বড় দু’দলেই গণতন্ত্রের অভাব
বাংলাদেশে
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের প্রধান দুই
রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দল দু’টির গণতান্ত্রিক আদর্শ ও চর্চার
মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রতি তাদের অঙ্গীকার
খুবই দুর্বল। আদর্শের ক্ষেত্রে দলের ভেতরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি জোরদার করতে
পারেনি। আর চর্চার ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে দলের মধ্যে প্রতিযোগিতার
বিষয়টি কেন্দ্র থেকে ভালভাবে নেয়া হয় না। দু’টি বড় দল আধুনিক ও সাংবিধানিক
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে দল দু’টির রাজনৈতিক
আচরণ এ পর্যন্ত অর্জিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য ঝুঁকি হিসেবে দেখা
দিয়েছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড
ডেভেলপমেন্টের এক গবেষণায় এমনই তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশের শাসন
পরিস্থিতি ২০১৩: গণতন্ত্র, দল, রাজনীতি’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি গতকাল
ব্র্যাক সেন্টার ইন্ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে
প্রধান অতিথি ছিলেন ‘গণফোরাম’ সভাপতি ড. কামাল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, অ্যাডভোকেট ইউসুফ
হোসেন হুমায়ুন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
প্রতিবেদনের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. বিনায়ক সেন,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ
আহমেদ, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী
কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ
উদ্দিন খান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন,
কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সরকারি
সংস্থা, দাতাগোষ্ঠী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি অংশ নেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধান দু’দলের ভেতরেই ভেতরে গণতন্ত্র চর্চার অভাব। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জেলা কমিটিগুলো তুলনামূলক বেশি গণতান্ত্রিক। দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে দুটি দলের অবস্থাই প্রায় সমান। তবে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিত্বমূলক, অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতার দিক থেকে বিএনপির চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে। দায়িত্বশীলতা ও প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিএনপি আওয়ামী লীগের চেয়ে এগিয়ে আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার ও বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ওপর একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারের প্রবণতা রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রকট। বড় দলগুলো ‘সফলভাবে’ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজেদের ‘দখলে’ নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে তারা ওই সব প্রতিষ্ঠানের ওপর রাজনৈতিক প্র্রভাব খাটিয়ে নিজেদের পক্ষে কাজ করিয়ে নিতে পারছে। সুশীল সমাজ, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, পুলিশ বাহিনী এবং জেলা পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়ছে দলতন্ত্রের প্রভাব।
এ একচ্ছত্র দলতন্ত্রের ভয়ানক প্রভাব পড়েছে দেশের সুশীল সমাজের ওপর। একসময়ের সেই সরব সুশীল সমাজ এখন মিইয়ে গেছে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যাদের ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, তারা এখন অকেজো, বিশেষ করে গত কয়েক বছরের চিত্র এটাই।
এসব হানাহানি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সুপারিশে বলা হয়, দলের শীর্ষ নেতাদের এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে দলের মধ্যকার সব মতের নেতা-কর্মীরা তাদের পাশে আসতে পারেন। মুক্তচিন্তা ও বিতর্কের সুযোগ পান। একই সঙ্গে দলের মধ্যে যারা মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো লঙ্ঘন করবেন, তাদের জবাবদিহি ও শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য দু’টি দলই প্রায় ১২ শতাংশ প্রার্থী মনোনয়ন দেয় দলের অভ্যন্তরে ভোটের মাধ্যমে। বাকি ৮৮ শতাংশ প্রার্থী মনোনয়ন পান দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের পছন্দে। আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির ৪৫ শতাংশ পদে ব্যবসায়ী ও ঠিকাদাররা। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন আইনজীবীরা। যারা সব সময় দলের রাজনীতিতে যুক্ত থাকেন, তাদের মাত্র ১৫ শতাংশ কমিটিতে স্থান পান। বিএনপির জেলা কমিটিতেও ৪৫ শতাংশ নেতা ব্যবসায়ী-ঠিকাদার। সার্বক্ষণিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, এমন নেতারা কমিটির মাত্র ২৩ শতাংশ।
