২৪ ঘণ্টা পরই আবুধাবিতে ফাঁসি উত্তরপ্রদেশের শাহজাদির
উত্তরপ্রদেশের মুলগি গ্রামে থাকতেন শাহজাদি। ছোটবেলায় এক দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। রান্নাঘরে কাজ করতে গিয়ে মুখ ও শরীরের বেশ কিছুটা অংশ পুড়ে যায়। সেনিয়েই চলছিল লড়াই। ২০২০ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় আগরার যুবক উজেরের সঙ্গে আলাপ হয় শাহজাদির। প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর সেই সম্পর্ক গড়ায় ভালোবাসায়। উজের শাহজাদিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, বিয়ে করে তাকে যথাযথ চিকিৎসা করাবেন। সব রকমভাবে ভালো রাখবেন। সুখের সংসার হবে দুজনের। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন শাহজাদি।
কিন্তু অভিযোগ, ২০২১ সালে আগ্রায় পালিয়ে যাওয়ার পরই তাকে নিজের আসল রূপ দেখায় উজের। নিজের আত্মীয় ফৈজ ও নাদিয়ার কাছে তাকে বিক্রি করে দেয় সে। এরপর ওই দম্পতি শাহজাদিকে নিয়ে চলে যায় আবুধাবি। সেখানেই ফৈজ ও নাদিয়ার বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন শাহজাদি। তাদের সন্তানের দেখভাল করতেন। এভাবেই মরুদেশে কোনও রকমে জীবন কাটছিল শাহজাদির। কিন্তু একদিন তার জীবনে চরম বিপদ নেমে আসে। হঠাৎই মৃত্যু হয় ওই দম্পতির চার মাসের শিশুর। যার দায় গিয়ে পড়ে শাহজাদির ওপর। সন্তানের মৃত্যুর জন্য তাকে কাঠগড়ায় তোলে ওই দম্পতি। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তদন্ত করে আবুধাবির পুলিশ গ্রেপ্তার করে শাহজাদিকে। ফাঁসির সাজা দেন আদালত।
এরপর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে আবুধাবির আদালতে শাহজাদি দাবি করেন, চিকিৎসার গাফিলতির কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছিল। যদিও আদালত তা মানেননি। শাহজাদিকে মিথ্যা অভিযোগের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দুবাইয়ের আদালত।
ফোনে কাতর কণ্ঠে পুরো বিষয় খুলে বলেন শাহজাদি, যা শোনার পর থেকেই কান্না থামছে না শাহজাদির বাবা-মায়ের। শাহজাদির বাবা, মা এখন ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের কাছে দুবাইয়ে তাদের মেয়ের জীবন বাঁচানোর জন্য আবেদন জানিয়েছেন। এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিও পাঠিয়েছেন। তবে চিন্তা একটাই, তাদের হাতে সময় বড্ড কম।
সূত্র: ফ্রি প্রেস জার্নাল
No comments