প্রতিক্রিয়া-‘প্রকৌশলী-স্থপতিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে’ by আমিমুল এহসান
৭ নভেম্বর নগরের কাঁঠালবাগানে ‘এশিয়ান হায়দার টাওয়ার’ নামের সাততলা ভবনটি হেলে পড়ায় সাধারণ নাগরিক হিসেবে বিপন্ন বোধ করছি। পাশাপাশি প্রথম আলোর ‘প্রকৌশলী-স্থপতিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে’ শিরোনামে স্থপতি হিসেবে বিস্মিত এবং বিব্রত বোধ করছি।
আমাদের দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্বল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যেসব বিচিত্র ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলে, তা পেশাজীবীদের অভিজ্ঞতায় কমবেশি একই রকম।
একজন সচেতন স্থপতি বা প্রকৌশলী কখনোই দুর্বল ভবনের নকশা প্রণয়ন করবেন না। কারণ, এ বিষয়টি সরাসরি তাঁর পেশাজীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। নিশ্চিতভাবে একজন ভবনমালিক বা ঠিকাদারও চান না তাঁর ভবন হেলে পড়ুক। পার্থক্য হলো, শেষোক্ত ব্যক্তিরা অজ্ঞানতা, অধিক আত্মবিশ্বাস (!) এবং পেশাজীবীদের অবজ্ঞা করার মাধ্যমে নির্মাণকে বিপর্যস্ত করে তোলেন। নিয়ম না মানার প্রতিটি পর্যায়ে তিনি অর্থ সাশ্রয়ের (!) প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। অপরদিকে দুর্বল নকশা করা এবং বিধিমতো তদারক না করা পেশাজীবীদের কোনোভাবেই লাভবান করে না। নির্মাণ প্রকল্পে একজন স্থপতি বা প্রকৌশলীর ভূমিকা এবং প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অনেক ভবনমালিকের ধারণার অভাব রয়েছে এবং কত দূর পর্যন্ত তাঁদের নকশা/ড্রয়িং বা উপদেশ বিবেচনা করতে হবে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। যদি থেকেও থাকে, তবে তা কত কম খরচে সেরে ফেলা যায়, সে বিষয়ে তাঁরা অধিক মনোযোগী থাকেন।
এ ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী বা ঠিকাদারদের অভিজ্ঞতা/উপদেশ অনেক সুলভে পাওয়া যায় বলে তাঁরা ভবনমালিকের ‘কাছের মানুষ’-এ পরিণত হয়ে যান।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাজউকের ড্রয়িংয়ের পরই স্থপতির সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। কোনোভাবে ফাউন্ডেশন ড্রয়িং পেলে প্রকৌশলীও নির্বাসিত হয়ে যান। পরবর্তী সব কর্মকাণ্ডে সরাসরি ভবনমালিক এবং তাঁর ‘কাছের মানুষেরা’ ভূমিকা রাখেন।
কোনোভাবে প্রয়োজনীয় নকশা সম্পন্ন করা এবং সাইটে পাঠালেও তার সঠিক প্রয়োগের বিষয়টি সার্বক্ষণিক তদারকের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হয়। প্রকৌশলী-স্থপতিদের কালেভদ্রে তদারকের জন্য ডাকা হয়। এমনকি পেশাজীবীরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে আসতে চাইলেও ভিজিটের সামান্য টাকার অপব্যয় (!) রোধে ভবনমালিক তা এড়াতে চান। এ ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক তদারকের দায়িত্বে থাকা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর পক্ষে সঠিক নির্দেশনা পাওয়া অসম্ভব। কোনো রকম জটিল সমস্যায় না পড়লে নিয়মিত তদারকের জন্য ডাক না পাওয়া নির্মাণশিল্পে একটি অতি সাধারণ ঘটনা। উপরন্তু জটিল সমস্যা অনুধাবন করার যোগ্যতাও ভবনমালিকের বা তাঁর বেতনভুক কর্মচারীর থাকে না।
এ ছাড়া তদারকিতে গেলে স্থপতি/প্রকৌশলীরা যখন নিম্নমানের নির্মাণ-উপকরণ ও পদ্ধতি এবং নকশায় ব্যত্যয় ঘটানো নিয়ে আপত্তি তোলেন, তা ভবনমালিক ও তাঁর কাছের মানুষদের জন্য সমস্যা (!) তৈরি করে।
