সিটি নির্বাচনে প্রচারণার সুযোগ এমপিদের
ক্ষমতাসীন
আওয়ামী লীগের প্রস্তাব মেনে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এমপিদের প্রচারণার
সুযোগ করে দিলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন
ভবনে কমিশনের সভায় এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের
যাচাই-বাছাইয়ের পর এ বিষয়ে পরিপত্র জারি হলে এটি কার্যকর হবে। তবে গাজীপুর
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে এটি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কম। এর আগে কাজী
রকিব উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে কমিশন সিটি নির্বাচনে এমপিদের প্রচারণার
সুযোগ প্রদানের উদ্যোগ নিলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে তারা সরে এসেছিল। গতকাল
কমিশন সভা শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, সংসদ সদস্যপদ লাভজনক নয়।
সেজন্যই তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে
পারবেন। এই সংক্রান্ত সংশোধনী নির্বাচন কমিশন অনুমোদন করেছে। সংসদ সদস্যপদ
কেন লাভজনক নয়- তার ব্যাখ্যায় সচিব বলেন, তারা কোনো অফিস হোল্ড করেন না,
সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন না, কিনে ব্যবহার করেন। এবং কোনো সরকারি
কর্মকর্তাও যুক্ত নেই তাদের সঙ্গে। সিটি করপোরশন আচরণ বিধিমালায় বিভিন্ন
ধরনের ১১টি সংশোধনী আনার প্রস্তাব কমিশন করেছে বলে জানিয়ে হেলালুদ্দীন
বলেন, আগামী রোববার তা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। গাজীপুর
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল আগেই ঘোষিত হওয়ায় এই সংশোধনী চূড়ান্ত হয়ে
ওই নির্বাচনে কার্যকর সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মন্তব্য করে ইসি সচিব।
তিনি বলেন, কোনো নির্দিষ্ট সিটি করপোরেশন নয়, সব সংসদ সদস্যের জন্য এটা ওপেন থাকবে। লাভজনক পদ না হওয়ায় তাদের উপর থেকে এই বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হল। তবে সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সংসদ সদস্য পদ তাদেরকে ইস্তফা দিতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও ইসির স্টেকহোল্ডার। তাদের প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করেই সংশোধনীর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রচারণায় অংশ নিতে পারলেও সরকারি সুযোগ-সুবিধা তারা গ্রহণ করতে পারবেন না জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, এক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরা ভোটের সময় ডাকবাংলো ব্যবহারের সুযোগ পাবে না।
ইসি সূত্রে জানা যায়, কমিশনের আইন ও বিধি সংস্কার কমিটি সব সংসদ সদস্য নাকি সংশ্লিষ্ট এলাকার এমপিরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন এ বিষয়ে দ্বিমত রেখেই বৃহস্পতিবার কমিশনের সভায় তাদের সুপারিশ পেশ করে। কমিটির সদস্যদের এক পক্ষের যুক্তি-সব এমপিকে এ সুযোগ দেওয়া হলে পরিস্থিতি ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত মাগুরা-২ আসনের উপনির্বাচনের মতো হতে পারে। ব্যাপক বিতর্কিত ওই নির্বাচনের প্রচারে সংসদ সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি সে সময় নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সব এমপিকে প্রচারণা চালানোর সুযোগ দিলে একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। অন্য পক্ষের যুক্তি সংসদ সদস্যরা অফিস অব প্রফিট বা প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নন।
অন্যান্য নাগরিকের মতো তাদেরও নির্বাচনী প্রচার চালানোর অধিকার রয়েছে। গত ১৩ই এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক করে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল এ বিষয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনের দাবি জানায়। এরপর গত ১৯ এপ্রিল এ বিষয়ে বৈঠক করে কমিশন। বৈঠকে একজন নির্বাচন কমিশনার এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেন, সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হবে। অপর একজন কমিশনার সব এমপিকে এ সুযোগ দেয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেন। তার পরও সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের ওই দাবি পূরণের পক্ষেই কমিশনের সিদ্ধান্ত হয় এবং কমিশনের আইন ও বিধি সংস্কার কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমকে এ বিষয়ে সুপারিশ প্রস্তুত করার দায়িত্ব দেয়া হয়। এর আগে ২০১৫ সালে দলভিত্তিক স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের পর মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারের সুযোগ দেয়া না দেয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে তৎকালীন কাজী রকিবউদ্দীন কমিশন।
প্রাথমিকভাবে মন্ত্রী-এমপিদের নাম উল্লেখ না করে সরকারি সুবিধাভোগীদের প্রচারের (সরকারি যানবাহন, প্রচারযন্ত্র বাদ দিয়ে) সুযোগ করে দিয়ে খসড়া তৈরি করে। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনার মধ্যে সরকারি সুবিধাভোগীদের সফর ও প্রচারণায় অংশ নেয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হয়। এ ধারাবাহিকতায় সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও মন্ত্রী-এমপিদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আচরণবিধি করা হয়। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ দেখায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গাজীপুর ও খুলনার সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে এমপিদের প্রচারণার সুযোগ চেয়ে ইসিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে ক্ষমতাসীনরা।
