এই দিনে-স্মৃতিতে নূর হোসেন by মো. মাসুদ
নূর হোসেন আমার ফুফাতো ভাই। তিনি যখন শহীদ হলেন, তখন আমার বয়স দেড় বছর। বড় হয়ে যখন তাঁর সম্পর্কে পড়েছি, জেনেছি, তখন ভাইয়ের জন্য গর্বে আমার বুক ভরে উঠেছে। ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’—বুকে-পিঠে এই স্লোগান লিখে আজ থেকে ২৩ বছর আগে জীবন্ত পোস্টার হয়ে ঢাকার রাজপথে নেমেছিলেন
নূর হোসেন। উদ্দেশ্য ছিল, এ দেশ থেকে স্বৈরশাসকদের হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের দাবিতে সে সময়কার বিরোধী দলগুলোর ডাকা ‘ঢাকা অবরোধ’ কর্মসূচি চলার সময় সামনে থেকে মিছিলের নেতৃত্ব দেন তিনি। স্বৈরাচারী শাসকের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশের গুলিতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় তাঁর বুক। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নূর হোসেন। পরম আদরে মাটি বুকে টেনে নিল অকুতোভয় বীরকে। তাঁর রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল স্টেডিয়ামের গেটে খাবার হোটেলের সামনের চত্বর। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকাসহ গোটা দেশ। বুকে-পিঠে লেখা তাঁর স্লোগান ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে।
নূর হোসেনের আত্মত্যাগ প্রমাণ করে, এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী। স্বৈরশাসকের শত প্রতিকূলতা, নির্যাতন কোনো কিছুই তাঁকে রুখতে পারেনি।
নূর হোসেনের অপূর্ণ স্বপ্ন তাঁর স্মৃতিকে আরও জ্বলজ্বল করে তোলে। এ দেশের মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক সুখ-সমৃদ্ধি ও সুন্দর সাংস্কৃতিক জীবনের প্রেরণা হিসেবে তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন। তাঁকে আমরা ভুলে যেতে পারি না। নূর হোসেনকে ভুলে যাওয়া মানে গণতন্ত্রকে অস্বীকার করা।
নূর হোসেনের জন্ম ১৯৬১ সালে ঢাকার নারিন্দায়। তাঁর বাবা মুজিবর রহমান ছিলের বেবিট্যাক্সিচালক। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামে। স্বাধীনতার পর থেকেই তাঁদের পরিবার ঢাকার বনগ্রাম সড়কের একটি বাড়িতে বসবাস শুরু করে। বনগ্রামের রাধাসুন্দরী প্রাইমারি স্কুল থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর ঢাকার গ্র্যাজুয়েট স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর তাঁর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছিলেন, ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বনগ্রাম শাখার প্রচার সম্পাদক।
আজ যখন নূর হোসেন স্কয়ারে দাঁড়াই, গর্বে ভরে ওঠে বুক। আমার ভাই স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারকে উৎখাত করার আন্দোলনে ছিলেন প্রথম সারির সৈনিক। ভাই নূর হোসেন, তোমাকে আমরা ভুলিনি। শুধু পারিবারিকভাবেই নয়, জাতীয়ভাবেই তোমাকে স্মরণ করা হয়। বাংলাদেশের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ উঠলেই তোমাকে স্মরণ করতে হবে। তোমাকে হারানোর কষ্টের পাশাপাশি এই গর্ব আমাদের ভালোভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে।
মো. মাসুদ: প্রথম আলোর অফিস সহকারী।
নূর হোসেনের আত্মত্যাগ প্রমাণ করে, এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী। স্বৈরশাসকের শত প্রতিকূলতা, নির্যাতন কোনো কিছুই তাঁকে রুখতে পারেনি।
নূর হোসেনের অপূর্ণ স্বপ্ন তাঁর স্মৃতিকে আরও জ্বলজ্বল করে তোলে। এ দেশের মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক সুখ-সমৃদ্ধি ও সুন্দর সাংস্কৃতিক জীবনের প্রেরণা হিসেবে তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন। তাঁকে আমরা ভুলে যেতে পারি না। নূর হোসেনকে ভুলে যাওয়া মানে গণতন্ত্রকে অস্বীকার করা।
নূর হোসেনের জন্ম ১৯৬১ সালে ঢাকার নারিন্দায়। তাঁর বাবা মুজিবর রহমান ছিলের বেবিট্যাক্সিচালক। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামে। স্বাধীনতার পর থেকেই তাঁদের পরিবার ঢাকার বনগ্রাম সড়কের একটি বাড়িতে বসবাস শুরু করে। বনগ্রামের রাধাসুন্দরী প্রাইমারি স্কুল থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর ঢাকার গ্র্যাজুয়েট স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর তাঁর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছিলেন, ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বনগ্রাম শাখার প্রচার সম্পাদক।
আজ যখন নূর হোসেন স্কয়ারে দাঁড়াই, গর্বে ভরে ওঠে বুক। আমার ভাই স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারকে উৎখাত করার আন্দোলনে ছিলেন প্রথম সারির সৈনিক। ভাই নূর হোসেন, তোমাকে আমরা ভুলিনি। শুধু পারিবারিকভাবেই নয়, জাতীয়ভাবেই তোমাকে স্মরণ করা হয়। বাংলাদেশের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ উঠলেই তোমাকে স্মরণ করতে হবে। তোমাকে হারানোর কষ্টের পাশাপাশি এই গর্ব আমাদের ভালোভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে।
মো. মাসুদ: প্রথম আলোর অফিস সহকারী।
No comments