এবার ২৩ কাস্টমস কর্মকর্তার সনদ যাচাই করছে দুদক
একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় কারও বয়স
ছিল ১১ বছর, কারও ১৪। তারা সবাই এখন মুক্তিযোদ্ধা। কেউ এ পরিচয়ে সরকারের
কাছ থেকে নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ বাড়তি সুবিধা। কেউ অবসরের বয়সসীমা
বাড়িয়েছেন, কেউ বা বাড়াতে শুরু করেছিলেন দৌড়-ঝাঁপ। তবে সম্প্রতি
মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই শুরু হলে তাদের অনেকেই চুপসে যান। এড়িয়ে চলেন
মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকার প্রসঙ্গও। তারা সবাই কাস্টমসের
কর্মকর্তা-কর্মচারী। দাপটের সঙ্গে চাকরি করছেন বিভিন্ন অবস্থানে থেকে। একজন
অবসরও নিয়েছেন সম্প্রতি।
হাতে আসা এমন ২৩ কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত সরকার ২০০৯ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির মেয়াদ ২ বছর বাড়ানোর ঘোষণা দিলে মুক্তিযুদ্ধের সনদ নেয়ার হিড়িক পড়ে। চাকরিতে যোগদানের সময় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা না দিলেও নানা কৌশলে বহু সরকারি চাকরিজীবী সনদ বাগিয়ে এ সুবিধা গ্রহণ করেন। সরকার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ প্রদানে চারটি ক্রাইটেরিয়া বেঁধে দেয়। এগুলো হচ্ছে- (১) চাকরিতে যোগদানকালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনদপ্রার্থী নিজে কোনো ঘোষণা দিয়েছিলেন কিনা, (২) মুক্তিবার্তায় প্রার্থীর নাম আছে কিনা, (৩) ২০১০ সালের আগে প্রকাশিত গেজেটগুলোতে তার নাম রয়েছে কিনা এবং (৪) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত সনদ আছে কিনা। তবে এর বাইরে থেকেও অনেকে নানা কৌশল ও জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি চাকরিতে বাড়তি সুবিধা ভোগ করছেন। পূর্ণাঙ্গ সচিব থেকে শুরু করে এমএলএসএসও রয়েছেন এ তালিকায়।
মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির সময় ২ বছর বাড়ানোর ঘোষণার পর পাঁচ বছরে ১১ হাজার ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছেন। সনদগ্রহণকারী সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম-সচিব সম্পর্কে অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দেয় দুদক। সে অনুযায়ী এক সচিব স্বেচ্ছায় অবসরে যান। এক যুগ্ম-সচিবকে পাঠানো হয় বাধ্যতামূলক অবসরে।
এ ঘটনার পর বিভিন্ন দফতর থেকে দুদকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই করে দেখার অনুরোধ জানিয়ে অভিযোগ আসতে থাকে। এ ধারাবাহিকতায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন ২৯ কর্মকর্তার মুক্তিযুদ্ধ সনদ যাচাই শুরু করে দুদক। একই ধারাবাহিকতায় কাস্টমস থেকে আসে ৪০ মুক্তিযোদ্ধার নাম। তাদের মধ্য থেকে ২৩ কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীর সনদ যাচাই শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ৬ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ মুক্তিযোদ্ধা দাবিকারী কর্মকর্তা সম্পর্কে তথ্য চেয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়। মন্ত্রণালয় যাচাই শেষে একই বছরের ৪ জুলাই ৬৩ জনের একটি তালিকা পাঠায়। তাতে ১, ৫, ৮, ১০, ১১, ১৩, ১৪, ২২, ৩০, ৩১, ৩৩, ৩৪, ৩৫ ও ৩৭-এ বর্ণিত ১৪ ব্যক্তির বয়স মুক্তিযুদ্ধকালে ১৬ বছরের কম ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ১ ক্রমিক নম্বরের নামটি সূত্রের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। অন্যরা হলেন- ঢাকা (উত্তর) কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সুপারিনটেনডেন্ট