মাটি পরীক্ষা, পাইলিং ও শোর পাইলিং—এই তিনটি বিষয়ে শুরু থেকে আপত্তি তোলা এবং তা অতি দায়সারাভাবে (!) সেরে ফেলা এ দেশে ভবনমালিকদের অতি প্রচলিত রেওয়াজ। ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। নকশার দেখানো ফ্লোর এরিয়াকে ওপরের তলায় গিয়ে চারদিকে অসীম (!) দূরত্বে বাড়িয়ে দেওয়ার বাস্তবতা শতভাগ ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হবে। ছয়তলা ভবনের নকশায় আরও দু-তিনতলা অতিরিক্ত করে ফেলার ঘটনা বহুল প্রচলিত। ভবনমালিকদের ধারণায় প্রকৌশলীরা যে ‘ওভার ডিজাইন’(?) করেছেন, দু-তিনতলা বাড়িয়ে তিনি তা হালাল করে নেন। এসব ক্ষেত্রে পেশাজীবীদের আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না।
নতুন বিধিমালায় স্থপতি-প্রকৌশলীদের কর্তব্যে অবহেলার জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে, কিন্তু যখন অবক্ষয়িত নির্মাণশিল্পের ভেতরের চিত্রগুলো এমন, তখন পেশাজীবীদের ক্ষমতায়নের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে পোশাকশ্রমিকদের মতোই ন্যূনতম ফি নির্ধারণ এবং বছরে পেশাজীবীরা সর্বোচ্চ কয়টি কাজ করতে পারবেন, সে ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি। পেশাজীবিতার অপব্যবহার রোধকল্পে এমন নীতি আমাদের সবাইকে দুর্ঘটনা ঘটার অনেক আগেই তার সামান্য আশঙ্কাকে বিলুপ্ত করবে। একটি প্রকল্পে যে প্রাত্যহিক অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাকে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের সচেতন এবং বাস্তবনির্ভর পেশাজীবী মানসিকতা প্রয়োজন।
এসব অনিয়মের বৈতরণী পার হয়ে যখন একটি ভবন শেষ পর্যন্ত হেলে পড়ে এবং তাৎক্ষণিকভাবে স্থপতি-প্রকৌশলীদের খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন তার কারণ নানাবিধ হতে পারে। হয়তো এমন ভবনের কোনো স্থপতি বা প্রকৌশলীই নেই কিংবা থাকলেও বহু আগেই নির্মাতারা তাঁদের সঙ্গে পেশাগত সম্পর্কছেদ করেছেন। ভবনটি গড়ে উঠেছে ভবনমালিক আর তাঁর বেতনভুক কাজের মানুষদের হাতে, অথবা স্থপতি-প্রকৌশলীরা ‘পলাতক’ হয়েছেন, কারণ অন্যের দোষ তাঁরা নিজেদের নামে চালাতে দিতে নারাজ; যখন তিনি জানেন আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে আসার আর্থিক সামর্থ্য তাঁদের নেই, যা ভবনমালিকের আছে। পেশাগত এবং নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে কিছু কিছু পেশাজীবী তাঁদের নিবন্ধন নম্বর এবং স্বাক্ষর বিক্রি করার মতো নিম্নমানের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত থাকেন, যাতে তেমন পেশাজীবী এবং ভবনমালিক উভয়ের সমঝোতা (!) থাকে। খুঁজে না পাওয়া পেশাজীবীরা সেই গোত্রভুক্তও হতে পারেন। এভাবে একটি ইমারতের ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রাত্যহিক অনিয়মের ফিরিস্তি এবং প্রকৌশলী-স্থপতিদের তাৎক্ষণিকভাবে খুঁজে না পাওয়ার সম্ভাব্য কারণ আরও দীর্ঘ এবং বহুবিধ হতে পারে। আশা করছি, অচিরেই সবাই তা জানতে পারবেন।
কিন্তু সেসব উদ্ঘাটনের আগেই ‘প্রকৌশলী-স্থপতিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে’ কথাটি ছেপে দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক হয়েছে, সেটা ভেবে দেখা দরকার। যখন ভবনমালিককেও খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন ‘লাল কালির’ শিরোনাম থেকে তাঁকে বাঁচিয়ে দেওয়া কেন? আমাদের দেশে ‘ধরাছোঁয়ার বাইরে’ যাঁরা থাকেন, তাঁরা হয় রাজনৈতিক সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসী, ঋণখেলাপি অথবা চোরাকারবারির গডফাদার। তাঁদের প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং কর্মকাণ্ডের সঙ্গে একটি পেশাজীবী শ্রেণীর সামঞ্জস্য কোথায়? এ ক্ষেত্রে কোনো কারণে যদি সেই সামঞ্জস্য থেকেও থাকে, তবে তা প্রমাণের আগে এভাবে লাল কালিতে বড় অক্ষরে ‘শিরোনাম’ করা যাবে কি?
