সামাল দেয়া যাচ্ছে না ডেঙ্গু পরিস্থিতি
ডেঙ্গু
জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ নেই মশা
মারার। সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতার বোঝা বহন করে চলেছে স্বাস্থ্য
মন্ত্রণালয়। রাজধানীর প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু করেও সামাল
দেয়া যাচ্ছে না। রোগীর সংখ্যা শুধুই বাড়ছে। গতকালও সর্বোচ্চ সংখ্যক ডেঙ্গু
রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। রাজধানীর সাথে প্রায় সমান তালে বাড়ছে দেশের
অন্যান্য স্থানেও। দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গুর রোগী
রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে। রাজধানীর হাসপাতালগুলোসহ দেশের
প্রতিটি জেলা থেকে আক্রান্তের খবর আসছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশে
সর্বোচ্চ এক হাজার ৭১২ জন ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। গত জুন মাসের ৩০ দিনে
ডেঙ্গু রোগী ছিল মাত্র এক হাজার ৮৬৩ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল
পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল ১৯ হাজার ৫১৩ জন। জুলাই মাসের ৩১
দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৬১৪ জন। মৃত্যুর সংখ্যা নিয়েও চলছে
লুকোচুরি। সরকারি হিসাবে মাত্র ১৪ জন মারা যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এ দিকে
গতকাল বিকেলে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজে মাদারীপুরের বাসিন্দা শারমীন নামে এক
তরুণী মারা গেছেন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: মোজাহেরুল হক বলেন, ডেঙ্গু মহামারীর দমন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়, এটি স্থানীয় সরকারের কাজ। আজ স্বাস্থ্য তথা হাসপাতালগুলোতে ব্যাপক চাপ পড়েছে স্থানীয় সরকার তথা সিটি করপোরেশনের মশা মারা ব্যর্থতার জন্য। তারা যথা সময়ে বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই মশা মারতে মারলে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ত না। তার মতে, ‘অনাকাক্সিক্ষত ডেঙ্গু চিকিৎসা করতে গিয়ে হাসপাতালগুলোতে জটিল রোগী চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে মানুষ যথেষ্ট আতঙ্কগ্রস্ত। কতটা আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ তা রাজধানীর হাসপাতালে গেলেই প্রমাণিত হয়। সামান্য জ্বর হলেই মানুষ হাসপাতালে চলে আসছে ডেঙ্গু সন্দেহে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সন্দেহজনক ডেঙ্গু রোগীতে সয়লাব বলতে গেলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এ কয়েক দিনে ডেঙ্গু সন্দেহে ১৬০০ শিশু এসেছে। এদের প্রাথমিক পরীক্ষা (এসএস১) করার পর ২৪ শিশুকে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত করেছে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ডা: রফিকুল আলম জানিয়েছেন। এই ২৪ শিশুর সবাইকেই ভর্তি করা হয়েছে ডেঙ্গু সেলে। গতকাল এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক মো: রফিকুল আলম জানান, গতকাল বেলা ২টা পর্যন্ত তাদের ডেঙ্গু সেলে ১৩৯ জন ভর্তি চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ হাসপাতালে বহির্বিভাগে গত পাঁচ দিনে ৫০০-এর বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মেডিক্যাল এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০ পর্যন্ত একসাথে ভর্তি করা যাবে। এ হাসপাতালে তিনজন রোগী আইসিইউয়ে এবং সাতজন রোগী এইচডিইউয়ে চিকিৎসাধীন আছে। গতকাল ডেঙ্গু আক্রান্ত একজন গর্ভবতী মহিলা আইসিইউয়ে মারা গেছেন। তিনি শক সিনড্রোমে ভুগছিলেন।
গতকাল দুপুর পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ২২২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে। মিটফোর্ডে ৮১ জন, শিশু হাসপাতালে ২৫ জন, হলিফ্যামিলি হাসপাতালে ৪৩, শহীদ সোহরাওয়ার্দীতে ৯৫ জন, বারডেমে ৩২ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন, পুলিশ হাসপাতালে ৩৯ জন, মুগদা হাসপাতালে ৮৬ জন, বিজিবি হাসপাতালে আটজন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৪৩, কুর্মিটোলা হাসপাতালে ৫৫ জন অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালে ৩৮৭ জন। অবশিষ্ট ৫৬২ জন রাজধানী ঢাকার বাইরের ৮ বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। উপরে উল্লিখিত সবাই ডেঙ্গু সাধারণ জ্বরে আক্রান্ত। এর বাইরে তিনজন রয়েছে ডেঙ্গু হেমোরেজিকে আক্রান্ত। বেসরকারি হাসপাতালের ৩৮৭ জনের মধ্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩০, ইবনে সিনা হাসপাতালে ২৭, স্কয়ার হাসপাতালে ২৫, শমরিতায় ১২, ল্যাবএইডে ৭, সেন্ট্রাল হাসপতালে, গ্রিন লাইফে ২৩, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ২৭ জন।
