শখের সেই শার্কি

শখ বলে কথা। সে শখ বছরের পর বছর পুষে রাখাও একটা শখ বটে। এর জ্বলন্ত উদাহরণ ইংল্যান্ডের পল পামার। তিনি যখন চার বছরের শিশু, তখন একটি গোল্ডফিশ এনে অ্যাকুরিয়ামে পুষতে শুরু করেন। ২৪ বছর পরও সেই মাছটি আছে তাঁর কাছে।


এত দিনে ২৮ বছরের এক যুবকে পরিণত হয়েছেন পল। বেছে নিয়েছেন গ্রাফিক ডিজাইনারের পেশা। তাঁর চারপাশে বদলে গেছে অনেক কিছু্। কেবল বদলায়নি মাছের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব আর ভালোবাসা।
অ্যাকুরিয়ামে রঙিন মাছ অনেকেই পোষে। তবে এই শখের পেছনে ঝক্কিও কম যায় না। রোজ রোজ মাছকে খাবার দাও, ওষুধ দাও, অ্যাকুরিয়াম পরিষ্কার করো, বারবার পানি বদলাও—সে অনেক ঝামেলা। একপর্যায়ে কারও কারও কাছে তা বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়ায়।
এমন ঘটনাও ঘটে, অ্যাকুরিয়ামটি একপর্যায়ে সুদৃশ্য কোনো গাছের টব বনে যায়। কিন্তু পল পামার সেই যে গোল্ডফিশ এনে পুষতে শুরু করলেন, তা আজও চলছে।
২৪ বছর আগে নিউ ক্যাসলের হপিংস ফেয়ার থেকে মাছটি এনেছিলেন পল পামার। নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় কার্টুন ছবি শার্কি অ্যান্ড জর্জ-এর নাম থেকে মাছটির নাম রাখা হয় শার্কি।
মাছের মধ্যে গোল্ডফিশ সাধারণত ১৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে। বিদেশে রপ্তানি হয়ে ভিন্ন পরিবেশে গেলে এই মাছের গড় আয়ু হয় আট থেকে ১০ বছর। কিন্তু শার্কি নামের গোল্ডফিশ এসব রেকর্ড ভেঙে এর মধ্যে ২৪ বছর পার করেছে। এখনো মাছটি সুস্থ-সবল রয়েছে। বয়সের কারণে অবশ্য তার গায়ের লাল রং বদলে এখন সাদা হয়ে গেছে।
এ পর্যন্ত সবচেয়ে দীর্ঘজীবী গোল্ডফিশের রেকর্ড গড়েছে তিশ নামের একটি কমেট গোল্ডফিশ। এটি ৪৩ বছর পর্যন্ত বেঁচেছিল। সে রেকর্ড ভাঙতে শার্কিকে আরও দুই দশকের বেশি সময় পার করতে হবে। তবে এ নিয়ে পল পামারের কোনো মাথাব্যথা নেই।
পল বলেন, ‘ছোটবেলায় আমি যখন মাছটি কিনি, আমার বোন মিশেলও একই রকম মাছ কিনেছিল। ওর মাছের নাম রাখা হয় জর্জ। কিন্তু এটি কিছুদিন পরই মরে যায়। এরপর প্রতিদিনই ভয় হতো, এই বুঝি দেখব শার্কি মরে ভেসে আছে। এভাবে এক এক করে অনেক বছর পার হয়ে গেল। শিশু থেকে কিশোর, কিশোর থেকে যুবক হলাম আমি। এখনো মাছটি দিব্যি বেঁচে আছে। এ এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার! শার্কি এখন আমার কাছে পরিবারের এক সদস্যের মতো। ও মরে গেলে ভীষণ কষ্ট পাব।’
 শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া
সূত্র: ডেইলি মেইল,
ইভনিং ক্রনিকল।

No comments

Powered by Blogger.