পাকিস্তান ১০০ কোটি ডলার পাচ্ছে
আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর জঙ্গি দমন অভিযানে সহায়তা করতে ১০০ কোটি ডলার পাচ্ছে পাকিস্তান। মার্কিন প্রতিরক্ষা নীতির আওতায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর জন্য এ অর্থ দেওয়া হচ্ছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পাকিস্তানের প্রতি সহযোগিতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত—মার্কিন কর্মকর্তাদের এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে অর্থ বরাদ্দের এ খবর এল। খবর পিটিআই ও ডনের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গত শুক্রবার ২০১৫ অর্থবছরের ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ) স্বাক্ষর করেন। এতে সার্বিক প্রতিরক্ষা ব্যয় ৫৭ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ধরা হয়েছে। এর মধ্য থেকে কোয়ালিশন সাপোর্ট ফান্ডের (সিএসএফ) আওতায় ১০০ কোটি ডলার দেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানকে। সিএসএফ সরাসরি সামরিক সহায়তা নয়। আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানের সময় পাকিস্তানের কাছ থেকে সহায়তা নেবে যুক্তরাষ্ট্র। এতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর যে ব্যয় হবে, তা মেটাতেই এই সহায়তা। সিএসএফের আওতায় এই অর্থ পেতে অবশ্য পাকিস্তানকে কিছু শর্তও পূরণ করতে হবে। এর অন্যতম হলো, জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানো। বিশেষ করে হাক্কানি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনা করা। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ওই শর্তগুলো পূরণ করা ছাড়াও পাকিস্তানকে অর্থ দেওয়ার সুপারিশ করতে পারবেন। আফগানিস্তান থেকে ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য–সংখ্যক মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আফগান পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য যে ১৩ হাজারের মতো মার্কিন সেনা কাবুলে আছে, ২০১৬ সালে তাদেরও প্রত্যাহার করার কথা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে জঙ্গিদের নতুন করে উত্থান হওয়া ঠেকাতে সিএসএফ সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র।
এনডিএএতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রতি ছয় মাসে কংগ্রেসে মার্কিন-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সহযোগিতাবিষয়ক প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রথম প্রতিবেদনটি ৯০ দিনের মধ্যে উপস্থাপন করতে হবে। ‘সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র’: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পাকিস্তানের প্রতি সহযোগিতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে। গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন সাকি ওয়াশিংটনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তান সরকারের সর্বস্তরে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। প্রয়োজনে সহযোগিতা আরও বাড়াতে আমরা প্রস্তুত আছি।’ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই পাকিস্তান সরকারের প্রতি সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। এর আগে হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সেক্রেটারি জশ আর্নেস্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের ‘অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সন্ত্রাসবাদবিরোধী সম্পর্ক’ রয়েছে। এই সম্পর্কের মাধ্যমে দুই দেশের জনগণই উপকৃত হবে। গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের পেশোয়ারে সেনাবাহিনীর পরিচালিত একটি স্কুলে তালেবান হামলায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ১৪১ জন নিহত হয়। ওই ঘটনার পরপর প্রেসিডেন্ট ওবামা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে টেলিফোন করে জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় পাকিস্তানের জনগণের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় সমর্থনের কথা জানান।
No comments