ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো কি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পরিণতি বরণ করবে? by হিটলার এ. হালিম
দেশের
উদীয়মান ও সম্ভাবনাময় স্টার্টআপের (নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ) বিকাশ ও
উন্নয়নে বিনিয়োগ করে থাকে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি) প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে
দেশে কয়েকটি ভিসি গড়ে উঠেছে। পাইপলাইনে রয়েছে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। তবে
এখন পর্যন্ত সফল স্টার্টআপের সংখ্যা হাতে গোনা। বাজার পরিধির চেয়ে ভিসির
সংখ্যা বেশি হয়ে গেলে তা কি ভবিষ্যতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতো পরিণতি বরণ
করতে পারে? ভিসি ও স্টার্টআপগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এমন আশঙ্কা ব্যক্ত
করেছেন।
তাদের এই শঙ্কার মূলে রয়েছে বেশি সংখ্যায় ভিসির আগমন, এখাতে ব্যাংকগুলোর সম্পৃক্ত হওয়া এবং সফল স্টার্টআপের অপ্রতুলতা। ২০১৭ সালে যেখানে দেশে ভিসির সংখ্যা ছিল ৯টি, বর্তমানে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫টিতে। এছাড়া, আরও কয়েকটি ব্যাংক ভিসির লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে বলে জানা গেছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানের জন্য সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। দেশি ভিসিগুলোর মধ্যে এক-দুটো প্রতিষ্ঠান ভালো ব্যবসা করছে। আর বিদেশি ভিসিগুলোর মধ্যে ‘পেগাসাস’ ও ‘আবিষ্কার’ নামে দুটো প্রতিষ্ঠান ভালো করছে বলে জানা গেছে।
দেশে বর্তমানে যেসব ভিসি কাজ করছে তার মধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠান বিদেশি। ভিসিগুলোর ক্রমবর্ধমান সংখ্যা ভবিষ্যতে যাতে উদ্বেগের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়, সেজন্য সংশ্লিষ্টরা এখনই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সতর্কতার সঙ্গে ভিসি পরিচালনা করা না গেলে; ভবিষ্যতে তা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতো পরিণতি বরণ করতে পারে।
দেশে বর্তমানে রয়েছে আবিষ্কার ফ্রন্টিয়ার ফান্ড, অ্যালায়েন্স ক্যাপিটাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, এথেনা ভেঞ্চার অ্যান্ড ইক্যুইটিস লিমিটেড, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেড, বিডি ভেঞ্চার লিমিটেড, পেগাসাস টেক ভেঞ্চারস (সাবেক ফেনক্স ভেঞ্চার ক্যাপিটাল), আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, ইম্প্রেস ক্যাপিটাল লিমিটেড, লংকাবাংলা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, মসলিন ক্যাপিটাল, রাজোর ক্যাপিটাল, ইউএফএস ইক্যুইটি পার্টনার্স লিমিটেড, ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, এক্স অ্যাঞ্জেল লিমিটেড ও স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
এর মধ্যে আইডিএলসি ও লংকাবাংলা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড সম্প্রতি লাইসেন্স নিয়েছে। এছাড়া, মার্কেন্টাইল ব্যাংকও লাইসেন্স নেবে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, দেশে মোবাইল ব্যাংকিং শুরু হয় ২০১০ সালে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই সেবা চালুর জন্য ২৮টি ব্যাংককে অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে বর্তমানে চালু রয়েছে ১৮টি ব্যাংক। এছাড়া, কয়েকটি ব্যাংক এই সেবা চালু করলেও পরে তা বন্ধ করে দিয়েছে। দুই-একটি ব্যাংক বাদে অন্যগুলো ব্যবসায়িকভাবে সুবিধা করতে না পেরে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকগুলো যদি কোনও ফান্ড তৈরি না করে (পৃথক কোম্পানি গঠন করে) শুধু ঋণ নিয়ে আসে, তাহলে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করে থাকে, তারা ব্যাংকের মতো ঋণ দেয় না। বিনিময়ে তার ওই কোম্পানির নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ারের মালিক অংশীদার হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিয়াব) সভাপতি ও বিদেশি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান পেগাসাস টেক ভেঞ্চারসের জেনারেল পার্টনার শামীম আহসান বলেন, ‘দেশের মার্কেট অনুযায়ী এই সংখ্যা ঠিক আছে। কিন্তু যারা এখন মার্কেটে আছে, তাদের ফান্ড সংগ্রহের সক্ষমতা থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠান চালানোর অভিজ্ঞতাও থাকতে হবে। তা না-হলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘স্টার্টআপ ও ফাইনান্স বুঝে এমন লোকদের এই খাতের প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজন। এ খাতে যারা সফল তারাই সঠিকভাবে বোঝেন কোথায় বিনিয়োগ করতে হবে। তিনি আসলে গাইড করতে পারবেন বিশ্বব্যাপী এটা কীভাবে চলে।’ তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি তৈরিই হয়েছে ভেঞ্চার ক্যাপিটালগুলোর কারণে। এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে, তা না হলে এই খাত সংকটে পড়েবে।
শামীম আহসান মনে করেন, যারা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল করছেন, তারা যদি সফল উদ্যোক্তাদের সঙ্গে রাখেন, সফল স্টার্টআপগুলোকে আদর্শ মানেন, তাহলে এ খাতে তারা সফল হব্নে। তা না-হলে ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা জ্ঞানের অভাবে নতুন নতুন জটিলতা তৈরি হতে পারে।
জানা গেছে, প্রথম জীবনে উদ্যোক্তা হয়ে পরবর্তী সময়ে সফল ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট হয়েছেন অনেকে। তাদের বিনিয়োগ করা বেশিরভাগ প্রকল্পই সফল। বিনিয়োগের আগে কর্মজীবন ও বাস্তব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তারা সফল বিনিয়োগ চিহ্নিত করতে পেরেছেন। এদের একজন হলেন ভারতীয় আমেরিকান বিনোদ খোসলা। তিনি ছিলেন সান মাইক্রোসিস্টেমসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বখ্যাত খোসলা ভেঞ্চারস। বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান আলিবাবার প্রধান জ্যাক মা-ও গড়ে তুলেছেন অ্যান্ট ফাইনান্সিয়াল নামের সফল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হলে ভেঞ্চার ক্যাপিটালে ভালো করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
জানতে চাইলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান বিডি ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত হোসেন বলেন, ‘কয়েকটি ব্যাংক এখন নিজেরাই লাইসেন্স নিয়ে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল গড়ে তুলতে চাইছে। আমরা ভেঞ্চার ক্যাপিটালরা ফান্ড তৈরির জন্য ব্যাংকগুলোর কাছে গেলে, তারা এখন নিজেরাই তৈরি করছে বলে জানায়। এরকম হলে তা একদিন ব্যাংকগুলোর মোবাইল ব্যাংকিং প্রকল্পের মতো হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান শুরু করবে, কিন্তু একটা-দুটো বাদে কেউই দাঁড়াতে পারবে না। উদ্যোগ গুটিয়ে নিয়ে অন্যকোনও দিকে মনোযোগী হতে বাধ্য হবে। তখন মানুষের মনে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হহতে পারে।’
তিনি জানান, কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রাইভেট ইক্যুইটি তৈরি করতে যাচ্ছে। এরা প্রতিষ্ঠিত বড় বড় কোম্পানি যেমন—স্বপ্ন, আগোরা ইত্যাদির মতো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবে। এটাও একটা ভালো উদ্যোগ হবে বলে তিনি মনে করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যারা সফল উদ্যোক্তা, তারা যদি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান তৈরি করে, তাহলে সফল হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ব্যাংকার বা ব্যাংক যদি সরাসরি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল নিয়ে মাঠে নামে, তাহলে ‘বিনিয়োগ’ না ‘ঋণ’ এই নিয়ে একটা জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাদের মতে, ব্যাংকগুলো সাধারণত কোনও প্রতিষ্ঠানে ঋণ দিয়ে থাকে। আর ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো কোনও কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে থাকে। বিনিময়ে ওই প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট পরিমাণের শেয়ার তারা পেয়ে থাকে। এই বিষয়টি ভবিষ্যতে সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
