সর্বোচ্চ শক্তিতে ১৮ দলঃ রাজপথ থাকবে ৮ ঘন্টা গাড়িশূন্য! by সাজেদা সু্ইটি
রোববার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মোট আট ঘণ্টা দেশের রাজপথগুলো থাকবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের দখলে। সড়ক থাকবে পরিবহনশূন্য- এমনটি প্রত্যাশা তাদের। জোটের দলগুলোর প্রস্তুতি সেভাবেই চলছে।
এ কর্মসূচিতে শরিক দলগুলো তাদের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে বলে জানিয়েছে জোটসূত্র।
গত ২৮ নভেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনের জনসভা থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ৯ ডিসেম্বর সারা দেশে রাজপথ অবরোধের ঘোষণা দেন। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিসহ অন্যান দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ কর্মসূচি নেয় ১৮ দলীয় জোট।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করাই এখন জোট নেতাদের প্রধান চাওয়া। আর এ কারণে জোটের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরাই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, কর্মসূচিটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন জোটনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও। অবরোধের প্রস্তুতিতে তার সরাসরি তত্ত্বাবধান চলছে প্রতি মুহূর্তে।
সবাই এখন অবরোধের জন্য প্রস্তুত, দাবি জোটের কয়েকজন শীর্ষ নেতার।
বিএনপি সূত্র জানায়, অবরোধের বিষয়ে খালেদা জিয়া নানা রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা ও মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালামসহ সংশ্লিষ্ট নেতাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তবে এ কর্মসূচি পালনে সহিংসতা এড়াতে চান খালেদা জিয়া। ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম বাংলানিউজকে জানান, জান-মালের ক্ষতি এড়িয়ে কর্মসূচি পালনের বিষয়ে খালেদা জিয়া স্পষ্ট ও কড়া নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) কর্মসূচির সার্বিক খোঁজ-খবর রাখছেন। তিনি চান, রাজপথ অবরোধের এই কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সফল হোক। তবে এতে কোনোভাবে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন।”
আবদুস সালাম আরও বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আশা করি, সরকার আমাদের এ কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা করবে।’’
তিনি বলেন, “জোটের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের রোববার রাস্তায় গাড়ি বের না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে অনুরোধ রাখা না রাখা তাদের ব্যাপার।”
রোববার রাস্তায় বাস-ট্রাক-লরি বের না করার জন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভা থেকে তিনি এ অনুরোধ জানান।
কর্মসূচি যেভাবে পালন হবে
দলীয় সূত্র জানায়, রোববার সকাল ৬টায় দলের নেতাকর্মীরা রাজপথ অবরোধে নেমে পড়বেন। রাজধানী ঢাকার প্রতিটি থানাসহ ওয়ার্ডগুলোতে রাস্তা অবরোধ করবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতাকর্মীরা। বিভাগীয় শহর ও জেলা-শহরগুলোতেও একইভাবে সক্রিয় থাকবেন নেতাকর্মীরা।
তবে আন্তঃজেলা মহাসড়কগুলোতে থাকবে বাড়তি ব্যবস্থা। রাজধানীতে প্রবেশের প্রধান মহাসড়কগুলো ও রাজধানীর ভেতরের কিছু পয়েন্টকে ‘জরুরি’ হিসেবে চিহ্নিত করে সেগুলোতে অধিক শক্তি আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছে জোটসূত্র।
অবরোধের জরুরিএলাকা
সূত্র জানায়, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, কেরাণীগঞ্জ, গাবতলী, কল্যাণপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া, আবদুল্লাহপুর, নরসিংদী, ফুলবাড়িয়া ও গুলিস্তান হবে রোববারের অবরোধের জরুরি এলাকা বা পয়েন্ট। তবে এর মধ্যেও যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গাবতলী ও কল্যাণপুর অবরোধ করতে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে ১৮ দল।
