প্রণবের প্রতিদ্বন্দ্বী সাংমা-প্রণব-মমতা বিরোধের সুবিধা পাবে বামফ্রন্ট by সুব্রত আচার্য্য
ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ইউপিএ জোটের বাঙালি প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায় শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। অন্য প্রার্থী ও ভারতীয় লোকসভার সাবেক স্পিকার পি এ সাংমাকে সমর্থন জানিয়েছে বৃহত্তম বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি- বিজেপি।
আর সাংমার প্রতি সমর্থন দেওয়ায় বিজেপির সঙ্গে থাকার কথা জানিয়েছে বহুজন আকালি দল। এর ফলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে লোকসভার প্রধান বিরোধী জোট এনডিএর মধ্যে ফাটল ধরার ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠল। কারণ এনডিএর অন্য শরিক জনতা দল (ইউনাইটেড) গতকাল রাষ্ট্রপতি পদে কংগ্রেস সমর্থিত প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করেছে।
এদিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন জোটের দুই শরিক কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি পশ্চিমবঙ্গের 'প্রাদেশিক' রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। আর রাজনৈতিক আদর্শগত তফাত থাকলেও কেবল 'বাঙালি' হওয়ার কারণে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের প্রধান নেতা ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে বামফ্রন্টের প্রধান দল সিপিএম গতকাল বৃহস্পতিবার সমর্থন দেওয়ায় রাজ্যের ভেতরে আরো চাপের মধ্যে পড়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
এই অবস্থায় স্পষ্ট, এই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির ক্ষমতাসীন জোট না ভাঙলেও ইউপিএর এই দুটি দলের মধ্যে রাজনৈতিক মতাদর্শগত কোনো ঐক্য নেই। আর প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের আবেগের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে প্রকারান্তরে আগামী বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সুবিধা পেতে মরিয়া সিপিএম।
গতকাল বিজেপির মুখপাত্র সুষমা স্বরাজ রাষ্ট্রপতি পদে পি এ সাংমার প্রতি তাঁর দলের আনুষ্ঠানিক সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রতি আলোকপাত করে দেশটির রাষ্ট্রপতি পদে তাঁকে সমর্থনের ব্যাপারে দলের আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, কংগ্রেসকে তাঁরা কোনো ছাড় দিতে রাজি নন। তিনি আরো বলেন, 'বিরোধীদলীয় জোট (এনডিএ) বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করলেও এখনো সর্বসম্মতভাবে কাউকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করতে পারেনি। বিশেষ করে জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং শিব সেনা রাষ্ট্রপতি পদে কাউকে প্রার্থী করার ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি। এ অবস্থায় পি এ সাংমাকেই আমরা আমাদের প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করব।'
সাংমাকে সমর্থনকারী আরেক নেতা অরুণ জেটলিও গতকাল সাংমাকে সমর্থনের ব্যাপারে বিরোধী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে বিরোধীদলীয় জোটের অন্য শরিক জনতা দল (ইউনাইটেড) গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করায় বিরোধী জোট ভাঙার ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন না করে রাষ্ট্রপতি পদে এ পি জে আব্দুল কালাম, ড. মনমোহন সিং ও সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করায় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতার ওপর ভীষণ ক্ষুব্ধ রাজ্য কংগ্রেস এবং তাদের প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়। আর সেই কারণে তড়িঘড়ি করে তৃণমূলকে পাল্টা চাপে ফেলতে নিজের সমর্থন চেয়ে সেদিনই পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুকে ফোন করেন ইউপিএর এই রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। সেই ফোন করার ঘটনাটি সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি ও তাঁর দল এ পি জে আব্দুল কালমের রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করার বিষয়ে রাজ্যজুড়ে এবং ফেসবুকে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছিলেন। এসব ঘটনা থেকে পরিষ্কার, প্রণব মুখোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আর এই রেশ কাটতে না কাটতেই গত বুধবার প্রণব মুখোপাধ্যায় আবারও ফোন করে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ সাংসদ কবীর সুমনের সঙ্গে কথা বলেন। এর পরপরই তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, প্রণব মুখোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের দল ভাঙানোর চেষ্টা করছেন। প্রণব মুখোপাধ্যায় তৃণমূলের এই অভিযোগ নিজের মুখে খণ্ডন না করলেও তাঁর দলের তরফ থেকে এমন অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই সম্পর্কহানির ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূলের সঙ্গে জোট শরিক কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়বে। আর এখানেই পুরো রাজনৈতিক সুবিধা পাবে রাজ্যটির প্রধান বিরোধী জোট বামফ্রন্ট। আগামী বছর জানুয়ারি মাসে রাজ্যটি ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর সেখানে এই দুটি দলের সঙ্গে জোট না হলে ভোট কাটাকাটির সুফল পাবে বামরাই।