মো. ওমর ফারুক, ঢাকা কাস্টমস হাউসের ইন্সপেক্টর মো. আবুল হোসেন, গাড়িচালক মো. আমিনুল ইসলাম, ঢাকা কাস্টমস হাউসের ইন্সপেক্টর মো. মইনুল ইসলাম, পরিতোষ চক্রবর্তী, সিপাই মো. মোকলেছুর রহমান খান, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের (আমদানি) প্রিন্সিপ্যাল এপ্রেইজার মো. হাসান মনসুর, ইন্সপেক্টর মনসুর আহমেদ খান, সাব-ইন্সপেক্টর মো. আবদুল কুদ্দুস মণ্ডল, ভ্যাট কমিশনারেটের (ঢাকা দক্ষিণ) সিপাই মিজানুর রহমান, মো. ছালেহউদ্দিন, সাব-ইন্সপেক্টর এসকে সামসুল হক ও মংলা কাস্টমসের অফিস সুপারিনটেনডেন্ট অঞ্জন কুমার বালা।
প্রেরিত তালিকার ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৭, ৪৮, ৫০ এবং ৬২ নম্বরের ৮ ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা তালিকার নম্বর সঠিক না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রত্যয়ন করা যায় না বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। তারা হলেন- ঢাকা (উত্তর) কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের সুপারিনটেনডেন্ট শিকদার মজিবর রহমান, একই কার্যালয়ের ইন্সপেক্টর নরেশ চন্দ্র সরকার, মো. খলিলুর রহমান, মো. সহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের (আমদানি) প্রিন্সিপ্যাল এপ্রেইজার ঠাকুর আবদুল মান্নান, হুমায়ুন কবির, বৃহৎ করদাতা ইউনিট-এলটিইউর ইন্সপেক্টর মো. ইয়ামুল হক এবং ইন্সপেক্টর হিসেবে অবসরে যাওয়া এএনএম যুবায়ের। এছাড়া ৫৫ ক্রমিক নম্বরের ঢাকা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের সুপারিনটেনডেন্ট (চলতি দায়িত্ব) এসএম কায়কোবাদ আলীর বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় তার বিষয়ে প্রত্যয়ন করা হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই সম্পর্কে জানতে চাইলে দুদকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু যুগান্তরকে বলেন, এত অভিযোগ আসছে যে, সবগুলো যাচাই করে দেখার মতো জনবল আমাদের নেই। কিছু কিছু অভিযোগ সুপারিশ সহকারে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে আমরা হাইপ্রোফাইল কিছু অভিযোগ যাচাই করছি।
হাতে আসা এমন ২৩ কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত সরকার ২০০৯ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির মেয়াদ ২ বছর বাড়ানোর ঘোষণা দিলে মুক্তিযুদ্ধের সনদ নেয়ার হিড়িক পড়ে। চাকরিতে যোগদানের সময় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা না দিলেও নানা কৌশলে বহু সরকারি চাকরিজীবী সনদ বাগিয়ে এ সুবিধা গ্রহণ করেন। সরকার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ প্রদানে চারটি ক্রাইটেরিয়া বেঁধে দেয়। এগুলো হচ্ছে- (১) চাকরিতে যোগদানকালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনদপ্রার্থী নিজে কোনো ঘোষণা দিয়েছিলেন কিনা, (২) মুক্তিবার্তায় প্রার্থীর নাম আছে কিনা, (৩) ২০১০ সালের আগে প্রকাশিত গেজেটগুলোতে তার নাম রয়েছে কিনা এবং (৪) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত সনদ আছে কিনা। তবে এর বাইরে থেকেও অনেকে নানা কৌশল ও জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি চাকরিতে বাড়তি সুবিধা ভোগ করছেন। পূর্ণাঙ্গ সচিব থেকে শুরু করে এমএলএসএসও রয়েছেন এ তালিকায়।
মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির সময় ২ বছর বাড়ানোর ঘোষণার পর পাঁচ বছরে ১১ হাজার ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছেন। সনদগ্রহণকারী সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম-সচিব সম্পর্কে অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দেয় দুদক। সে অনুযায়ী এক সচিব স্বেচ্ছায় অবসরে যান। এক যুগ্ম-সচিবকে পাঠানো হয় বাধ্যতামূলক অবসরে।