এ গবেষণায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের ৮৬ শতাংশই মনে করেন, ব্যবসায়ীরা নিজেদের উন্নতির জন্য রাজনীতিতে আসছেন। এছাড়া দলের রাজনীতি, কমিটি ও নীতি-নির্ধারণীতে নারীদের অংশগ্রহণ খুবই কম। বর্তমান সংসদের ১৯৩ জন সদস্যই ব্যবসায়ী। নবম সংসদে এ সংখ্যা ছিল ১৮৫। দশম সংসদে আইনজীবী ৪৫ জন, আর সাবেক সামরিক কর্মকর্তা আছেন ৭ জন। দশম সংসদের ১২৮ জন সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আছে। আর দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ এনেছে ৩২ জনের বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ মোট লেনদেন করা অর্থের মাত্র ২২ শতাংশ ব্যয় করে ব্যাংকের মাধ্যমে। বাকি ৭৮ শতাংশ ব্যয়ই হয় অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমে। বিএনপি ১৪ শতাংশ অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে, বাকি ৮৬ শতাংশ অর্থ অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমে ব্যয় করে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে প্রায় ১২০০ রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর আগের চার বছরের তুলনায় এ সহিংসতা প্রায় তিন গুণ বেশি। ২০১৩ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এ সময়ে আওয়ামী লীগের কারণে সহিংসতা হয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ।
গবেষণায় দেখা গেছে, রাজনৈতিক সহিংসতার বড় অংশই ঘটে থাকে নিজেদের মধ্যে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে। আর এটা বেশি হয়ে থাকে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যেই। যেমন ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগে রাজনৈতিক সহিংসতার ৭৩ শতাংশই ঘটে নিজেদের মধ্যে। এর আগে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন একইভাবে তারাই এগিয়ে ছিল নিজেদের মধ্যে সহিংসতার ক্ষেত্রে। তবে ২০১৩ সালে এ পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। ওই বছর রাজনৈতিক সহিংসতার প্রায় ৯৩ শতাংশই ঘটে এক দলের সঙ্গে অন্য দলের। আর নিজেদের মধ্যে হয় মাত্র ৭ শতাংশ। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ২৮ ভাগ, বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল ৫ ভাগ এবং জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির ৪ ভাগ ক্ষেত্রে সহিংসতায় জড়িত ছিল। অর্থাৎ মোট সহিংসতার ৩৭ ভাগের সঙ্গে এ তিন দলের ছাত্রসংগঠনগুলো জড়িত ছিল। ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে সংঘটিত সহিংসতায় আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বেশি ছিল। ২০১৩ সালে ১৭ ভাগ সহিংসতা এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগের পাঁচ বছরে মাত্র ১৪ ভাগ সহিংসতায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ঢাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে প্রায় ৩৫০টি। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, খুলনা, বগুড়া, কুমিল্লায় অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৩ সালে ঢাকায় সহিংসতা হয়েছে প্রায় ১৫০টি। ওই বছর বাকি জেলাগুলোতে সহিংসতা অনেক বেড়ে যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধান দু’দলের ভেতরেই ভেতরে গণতন্ত্র চর্চার অভাব। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জেলা কমিটিগুলো তুলনামূলক বেশি গণতান্ত্রিক। দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে দুটি দলের অবস্থাই প্রায় সমান। তবে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিত্বমূলক, অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতার দিক থেকে বিএনপির চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে। দায়িত্বশীলতা ও প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিএনপি আওয়ামী লীগের চেয়ে এগিয়ে আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার ও বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ওপর একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারের প্রবণতা রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রকট। বড় দলগুলো ‘সফলভাবে’ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজেদের ‘দখলে’ নিয়েছে এবং এর মাধ্যমে তারা ওই সব প্রতিষ্ঠানের ওপর রাজনৈতিক প্র্রভাব খাটিয়ে নিজেদের পক্ষে কাজ করিয়ে নিতে পারছে। সুশীল সমাজ, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, পুলিশ বাহিনী এবং জেলা পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়ছে দলতন্ত্রের প্রভাব।