আওয়ামী লীগের দাবির মুখে স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আচরণবিধি সংশোধনে ফের উদ্যোগী হয় নির্বাচন কমিশন। ইসির আইন সংস্কার কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কমিশন সভায় গতকাল আচরণবিধি সংশোধনের অনুমোদন দেয়া হয়। ইসি কর্মকর্তারা জানান, এই আচরণবিধি আইন না হওয়ায় সংসদে উত্থাপনের প্রয়োজন হবে না। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষেই তা চূড়ান্ত করে গেজেট করতে পারবে ইসি। উল্লেখ্য, সিটি করপোরেশন (নির্বাচনী আচরণ) বিধিমালা ২০১৬-এর ২(১৩) ধারায় ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সংজ্ঞা দেয়া আছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাঁদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বোঝাবে। আর এ বিধিমালার ২২ ধারায় বলা হয়েছে- ১. সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচন পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, এ ধরনের ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে তিনি কেবল ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে যেতে পারবেন।’
তিনি বলেন, কোনো নির্দিষ্ট সিটি করপোরেশন নয়, সব সংসদ সদস্যের জন্য এটা ওপেন থাকবে। লাভজনক পদ না হওয়ায় তাদের উপর থেকে এই বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হল। তবে সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সংসদ সদস্য পদ তাদেরকে ইস্তফা দিতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও ইসির স্টেকহোল্ডার। তাদের প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করেই সংশোধনীর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রচারণায় অংশ নিতে পারলেও সরকারি সুযোগ-সুবিধা তারা গ্রহণ করতে পারবেন না জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, এক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরা ভোটের সময় ডাকবাংলো ব্যবহারের সুযোগ পাবে না।
ইসি সূত্রে জানা যায়, কমিশনের আইন ও বিধি সংস্কার কমিটি সব সংসদ সদস্য নাকি সংশ্লিষ্ট এলাকার এমপিরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন এ বিষয়ে দ্বিমত রেখেই বৃহস্পতিবার কমিশনের সভায় তাদের সুপারিশ পেশ করে। কমিটির সদস্যদের এক পক্ষের যুক্তি-সব এমপিকে এ সুযোগ দেওয়া হলে পরিস্থিতি ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত মাগুরা-২ আসনের উপনির্বাচনের মতো হতে পারে। ব্যাপক বিতর্কিত ওই নির্বাচনের প্রচারে সংসদ সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি সে সময় নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সব এমপিকে প্রচারণা চালানোর সুযোগ দিলে একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। অন্য পক্ষের যুক্তি সংসদ সদস্যরা অফিস অব প্রফিট বা প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত নন।
অন্যান্য নাগরিকের মতো তাদেরও নির্বাচনী প্রচার চালানোর অধিকার রয়েছে। গত ১৩ই এপ্রিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক করে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল এ বিষয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনের দাবি জানায়। এরপর গত ১৯ এপ্রিল এ বিষয়ে বৈঠক করে কমিশন। বৈঠকে একজন নির্বাচন কমিশনার এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেন, সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হবে। অপর একজন কমিশনার সব এমপিকে এ সুযোগ দেয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেন। তার পরও সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের ওই দাবি পূরণের পক্ষেই কমিশনের সিদ্ধান্ত হয় এবং কমিশনের আইন ও বিধি সংস্কার কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমকে এ বিষয়ে সুপারিশ প্রস্তুত করার দায়িত্ব দেয়া হয়। এর আগে ২০১৫ সালে দলভিত্তিক স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের পর মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারের সুযোগ দেয়া না দেয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে তৎকালীন কাজী রকিবউদ্দীন কমিশন।
প্রাথমিকভাবে মন্ত্রী-এমপিদের নাম উল্লেখ না করে সরকারি সুবিধাভোগীদের প্রচারের (সরকারি যানবাহন, প্রচারযন্ত্র বাদ দিয়ে) সুযোগ করে দিয়ে খসড়া তৈরি করে। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনার মধ্যে সরকারি সুবিধাভোগীদের সফর ও প্রচারণায় অংশ নেয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হয়। এ ধারাবাহিকতায় সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও মন্ত্রী-এমপিদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আচরণবিধি করা হয়। এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ দেখায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গাজীপুর ও খুলনার সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে এমপিদের প্রচারণার সুযোগ চেয়ে ইসিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে ক্ষমতাসীনরা।
আওয়ামী লীগের দাবির মুখে স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আচরণবিধি সংশোধনে ফের উদ্যোগী হয় নির্বাচন কমিশন। ইসির আইন সংস্কার কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কমিশন সভায় গতকাল আচরণবিধি সংশোধনের অনুমোদন দেয়া হয়। ইসি কর্মকর্তারা জানান, এই আচরণবিধি আইন না হওয়ায় সংসদে উত্থাপনের প্রয়োজন হবে না। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষেই তা চূড়ান্ত করে গেজেট করতে পারবে ইসি। উল্লেখ্য, সিটি করপোরেশন (নির্বাচনী আচরণ) বিধিমালা ২০১৬-এর ২(১৩) ধারায় ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সংজ্ঞা দেয়া আছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাঁদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বোঝাবে। আর এ বিধিমালার ২২ ধারায় বলা হয়েছে- ১. সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচন পূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, এ ধরনের ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে তিনি কেবল ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে যেতে পারবেন।’
No comments