সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় জড়ানো নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে আরএসএফ
গত বুধবার ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারকে একটি সাক্ষাৎকার দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায় করা হত্যা মামলা নিয়েও কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে ভিত্তিহীন হত্যা মামলা নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস জুলাই-আগস্ট হত্যা মামলায় ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের নাম আসার বিষয়টি ‘পুরনো আইন’ ও চর্চার ফল বলে মন্তব্য করেন। তড়িঘড়ি করে মামলা করতে গিয়ে এমনটি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার এ ‘স্বীকারোক্তিকে’ স্বাগত জানিয়েছে আরএসএফ।
সাক্ষাৎকারে ১৬৭ জন সাংবাদিকের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের বিষয়েও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এ কার্ড বাতিল করার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের কাজ করতে বাধা দেবে না। এর মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে তাদের প্রবেশাধিকার সীমিত হবে শুধু। এ প্রসঙ্গে আরএসএফের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান সিলিয়া মার্সিয়া বলেন, অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বরাদ্দ ও বাতিল করার ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ ও অরাজনৈতিক পদ্ধতি থাকা জরুরি।
ড. ইউনূসের সামপ্রতিক ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নিপীড়নমূলক বিচার প্রক্রিয়া থেকে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে আরএসএফ। সংগঠনটি বলেছে, আইনের শাসনের প্রতি সংগতি রেখে ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারের প্রতি অবশ্যই শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস আরও বলেন, আমরা অতীতের সবকিছু ছাপিয়ে যাওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছি। আমরা যেন একই ভুল আর না করি। আমাদের সত্য পথে ও অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগাতে হবে। আমরা যদি ভুল করি, সেগুলো আমাদের ধরিয়ে দিন। আমরা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে গুরুত্ব দিই। আমরা কী করতে পারি, সে বিষয়ে আপনাদের প্রতিক্রিয়া আমাদের সাহায্য করবে, নচেৎ তা এড়িয়ে যেতে পারে। তার এ বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে আরএসএফ।
সংগঠনটি তাদের প্রতিবেদনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের একটি বক্তব্যের প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সমপ্রতি জুলাই গণহত্যায় গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক একটি আলোচনায় শফিকুল আলম বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় কী ঘটেছিল, সে সত্য আমলে না নিলে আরএসএফের মতো সংগঠনগুলো (বর্তমান) বাস্তবতা উপেক্ষা করবে। আরএসএফ তার এ বক্তব্য আমলে নিয়ে বর্তমান সরকারকে সাংবাদিকদের প্রতি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বন্ধের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে প্রায় ১৪০ জন সাংবাদিক ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগে করা ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ মামলার আসামি হয়েছেন। গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে ২৫ জন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে। পূর্ববর্তী কোনো ধরনের অনুসন্ধান ছাড়াই এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন পাঁচ সাংবাদিক।
No comments