ফরিদপুরে তরুণীর মৃত্যু : ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে মারা গেলেন তরুণী শারমীন (২২)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মারা যান তিনি। শারমীন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট এলাকার মো: রুবেলের মেয়ে। ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কামদা প্রসাদ সাহা জানান, গত রোববার শারমীন টেকেরহাটস্থ নিজ বাড়িতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। গত ২০ জুলাই থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফরিদপুরের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে মোট ১২৭ জন। এর মধ্যে তিনজনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৪ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জেলায় চিকিৎসা নেয়া ১২৭ রোগীর মধ্যে ১৪ জন ফরিদপুরে অবস্থানকালেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। বাকিদের বড় অংশ এসেছেন ঢাকা থেকে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ১৯ জন : জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু সেল খোলা হয়েছে। বর্তমানে ১৯ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন রোগী ঢাকা থেকে ডেঙ্গু জীবাণুু বহন করে নিয়ে আসে। কক্সবাজারে বসবাসকারীদের মধ্যে ছয়জন রোগী পাওয়া গেছে। কক্সবাজারে গত এক সপ্তাহে ৩৩জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
ঝিনাইদহে ১৯ নতুন রোগী : জেলার সদর হাসপাতালে গত ৭২ ঘণ্টায় ১৯জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এই নিয়ে ঝিনাইদহে মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩৫জন। সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম জানান, জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই।
বরগুনায় বাড়ছে রোগী : বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নতুন করে আরো সাত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। আমতলী উপজেলায় দুইজন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন ভর্তি হয়েছেন আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অপরজন পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সিভিল সার্জন ডা: হুমায়ুন শাহিন খান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত বরগুনায় ২৭জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
রংপুরে ৭ জন নিজ বাড়িতে আক্রান্ত : রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত ১৩ দিনে হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু শনাক্ত ৬৫ রোগী ভর্তি হয়েছেন। রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ কে এম শাহেদুজ্জামান নয়া দিগন্তকে জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৬৫ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৭ জন রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় নিজ বাড়িতে আক্রান্ত হয়েছেন। বাকি ৫৯ জন ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার যন্ত্রপাতি কেনার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে, খুব শিগগিরই তা কেনা হবে। এ দিকে রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার পক্ষ থেকে গত ২৫ জুলাই থেকে নগরীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ চলছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ছয়জন করে ৩৩টি ওয়ার্ডে মোট ১৯৮ জন শ্রমিক ঝোপঝাড় এবং নর্দমা পরিষ্কারের কাজ করছেন।
মানিকগঞ্জে অসুস্থ ৫৪ জন : গত ১০ দিনে ৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন মানিকগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন সাতজন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে ৭ জনকে। বাকিরা ভর্তি রয়েছেন জেলা হাসপাতালে। নারী, পুরুষ ও শিশুদের পৃথক তিনটি সেল গঠন করে সাধ্য অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। গতকাল বৃহস্পতিবার হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা: লুৎফর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য চারজন চিকিৎসক সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়াও ডেঙ্গুর যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে এই হাসপাতালে।
সাতক্ষীরায় শনাক্ত ২৮ : এখন পর্যন্ত জেলায় ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান শুরুর পাশাপাশি মশক নিধনে জেলা শহরের প্রায় সর্বত্রই পৌরসভার পক্ষ থেকে ওষধ ¯েপ্র করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার সদর হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়। এর মধ্যে ১৪ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সিভিল সার্জন ডা: শেখ আবু শাহিন জানান, সদর হাসপাতালে বর্তমানে ৮ রোগী ভর্তি আছেন। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, সেখানে চারজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন।
নবাবগঞ্জে আরো ৩০ রোগী : নবাবগঞ্জ উপজেলা সরকারি হাসপাতালে গতকাল বিকেলের পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩০ জন রোগী ভর্র্তি হয়েছে। ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। বেড না পেয়ে ফ্লোরে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। তবে ঝুঁকিপূর্র্ণ রোগীদের ঢাকার হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। কয়েক দিনের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ রোগী ভর্তি হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সবাই। বেশ কয়েকজন রোগীকে ঢাকার হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
