মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দুধের উপাদান জানা আমার অধিকার by খালেদ মুহিউদ্দীন
মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী, হঠাৎ একজন প্রফেসর গবেষণা করেছেন বলেই আপনি জানতে পেরেছেন
যে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে৷ দুধে কেন অ্যান্টিবায়োটিক থাকতে পারে তার
একটি ব্যাখ্যাও আপনি দিয়েছেন৷
হয়তো আপনার গবেষকেরা বিষয়টি আপনাকে জানিয়েছেন অথবা আপনি নিজে ভেবেই এটি বের করেছেন৷ যেকোনো উপায়েই এটি আপনি জেনে বা মেনে থাকুন, এটি আপনার এখতিয়ার৷
আমি বলতে চাই, আমি কী খাচ্ছি বা আমার দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে, নাকি সুন্দরবনের মধু আছে তা জানা আমার অধিকার৷ এখন অ্যান্টিবায়োটিকসহ দুধ খেতে চাইলে আমি খাবো৷ এমনিতেও জেনেশুনে অনেক বিষই আমরা খাই, না হয় অ্যান্টিবায়োটিকসহ দুধই খেলাম আর খেতে থাকলাম৷
আর গবেষকের কথা বলতে হয়, তিনি কিন্তু দেশি পাস্তুরিত বা বিদেশি গুঁড়া কোনো দুধই বন্ধ করতে বলেননি৷ তিনি শুধু গবেষণা করে দেখিয়েছেন যে, বাজারে লভ্য পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে৷ এখন আপনি চাইলে এমন আইন করতে পারেন, যাতে সবাই সেই অ্যান্টিবায়োটিকসহ দুধ খেতে বাধ্য হয়, আবার চাইলে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক যাতে না যায় সেদিকে মনোযোগ দিতে পারেন৷ আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক থাকলে আপনার কোনো সমস্যা নেই৷ ভালো কথা, সমস্যা না-ও থাকতে পারে৷ হয়তো জাতি হিসেবেই আমাদের কিছু বাড়তি অ্যান্টিবায়োটিক দরকার; আর তা পরপর তিন বারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার চেয়ে বেশি কে জানবেন? কিন্তু আমাদের একটু স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলে ভালো হয় আমাদের কি এটাও জানার অধিকার নেই যে, আমাদের প্রতিদিনের খাবারে কী কী উপাদান রয়েছে?
আপনি বলেছেন, জনৈক প্রফেসরের গবেষণার উপর ভিত্তি করে আদালতে রিট হয়েছে আর একে একে সব দুধ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কি সিদ্ধান্ত এই যে, দেশের আইন-আদালতগুলো এভাবে কাজ করে? তার চেয়েও বড় আদালতের সিদ্ধান্তে যে আবার দুধের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ চালু হয়েছে তা সম্পর্কে আপনার কী মত, মাননীয়?
দুধের খামারিদের নিয়ে আপনার উদ্বেগ আমি রাষ্ট্রনায়কোচিত বলেই মনে করি৷ কিন্তু মুশকিল হলো, এই অ্যান্টিবায়োটিক কোত্থেকে আসছে তা হয়তো খামারিরাই ভালো বলতে পারবেন৷ তারা যদি সতর্ক না হন তবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হয়তো শিশুতোষ বা রোগীর পথ্যমূলক খাবার খেয়েই বেঁচে থাকতে হবে, এটাও কী ভেবেছেন? নাকি আপনি নিশ্চিত জানেন যে, অ্যান্টিবায়োটিক যে দুধের সঙ্গে ফ্রিতে পাওয়া যাচ্ছে এই আমাদের মস্ত লাভ?
গবেষকের কথায় ফিরে আসি৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, একটি কথা বললে তার পারিষদেরা যে শতগুণ উৎসাহ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন তার উদাহরণ আমরা বারবার দেখেছি৷ এই গবেষণা স্পষ্টতই আপনার মনমতো হয়নি৷ এখন আপনার ভক্ত, অনুসারীরা সেই গবেষক আর অধ্যাপকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন, তার নামে দিতে পারেন দেশের আনাচেকানাচে অজর মামলা৷ প্রমাণ করতে চেষ্টা আসতে পারে যে, তিনি আসলে রাষ্ট্রবিরোধী বা স্বাধীনতাবিরোধী৷
আমরা কিন্তু দ্ব্যর্থহীন বলতে চাই, দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে বলে তিনি কোনো অন্যায় করেননি৷ খাওয়া না খাওয়া বা মানা না মানা আপনার ইচ্ছা৷
বাজারে পাস্তুরিত দুধের সংকটের বিষয়ে ৩০ জুলাই লন্ডন থেকে এক জরুরি টেলিকনফারেন্সে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেছেন, ‘‘আমি জানি না হঠাৎ করে একজন প্রফেসর সাহেব কী পরীক্ষা চালালেন, আর এই পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে আদালতে রিট হলো৷ একে একে সব কোম্পানির দুধ উৎপাদন বন্ধ৷ এর ফলে দুধের ঘাটতিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ৷ আবার যারা খামার করছে তারাই বা কীভাবে জীবনযাপন করবে আর গরুকেই বা কী খাওয়াবে?'' প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘গবাদি পশুকে রোগমুক্ত রাখতে অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়৷ সেক্ষেত্রে দুধে কিছুটা অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি থাকতে পারে৷ তবে দুধের যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকার কাজ করছে৷''
