়টা ‘মেজর তারেক’ দেখছেন। তাই তাকে ম্যানেজ করার জন্য ৮০ হাজার টাকা দাবি করে। আগস্টের শেষ দিকে এক সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলে করে মিরপুরের কালশীতে মেজর জাহিদ নামধারী খায়রুল ইসলাম রানার সঙ্গে দেখা হয় এমদাদের। রানার সঙ্গে সেনাবাহিনীর নিম্নপদস্থ পরিচয়দানকারী আরও এক ব্যক্তি ছিল।
এমদাদ তখন বলেন, নিয়োগপত্র পেলেই তিনি বাকি টাকা দেয়ার চিন্তা করবেন। কিন্তু নিয়োগপত্র তিনি কখন কিভাবে পাবেন জানতে চান। রানা জানায়, সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটে তা দেয়া হবে। দেয়ার পরপর আপনাকে জানাচ্ছি। পরে www.joinbangladesharmy.woeevly.com নামে একটি ওয়েবে নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছে বলে ফোনে জানায় রানা। সেখানে রিক্রুটম্যানে সাকিব ও মহিবুল্লাহসহ অনেক প্রার্থীর নাম দেয়া ছিল। নিয়োগপত্রের নিচে বিএ-৫৮০৭ মেজর খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, ডিএএজি (রিক্রুট) লেখা সিলমোহর ও স্বাক্ষর ছিল। এতে তারিখ দেয়া ছিল, ২রা সেপ্টেম্বর ২০১৪। হাতে হাতে নিয়োগপত্র দেয়ার জন্য এমদাদকে ক্যান্টনমেন্টের ইসিবি চত্বরে দাঁড়াতে বলে রানা। নিয়োগপত্র পাওয়ার পর রানার সহযোগী জিয়ার কাছে ৮০ হাজার টাকা দেন এমদাদ। এতে দেখা যায়, সাকিবকে মেস ওয়েটার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাকে ২৮শে সেপ্টেম্বর সেন্টার অ্যান্ড স্কুল সৈয়দপুরে যোগদানের জন্য বলা হয়েছে। একই পদে মুহিবুল্লাহকে একই স্থানে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়। সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে চাকরিতে যোগদানের বিষয়ে আপত্তি জানান সাকিবের মা-বাবা। এ বিষয়ে রানাকে অনুরোধ করেন এমদাদ। ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে বদলিও করিয়ে দেন রানা। সৈয়দপুর থেকে বদলি করা হয় যশোর সেনানিবাসে। এর প্রায় দুই সপ্তাহ পর থেকে ওয়েবসাইটটি বন্ধ পাওয়া যায়। এতেই ধাক্কা খান এমদাদ। ফোন বন্ধ পাওয়া যায় প্রতারকদের। কখনও কখনও ফোন খোলা থাকলেও অচেনা নম্বর রিসিভি করে না তারা।
এ বিষয়ে মিরপুর পল্লবী থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এমদাদ জানান, পুলিশ তাকে জানিয়েছে প্রতারণার বিষয়টি দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এর সত্যতা স্বীকার করে মিরপুরের পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউজ্জামান জানান, প্রতারণার অভিযোগে মামলাগুলো এখন থানায় রেকর্ড করা হচ্ছে না। এটি এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাইদুর রহমান বলেন, এ রকম কোন চক্রের বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। তবে এ বিষয়ে যথাযথ অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর নাম ভাঙিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে এই চক্র। এই চক্রের প্রধান খায়রুল ইসলাম রানার বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার পুরাতন কমলাপুর গ্রামে। তার পিতা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। মেজর জাহিদ নামধারী রানা প্রতারণার পাশাপাশি গুলশান ২-এর ৬৫ নম্বর সড়কের পপুলার রেস্টুরেন্টে কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। ঢাকায় ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকার বিজে টাওয়ার ও মাটিকাটা মসজিদ সংলগ্ন খন্দকার বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকে সে। তার সহযোগী, শফিক নামধারী জিয়াউর রহমান মাগুরার একই এলাকার কমলাপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতা এরোমোজ্জামান খান। তাদের আরেক সহযোগী একই এলাকার আরিফুজ্জামান খান পিকুল। তার পিতা মৃত আকরাম খান। এই চক্রের আরেক সদস্য জিহাদ একই এলাকার পুরাতন কমলাপুরের রবিউল খোড়ার পুত্র। এছাড়াও এই চক্রে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত বলে সূত্রে জানা গেছে।
No comments