কোহিনূর চুরি বা লুট হয়নি!
মূল্যবান রত্ন কোহিনূর চুরিও হয়নি, লুটও হয়নি। ভারতের কোহিনূর ফিরে
পাওয়ার আশা ভারত সরকারই প্রায় ক্ষীণ করে দিল। ফারসি ভাষায় যা ‘আলোর পর্বত’,
ভারতে তার পোশাকি নাম স্রেফ কোহিনূর। এ সেই বিরল হীরা, যার কোনো ব্যাখ্যা
বা বিশেষণে আজ পর্যন্ত কেউ আগ্রহীও হননি। কোহিনূরের এক ও অদ্বিতীয় অর্থ
হীরাই। সেই কোহিনূরের অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবি থেকে ভারত প্রায় পিছিয়েই এল।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ভারতের সলিসিটর জেনারেল রণজিৎ কুমার জানান,
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় মনে করে, ইংরেজ শাসকেরা ভারত থেকে কোহিনূর চুরি
যেমন করেননি, তেমনই লুট করেও নিয়ে যাননি। পাঞ্জাবের মহারাজা রণজিৎ সিং ১৮৪৯
সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে নিজেই এই অমূল্য সম্পদ উপহার দিয়েছিলেন।
হঠাৎই কোহিনূর আলোচনার শীর্ষে এক মামলার কারণে। মামলাটি করে অল ইন্ডিয়া
হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড সোশ্যাল জাস্টিস ফ্রন্ট। কোহিনূর, টিপু সুলতানের
তরবারি, আংটিসহ প্রাচীন অমূল্য সম্পদ ইংল্যান্ড থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনার
দাবিতেই এই মামলা। সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে ভারত সরকারের মনোভাব জানতে চাইলে
সলিসিটর জেনারেল সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এই মনোভাব জানিয়ে বলেন, ভারতের
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিমতও এ রকম। যদিও তারা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই
অভিমত জানায়নি। ছয় সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত মতামত জানানোর নির্দেশ
দেওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে সাবধান করে বলেন, ‘ভেবেচিন্তে মতামত
দেবেন। কারণ, ভবিষ্যতে আর কোনো দাবি জানানোর উপায় কিন্তু সরকারের থাকবে
না।’ তিন বছর আগে ভারত সফরের সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন
কোহিনূর ফেরত দেওয়ার দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ভারত সরকারের যা মনোভাব, তাতে
মনে হচ্ছে, কোহিনূরের দাবিই সরকার আর কোনো দিন জানাবে না। মহারানি
ভিক্টোরিয়ার মুকুটে আনুষ্ঠানিকভাবে এই রত্ন শোভা পায়, টাওয়ার অব লন্ডনেও
সাধারণের চোখে ধরা পড়ে। কিন্তু ত্রয়োদশ শতকে অন্ধ্র প্রদেশের গুন্টুর থেকে
৭৯৩ ক্যারেটের যে হীরা ‘আনকাট’ অবস্থায় তোলা হয়েছিল, কালে কালে বারবার
কাটার পর তা এখন ১০৫ ক্যারেটের স্বচ্ছতম সম্পদ।
No comments