এ ঘটনার পর বিভিন্ন দফতর থেকে দুদকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই করে দেখার অনুরোধ জানিয়ে অভিযোগ আসতে থাকে। এ ধারাবাহিকতায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন ২৯ কর্মকর্তার মুক্তিযুদ্ধ সনদ যাচাই শুরু করে দুদক। একই ধারাবাহিকতায় কাস্টমস থেকে আসে ৪০ মুক্তিযোদ্ধার নাম। তাদের মধ্য থেকে ২৩ কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীর সনদ যাচাই শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ৬ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ মুক্তিযোদ্ধা দাবিকারী কর্মকর্তা সম্পর্কে তথ্য চেয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়। মন্ত্রণালয় যাচাই শেষে একই বছরের ৪ জুলাই ৬৩ জনের একটি তালিকা পাঠায়। তাতে ১, ৫, ৮, ১০, ১১, ১৩, ১৪, ২২, ৩০, ৩১, ৩৩, ৩৪, ৩৫ ও ৩৭-এ বর্ণিত ১৪ ব্যক্তির বয়স মুক্তিযুদ্ধকালে ১৬ বছরের কম ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ১ ক্রমিক নম্বরের নামটি সূত্রের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। অন্যরা হলেন- ঢাকা (উত্তর) কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সুপারিনটেনডেন্ট মো. ওমর ফারুক, ঢাকা কাস্টমস হাউসের ইন্সপেক্টর মো. আবুল হোসেন, গাড়িচালক মো. আমিনুল ইসলাম, ঢাকা কাস্টমস হাউসের ইন্সপেক্টর মো. মইনুল ইসলাম, পরিতোষ চক্রবর্তী, সিপাই মো. মোকলেছুর রহমান খান, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের (আমদানি) প্রিন্সিপ্যাল এপ্রেইজার মো. হাসান মনসুর, ইন্সপেক্টর মনসুর আহমেদ খান, সাব-ইন্সপেক্টর মো. আবদুল কুদ্দুস মণ্ডল, ভ্যাট কমিশনারেটের (ঢাকা দক্ষিণ) সিপাই মিজানুর রহমান, মো. ছালেহউদ্দিন, সাব-ইন্সপেক্টর এসকে সামসুল হক ও মংলা কাস্টমসের অফিস সুপারিনটেনডেন্ট অঞ্জন কুমার বালা।
প্রেরিত তালিকার ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৭, ৪৮, ৫০ এবং ৬২ নম্বরের ৮ ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা তালিকার নম্বর সঠিক না থাকায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রত্যয়ন করা যায় না বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। তারা হলেন- ঢাকা (উত্তর) কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের সুপারিনটেনডেন্ট শিকদার মজিবর রহমান, একই কার্যালয়ের ইন্সপেক্টর নরেশ চন্দ্র সরকার, মো. খলিলুর রহমান, মো. সহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের (আমদানি) প্রিন্সিপ্যাল এপ্রেইজার ঠাকুর আবদুল মান্নান, হুমায়ুন কবির, বৃহৎ করদাতা ইউনিট-এলটিইউর ইন্সপেক্টর মো. ইয়ামুল হক এবং ইন্সপেক্টর হিসেবে অবসরে যাওয়া এএনএম যুবায়ের। এছাড়া ৫৫ ক্রমিক নম্বরের ঢাকা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের সুপারিনটেনডেন্ট (চলতি দায়িত্ব) এসএম কায়কোবাদ আলীর বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় তার বিষয়ে প্রত্যয়ন করা হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই সম্পর্কে জানতে চাইলে দুদকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু যুগান্তরকে বলেন, এত অভিযোগ আসছে যে, সবগুলো যাচাই করে দেখার মতো জনবল আমাদের নেই। কিছু কিছু অভিযোগ সুপারিশ সহকারে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে আমরা হাইপ্রোফাইল কিছু অভিযোগ যাচাই করছি।
No comments