আগৈলঝাড়ায় নেই পরীক্ষার সুযোগ : ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে উপজেলা হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আট রোগী ভর্তি হওয়ার পর তাদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে ডেঙ্গু হেল্প ডেস্ক খোলা হলেও নেই কোনো পরীক্ষার সুযোগ। ৫০ শয্যা হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত ইউএইচএএফপিও ডা: বখতিয়ার আল মামুন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার জোবারপাড় গ্রামের সুজন মিস্ত্রির ৯ মাসের মেয়ের শরীরে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তাকে বরিশাল পাঠান চিকিৎসকেরা।
মমেক হাসপাতালে ১৬৮ জন : ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: এ বি এম শামসুজ্জামান জানান, ২১ জুলাই থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে ভর্তি হন ২৩৭ জন। সাতটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সব রোগীর অবস্থা ভালো। আক্রান্ত সবাই ঢাকা থেকে এসে এখানে ভর্তি হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
টাঙ্গাইলে ভর্তি ৬৪ : জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর বাইরেও অর্ধশতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে আলাদা সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে ৩৬ জন, মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ২৮ জন ভর্তি রয়েছেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে এ হাসপাতালে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
চাপে কুমেক হাসপাতাল : কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) এবং বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত শতাধিক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে কুমেকে ভর্তি হয়েছে। জানা যায়, গতকাল দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬৫ জন ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪৬ জন এবং অন্যান্য হাসপাতালে ১৯ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। কুমেকের পরিচালক ডা: স্বপন কুমার অধিকারী বলেন, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর পরিমাণ ক্রমে বাড়ছে। অর্ধশতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে অর্ধশত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রতিদিনই ৮-১০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালটি ৫০০ শয্যার। ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে আমরা বাড়তি চাপের মধ্যে রয়েছি।
মির্জাগঞ্জে দুইজন ভর্তি : মির্জাগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন রোগী ভর্তি হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনুপ দাস ঢাকায় অনেক দিন ধরে চাকরি করছিলেন। এদিকে আক্রান্ত রিফাতের বাবা বলেন, তার ছেলে গ্রামের বাড়িতে ছিল। চার-পাঁচ দিন আগে তার জ¦র হয়।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: মোজাহেরুল হক বলেন, ডেঙ্গু মহামারীর দমন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়, এটি স্থানীয় সরকারের কাজ। আজ স্বাস্থ্য তথা হাসপাতালগুলোতে ব্যাপক চাপ পড়েছে স্থানীয় সরকার তথা সিটি করপোরেশনের মশা মারা ব্যর্থতার জন্য। তারা যথা সময়ে বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই মশা মারতে মারলে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ত না। তার মতে, ‘অনাকাক্সিক্ষত ডেঙ্গু চিকিৎসা করতে গিয়ে হাসপাতালগুলোতে জটিল রোগী চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে মানুষ যথেষ্ট আতঙ্কগ্রস্ত। কতটা আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ তা রাজধানীর হাসপাতালে গেলেই প্রমাণিত হয়। সামান্য জ্বর হলেই মানুষ হাসপাতালে চলে আসছে ডেঙ্গু সন্দেহে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সন্দেহজনক ডেঙ্গু রোগীতে সয়লাব বলতে গেলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এ কয়েক দিনে ডেঙ্গু সন্দেহে ১৬০০ শিশু এসেছে। এদের প্রাথমিক পরীক্ষা (এসএস১) করার পর ২৪ শিশুকে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত করেছে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ডা: রফিকুল আলম জানিয়েছেন। এই ২৪ শিশুর সবাইকেই ভর্তি করা হয়েছে ডেঙ্গু সেলে। গতকাল এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক মো: রফিকুল আলম জানান, গতকাল বেলা ২টা পর্যন্ত তাদের ডেঙ্গু সেলে ১৩৯ জন ভর্তি চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ হাসপাতালে বহির্বিভাগে গত পাঁচ দিনে ৫০০-এর বেশি রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মেডিক্যাল এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০ পর্যন্ত একসাথে ভর্তি করা যাবে। এ হাসপাতালে তিনজন রোগী আইসিইউয়ে এবং সাতজন রোগী এইচডিইউয়ে চিকিৎসাধীন আছে। গতকাল ডেঙ্গু আক্রান্ত একজন গর্ভবতী মহিলা আইসিইউয়ে মারা গেছেন। তিনি শক সিনড্রোমে ভুগছিলেন।