আমিমুল এহসান: স্থপতি, নগর পরিকল্পনাবিদ।
একজন সচেতন স্থপতি বা প্রকৌশলী কখনোই দুর্বল ভবনের নকশা প্রণয়ন করবেন না। কারণ, এ বিষয়টি সরাসরি তাঁর পেশাজীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। নিশ্চিতভাবে একজন ভবনমালিক বা ঠিকাদারও চান না তাঁর ভবন হেলে পড়ুক। পার্থক্য হলো, শেষোক্ত ব্যক্তিরা অজ্ঞানতা, অধিক আত্মবিশ্বাস (!) এবং পেশাজীবীদের অবজ্ঞা করার মাধ্যমে নির্মাণকে বিপর্যস্ত করে তোলেন। নিয়ম না মানার প্রতিটি পর্যায়ে তিনি অর্থ সাশ্রয়ের (!) প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। অপরদিকে দুর্বল নকশা করা এবং বিধিমতো তদারক না করা পেশাজীবীদের কোনোভাবেই লাভবান করে না। নির্মাণ প্রকল্পে একজন স্থপতি বা প্রকৌশলীর ভূমিকা এবং প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অনেক ভবনমালিকের ধারণার অভাব রয়েছে এবং কত দূর পর্যন্ত তাঁদের নকশা/ড্রয়িং বা উপদেশ বিবেচনা করতে হবে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। যদি থেকেও থাকে, তবে তা কত কম খরচে সেরে ফেলা যায়, সে বিষয়ে তাঁরা অধিক মনোযোগী থাকেন।
এ ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী বা ঠিকাদারদের অভিজ্ঞতা/উপদেশ অনেক সুলভে পাওয়া যায় বলে তাঁরা ভবনমালিকের ‘কাছের মানুষ’-এ পরিণত হয়ে যান।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাজউকের ড্রয়িংয়ের পরই স্থপতির সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। কোনোভাবে ফাউন্ডেশন ড্রয়িং পেলে প্রকৌশলীও নির্বাসিত হয়ে যান। পরবর্তী সব কর্মকাণ্ডে সরাসরি ভবনমালিক এবং তাঁর ‘কাছের মানুষেরা’ ভূমিকা রাখেন।
কোনোভাবে প্রয়োজনীয় নকশা সম্পন্ন করা এবং সাইটে পাঠালেও তার সঠিক প্রয়োগের বিষয়টি সার্বক্ষণিক তদারকের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হয়। প্রকৌশলী-স্থপতিদের কালেভদ্রে তদারকের জন্য ডাকা হয়। এমনকি পেশাজীবীরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে আসতে চাইলেও ভিজিটের সামান্য টাকার অপব্যয় (!) রোধে ভবনমালিক তা এড়াতে চান। এ ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক তদারকের দায়িত্বে থাকা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর পক্ষে সঠিক নির্দেশনা পাওয়া অসম্ভব। কোনো রকম জটিল সমস্যায় না পড়লে নিয়মিত তদারকের জন্য ডাক না পাওয়া নির্মাণশিল্পে একটি অতি সাধারণ ঘটনা। উপরন্তু জটিল সমস্যা অনুধাবন করার যোগ্যতাও ভবনমালিকের বা তাঁর বেতনভুক কর্মচারীর থাকে না।
এ ছাড়া তদারকিতে গেলে স্থপতি/প্রকৌশলীরা যখন নিম্নমানের নির্মাণ-উপকরণ ও পদ্ধতি এবং নকশায় ব্যত্যয় ঘটানো নিয়ে আপত্তি তোলেন, তা ভবনমালিক ও তাঁর কাছের মানুষদের জন্য সমস্যা (!) তৈরি করে।
মাটি পরীক্ষা, পাইলিং ও শোর পাইলিং—এই তিনটি বিষয়ে শুরু থেকে আপত্তি তোলা এবং তা অতি দায়সারাভাবে (!) সেরে ফেলা এ দেশে ভবনমালিকদের অতি প্রচলিত রেওয়াজ। ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। নকশার দেখানো ফ্লোর এরিয়াকে ওপরের তলায় গিয়ে চারদিকে অসীম (!) দূরত্বে বাড়িয়ে দেওয়ার বাস্তবতা শতভাগ ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হবে। ছয়তলা ভবনের নকশায় আরও দু-তিনতলা অতিরিক্ত করে ফেলার ঘটনা বহুল প্রচলিত। ভবনমালিকদের ধারণায় প্রকৌশলীরা যে ‘ওভার ডিজাইন’(?) করেছেন, দু-তিনতলা বাড়িয়ে তিনি তা হালাল করে নেন। এসব ক্ষেত্রে পেশাজীবীদের আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না।
