আইএসের আয় কমেছে এক–তৃতীয়াংশ
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক
জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আয় গত বছরের মাঝামাঝি থেকে প্রায় তিন
ভাগের এক ভাগ কমে গেছে। বিভিন্ন ভূখণ্ডের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারানোর ফলে
কর আদায়ের খাত কমে যাওয়া এর কারণ বলে একটি গবেষণা গ্রুপ জানিয়েছে। গ্রুপটি
বলছে, আয় কমে যাওয়ায় আইএস এখন নতুন কর আদায়ের পথে ঝুঁকছে। আইএইচএস নামের এ
গ্রুপের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক লুদোভিকো কার্লিনো বলেন, ২০১৫ সালের মাঝামাঝি
আইএসের মাসিক সার্বিক আয় ছিল প্রায় আট কোটি ডলার। আইএস-নিয়ন্ত্রিত এলাকার
বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নিয়মিতভাবে নানা প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে আইএইচএস।
কার্লিনো বলেন, ‘২০১৬-এর মার্চে এসে আইএসের মাসিক আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি
৬০ লাখ ডলারে।’ আইএইচএসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএস-নিয়ন্ত্রিত
এলাকাগুলোতে তেলের উৎপাদন দৈনিক ৩৩ হাজার ব্যারেল থেকে নেমে হয়েছে ২১ হাজার
ব্যারেল। তেল উৎপাদন কমে গেছে প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট
বাহিনী ও রাশিয়ার বিমান হামলার কারণে। আইএইচএস অবশ্য সতর্ক করে বলেছে,
তেলের উৎপাদন কমে যাওয়াটা ‘সাময়িক বিঘ্ন সৃষ্টিকারী’ ঘটনামাত্র। কেননা,
আইএসের যোদ্ধারা ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো দ্রুত মেরামতের সামর্থ্য রাখেন।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, আইএসের আয়ের প্রায় ৫০ শতাংশ আসে কর এবং বিভিন্ন
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সম্পদ জব্দের অর্থ থেকে। ৪৩ শতাংশ আসে তেল উৎপাদন থেকে।
বাকিটা মাদকদ্রব্য, চোরাচালান, বিদ্যুৎ বিক্রি ও অনুদান থেকে। কার্লিনো
বলেন, ‘ওই অঞ্চলে (মধ্যপ্রাচ্যে) আইএস এখনো একটি প্রতিষ্ঠিত শক্তি। তবে
তাদের আয়ের এ কমতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে দীর্ঘ মেয়াদে নিজেদের
দখলকৃত এলাকা পরিচালনায় তাদের চ্যালেঞ্জ বাড়বে।’ আইএইচএস বলেছে, গত ১৫ মাসে
আইএস তাদের দখলকৃত এলাকার প্রায় ২২ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ খুইয়েছে। এখন তাদের
শাসনাধীনে রয়েছে ৬০ লাখের মতো মানুষ। আগে ছিল ৯০ লাখ। এর অর্থ হলো তাদের কর
আদায়ের ভিত্তি গেছে সংকুচিত হয়ে। আইএসের এই ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ
বর্ণনা করে কার্লিনো বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, আইএস মৌলিক সেবা খাত
থেকে কর আদায় বাড়াচ্ছে এবং জনগণের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের নতুন পন্থা বের
করছে।’
No comments