লাশের শহর গাজা
গাজায় রক্তসে াত থামছে না। ইসরাইলি নৃশংসতায় ক্রমেই বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। নিরপরাধ নারী-শিশুর লাশের পাহাড় উঠছে। সঙ্গে সঙ্গে বেদখল হয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর। স্থল আক্রমণের পাশাপাশি থেমে থেমেই চলছে ইসরাইলের বিমান হামলা। গত ৮ জুলাই শুরু হওয়া ইসরাইলের ‘অপারেশন প্রটেকটিভ এজ’ এ এখন পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা সাড়ে তিনশ’ ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছে কয়েক হাজার। আহতদের আর্তচিৎকারে ভারি গাজার আকাশ। মুমূর্ষুদের গুদাম হয়ে উঠেছে গাজার আল শিফা হাসপাতাল। এদিকে, গাজার নিচে আরেক গাজা! স্থলপথ অভিযানে হামাস জঙ্গিদের একের পর এক সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়ার পর এমনটাই অভিমত ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ)। ইসরাইলের দাবি, এই সুড়ঙ্গগুলোই যত নষ্টের গোড়া। এগুলোকে কাজে লাগিয়েই রকেট ছোড়ে হামাস। ইসরাইলে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় তো বটেই, ইসরাইলিদের অপহরণ এবং হত্যা করতে সুড়ঙ্গগুলো ব্যবহার করা হয়। বিমান হানায় গোলকধাঁধার মতো এই ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করা সম্ভবপর নয় বলেই স্থলপথে আক্রমণে নেমেছে ইসরাইল। তবে জঙ্গিদের নিকেশ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ৭০ জন শিশুসহ ৩৩৩ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘও। ধ্বংস না করা পর্যন্ত তারা স্থলপথে অভিযান চালাবেন। সেই মতো রোববার গাজার পূর্বপ্রান্তের আড়াই কিলোমিটার প্রশস্ত একটি এলাকায় ইসরাইলি সেনা সুড়ঙ্গ সন্ধানে নামে। আইডিএফে’র মুখপাত্র পিটার লার্নার বলেন, ‘এ পর্যন্ত ১৩টি সুড়ঙ্গের সন্ধান মিলেছে। কয়েকটির অবস্থান মাটির ৯০ ফুট গভীরে। সুড়ঙ্গগুলো একটি অন্যটির সঙ্গে যুক্ত।
যেন গাজা ভূখণ্ডের নিচে আরও এক গাজা লুকিয়ে রয়েছে।’ রোববার কয়েকজন জঙ্গি সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে ইসরাইলে ঢোকার চেষ্টা করলে আইডিএফ একজনকে গুলি করে মারে। বাকিরা পালায়। সংঘর্ষে চারজন ইসরাইলি সেনাও আহত হয়েছেন। দিনকয়েক আগে একই কায়দায় ঢুকতে গিয়ে ১৩ জন জঙ্গি ইসরাইলি সেনার হাতে ধরা পড়েছিল। আরব লীগ-হামাস নেতার বৈঠক ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার বিষয়ে আরব লীগের প্রধান ও কুয়েতের শাসক শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ’র সঙ্গে বৈঠক করেছেন হামাসের প্রধান খালেদ মিশাল। কুয়েত সিটিতে রোববার অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে গাজায় অস্ত্রবিরতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর এএফপি’র। কুয়েতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কুনা বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি। তবে এক কূটনীতিকের সূত্রে এএফপি জানায়, গাজায় ইসরাইলি হামলার ১৩ দিনে এ পর্যন্ত ৪০০ জন নিহতের পর হামলা বন্ধে পদক্ষেপের ব্যাপারে উভয়ের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দিনের শুরুতে সাবাহ’র সঙ্গে আলোচনার জন্য কাতার থেকে কুয়েতে পৌঁছান মিশাল। বৈঠক শেষে তিনি আবারও কুয়েতে ফিরে আসেন। সেখানে তার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। এর আগে মিসরের মধ্যস্ততায় ইসরাইলের সঙ্গে এক অস্ত্রবিরতি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে হামাস। তাদের দাবি ছিল, চুক্তিতে শুধু বিনা শর্তে অস্ত্রবিরতিই নয়, বরং তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আরও যৌক্তিক কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হোক। এদিকে আগামী সোমবার ফিলিস্তিন সংকটের বিষয়ে কুয়েতে দেশটির আমীর ও আরব লীগ প্রধান সাবাহ’র সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের বৈঠক করার কথা রয়েছে।
No comments