তাদের এই শঙ্কার মূলে রয়েছে বেশি সংখ্যায় ভিসির আগমন, এখাতে ব্যাংকগুলোর সম্পৃক্ত হওয়া এবং সফল স্টার্টআপের অপ্রতুলতা। ২০১৭ সালে যেখানে দেশে ভিসির সংখ্যা ছিল ৯টি, বর্তমানে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫টিতে। এছাড়া, আরও কয়েকটি ব্যাংক ভিসির লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে বলে জানা গেছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানের জন্য সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। দেশি ভিসিগুলোর মধ্যে এক-দুটো প্রতিষ্ঠান ভালো ব্যবসা করছে। আর বিদেশি ভিসিগুলোর মধ্যে ‘পেগাসাস’ ও ‘আবিষ্কার’ নামে দুটো প্রতিষ্ঠান ভালো করছে বলে জানা গেছে।
দেশে বর্তমানে যেসব ভিসি কাজ করছে তার মধ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠান বিদেশি। ভিসিগুলোর ক্রমবর্ধমান সংখ্যা ভবিষ্যতে যাতে উদ্বেগের কারণ হয়ে না দাঁড়ায়, সেজন্য সংশ্লিষ্টরা এখনই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সতর্কতার সঙ্গে ভিসি পরিচালনা করা না গেলে; ভবিষ্যতে তা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতো পরিণতি বরণ করতে পারে।
দেশে বর্তমানে রয়েছে আবিষ্কার ফ্রন্টিয়ার ফান্ড, অ্যালায়েন্স ক্যাপিটাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, এথেনা ভেঞ্চার অ্যান্ড ইক্যুইটিস লিমিটেড, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেড, বিডি ভেঞ্চার লিমিটেড, পেগাসাস টেক ভেঞ্চারস (সাবেক ফেনক্স ভেঞ্চার ক্যাপিটাল), আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, ইম্প্রেস ক্যাপিটাল লিমিটেড, লংকাবাংলা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, মসলিন ক্যাপিটাল, রাজোর ক্যাপিটাল, ইউএফএস ইক্যুইটি পার্টনার্স লিমিটেড, ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, এক্স অ্যাঞ্জেল লিমিটেড ও স্ট্র্যাটেজিক ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
এর মধ্যে আইডিএলসি ও লংকাবাংলা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড সম্প্রতি লাইসেন্স নিয়েছে। এছাড়া, মার্কেন্টাইল ব্যাংকও লাইসেন্স নেবে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, দেশে মোবাইল ব্যাংকিং শুরু হয় ২০১০ সালে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই সেবা চালুর জন্য ২৮টি ব্যাংককে অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে বর্তমানে চালু রয়েছে ১৮টি ব্যাংক। এছাড়া, কয়েকটি ব্যাংক এই সেবা চালু করলেও পরে তা বন্ধ করে দিয়েছে। দুই-একটি ব্যাংক বাদে অন্যগুলো ব্যবসায়িকভাবে সুবিধা করতে না পেরে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকগুলো যদি কোনও ফান্ড তৈরি না করে (পৃথক কোম্পানি গঠন করে) শুধু ঋণ নিয়ে আসে, তাহলে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করে থাকে, তারা ব্যাংকের মতো ঋণ দেয় না। বিনিময়ে তার ওই কোম্পানির নির্দিষ্ট পরিমাণ শেয়ারের মালিক অংশীদার হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেশের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিয়াব) সভাপতি ও বিদেশি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান পেগাসাস টেক ভেঞ্চারসের জেনারেল পার্টনার শামীম আহসান বলেন, ‘দেশের মার্কেট অনুযায়ী এই সংখ্যা ঠিক আছে। কিন্তু যারা এখন মার্কেটে আছে, তাদের ফান্ড সংগ্রহের সক্ষমতা থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠান চালানোর অভিজ্ঞতাও থাকতে হবে। তা না-হলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘স্টার্টআপ ও ফাইনান্স বুঝে এমন লোকদের এই খাতের প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজন। এ খাতে যারা সফল তারাই সঠিকভাবে বোঝেন কোথায় বিনিয়োগ করতে হবে। তিনি আসলে গাইড করতে পারবেন বিশ্বব্যাপী এটা কীভাবে চলে।’ তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি তৈরিই হয়েছে ভেঞ্চার ক্যাপিটালগুলোর কারণে। এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে, তা না হলে এই খাত সংকটে পড়েবে।
শামীম আহসান মনে করেন, যারা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল করছেন, তারা যদি সফল উদ্যোক্তাদের সঙ্গে রাখেন, সফল স্টার্টআপগুলোকে আদর্শ মানেন, তাহলে এ খাতে তারা সফল হব্নে। তা না-হলে ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা জ্ঞানের অভাবে নতুন নতুন জটিলতা তৈরি হতে পারে।
জানা গেছে, প্রথম জীবনে উদ্যোক্তা হয়ে পরবর্তী সময়ে সফল ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট হয়েছেন অনেকে। তাদের বিনিয়োগ করা বেশিরভাগ প্রকল্পই সফল। বিনিয়োগের আগে কর্মজীবন ও বাস্তব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তারা সফল বিনিয়োগ চিহ্নিত করতে পেরেছেন। এদের একজন হলেন ভারতীয় আমেরিকান বিনোদ খোসলা। তিনি ছিলেন সান মাইক্রোসিস্টেমসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বখ্যাত খোসলা ভেঞ্চারস। বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান আলিবাবার প্রধান জ্যাক মা-ও গড়ে তুলেছেন অ্যান্ট ফাইনান্সিয়াল নামের সফল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হলে ভেঞ্চার ক্যাপিটালে ভালো করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
জানতে চাইলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান বিডি ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত হোসেন বলেন, ‘কয়েকটি ব্যাংক এখন নিজেরাই লাইসেন্স নিয়ে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল গড়ে তুলতে চাইছে। আমরা ভেঞ্চার ক্যাপিটালরা ফান্ড তৈরির জন্য ব্যাংকগুলোর কাছে গেলে, তারা এখন নিজেরাই তৈরি করছে বলে জানায়। এরকম হলে তা একদিন ব্যাংকগুলোর মোবাইল ব্যাংকিং প্রকল্পের মতো হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান শুরু করবে, কিন্তু একটা-দুটো বাদে কেউই দাঁড়াতে পারবে না। উদ্যোগ গুটিয়ে নিয়ে অন্যকোনও দিকে মনোযোগী হতে বাধ্য হবে। তখন মানুষের মনে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হহতে পারে।’
তিনি জানান, কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রাইভেট ইক্যুইটি তৈরি করতে যাচ্ছে। এরা প্রতিষ্ঠিত বড় বড় কোম্পানি যেমন—স্বপ্ন, আগোরা ইত্যাদির মতো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবে। এটাও একটা ভালো উদ্যোগ হবে বলে তিনি মনে করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যারা সফল উদ্যোক্তা, তারা যদি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান তৈরি করে, তাহলে সফল হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ব্যাংকার বা ব্যাংক যদি সরাসরি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল নিয়ে মাঠে নামে, তাহলে ‘বিনিয়োগ’ না ‘ঋণ’ এই নিয়ে একটা জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাদের মতে, ব্যাংকগুলো সাধারণত কোনও প্রতিষ্ঠানে ঋণ দিয়ে থাকে। আর ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো কোনও কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে থাকে। বিনিময়ে ওই প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট পরিমাণের শেয়ার তারা পেয়ে থাকে। এই বিষয়টি ভবিষ্যতে সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
No comments