প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের রাষ্ট্রপতি পদে তৃণমূলের সমর্থনের বিষয়ে তাঁরা এখনো আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যদি সমর্থন না দেন, তবে রাজ্যবাসী এর জবাব দেবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা মনে করেন, বাঙালির সেন্টিমেন্ট থাকার ফলে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি পদে দেখতে চান বাঙালিরা। সে বিষয়ে তৃণমূল আপত্তি করায় আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের ভোট বাক্সে এর প্রভাব পড়বেই। অন্যদিকে কংগ্রেসও এ নিয়ে প্রচার চালাবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ও সাংবাদিক কুনাল ঘোষ বলছেন, এক বছর ধরে রাজ্যের ন্যায্য আর্থিক দাবি মানলেন না প্রণব মুখোপাধ্যায়। এখন তাঁর সমর্থনে বাঙালিত্বের স্লোগান কোন যুক্তিতে তুলছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাঙালি-অবাঙালি বলে জিগির তুলে লাভ কী। রাষ্ট্রপতি পদটি তো এসবের ঊর্ধ্বে। আর সেটিই তৃণমূল কংগ্রেস দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর দুই দফায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। সেখানে প্রণব মুখোপাধ্যায় তৃণমূল নেত্রী 'অর্থনৈতিক প্যাকেজ' দেওয়ার প্রতিশ্রুতি করলেও গত এক বছরেও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি। এ জন্যই বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে কার্যত জেহাদ ঘোষণা করার রণকৌশল নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজ্য সিপিএমের এক নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়ায় সিপিএমের সুবিধা হবে, এটা সব অংশে ঠিক নয়। তবে এটা ঠিক, তৃণমূল যেভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাঙালি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করতে মাঠে নেমেছে তাতে তৃণমূল আগামী দিনে এর ফল ভোগ করবে।
তবে ওই নেতা স্পষ্ট করেন, কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে নন, প্রণব মুখোপাধ্যায় সিপিএম সমর্থন করেছেন একজন বাঙালি প্রার্থী হিসেবে। ওই নেতা আক্ষেপ করে বলেন, ১৯৯৬ সালে জ্যোতি বসুর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে যে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল রাজ্য সিপিএমের তরফ থেকে, এমন ভুল আর দ্বিতীয়বার করতে চায় না তারা।
এদিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন জোটের দুই শরিক কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি পশ্চিমবঙ্গের 'প্রাদেশিক' রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। আর রাজনৈতিক আদর্শগত তফাত থাকলেও কেবল 'বাঙালি' হওয়ার কারণে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের প্রধান নেতা ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে বামফ্রন্টের প্রধান দল সিপিএম গতকাল বৃহস্পতিবার সমর্থন দেওয়ায় রাজ্যের ভেতরে আরো চাপের মধ্যে পড়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
এই অবস্থায় স্পষ্ট, এই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির ক্ষমতাসীন জোট না ভাঙলেও ইউপিএর এই দুটি দলের মধ্যে রাজনৈতিক মতাদর্শগত কোনো ঐক্য নেই। আর প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের আবেগের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে প্রকারান্তরে আগামী বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সুবিধা পেতে মরিয়া সিপিএম।
গতকাল বিজেপির মুখপাত্র সুষমা স্বরাজ রাষ্ট্রপতি পদে পি এ সাংমার প্রতি তাঁর দলের আনুষ্ঠানিক সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রতি আলোকপাত করে দেশটির রাষ্ট্রপতি পদে তাঁকে সমর্থনের ব্যাপারে দলের আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, কংগ্রেসকে তাঁরা কোনো ছাড় দিতে রাজি নন। তিনি আরো বলেন, 'বিরোধীদলীয় জোট (এনডিএ) বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করলেও এখনো সর্বসম্মতভাবে কাউকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করতে পারেনি। বিশেষ করে জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং শিব সেনা রাষ্ট্রপতি পদে কাউকে প্রার্থী করার ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি। এ অবস্থায় পি এ সাংমাকেই আমরা আমাদের প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করব।'