যুবদল, ছাত্রদল, শিবিরই মূল শক্তি
রোববারের অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে বিএনপির দুই অঙ্গ সংগঠন যুবদল ও ছাত্রদল এবং জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরকে মূল শক্তি হিসেবে ভাবছে জোট। এক্ষেত্রে জামায়াতের ডাকা ৪ ডিসেম্বরের হরতালে শিবিরের পারফরমেন্সকে ‘বিশেষ পারদর্শিতা’ বলেও বিবেচনা করা হচ্ছে।
ওই হরতালকে সফল দাবি করে অবরোধ পালনে ১৮ দল নতুনভাবে উজ্জীবিত হচ্ছে বলেও সরল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন জোটের কয়েকজন নেতা।
যুবদল, ছাত্রদল ও শিবিরের প্রস্তুতিও সেভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে বলে জানান নেতারা। কোন এলাকায় কোন নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন এবং তারা কি কি পরিস্থিতিতে কেমন পদক্ষেপ নেবেন- তা নিয়েও প্রস্তুত হয়েছে খসড়া নির্দেশনা।
তরুণ ও যুবকদের এই তিন সংগঠনকে অবরোধসহ পরবর্তী কর্মসূচিগুলোতে জোটের ‘ত্রি-শক্তি’ হিসেবে পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাধা এলে কঠোর কর্মসূচি
বৃহস্পতিবার রাতে খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে অবরোধ পরবর্তী কর্মসূচি কি হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়।
সূত্র জানায়, ওই বৈঠকেই অবরোধ পরবর্তী সময়ের কর্মসূচি অনেকাংশেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। বৈঠকে অবরোধ সফল করার জন্য করণীয় নিয়ে যেমন আলোচনা হয় তেমনি বারবারই উঠে আসে সরকার এতে বাধা দিলে কি করা হবে সে প্রসঙ্গও। অধিকাংশ শীর্ষ নেতাই রোববারের অবরোধ কর্মসূচিতে বাধা এলে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার পক্ষে মত দেন। তাদের প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, রেলপথ অবরোধ, হরতাল এবং প্রয়োজনে ঢাকা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি।
১৮ দলীয় জোটের অন্যতম এক শীর্ষ নেতা বাংলানিউজকে বলেন, এ পর্যন্ত ছোট ও বড় পরিসরে অনেকগুলো বৈঠক হয়েছে। জোট পর্যায়ে যেমন হয়েছে, বিএনপি নিজেদের মধ্যেও বৈঠক করেছে। দলের সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিয়েও হচ্ছে আলাদা আলাদা বৈঠক। মহানগর বিএনপি নিজেও একাধিক বৈঠক করে প্রস্তুতি তদারকি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
একই ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, রাজপথ অবরোধের মাধ্যমে এই সরকার পতনের আন্দোলন চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকে যাবে। এতে বাধা দিলে আসবে পরবর্তী কর্মসূচি।
এ আন্দোলন সফল হওয়া ছাড়া কোনো নেতাকর্মী ঘরে ফিরবেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা ঘেরাও হতে পারে জানিয়ে মওদুদ বলেন, “অবরোধে বাধা এলে হরতালসহ ঘেরাও কর্মসূচি আসবে। এ পর্যন্ত যেসব কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে বা দেওয়া হয়নি সব কর্মসূচিই এবার দেওয়া হবে। তিনি বলেন, কোনো কর্মসূচিই এবার বাদ থাকবে না।”
এ প্রসঙ্গে জোটের শরিক এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তজা বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘অবরোধের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। আশা করি, এই কর্মসূচি সফল হবে।’’ সরকার বাধা দিতে গেলে পরবর্তীতে হরতালসহ আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক দিলে কর্মসূচি প্রত্যাহার
তবে যতোই প্রস্তুতি নেওয়া হোক কর্মসূচি পালন ও ঘোষণার, সবই তুলে নেওয়া হবে যদি সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়। অথবা এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বিএনপিকে ডাকে। বিএনপিসহ ১৮ দলের নেতারা প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে এ কথাটি জানিয়ে দিচ্ছেন।
