বিয়ের নেশা অতঃপর... by রুদ্র মিজান
মা-বাবার
একমাত্র সন্তান। ঢাকা শহরে নিজেদের বহুতল বাড়ি একাধিক। কথা বলেন গুছিয়ে।
এসবই তার পুঁজি। সুশ্রী, বিধবা বা চাকরিজীবী নারীদের টার্গেট করেন তিনি।
নিজের ব্যবহার, চেহারা ও সম্পত্তি দেখিয়েই প্রলুব্ধ করেন নারীদের। বিশেষ
কৌশলে মিশে যান তাদের সঙ্গে । তারপর প্রেমের প্রস্তাব।
এভাবেই ধীরে ধীরে এগিয়ে যান। প্রতিশ্রুতি দেন বিয়ের। বিয়েও করেন। বিবাহিত পরিচয় গোপন করেই একের পর এক প্রেম ও বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রীর সর্বস্ব লুটে মগ্ন হন অন্য নারীতে। হুমকি-ধমকি, মারধর করে তাড়িয়ে দেন ‘স্ত্রীদের’। এরকম অনেক অভিযোগ পুলিশের কাছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, বিয়ে করাই তার নেশা। বিয়ে নেশাগ্রস্ত ৩৫ বছর বয়সী এই যুবকের নাম উজ্জ্বল। পুরো নাম কোরবান আলী। একাধিক মামলার এই আসামি পুলিশের কাছে পলাতক হলেও ঘুরে বেড়াচ্ছেন বীর দর্পে।
কল্যাণপুর প্রধান সড়কের বহুতল ৪৪/২ নম্বরসহ ছয়টি বাড়ির মালিক উজ্জ্বল। দিনভর বাসার পাশে কল্যাণপুরের তিন নম্বর রোডের প্রধান ফটকের পাশে আড্ডা দিতেন। ক্যারাম খেলতেন। ওই এলাকার একটি বাসাতেই শিশু সন্তান ও কলেজ পড়ুয়া নিজের খালাতো বোন, গৃহপরিচারিকাকে নিয়ে থাকতেন এক ডিভোর্সী নারী। পরিচালনা করতেন দর্জি দোকান। পাশাপাশি উপস্থাপনা করতেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠান। ওই নারীর প্রতিই দৃষ্টি পড়ে উজ্জ্বলের। আসা-যাওয়ার পথে কথা বলার চেষ্টা করেন তার সঙ্গে। কিন্তু ওই নারী এড়িয়ে যাচ্ছিলেন শুরু থেকেই। এবার বাসার বাইরে পেলেই কথা বলেন ওই নারীর শিশু সন্তানের সঙ্গে। চিপস, লজেন্স কিনে দেন। সখ্যতা গড়েন। তারপর ওই শিশুর মাধ্যমেই সখ্যতা গড়েন ওই নারীর সঙ্গে।
ভুক্তভোগী নারী জানান, তারপর থেকে প্রায়ই উজ্জ্বলের সঙ্গে কথা হতো। উজ্জ্বল জানিয়েছিলেন, তিনি আগে একটা প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি করতেন। আপাতত চাকরি নেই। তার স্ত্রী নেই। ডিভোর্স হয়ে গেছে। একজন সঙ্গী খুঁজছেন তিনি। একসময় ওই নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ২০১১ সালের ২৫শে নভেম্বর বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর প্রকাশ পায় তার অন্য রূপ। এখন না আরও পরে.. নানা বাহানা দিয়ে নিজের বাড়িতে নেয়া থেকে দুরে থাকতেন। বেকার উজ্জ্বল ধুমপান থেকে শুরু করে যাবতীয় টাকা নিতেন স্ত্রীর কাছ থেকে। মাঝে-মধ্যে উধাও হয়ে যেতেন। ফোন বন্ধ। চার-পাঁচ দিন পর ফিরতেন।
২০১২ সালের ঘটনা। একদিন উজ্জ্বলের এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারেন অন্য তরুণী নিয়ে কক্সবাজারে আছেন তিনি। ওই দিনই ওই নারী যান কক্সবাজারে। নির্দিষ্ট আবাসিক হোটেলে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ঘটনা সত্য। দুচোখে অন্ধকার দেখতে পান। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন সুন্দর জীবনের জন্য। তারপর মুখোমুখি না হয়েই ফিরে আসেন ঢাকায়। এ নিয়ে পরে কলহ হয় দুজনের। হঠাৎ তালাকের নোটিশ পাঠান উজ্জ্বল। অথচ তখনও সংসার করছিলেন তারা।
বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। মামলা করেন ওই নারী। কিন্তু উজ্জ্বলের হুমকি-ধমকিতে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। দুরে সরে যান মামলা পরিচালনা থেকেও। তিন বছর পর আবার ফেরে ওই নারীর কাছে। নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চায়। এভাবে কয়েক মাস। নতুন করে তাকে গ্রহণ করতে চান না ওই নারী। পরিচিতজনরা পরামর্শন দেন সমঝোতার। গত বছরের ২১শে মার্চ নতুন করে আবার বিয়ে হয় তাদের। এরমধ্যেই জানতে পারেন বরিশালেও একটি বিয়ে করেছেন উজ্জ্বল। আসমা নামের উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা ওই নারীর কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন। এ নিয়ে মামলার পর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসে মিরপুর মডেল থানায়। এসব জানার পর উজ্জ্বলকে চাপ দেন দ্রুত তাকে বাসায় উঠাতে। উজ্জ্বল তাল-বাহান করেন। ওই নারী এবার নিজেই যান উজ্জ্বলের মায়ের কাছে। এবার আকাশ থেকে পড়েন তিনি। বাড়িতে আছে নিপুন নামে তার আরেক স্ত্রী। ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ওই নারীর সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করেন উজ্জ্বলের মা আনোয়ারা বেগম। ওই নারী রাজি হন না। তিনি সংসার করতে চান। এবার বাসায় ওই নারী ও তার খালাতো বোনকে আটকে রেখে মারধর করা হয়। হামলা চালান উজ্জ্বল, নিপুন ও আনোয়ারা। মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করা হয় ওই নারীকে। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। পরে অভিযান চালিয়ে উজ্জ্বলের মা, স্ত্রী, গৃহপরিচারিকাসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পালিয়ে যান উজ্জ্বল। এ বিষয়ে মামলা করার পর হুমকি-ধমকি দেন উজ্জ্বল। এমনকি ওই নারীর কলেজ পড়ুয়া খালাতো বোনকে নিউ মার্কেট এলাকা থেকে অপহরণ করার চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে তাকে শ্লীলতাহানি করেন উজ্জ্বলসহ চার যুবক।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে আইরিন নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি। তারপর একে একে চার নারীকে বিয়ে করেন। এরমধ্যেই তিন নারীই তার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। বিয়ে ছাড়া মিথ্যা পরিচয় প্রলোভন দিয়ে অন্তত অর্ধশত নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়েছেন বলে জানান ভুক্তভোগী নারীরা। এসব কারণেই উজ্জ্বলের সঙ্গে সংসার করা হয়নি তাদের। তারা প্রত্যেকেই তার বিচার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির বলেন, কোরবান আলী উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে একটি মামলার চার্জশিট গত বছরই আদালতে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও অন্য একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
এভাবেই ধীরে ধীরে এগিয়ে যান। প্রতিশ্রুতি দেন বিয়ের। বিয়েও করেন। বিবাহিত পরিচয় গোপন করেই একের পর এক প্রেম ও বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রীর সর্বস্ব লুটে মগ্ন হন অন্য নারীতে। হুমকি-ধমকি, মারধর করে তাড়িয়ে দেন ‘স্ত্রীদের’। এরকম অনেক অভিযোগ পুলিশের কাছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, বিয়ে করাই তার নেশা। বিয়ে নেশাগ্রস্ত ৩৫ বছর বয়সী এই যুবকের নাম উজ্জ্বল। পুরো নাম কোরবান আলী। একাধিক মামলার এই আসামি পুলিশের কাছে পলাতক হলেও ঘুরে বেড়াচ্ছেন বীর দর্পে।
কল্যাণপুর প্রধান সড়কের বহুতল ৪৪/২ নম্বরসহ ছয়টি বাড়ির মালিক উজ্জ্বল। দিনভর বাসার পাশে কল্যাণপুরের তিন নম্বর রোডের প্রধান ফটকের পাশে আড্ডা দিতেন। ক্যারাম খেলতেন। ওই এলাকার একটি বাসাতেই শিশু সন্তান ও কলেজ পড়ুয়া নিজের খালাতো বোন, গৃহপরিচারিকাকে নিয়ে থাকতেন এক ডিভোর্সী নারী। পরিচালনা করতেন দর্জি দোকান। পাশাপাশি উপস্থাপনা করতেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠান। ওই নারীর প্রতিই দৃষ্টি পড়ে উজ্জ্বলের। আসা-যাওয়ার পথে কথা বলার চেষ্টা করেন তার সঙ্গে। কিন্তু ওই নারী এড়িয়ে যাচ্ছিলেন শুরু থেকেই। এবার বাসার বাইরে পেলেই কথা বলেন ওই নারীর শিশু সন্তানের সঙ্গে। চিপস, লজেন্স কিনে দেন। সখ্যতা গড়েন। তারপর ওই শিশুর মাধ্যমেই সখ্যতা গড়েন ওই নারীর সঙ্গে।
ভুক্তভোগী নারী জানান, তারপর থেকে প্রায়ই উজ্জ্বলের সঙ্গে কথা হতো। উজ্জ্বল জানিয়েছিলেন, তিনি আগে একটা প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি করতেন। আপাতত চাকরি নেই। তার স্ত্রী নেই। ডিভোর্স হয়ে গেছে। একজন সঙ্গী খুঁজছেন তিনি। একসময় ওই নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ২০১১ সালের ২৫শে নভেম্বর বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর প্রকাশ পায় তার অন্য রূপ। এখন না আরও পরে.. নানা বাহানা দিয়ে নিজের বাড়িতে নেয়া থেকে দুরে থাকতেন। বেকার উজ্জ্বল ধুমপান থেকে শুরু করে যাবতীয় টাকা নিতেন স্ত্রীর কাছ থেকে। মাঝে-মধ্যে উধাও হয়ে যেতেন। ফোন বন্ধ। চার-পাঁচ দিন পর ফিরতেন।
২০১২ সালের ঘটনা। একদিন উজ্জ্বলের এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারেন অন্য তরুণী নিয়ে কক্সবাজারে আছেন তিনি। ওই দিনই ওই নারী যান কক্সবাজারে। নির্দিষ্ট আবাসিক হোটেলে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ঘটনা সত্য। দুচোখে অন্ধকার দেখতে পান। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন সুন্দর জীবনের জন্য। তারপর মুখোমুখি না হয়েই ফিরে আসেন ঢাকায়। এ নিয়ে পরে কলহ হয় দুজনের। হঠাৎ তালাকের নোটিশ পাঠান উজ্জ্বল। অথচ তখনও সংসার করছিলেন তারা।
বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। মামলা করেন ওই নারী। কিন্তু উজ্জ্বলের হুমকি-ধমকিতে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। দুরে সরে যান মামলা পরিচালনা থেকেও। তিন বছর পর আবার ফেরে ওই নারীর কাছে। নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চায়। এভাবে কয়েক মাস। নতুন করে তাকে গ্রহণ করতে চান না ওই নারী। পরিচিতজনরা পরামর্শন দেন সমঝোতার। গত বছরের ২১শে মার্চ নতুন করে আবার বিয়ে হয় তাদের। এরমধ্যেই জানতে পারেন বরিশালেও একটি বিয়ে করেছেন উজ্জ্বল। আসমা নামের উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা ওই নারীর কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন। এ নিয়ে মামলার পর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসে মিরপুর মডেল থানায়। এসব জানার পর উজ্জ্বলকে চাপ দেন দ্রুত তাকে বাসায় উঠাতে। উজ্জ্বল তাল-বাহান করেন। ওই নারী এবার নিজেই যান উজ্জ্বলের মায়ের কাছে। এবার আকাশ থেকে পড়েন তিনি। বাড়িতে আছে নিপুন নামে তার আরেক স্ত্রী। ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ওই নারীর সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করেন উজ্জ্বলের মা আনোয়ারা বেগম। ওই নারী রাজি হন না। তিনি সংসার করতে চান। এবার বাসায় ওই নারী ও তার খালাতো বোনকে আটকে রেখে মারধর করা হয়। হামলা চালান উজ্জ্বল, নিপুন ও আনোয়ারা। মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করা হয় ওই নারীকে। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। পরে অভিযান চালিয়ে উজ্জ্বলের মা, স্ত্রী, গৃহপরিচারিকাসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পালিয়ে যান উজ্জ্বল। এ বিষয়ে মামলা করার পর হুমকি-ধমকি দেন উজ্জ্বল। এমনকি ওই নারীর কলেজ পড়ুয়া খালাতো বোনকে নিউ মার্কেট এলাকা থেকে অপহরণ করার চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে তাকে শ্লীলতাহানি করেন উজ্জ্বলসহ চার যুবক।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে আইরিন নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি। তারপর একে একে চার নারীকে বিয়ে করেন। এরমধ্যেই তিন নারীই তার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। বিয়ে ছাড়া মিথ্যা পরিচয় প্রলোভন দিয়ে অন্তত অর্ধশত নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়েছেন বলে জানান ভুক্তভোগী নারীরা। এসব কারণেই উজ্জ্বলের সঙ্গে সংসার করা হয়নি তাদের। তারা প্রত্যেকেই তার বিচার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির বলেন, কোরবান আলী উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে একটি মামলার চার্জশিট গত বছরই আদালতে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও অন্য একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
No comments