হয়তো আপনার গবেষকেরা বিষয়টি আপনাকে জানিয়েছেন অথবা আপনি নিজে ভেবেই এটি বের করেছেন৷ যেকোনো উপায়েই এটি আপনি জেনে বা মেনে থাকুন, এটি আপনার এখতিয়ার৷
আমি বলতে চাই, আমি কী খাচ্ছি বা আমার দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে, নাকি সুন্দরবনের মধু আছে তা জানা আমার অধিকার৷ এখন অ্যান্টিবায়োটিকসহ দুধ খেতে চাইলে আমি খাবো৷ এমনিতেও জেনেশুনে অনেক বিষই আমরা খাই, না হয় অ্যান্টিবায়োটিকসহ দুধই খেলাম আর খেতে থাকলাম৷
আর গবেষকের কথা বলতে হয়, তিনি কিন্তু দেশি পাস্তুরিত বা বিদেশি গুঁড়া কোনো দুধই বন্ধ করতে বলেননি৷ তিনি শুধু গবেষণা করে দেখিয়েছেন যে, বাজারে লভ্য পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে৷ এখন আপনি চাইলে এমন আইন করতে পারেন, যাতে সবাই সেই অ্যান্টিবায়োটিকসহ দুধ খেতে বাধ্য হয়, আবার চাইলে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক যাতে না যায় সেদিকে মনোযোগ দিতে পারেন৷ আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক থাকলে আপনার কোনো সমস্যা নেই৷ ভালো কথা, সমস্যা না-ও থাকতে পারে৷ হয়তো জাতি হিসেবেই আমাদের কিছু বাড়তি অ্যান্টিবায়োটিক দরকার; আর তা পরপর তিন বারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার চেয়ে বেশি কে জানবেন? কিন্তু আমাদের একটু স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলে ভালো হয় আমাদের কি এটাও জানার অধিকার নেই যে, আমাদের প্রতিদিনের খাবারে কী কী উপাদান রয়েছে?
আপনি বলেছেন, জনৈক প্রফেসরের গবেষণার উপর ভিত্তি করে আদালতে রিট হয়েছে আর একে একে সব দুধ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কি সিদ্ধান্ত এই যে, দেশের আইন-আদালতগুলো এভাবে কাজ করে? তার চেয়েও বড় আদালতের সিদ্ধান্তে যে আবার দুধের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ চালু হয়েছে তা সম্পর্কে আপনার কী মত, মাননীয়?
দুধের খামারিদের নিয়ে আপনার উদ্বেগ আমি রাষ্ট্রনায়কোচিত বলেই মনে করি৷ কিন্তু মুশকিল হলো, এই অ্যান্টিবায়োটিক কোত্থেকে আসছে তা হয়তো খামারিরাই ভালো বলতে পারবেন৷ তারা যদি সতর্ক না হন তবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হয়তো শিশুতোষ বা রোগীর পথ্যমূলক খাবার খেয়েই বেঁচে থাকতে হবে, এটাও কী ভেবেছেন? নাকি আপনি নিশ্চিত জানেন যে, অ্যান্টিবায়োটিক যে দুধের সঙ্গে ফ্রিতে পাওয়া যাচ্ছে এই আমাদের মস্ত লাভ?
গবেষকের কথায় ফিরে আসি৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, একটি কথা বললে তার পারিষদেরা যে শতগুণ উৎসাহ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন তার উদাহরণ আমরা বারবার দেখেছি৷ এই গবেষণা স্পষ্টতই আপনার মনমতো হয়নি৷ এখন আপনার ভক্ত, অনুসারীরা সেই গবেষক আর অধ্যাপকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন, তার নামে দিতে পারেন দেশের আনাচেকানাচে অজর মামলা৷ প্রমাণ করতে চেষ্টা আসতে পারে যে, তিনি আসলে রাষ্ট্রবিরোধী বা স্বাধীনতাবিরোধী৷
আমরা কিন্তু দ্ব্যর্থহীন বলতে চাই, দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে বলে তিনি কোনো অন্যায় করেননি৷ খাওয়া না খাওয়া বা মানা না মানা আপনার ইচ্ছা৷
বাজারে পাস্তুরিত দুধের সংকটের বিষয়ে ৩০ জুলাই লন্ডন থেকে এক জরুরি টেলিকনফারেন্সে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেছেন, ‘‘আমি জানি না হঠাৎ করে একজন প্রফেসর সাহেব কী পরীক্ষা চালালেন, আর এই পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে আদালতে রিট হলো৷ একে একে সব কোম্পানির দুধ উৎপাদন বন্ধ৷ এর ফলে দুধের ঘাটতিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ৷ আবার যারা খামার করছে তারাই বা কীভাবে জীবনযাপন করবে আর গরুকেই বা কী খাওয়াবে?'' প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘গবাদি পশুকে রোগমুক্ত রাখতে অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়৷ সেক্ষেত্রে দুধে কিছুটা অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি থাকতে পারে৷ তবে দুধের যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকার কাজ করছে৷''
খালেদ মুহিউদ্দীন। প্রধান, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগ |
No comments