মির্জা ফখরুল, ব্যারিস্টার মওদুদ, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকসহ অধিকাংশ নেতাই নানা সুযোগে এ কথাটি সরকারকে জানাচ্ছেন।
তাদের কথা একটাই, হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও কিছুই থাকবে না, আসবে না, যদি তত্ত্বাবধায়ক দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হলে তাতে সাগ্রহে অংশ নেবে বিএনপি।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করাই এখন জোট নেতাদের প্রধান চাওয়া। আর এ কারণে জোটের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরাই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, কর্মসূচিটিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন জোটনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও। অবরোধের প্রস্তুতিতে তার সরাসরি তত্ত্বাবধান চলছে প্রতি মুহূর্তে।
সবাই এখন অবরোধের জন্য প্রস্তুত, দাবি জোটের কয়েকজন শীর্ষ নেতার।
বিএনপি সূত্র জানায়, অবরোধের বিষয়ে খালেদা জিয়া নানা রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা ও মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালামসহ সংশ্লিষ্ট নেতাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তবে এ কর্মসূচি পালনে সহিংসতা এড়াতে চান খালেদা জিয়া। ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম বাংলানিউজকে জানান, জান-মালের ক্ষতি এড়িয়ে কর্মসূচি পালনের বিষয়ে খালেদা জিয়া স্পষ্ট ও কড়া নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) কর্মসূচির সার্বিক খোঁজ-খবর রাখছেন। তিনি চান, রাজপথ অবরোধের এই কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সফল হোক। তবে এতে কোনোভাবে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন।”
আবদুস সালাম আরও বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আশা করি, সরকার আমাদের এ কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা করবে।’’
তিনি বলেন, “জোটের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের রোববার রাস্তায় গাড়ি বের না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে অনুরোধ রাখা না রাখা তাদের ব্যাপার।”
রোববার রাস্তায় বাস-ট্রাক-লরি বের না করার জন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভা থেকে তিনি এ অনুরোধ জানান।
কর্মসূচি যেভাবে পালন হবে
দলীয় সূত্র জানায়, রোববার সকাল ৬টায় দলের নেতাকর্মীরা রাজপথ অবরোধে নেমে পড়বেন। রাজধানী ঢাকার প্রতিটি থানাসহ ওয়ার্ডগুলোতে রাস্তা অবরোধ করবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতাকর্মীরা। বিভাগীয় শহর ও জেলা-শহরগুলোতেও একইভাবে সক্রিয় থাকবেন নেতাকর্মীরা।
তবে আন্তঃজেলা মহাসড়কগুলোতে থাকবে বাড়তি ব্যবস্থা। রাজধানীতে প্রবেশের প্রধান মহাসড়কগুলো ও রাজধানীর ভেতরের কিছু পয়েন্টকে ‘জরুরি’ হিসেবে চিহ্নিত করে সেগুলোতে অধিক শক্তি আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছে জোটসূত্র।
অবরোধের জরুরিএলাকা
সূত্র জানায়, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, কেরাণীগঞ্জ, গাবতলী, কল্যাণপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া, আবদুল্লাহপুর, নরসিংদী, ফুলবাড়িয়া ও গুলিস্তান হবে রোববারের অবরোধের জরুরি এলাকা বা পয়েন্ট। তবে এর মধ্যেও যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গাবতলী ও কল্যাণপুর অবরোধ করতে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে ১৮ দল।
যুবদল, ছাত্রদল, শিবিরই মূল শক্তি
রোববারের অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে বিএনপির দুই অঙ্গ সংগঠন যুবদল ও ছাত্রদল এবং জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরকে মূল শক্তি হিসেবে ভাবছে জোট। এক্ষেত্রে জামায়াতের ডাকা ৪ ডিসেম্বরের হরতালে শিবিরের পারফরমেন্সকে ‘বিশেষ পারদর্শিতা’ বলেও বিবেচনা করা হচ্ছে।
