প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল কই?-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড
‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করলে তা তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়’—এ বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। জাতীয় সংসদে বুধবার এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন তিনি।
সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপিদলীয় সাংসদ এম মাহবুবউদ্দিনের প্রশ্নটি ছিল: আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়া গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধে সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কি না? এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তার সঙ্গে আমরা বাস্তবতার কোনো মিল খুঁজে পাচ্ছি না। অপরাধী বা সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্তি প্রয়োগ বা আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে এক করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ‘আত্মরক্ষার’ চেষ্টার বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ ধরনের ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের হতাশাজনক অভিজ্ঞতা হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার-এর এক প্রতিবেদনে মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের চেয়ারপারসন সি আর আবরার বলেছেন, ‘আমাদের জানামতে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি ক্ষেত্রেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ মানবাধিকারকর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী সুলতানা কামালের প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা আমরা বহুবার জানতে চেয়েছি। তারা এ ধরনের অভিযোগে সহকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করলেও কখনো আমাদের কোনো তথ্য দেয়নি।’
অধিকারের এক হিসাব বলছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ বছরের মে মাস পর্যন্ত ৪০৮ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর সরকার দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের এই সংখ্যা তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করে না।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ না হলে এবং এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আর যা-ই হোক, দেশে আইনের শাসন কায়েম করা যাবে না।
অধিকারের এক হিসাব বলছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ বছরের মে মাস পর্যন্ত ৪০৮ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর সরকার দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের এই সংখ্যা তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করে না।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ না হলে এবং এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আর যা-ই হোক, দেশে আইনের শাসন কায়েম করা যাবে না।
No comments