গতকাল দুপুর পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ২২২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে। মিটফোর্ডে ৮১ জন, শিশু হাসপাতালে ২৫ জন, হলিফ্যামিলি হাসপাতালে ৪৩, শহীদ সোহরাওয়ার্দীতে ৯৫ জন, বারডেমে ৩২ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন, পুলিশ হাসপাতালে ৩৯ জন, মুগদা হাসপাতালে ৮৬ জন, বিজিবি হাসপাতালে আটজন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৪৩, কুর্মিটোলা হাসপাতালে ৫৫ জন অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালে ৩৮৭ জন। অবশিষ্ট ৫৬২ জন রাজধানী ঢাকার বাইরের ৮ বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। উপরে উল্লিখিত সবাই ডেঙ্গু সাধারণ জ্বরে আক্রান্ত। এর বাইরে তিনজন রয়েছে ডেঙ্গু হেমোরেজিকে আক্রান্ত। বেসরকারি হাসপাতালের ৩৮৭ জনের মধ্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩০, ইবনে সিনা হাসপাতালে ২৭, স্কয়ার হাসপাতালে ২৫, শমরিতায় ১২, ল্যাবএইডে ৭, সেন্ট্রাল হাসপতালে, গ্রিন লাইফে ২৩, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ২৭ জন।
ফরিদপুরে তরুণীর মৃত্যু : ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে মারা গেলেন তরুণী শারমীন (২২)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মারা যান তিনি। শারমীন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট এলাকার মো: রুবেলের মেয়ে। ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কামদা প্রসাদ সাহা জানান, গত রোববার শারমীন টেকেরহাটস্থ নিজ বাড়িতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। গত ২০ জুলাই থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফরিদপুরের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে মোট ১২৭ জন। এর মধ্যে তিনজনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৪ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জেলায় চিকিৎসা নেয়া ১২৭ রোগীর মধ্যে ১৪ জন ফরিদপুরে অবস্থানকালেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। বাকিদের বড় অংশ এসেছেন ঢাকা থেকে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ১৯ জন : জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু সেল খোলা হয়েছে। বর্তমানে ১৯ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন রোগী ঢাকা থেকে ডেঙ্গু জীবাণুু বহন করে নিয়ে আসে। কক্সবাজারে বসবাসকারীদের মধ্যে ছয়জন রোগী পাওয়া গেছে। কক্সবাজারে গত এক সপ্তাহে ৩৩জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
ঝিনাইদহে ১৯ নতুন রোগী : জেলার সদর হাসপাতালে গত ৭২ ঘণ্টায় ১৯জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এই নিয়ে ঝিনাইদহে মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩৫জন। সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম জানান, জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই।
বরগুনায় বাড়ছে রোগী : বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নতুন করে আরো সাত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। আমতলী উপজেলায় দুইজন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন ভর্তি হয়েছেন আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অপরজন পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সিভিল সার্জন ডা: হুমায়ুন শাহিন খান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত বরগুনায় ২৭জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
রংপুরে ৭ জন নিজ বাড়িতে আক্রান্ত : রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গত ১৩ দিনে হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু শনাক্ত ৬৫ রোগী ভর্তি হয়েছেন। রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ কে এম শাহেদুজ্জামান নয়া দিগন্তকে জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৬৫ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৭ জন রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় নিজ বাড়িতে আক্রান্ত হয়েছেন। বাকি ৫৯ জন ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার যন্ত্রপাতি কেনার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে, খুব শিগগিরই তা কেনা হবে। এ দিকে রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার পক্ষ থেকে গত ২৫ জুলাই থেকে নগরীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নানা পদক্ষেপ চলছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ছয়জন করে ৩৩টি ওয়ার্ডে মোট ১৯৮ জন শ্রমিক ঝোপঝাড় এবং নর্দমা পরিষ্কারের কাজ করছেন।
