তামাশা করবেন না -দায় এড়াতে পারেন না যোগাযোগমন্ত্রী
মন্ত্রী বদলায়, তাঁদের হম্বিতম্বির ভাষা
বদলায় কিন্তু মহাসড়কের মহা ভোগান্তি কমে না। তাই সারা বছরের অবহেলার
খেসারত যাত্রীদের সুদে-আসলেই দিতে হয় ঈদের আগের ও পরের যাত্রাপেথ। ঈদ সামনে
রেখে যোগাযোগমন্ত্রী ও তাঁর অধীন সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কগুলো মেরামতের
কাজে অতি তৎপরতা দেখালেও সময়ের কাজ কেন সময়ে করেনি, তার জবাব কই?
সোমবারের প্রথম আলোর প্রথম ও দ্বিতীয় পৃষ্ঠা মহাসড়কের মহা দুর্দশার দলিল। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জায়গায় জায়গায় মেরামত চলছে ঠিকই, কিন্তু ভোগান্তি কমছে না। এর উন্নয়নকাজ নিয়ে চীনা কোম্পানিটি কার্যত তামাশা করে গেলেও শাস্তির বদলে পদ্মা সেতুর নদীশাসনের কাজ তাদেরই দেওয়া হয়েছে। এর পেছনে কী রহস্য আছে, তা জানার অধিকার জনগণের আছে। আর যশোর-খুলনা, বরিশাল-ঢাকা, উত্তরবঙ্গমুখী সড়কসহ অন্যান্য জেলামুখী সড়কগুলোর দুর্দশার দায় তো বিদেশি কোম্পানির নয়!
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যত তর্জন-গর্জনই করুন, ফলাফল প্রায় শূন্য। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, ২০ জুলাইয়ের মধ্যে সড়ক–মহাসড়কগুলোর মেরামত সম্পন্ন হবে; অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা শাস্তি পাবেন। এখন বলছেন, আরও দু–তিন দিন লাগবে। অর্থাৎ অনিশ্চয়তা। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ‘প্রধান নির্বাহী’ যেহেতু তিনি, সেহেতু ব্যর্থতার দায় না এড়িয়ে তিনি নিজেই নিজের শাস্তির মাত্রা ঠিক করতে পারেন।
ঈদ কেবল ধর্মীয় মহোৎসবই নয়, লক্ষ-কোটি মানুষের ঘরে ফেরার উপলক্ষও। যাঁরা জীবিকার জন্য শহর-বন্দরে থাকেন—বিশেষত শ্রমজীবী মানুষেরা—এটাই স্বজনদের সঙ্গে তাঁদের মিলিত হওয়ার সুযোগ। যাঁদের অবহেলা ও ঔদাসীন্যের কারণে এই আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতেই হবে।
প্রথম আলোসহ সমকাল ও ডেইলি স্টার–এর সোমবারের প্রতিবেদনগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে, সমস্যার কারণ সমন্বয়হীনতা, সময়মতো উদ্যোগী না হওয়া এবং অবহেলা। অথচ এসব প্রতিবেদন অস্বীকার করে তিনি গণমাধ্যমের ‘হেদায়েত’ কামনা করেছেন। আমরা তাঁর সুমতি আশা করি।
যোগাযোগমন্ত্রী ঈদের আগে ঘরমুখো মানুষকে স্বস্তি দিতে না পারুন, ‘রাস্তা চলাচল উপযোগী আছে’ বলে তাদের সঙ্গে তামাশা করবেন না।
No comments