নতুন বিধিমালায় স্থপতি-প্রকৌশলীদের কর্তব্যে অবহেলার জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে, কিন্তু যখন অবক্ষয়িত নির্মাণশিল্পের ভেতরের চিত্রগুলো এমন, তখন পেশাজীবীদের ক্ষমতায়নের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে পোশাকশ্রমিকদের মতোই ন্যূনতম ফি নির্ধারণ এবং বছরে পেশাজীবীরা সর্বোচ্চ কয়টি কাজ করতে পারবেন, সে ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি। পেশাজীবিতার অপব্যবহার রোধকল্পে এমন নীতি আমাদের সবাইকে দুর্ঘটনা ঘটার অনেক আগেই তার সামান্য আশঙ্কাকে বিলুপ্ত করবে। একটি প্রকল্পে যে প্রাত্যহিক অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাকে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের সচেতন এবং বাস্তবনির্ভর পেশাজীবী মানসিকতা প্রয়োজন।
এসব অনিয়মের বৈতরণী পার হয়ে যখন একটি ভবন শেষ পর্যন্ত হেলে পড়ে এবং তাৎক্ষণিকভাবে স্থপতি-প্রকৌশলীদের খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন তার কারণ নানাবিধ হতে পারে। হয়তো এমন ভবনের কোনো স্থপতি বা প্রকৌশলীই নেই কিংবা থাকলেও বহু আগেই নির্মাতারা তাঁদের সঙ্গে পেশাগত সম্পর্কছেদ করেছেন। ভবনটি গড়ে উঠেছে ভবনমালিক আর তাঁর বেতনভুক কাজের মানুষদের হাতে, অথবা স্থপতি-প্রকৌশলীরা ‘পলাতক’ হয়েছেন, কারণ অন্যের দোষ তাঁরা নিজেদের নামে চালাতে দিতে নারাজ; যখন তিনি জানেন আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে আসার আর্থিক সামর্থ্য তাঁদের নেই, যা ভবনমালিকের আছে। পেশাগত এবং নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে কিছু কিছু পেশাজীবী তাঁদের নিবন্ধন নম্বর এবং স্বাক্ষর বিক্রি করার মতো নিম্নমানের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত থাকেন, যাতে তেমন পেশাজীবী এবং ভবনমালিক উভয়ের সমঝোতা (!) থাকে। খুঁজে না পাওয়া পেশাজীবীরা সেই গোত্রভুক্তও হতে পারেন। এভাবে একটি ইমারতের ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রাত্যহিক অনিয়মের ফিরিস্তি এবং প্রকৌশলী-স্থপতিদের তাৎক্ষণিকভাবে খুঁজে না পাওয়ার সম্ভাব্য কারণ আরও দীর্ঘ এবং বহুবিধ হতে পারে। আশা করছি, অচিরেই সবাই তা জানতে পারবেন।
কিন্তু সেসব উদ্ঘাটনের আগেই ‘প্রকৌশলী-স্থপতিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে’ কথাটি ছেপে দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক হয়েছে, সেটা ভেবে দেখা দরকার। যখন ভবনমালিককেও খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন ‘লাল কালির’ শিরোনাম থেকে তাঁকে বাঁচিয়ে দেওয়া কেন? আমাদের দেশে ‘ধরাছোঁয়ার বাইরে’ যাঁরা থাকেন, তাঁরা হয় রাজনৈতিক সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসী, ঋণখেলাপি অথবা চোরাকারবারির গডফাদার। তাঁদের প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং কর্মকাণ্ডের সঙ্গে একটি পেশাজীবী শ্রেণীর সামঞ্জস্য কোথায়? এ ক্ষেত্রে কোনো কারণে যদি সেই সামঞ্জস্য থেকেও থাকে, তবে তা প্রমাণের আগে এভাবে লাল কালিতে বড় অক্ষরে ‘শিরোনাম’ করা যাবে কি?
আমিমুল এহসান: স্থপতি, নগর পরিকল্পনাবিদ।
No comments