মানিকগঞ্জে অসুস্থ ৫৪ জন : গত ১০ দিনে ৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন মানিকগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন সাতজন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে ৭ জনকে। বাকিরা ভর্তি রয়েছেন জেলা হাসপাতালে। নারী, পুরুষ ও শিশুদের পৃথক তিনটি সেল গঠন করে সাধ্য অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। গতকাল বৃহস্পতিবার হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা: লুৎফর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য চারজন চিকিৎসক সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়াও ডেঙ্গুর যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে এই হাসপাতালে।
সাতক্ষীরায় শনাক্ত ২৮ : এখন পর্যন্ত জেলায় ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান শুরুর পাশাপাশি মশক নিধনে জেলা শহরের প্রায় সর্বত্রই পৌরসভার পক্ষ থেকে ওষধ ¯েপ্র করা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার সদর হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়। এর মধ্যে ১৪ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সিভিল সার্জন ডা: শেখ আবু শাহিন জানান, সদর হাসপাতালে বর্তমানে ৮ রোগী ভর্তি আছেন। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, সেখানে চারজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন।
নবাবগঞ্জে আরো ৩০ রোগী : নবাবগঞ্জ উপজেলা সরকারি হাসপাতালে গতকাল বিকেলের পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩০ জন রোগী ভর্র্তি হয়েছে। ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। বেড না পেয়ে ফ্লোরে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। তবে ঝুঁকিপূর্র্ণ রোগীদের ঢাকার হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। কয়েক দিনের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ রোগী ভর্তি হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সবাই। বেশ কয়েকজন রোগীকে ঢাকার হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
আগৈলঝাড়ায় নেই পরীক্ষার সুযোগ : ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে উপজেলা হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আট রোগী ভর্তি হওয়ার পর তাদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে ডেঙ্গু হেল্প ডেস্ক খোলা হলেও নেই কোনো পরীক্ষার সুযোগ। ৫০ শয্যা হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত ইউএইচএএফপিও ডা: বখতিয়ার আল মামুন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার জোবারপাড় গ্রামের সুজন মিস্ত্রির ৯ মাসের মেয়ের শরীরে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তাকে বরিশাল পাঠান চিকিৎসকেরা।
মমেক হাসপাতালে ১৬৮ জন : ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: এ বি এম শামসুজ্জামান জানান, ২১ জুলাই থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে ভর্তি হন ২৩৭ জন। সাতটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সব রোগীর অবস্থা ভালো। আক্রান্ত সবাই ঢাকা থেকে এসে এখানে ভর্তি হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
টাঙ্গাইলে ভর্তি ৬৪ : জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর বাইরেও অর্ধশতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে আলাদা সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে ৩৬ জন, মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ২৮ জন ভর্তি রয়েছেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে এ হাসপাতালে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
চাপে কুমেক হাসপাতাল : কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) এবং বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত শতাধিক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে কুমেকে ভর্তি হয়েছে। জানা যায়, গতকাল দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬৫ জন ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪৬ জন এবং অন্যান্য হাসপাতালে ১৯ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। কুমেকের পরিচালক ডা: স্বপন কুমার অধিকারী বলেন, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর পরিমাণ ক্রমে বাড়ছে। অর্ধশতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে অর্ধশত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রতিদিনই ৮-১০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালটি ৫০০ শয্যার। ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে আমরা বাড়তি চাপের মধ্যে রয়েছি।
মির্জাগঞ্জে দুইজন ভর্তি : মির্জাগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন রোগী ভর্তি হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনুপ দাস ঢাকায় অনেক দিন ধরে চাকরি করছিলেন। এদিকে আক্রান্ত রিফাতের বাবা বলেন, তার ছেলে গ্রামের বাড়িতে ছিল। চার-পাঁচ দিন আগে তার জ¦র হয়।
No comments