সাংমাকে সমর্থনকারী আরেক নেতা অরুণ জেটলিও গতকাল সাংমাকে সমর্থনের ব্যাপারে বিরোধী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে বিরোধীদলীয় জোটের অন্য শরিক জনতা দল (ইউনাইটেড) গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করায় বিরোধী জোট ভাঙার ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন না করে রাষ্ট্রপতি পদে এ পি জে আব্দুল কালাম, ড. মনমোহন সিং ও সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করায় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতার ওপর ভীষণ ক্ষুব্ধ রাজ্য কংগ্রেস এবং তাদের প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়। আর সেই কারণে তড়িঘড়ি করে তৃণমূলকে পাল্টা চাপে ফেলতে নিজের সমর্থন চেয়ে সেদিনই পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুকে ফোন করেন ইউপিএর এই রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। সেই ফোন করার ঘটনাটি সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি ও তাঁর দল এ পি জে আব্দুল কালমের রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করার বিষয়ে রাজ্যজুড়ে এবং ফেসবুকে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছিলেন। এসব ঘটনা থেকে পরিষ্কার, প্রণব মুখোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আর এই রেশ কাটতে না কাটতেই গত বুধবার প্রণব মুখোপাধ্যায় আবারও ফোন করে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ সাংসদ কবীর সুমনের সঙ্গে কথা বলেন। এর পরপরই তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, প্রণব মুখোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের দল ভাঙানোর চেষ্টা করছেন। প্রণব মুখোপাধ্যায় তৃণমূলের এই অভিযোগ নিজের মুখে খণ্ডন না করলেও তাঁর দলের তরফ থেকে এমন অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই সম্পর্কহানির ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূলের সঙ্গে জোট শরিক কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়বে। আর এখানেই পুরো রাজনৈতিক সুবিধা পাবে রাজ্যটির প্রধান বিরোধী জোট বামফ্রন্ট। আগামী বছর জানুয়ারি মাসে রাজ্যটি ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর সেখানে এই দুটি দলের সঙ্গে জোট না হলে ভোট কাটাকাটির সুফল পাবে বামরাই।
প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের রাষ্ট্রপতি পদে তৃণমূলের সমর্থনের বিষয়ে তাঁরা এখনো আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যদি সমর্থন না দেন, তবে রাজ্যবাসী এর জবাব দেবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা মনে করেন, বাঙালির সেন্টিমেন্ট থাকার ফলে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি পদে দেখতে চান বাঙালিরা। সে বিষয়ে তৃণমূল আপত্তি করায় আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের ভোট বাক্সে এর প্রভাব পড়বেই। অন্যদিকে কংগ্রেসও এ নিয়ে প্রচার চালাবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ও সাংবাদিক কুনাল ঘোষ বলছেন, এক বছর ধরে রাজ্যের ন্যায্য আর্থিক দাবি মানলেন না প্রণব মুখোপাধ্যায়। এখন তাঁর সমর্থনে বাঙালিত্বের স্লোগান কোন যুক্তিতে তুলছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাঙালি-অবাঙালি বলে জিগির তুলে লাভ কী। রাষ্ট্রপতি পদটি তো এসবের ঊর্ধ্বে। আর সেটিই তৃণমূল কংগ্রেস দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর দুই দফায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। সেখানে প্রণব মুখোপাধ্যায় তৃণমূল নেত্রী 'অর্থনৈতিক প্যাকেজ' দেওয়ার প্রতিশ্রুতি করলেও গত এক বছরেও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি। এ জন্যই বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে কার্যত জেহাদ ঘোষণা করার রণকৌশল নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজ্য সিপিএমের এক নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়ায় সিপিএমের সুবিধা হবে, এটা সব অংশে ঠিক নয়। তবে এটা ঠিক, তৃণমূল যেভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাঙালি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করতে মাঠে নেমেছে তাতে তৃণমূল আগামী দিনে এর ফল ভোগ করবে।
তবে ওই নেতা স্পষ্ট করেন, কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে নন, প্রণব মুখোপাধ্যায় সিপিএম সমর্থন করেছেন একজন বাঙালি প্রার্থী হিসেবে। ওই নেতা আক্ষেপ করে বলেন, ১৯৯৬ সালে জ্যোতি বসুর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে যে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল রাজ্য সিপিএমের তরফ থেকে, এমন ভুল আর দ্বিতীয়বার করতে চায় না তারা।
No comments