'সৈন্যের বিনিময়ে উত্তর কোরিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে রাশিয়া'

দক্ষিণ কোরিয়ার একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার মতে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সমর্থন দেয়ার জন্য সৈন্য পাঠানোর বিনিময়ে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে এন্টি-এয়ার মিসাইল এবং বিমান প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। রাশিয়ায় আনুমানিক ১০ হাজার সৈন্য পাঠানোর মাধ্যমে উত্তরের কী লাভ হবে জানতে চাইলে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিন ওন-সিক বলেন, মস্কো পিয়ংইয়ংকে অর্থনৈতিক ও সামরিক প্রযুক্তি সহায়তা দিয়েছে। শুক্রবার প্রচারিত একটি সাক্ষাত্কারে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্প্রচারকারী এসবিএসকে শিন বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার যে উত্তর কোরিয়ার  দুর্বল বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম এবং বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে।’

রাজধানী পিয়ংইয়ং-এ একটি সামরিক প্রদর্শনীতে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন শুক্রবার ‘অতি-আধুনিক’ অস্ত্রশস্ত্রের  বিকাশ ও মানোন্নয়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন

রাশিয়া এই মাসে উত্তর কোরিয়ার সাথে একটি যুগান্তকারী পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুমোদন করেছে।  ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন  তার প্রেক্ষিতে পিয়ংইয়ংয়ের সৈন্যরা  সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়ছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রাষ্ট্রীয় সফরের সময় জুনে পিয়ংইয়ংয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এটি উভয় রাষ্ট্রকে অন্যের উপর আক্রমণের ক্ষেত্রে ‘বিলম্ব না করে’ সামরিক সহায়তা প্রদান করতে এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করতে আন্তর্জাতিকভাবে সহযোগিতা করতে বাধ্য করে। দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস এই সপ্তাহে আইনপ্রণেতাদের বলেছে যে রাশিয়ায় মোতায়েন করা সৈন্যদের একটি বায়ুবাহিত ব্রিগেড এবং স্থলভাগে মেরিন কর্পসে নিয়োগ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, কিছু সৈন্য ইতিমধ্যেই যুদ্ধে প্রবেশ করেছে, ইয়োনহাপ বার্তা সংস্থা এখবর জানিয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থাটি সম্প্রতি আরও বলেছে যে, উত্তর কোরিয়া তার ক্ষয়প্রাপ্ত অস্ত্রের মজুদ পূরণ করতে ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে রাশিয়ায় ১৩,০০০ এরও বেশি কামান, ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য প্রচলিত অস্ত্র পাঠিয়েছে। সৈন্য পাঠানোর মাধ্যমে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতির মধ্যে অস্ত্র, সামরিক সহায়তা এবং শ্রম সরবরাহকারী হিসাবে অবস্থান করছে – সম্ভাব্যভাবে তার ঐতিহ্যবাহী মিত্র, প্রতিবেশী এবং প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার চীনকে বাইপাস করে । বিশ্লেষকদের মতে , রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে তার বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন তেল ও গ্যাস সরবরাহ করতে পারে। উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সন হুই সম্প্রতি মস্কো সফর করেছেন এবং বলেছেন তার দেশ ‘বিজয় দিবস পর্যন্ত  রাশিয়ান কমরেডদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে’। উত্তর কোরিয়া গত মাসে বলেছিল যে, রাশিয়ায় যে কোনও সেনা মোতায়েন করা  আন্তর্জাতিক আইনের  বিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু তারা যে সৈন্য পাঠিয়েছে তা নিশ্চিত করেনি।

সূত্র : আলজাজিরা

mzamin

No comments

Powered by Blogger.