বিকেলের ঘুম আপনার মুশকিল আসান করে
গবেষকরা তাদের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে লিখেছেন, 'বর্তমান ফলাফলগুলো ইঙ্গিত দেয় যে যখন কোনও সমস্যা সমাধানযোগ্য বলে মনে হয় না, তখন ঘুমিয়ে পড়ুন। এটি আপনাকে কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে যদি ঘুমের মধ্যে REM ( rapid eye movement ) থাকে। ঘুমের এই পর্যায়টি আমাদের জীবনে সহজেই স্পষ্ট নয় এমন সম্পর্ক স্থাপন এবং অতীতের অভিজ্ঞতাগুলোকে সর্বোত্তমভাবে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
এই গবেষণায় ৫৮ জনকে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। তাদের বিভিন্ন সমস্যার একটি সিরিজ দেখানো হয়েছিল এবং সেই সমস্যার সমাধানগুলো দেখানো হয়। এরপর, তাদের একই ধরনের সমস্যার আরেকটি সেট দেয়া হয়েছিল। এই দ্বিতীয় সেটের সাথে, কোনও সমাধান সংযুক্ত ছিল না। তবে সমস্যাগুলো একই মানসিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে সমাধানযোগ্য। এরপর দুই ঘণ্টার ব্যবধান ছিল, এই সময়কালে ২৮ জন স্বেচ্ছাসেবককে ১১০ মিনিটের ঘুমের সময় দেওয়া হয়েছিল, বাকি ৩০ জনকে জেগে থাকতে বলা হয়েছিল। ঘুমন্ত দলটি ঘুমানোর সময় EEG হেডসেট ব্যবহার করে তাদের REM সময় পরিমাপ করেছিল।
বিরতির পর, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের দ্বিতীয় সেট থেকে সমাধান করতে ব্যর্থ হওয়া সমস্যাগুলো আবার দেখার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। যারা ঘুমিয়েছিলেন তারা প্রথমবারের মতো যেসব সমস্যার সমাধান করতে পারেননি, ঘুম থেকে উঠে সেগুলো সমাধানে সক্ষম হয়েছিলেন এবং তাদের REM এই সমস্যাগুলো সমাধানের সম্ভাবনার সাথে সম্পর্কিত ছিল। প্রথম এবং দ্বিতীয় সেটে সমস্যাগুলোর মধ্যে মিল লক্ষ্য করার ক্ষেত্রে ন্যাপাররা জেগে থাকা দলের চেয়ে ভালো ফল করেছিল। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর স্লিপ রিসার্চ, লস এঞ্জেলেসের গবেষক জেরোম সিগেল বলেছেন, 'যারা রাতের বেলা পর্যাপ্ত সময় ঘুমাতে পারে না তাদের জন্য দিনের ঘুম মনোসংযোগ এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এ বিষয়ে সবাই একমত যে, আপনি যদি ঘুম থেকে বঞ্চিত হন তবে খুব ভালোভাবে শিখতে, কাজ করতে বা চিন্তা করতে পারবেন না।'
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিকেলের ঘুম স্মৃতিশক্তি ও শিখন ক্ষমতা বাড়ায়, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং মেজাজ ভালো রাখে। গবেষণাটি জার্নাল অফ স্লিপ রিসার্চে প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র : সায়েন্স এলার্ট
No comments