এ একচ্ছত্র দলতন্ত্রের ভয়ানক প্রভাব পড়েছে দেশের সুশীল সমাজের ওপর। একসময়ের সেই সরব সুশীল সমাজ এখন মিইয়ে গেছে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যাদের ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, তারা এখন অকেজো, বিশেষ করে গত কয়েক বছরের চিত্র এটাই।
এসব হানাহানি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সুপারিশে বলা হয়, দলের শীর্ষ নেতাদের এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে দলের মধ্যকার সব মতের নেতা-কর্মীরা তাদের পাশে আসতে পারেন। মুক্তচিন্তা ও বিতর্কের সুযোগ পান। একই সঙ্গে দলের মধ্যে যারা মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো লঙ্ঘন করবেন, তাদের জবাবদিহি ও শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য দু’টি দলই প্রায় ১২ শতাংশ প্রার্থী মনোনয়ন দেয় দলের অভ্যন্তরে ভোটের মাধ্যমে। বাকি ৮৮ শতাংশ প্রার্থী মনোনয়ন পান দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের পছন্দে। আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির ৪৫ শতাংশ পদে ব্যবসায়ী ও ঠিকাদাররা। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন আইনজীবীরা। যারা সব সময় দলের রাজনীতিতে যুক্ত থাকেন, তাদের মাত্র ১৫ শতাংশ কমিটিতে স্থান পান। বিএনপির জেলা কমিটিতেও ৪৫ শতাংশ নেতা ব্যবসায়ী-ঠিকাদার। সার্বক্ষণিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, এমন নেতারা কমিটির মাত্র ২৩ শতাংশ।
এ গবেষণায় অংশ নেয়া ব্যক্তিদের ৮৬ শতাংশই মনে করেন, ব্যবসায়ীরা নিজেদের উন্নতির জন্য রাজনীতিতে আসছেন। এছাড়া দলের রাজনীতি, কমিটি ও নীতি-নির্ধারণীতে নারীদের অংশগ্রহণ খুবই কম। বর্তমান সংসদের ১৯৩ জন সদস্যই ব্যবসায়ী। নবম সংসদে এ সংখ্যা ছিল ১৮৫। দশম সংসদে আইনজীবী ৪৫ জন, আর সাবেক সামরিক কর্মকর্তা আছেন ৭ জন। দশম সংসদের ১২৮ জন সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আছে। আর দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ এনেছে ৩২ জনের বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ মোট লেনদেন করা অর্থের মাত্র ২২ শতাংশ ব্যয় করে ব্যাংকের মাধ্যমে। বাকি ৭৮ শতাংশ ব্যয়ই হয় অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমে। বিএনপি ১৪ শতাংশ অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে, বাকি ৮৬ শতাংশ অর্থ অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমে ব্যয় করে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে প্রায় ১২০০ রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর আগের চার বছরের তুলনায় এ সহিংসতা প্রায় তিন গুণ বেশি। ২০১৩ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এ সময়ে আওয়ামী লীগের কারণে সহিংসতা হয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ।
গবেষণায় দেখা গেছে, রাজনৈতিক সহিংসতার বড় অংশই ঘটে থাকে নিজেদের মধ্যে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে। আর এটা বেশি হয়ে থাকে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যেই। যেমন ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগে রাজনৈতিক সহিংসতার ৭৩ শতাংশই ঘটে নিজেদের মধ্যে। এর আগে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন একইভাবে তারাই এগিয়ে ছিল নিজেদের মধ্যে সহিংসতার ক্ষেত্রে। তবে ২০১৩ সালে এ পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। ওই বছর রাজনৈতিক সহিংসতার প্রায় ৯৩ শতাংশই ঘটে এক দলের সঙ্গে অন্য দলের। আর নিজেদের মধ্যে হয় মাত্র ৭ শতাংশ। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ২৮ ভাগ, বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল ৫ ভাগ এবং জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির ৪ ভাগ ক্ষেত্রে সহিংসতায় জড়িত ছিল। অর্থাৎ মোট সহিংসতার ৩৭ ভাগের সঙ্গে এ তিন দলের ছাত্রসংগঠনগুলো জড়িত ছিল। ২০০৮ থেকে ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে সংঘটিত সহিংসতায় আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বেশি ছিল। ২০১৩ সালে ১৭ ভাগ সহিংসতা এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগের পাঁচ বছরে মাত্র ১৪ ভাগ সহিংসতায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ঢাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে প্রায় ৩৫০টি। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, খুলনা, বগুড়া, কুমিল্লায় অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৩ সালে ঢাকায় সহিংসতা হয়েছে প্রায় ১৫০টি। ওই বছর বাকি জেলাগুলোতে সহিংসতা অনেক বেড়ে যায়।
No comments