ওই হরতালকে সফল দাবি করে অবরোধ পালনে ১৮ দল নতুনভাবে উজ্জীবিত হচ্ছে বলেও সরল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন জোটের কয়েকজন নেতা।
যুবদল, ছাত্রদল ও শিবিরের প্রস্তুতিও সেভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে বলে জানান নেতারা। কোন এলাকায় কোন নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন এবং তারা কি কি পরিস্থিতিতে কেমন পদক্ষেপ নেবেন- তা নিয়েও প্রস্তুত হয়েছে খসড়া নির্দেশনা।
তরুণ ও যুবকদের এই তিন সংগঠনকে অবরোধসহ পরবর্তী কর্মসূচিগুলোতে জোটের ‘ত্রি-শক্তি’ হিসেবে পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাধা এলে কঠোর কর্মসূচি
বৃহস্পতিবার রাতে খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে অবরোধ পরবর্তী কর্মসূচি কি হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়।
সূত্র জানায়, ওই বৈঠকেই অবরোধ পরবর্তী সময়ের কর্মসূচি অনেকাংশেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। বৈঠকে অবরোধ সফল করার জন্য করণীয় নিয়ে যেমন আলোচনা হয় তেমনি বারবারই উঠে আসে সরকার এতে বাধা দিলে কি করা হবে সে প্রসঙ্গও। অধিকাংশ শীর্ষ নেতাই রোববারের অবরোধ কর্মসূচিতে বাধা এলে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার পক্ষে মত দেন। তাদের প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, রেলপথ অবরোধ, হরতাল এবং প্রয়োজনে ঢাকা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি।
১৮ দলীয় জোটের অন্যতম এক শীর্ষ নেতা বাংলানিউজকে বলেন, এ পর্যন্ত ছোট ও বড় পরিসরে অনেকগুলো বৈঠক হয়েছে। জোট পর্যায়ে যেমন হয়েছে, বিএনপি নিজেদের মধ্যেও বৈঠক করেছে। দলের সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিয়েও হচ্ছে আলাদা আলাদা বৈঠক। মহানগর বিএনপি নিজেও একাধিক বৈঠক করে প্রস্তুতি তদারকি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
একই ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, রাজপথ অবরোধের মাধ্যমে এই সরকার পতনের আন্দোলন চূড়ান্ত আন্দোলনের দিকে যাবে। এতে বাধা দিলে আসবে পরবর্তী কর্মসূচি।
এ আন্দোলন সফল হওয়া ছাড়া কোনো নেতাকর্মী ঘরে ফিরবেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা ঘেরাও হতে পারে জানিয়ে মওদুদ বলেন, “অবরোধে বাধা এলে হরতালসহ ঘেরাও কর্মসূচি আসবে। এ পর্যন্ত যেসব কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে বা দেওয়া হয়নি সব কর্মসূচিই এবার দেওয়া হবে। তিনি বলেন, কোনো কর্মসূচিই এবার বাদ থাকবে না।”
এ প্রসঙ্গে জোটের শরিক এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তজা বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘অবরোধের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। আশা করি, এই কর্মসূচি সফল হবে।’’ সরকার বাধা দিতে গেলে পরবর্তীতে হরতালসহ আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক দিলে কর্মসূচি প্রত্যাহার
তবে যতোই প্রস্তুতি নেওয়া হোক কর্মসূচি পালন ও ঘোষণার, সবই তুলে নেওয়া হবে যদি সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়। অথবা এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বিএনপিকে ডাকে। বিএনপিসহ ১৮ দলের নেতারা প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে এ কথাটি জানিয়ে দিচ্ছেন।
মির্জা ফখরুল, ব্যারিস্টার মওদুদ, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকসহ অধিকাংশ নেতাই নানা সুযোগে এ কথাটি সরকারকে জানাচ্ছেন।
তাদের কথা একটাই, হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও কিছুই থাকবে না, আসবে না, যদি তত্ত্বাবধায়ক দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হলে তাতে সাগ্রহে অংশ নেবে বিএনপি।
No comments